‘লাদেনের শেষ নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পেয়েছি’
আমার দু’ফুট সামনে স্ত্রীর কাঁধের ওপর দু’হাতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। সামনে স্ত্রী। তার পিছনে লাদেন। তাকে চিনতে আমার কষ্ট হলো না। আমি পরিষ্কার বুঝে গেলাম এই সেই ব্যক্তি যাকে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব খুঁজে ফিরছে। বিশ্বের এক নম্বর ওয়ান্টেড ব্যক্তি। আমি সময় নষ্ট করলাম না। তার মাথায় তিনটি বুলেট বিদ্ধ করি। সঙ্গে সঙ্গে সে পড়ে যায়। আমি দাঁড়িয়ে যাই তার শরীরের ওপর। তখনও সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। সেই নিঃশ্বাস ছাড়ার শব্দ আমি শুনেছি। যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছে মার্কিন নেভি সিলের সাবেক সদস্য রবার্ট ও’নেইল। মঙ্গলবার রাতে ওই টেলিভিশন চ্যানেল ‘দ্য ম্যান হু কিলড ওসামা বিন লাদেন’ এর দ্বিতীয় পর্ব সম্প্রচার করে। এতে রবার্ট ও’নেইল ২০১১ সালের ২রা মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে লাদেনের বাসভবনে চালানো অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত বলেন। তার বয়স এখন ৩৮ বছর। অ্যাবোটাবাদে লাদেনের বাসভবনে টিমের সদস্যদের সঙ্গে সে প্রবেশ করে। রবার্ট ও’নেইলের মতে, সেখানে প্রবেশ করেই আমি লাদেনকে চিনতে পারি। তাকে হত্যা করার পরই নেভি সিলের অভিযান শেষ হয়ে যায় ডনি। ও’নেইল বলেছে, ভয়াবহ সেই ঘটনার পর ৯০ মিনিট পড়ে তারা ফিরে যায় আফগানিস্তানে। তার টিম জানতো, যেকোন সময় আকাশ থেকে বা ভূমি থেকে তাদের ওপর আক্রমণ শুরু হতে পারে। ৮০ মিনিটের পরে রেডিওতে কেউ একজন বলতে তাদেরকে বলতে থাকেÑ প্রথমবারের মতো সব কিছু ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আফগানিস্তানে আপনাদের স্বাগতম। সবাই বলতে লাগলোÑ আমরা কাজ শেষ করতে পেরেছি। আমরা তাকে পেয়েছি এবং সেখান থেকে কাজ শেষ করে চলে এসেছি। আমরা জীবন নিয়ে ফিরেছি। আমরা ভাল আছি। এরপরই আমাদের মধ্যে আনন্দ শুরু হয়ে যায়। আমরা ওসামা বিন লাদেনকে পেয়েছি। এটা বিস্ময়কর। রবার্ট ও’নেইল বলেছে, সে ও তার টিমের অন্যরা ভেবেছিল তারা লাদেনের ওই বাসা থেকে সুস্থভাবে বেরিয়ে যেতে পারবে না। তারা মনে করেছিল, এই অভিযান চালাতে গিয়ে নিজেদের জীবন হারাতে হতে পারে। তবে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার যে দাবি করছে রবার্ট ও’নেইল তার সমালোচনা করেছে অন্য নেভি সিলের সদস্যরা। তারা ও’নেইলকে লাদেন হত্যার স্বীকৃতি দিতে চায় না। তারা বলে, ও’নেইল কি করে জানলো যে, তার গুলিতেই লাদেন মারা গেছে।
No comments