প্রথম ছক্কায় নায়ক রুবেল
২২ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৮টি ইনিংস খেলেছেন রুবেল হোসেন। কিন্তু এই পেস বোলার কখনোই বল উড়িয়ে সীমানার বাইরে পাঠাতে পারেননি। ক্যারিয়ারে ১৭ রানই তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ। কিন্তু গতকাল সাগরিকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টেস্টে এক চমকপ্রদ ইনিংসের জন্ম দিলেন তিনি। প্রথম বারের মতো ক্যারিয়ারে ছয়ের মার হাঁকালেন। তাও আবার একটি দুটি নয়, চারটি। ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটিও খেললেন ৪৪ বলে। ৪টি ছয়ের মারের সঙ্গে ৪টি চারের মারে করেন ৪৫ রান। সেই সঙ্গে গড়েন ১০ম উইকেটে বাংলাদেশের ৫ম সর্বোচ্চ জুটি। তার এই ইনিংসটির কল্যাণেই বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসেও যোগ হয়েছে একটি ৫ শ’ ছাড়ানো দলীয় ইনিংস। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সাকিবের ৭১ রানকেও ছাড়িয়ে যায় তার ইনিংস। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাকেই পাঠান, দলের কর্তারা। তার কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন : দলের পরিকল্পনা কি ছিল?
রুবেল: আমাদের লক্ষ্য ছিল বড় একটা ইনিংস খেলা। অন্ততঃ চা বিরতি পর্যন্ত খেলা- এটাই লক্ষ্য ছিল।
প্রশ্ন: উইকেটটা কেমন ছিল?
রুবেল: উইকেটটা খুবই সুন্দর উইকেট, ব্যাটিংয়ের জন্য খুবই ভাল উইকেট। এই উইকেটে তেমন কোন সুইং নাই, তেমন কোন স্পিনে টার্ন নেই। ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব হেল্পফুল। তবে আজকে তো (গতকাল) টেস্টের দ্বিতীয় দিন এখনও বলা যাচ্ছে না উইকেট কতটা ভাঙবে। তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দিনে বলা যাবে। কালকে (আজ) উইকেটটা দেখলে বোঝা যাবে।
প্রশ্ন: দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ কোন অবস্থানে আছে বলে আপনার মনে হয়?
রুবেল: আসলে আমরা খুব ভাল পজিশনেই আছি, আমার কাছে যেটা মনে হয়। আমাদের ভাল একটা স্কোর হয়েছে। এই উইকেটে শুরুতে একটু রান হবেই। কাল সকাল সকাল যদি আমরা দ্রুত উইকেট নিতে পারি, পেস বোলার আর স্পিন বোলার যারাই হোক দ্রুত উইকেট নিতে হবে। আমাদের ধৈর্য ধরে বল করে যেতে হবে। এই উইকেটে আসলে উইকেট পাওয়া খুব কঠিন।
প্রশ্ন : সংবাদ সম্মেলনে ভাল বোলিং করে নয়, ভাল ব্যাটিং করে সামনে আসা-বিষয়টি কেমন লাগছে?
রুবেল: ব্যাটিংয়ের মজা সব সময় ভালো। আমার সঙ্গে শেষ উইকেট ছিল। আমিও কিছু শটস খেলছি। টাইমিং হয়েছে। এই আর কি। আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। আসলে উইকেটটা খুব ভালো ছিল। ব্যাট চালাচ্ছিলাম, ভাল লাগছিল।
প্রশ্ন: এর আগে কখনো ছক্কা মেরেছেন?
রুবেল: না কখনো মারি নাই।
প্রশ্ন: ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস কেমন লাগছে?
