সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
টেস্টে বাংলাদেশের ইনিংস ঘোষণার ঘটনা কালেভদ্রেই ঘটে। খুলনা টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ২৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। এ দিয়ে টেস্টে সাতবার ইনিংস ঘোষণা করল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনবার। সফরকারী দলের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৩১৪ রান।
নাতসাই এমসাঙ্গুয়েকে মিড-অনে তুলে মারতে গিয়ে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার হাতে ধরা পড়েন আগের দিনের অপরাজিত মাহমুদউল্লাহ। কিছুক্ষণ পর একই বোলারের শিকার তাইজুল ইসলামও। ফেরার আগে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে এসেছে ৭১ রান ও তাইজুল করেছেন মাত্র ১ রান। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেওয়ার পর লং-অনে মাসাকাদজার দারুণ এক ক্যাচের শিকার শুভাগত হোম চৌধুরী ফিরেছেন ৫০ রানে। শাহাদাত ফেরেন ৩ রানে। আজ বাংলাদেশের চারটি উইকেটই নিয়েছেন লেগস্পিনার এমসাঙ্গুয়ে। স্পিন-সহায়ক এ উইকেটে বাংলাদেশের স্পিনারদের চোখ চকচক করে ওঠার কথা!
ঢাকা টেস্টের নিস্পত্তি হয়েছিল মাত্র তিনদিনেই। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে—দুই দলের ব্যাটিংয়ের যে করুণ চিত্র প্রথম টেস্টে দেখা গেছে, তাতে শুধু ব্যাট-বলের খেলা দিয়ে খুলনা টেস্টটা পঞ্চম দিনে গড়াবে, ম্যাচের আগে কল্পনা করা একটু কঠিনই ছিল। কিন্তু দুদলই সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। খুলনা টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে এবং জিম্বাবুয়েকে বাংলাদেশ লক্ষ্য দিয়েছে ৩১৪ রান। কথা হলো, ম্যাচের ফল কোন দলের দিকে হেলবে? বাংলাদেশ নাকি জিম্বাবুয়ের দিকে? নাকি স্রেফ ড্র! এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আশা জাগাতে পারে জিম্বাবুয়ের পরিসংখ্যান-রেকর্ড। পঞ্চম দিনে চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ রান ২৭০। বাংলাদেশ যে লক্ষ্য দিয়েছে পঞ্চম দিনে চতুর্থ ইনিংসে এত রান টপকানোর ইতিহাস নেই জিম্বাবুয়ের।
আজকের আগে ৯২ টেস্ট খেলা জিম্বাবুয়েচতুর্থ ইনিংসে ম্যাচ নিতে পেরেছে মাত্র ২১ বার। মাত্র ১৬টি ম্যাচে পঞ্চম দিনে চতুর্থ ইনিংস গড়িয়েছে। এ ১৬ ম্যাচে জিতেছে মাত্র দুটিতে, ৬টি ড্র বাকি ৮টিতে হার। দুটি জয়ই বাংলাদেশের বিপক্ষে। চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ রান ৩৩১। ২০১১ সালের নভেম্বরে বুলওয়া টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৩৩১ রান করেও ৩৪ রানে হেরেছিল জিম্বাবুয়ে। এদিন পঞ্চম দিনে জিম্বাবুয়ে তুলতে পেরেছিল ২৭০ রান। এটিই পঞ্চম দিনে দলটির সর্বোচ্চ রান।
পঞ্চম দিনে ও চতুর্থ ইনিংসে গড়িয়েছে এমন ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড বেশ আশা জাগানিয়া। ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছিল ২২৬ রানে আর গত বছর হারারে টেস্টে মুশফিকুর রহিমের দল জিতেছিল ১৪৩ রানে। অবশ্য দুটি পরাজয়ের অভিজ্ঞতাও রয়েছে বাংলাদেশের। তবে সেগুলো জিম্বাবুয়ের ‘সুদিনে’। যখন শক্তিমত্তার দিক দিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ছিল জিম্বাবুয়ে। ২০০১ সালের এপ্রিলে হারারে ও একই বছর নভেম্বরে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ৮ উইকেটে। কিন্তু বাংলাদেশকে আশা জাগাচ্ছে সাম্প্রতিক রেকর্ডই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ সিরিজের আগে সর্বশেষ দুটি জয় এসেছে পঞ্চম দিনে ও চতুর্থ ইনিংসে। খুলনা টেস্টে সে রেকর্ডের পুনরাবৃত্তি করতে পারবে বাংলাদেশ?
No comments