রুবেল: ব্যাটিংয়ের মজা সব সময় লাগে। ব্যাটিংয়ে যদি ৪০-৪৫ রান করা যায় তাহলে তার মজাটাই অন্যরকম। আমার কাছে আজ খুব ভালো লাগছে। বাগেরহাটে আমার একশ’ও আছে। ওইটা স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে। খুলনা ডিভিশন প্রিমিয়ার লীগেও আমার ফিফটি আছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ফিফটি নাই। তবে ঢাকায় তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগে ফিফটি আছে।
চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর কার্ড (দ্বিতীয় দিন)
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে তৃতীয় টেস্ট
টস: বাংলাদেশ, ব্যাটিং
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভার; ৩০৩/২ ব্যাটিং (প্রথম দিন)
ব্যাটসম্যান রান বল ৪ ৬
মুমিনুল ক টেইলর ব পানিয়াঙ্গারা ৪৮ ১০০ ৩ ০
মাহমুদুল্লাহ এলবি শিঙ্গি ১৬ ৬৮ ১ ০
সাকিব ক আরভিন ব রাজা ৭১ ১১০ ৭ ০
মুশফিক ব মাসাকাদজা ১৫ ৩৬ ১ ০
শুভাগত রান আউট (শিঙ্গি/মুতুম্বামি) ৩৫ ৬৫ ৩ ০
তাইজুল ক মুতুম্বামি ব শিঙ্গি ১ ৫ ০ ০
শফিউল ক আরভিন ব রাজা ১০ ২৭ ২ ০
রুবেল অপরাজিত ৪৫ ৪৪ ২ ৪
জুবায়ের ব পানিয়াঙ্গারা ৫ ৩৯ ০ ০
অতিরিক্ত (বা২, লেবা১০, ও৬) ১৮
মোট (অলআউট; ১৫৩.৪ ওভার) ৫০৩
উইকেট পতন: ১/২২৪ (তামিম, ৬৩.৫ ওভার), ২/২৭২ (ইমরুল; ৭৮.৬), ৩/৩১২ (মুমিনুল, ৯৪.৬), ৪/৩৩৯ (মাহমুদুল্লাহ, ১০২.৩), ৫/৩৭৮ (মুশফিক, ১১৫.৬), ৬/৪২৮ (সাকিব, ১৩০.৫) ৭/৪২৯ (তাইজুল, ১৩১.৪), ৮/৪৫১ (শফিউল, ১৩৯.৪), ৯/৪৫২ (শুভাগত, ১৪০.১) ১০/৫০৩ (জুবায়ের, ১৫৩.৪)।
বোলিং: পানিয়াঙ্গারা ২০.৪-২-৭০-২, চিগুম্বুরা ১৪-৪-৪০-০, শিঙ্গি ২৫-৫-৭৭-২, ম’শাংওয়ে ৪৭-৫-১৪৯-০, রাজা ৩৬-২-১২৩-৩, চারি ২-০-৯-০, মাসাকাদজা ৯-১-২৩-২।
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস
ব্যাটসম্যান রান বল ৪ ৬
রাজা অপরাজিত ৫৪ ৬৫ ৯ ০
চারি ক মুশফিক ব রুবেল ০ ৬ ০ ০
মাসাকাদজা অপরাজিত ৫১ ৮৬ ৭ ১
অতিরিক্ত (ব৬, লেবা১, নো১) ৮
মোট (১উইকেট; ২৬ ওভার) ১১৩
উইকেট পতন: ১/৯ (চারি, ১.৬ ওভার)।
বোলিং: শফিউল ৫-১-২০-০, রুবেল ৫-১-২৭-১, তাইজুল ৯-০-৩১-০, সাকিব ৫-২-১৬-০, জুবায়ের ১-০-১১-০, শুভাগত ১-০-১-০।
সর্বাধিক রানের জুটি
জুটি মওসুম ইনিংস রান সর্বোচ্চ গড় ১০০/৫০
মুশফিক-সাকিব ২০০৮-১৪ ৩৫ ১৪০৪ ১২৩ ৪০.১১ ২/১৩
বাশার-জাভেদ ২০০১-০৭ ৩২ ১৩২১ ১৬৭ ৪১.২৮ ৫/৫
ইমরুল-তামিম ২০০৮-১৪ ৩৩ ১২৯৯ ১৮৫ ৩৯.৩৬ ২/৭
জুনাইদ-তামিম ২০০৮-১২ ২৭ ১০০৮ ২০০ ৩৭.৩৩ ৩/২
বাশার-হান্নান ২০০২-০৪ ১৫ ৭৬৪ ১১৪ ৫০.৯৩ ৩/৫
No comments