সাগরের সাথে রাগ অভিমান চলে না by শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ
কালো হয়ে আসছে আকাশ। আতঙ্কে ছুটাছুটি করছে
জেলেরা। মাইকে ঘোষণা আসছে, সবাই যেন সময়মতো আশ্রয় কেন্দ্রে হাজির হয়।
মহিলা আর বাচ্চারা কেন্দ্রে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলেও এলোমেলো ছুটাছুটি
করছে গ্রামের পুরুষরা। নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য নয়। এরা বাঁচাতে চায়
জীবিকার অবলম্বন নৌকাগুলোকে।
>> সাগরই এদের খাবার জোগায়। সাগর রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেও মেনে নিতে হয়। অন্নযোগানো সাগরের সাথে রাগ অভিমান চলে না।
>> সাগরই এদের খাবার জোগায়। সাগর রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেও মেনে নিতে হয়। অন্নযোগানো সাগরের সাথে রাগ অভিমান চলে না।
চিত্রটা
শনিবারের। আবহাওয়া বিভাগের হিসাব মতে, পরদিন রোববার সকালেই ঘূর্ণিঝড়
হুদহুদ আঘাত হানবে চাপালাভুপাড়া গ্রামে। এই জেলেগ্রামটি ভারতের অন্ধ্র
প্রদেশের বিশাখাপত্তনম শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে। এখানে জেলেদের জীবনের
চেয়ে নৌকার মূল্যই বেশি। এই জেলে গ্রামে ১৯৮৩ সালে একটি আশ্রয় কেন্দ্র
তৈরি করা হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে এটি উন্নতও হয়েছে। এখন প্রাকৃতিক
দুর্যোগে এ আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার, পানি আর ওষুধেরও ব্যবস্থা আছে। এতে
আশ্রয় নিতে পারে ৩০০ লোক। কেন্দ্রটি এই চাপালাভুপাড়া গ্রামের জনসংখ্যার
জন্য অপ্রতুল হলেও এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই জেলেদের।
এদের যত মাথাব্যথা নৌকা নিয়ে। জীবন বাঁচাতে হলে মাছ ধরতে হবে। মাছ ধরতে হলে নৌকা থাকতে হবে। সুতরাং নৌকা যদি নাই থাকে তবে এ জীবনের কোনো মূল্য নেই। তাই শনিবার সারাদিন সাগরের উপকূলে দেখা গেছে নৌকা নিয়ে টানাটানি করছে জেলেরা। কয়েকজন মিলে নৌকা মাথায় করে টান এলাকায় নিয়ে আসছে। কেউ ঠেলে ঠুলে নিরাপদ কোথাও রাখার চেষ্টা করছে।
পঞ্চাশ বছর বয়সি জেলে থোলাডা আমরুও এদের একজন। তিনি বলেন, মাত্র দুসরা উৎসব শেষ হলো। এখন আমাদের মাছ ধরা আর গঙ্গা মায়ের পূজা করার সময়। কিন্তু এই হুদহুদের খবরে সবই ভেস্তে গেলো। কয়েকদিন ধরে তো একেবারেই সাগরে যেতে পারছি না।
তিনি জানালেন, উত্তাল সাগরে যেতে না পারলে তাদের খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার অন্য কোনো অবলম্বন নেই। সাগরই এদের খাবার জোগায়। সাগর রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেও মেনে নিতে হয়। অন্নযোগানো সাগরের সাথে রাগ অভিমান চলে না। এই সাগরই মাঝে মাঝে আমরুর মতো জেলেদের নৌকা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর একেকটি নৌকা ভেসে যাওয়া মানে ছয় লাখ রুপি ভেসে যাওয়া। একবার নৌকা হারালে, নতুন আরেকটি কেনার সমার্থ আমরুদের মতো জেলের পক্ষে সম্ভব নয়।
আমরু বললেন, আমাদের জীবন গেলে যাক। কিন্তু নৌকা ভেসে গেলে পুরো পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হবে। একটি নৌকা ভেসে গেলে আমাদের মতো জেলেদের বেঁচে থাকার অর্থ নেই।
জেলে গ্রামের এক রাজনৈতিক নেতা বললেন, সরকার আমাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র করেছে। কিন্তু আমাদের নৌকাগুলোর জন্য কিছুই করেনি। আমরা দাবি করেছিলাম নৌকাগুলো নিরাপদে রাখার জন্য একটি জেটি বানিয়ে দিতে। কিন্তু সেটা হয় নি। তবে যতটুকু ব্যবস্থা হয়েছে, ততটুকু দিয়েই হুদহুদের বিপরীতে দাঁড়াতে হয়েছে তাদের। জেলেরা নিজের দায়িত্বেই নৌকাগুলোকে আগলে রেখেছেন।
অবশেষে রোববার এলো। অন্যান্য এলাকার মতো চাপালাভুপাড়া গ্রামেও আঘাত হানলো হুদহুদ। বাতাস বইলো ঘন্টায় ১৭০ কিলোমিটার বেগে। সাগর ফুলে ফেঁপে ঢেউগুলো বড়ো হলো। দুই থেকে তিন মিটার উঁচু হয়ে আছড়ে পড়লো বিশাখাপত্তনম এলাকায়। এতে মারাও গেলো পাঁচজন। কিন্তু সেই জেলে গ্রাম চাপালাভুপাড়ার নৌকাগুলোর কী হলো? এখনো এ বিষয়ে খারাপ কোনো সংবাদ আসেনি। তাই একরকম ধরেই নেয়া যায় জেলেদের নৌকা জেলেদের কাছেই আছে। আবার ঢেউয়ের ফিরতি টানে দু’একটি নৌকা যে সাগরে ভেসে যায়নি, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এদের যত মাথাব্যথা নৌকা নিয়ে। জীবন বাঁচাতে হলে মাছ ধরতে হবে। মাছ ধরতে হলে নৌকা থাকতে হবে। সুতরাং নৌকা যদি নাই থাকে তবে এ জীবনের কোনো মূল্য নেই। তাই শনিবার সারাদিন সাগরের উপকূলে দেখা গেছে নৌকা নিয়ে টানাটানি করছে জেলেরা। কয়েকজন মিলে নৌকা মাথায় করে টান এলাকায় নিয়ে আসছে। কেউ ঠেলে ঠুলে নিরাপদ কোথাও রাখার চেষ্টা করছে।
পঞ্চাশ বছর বয়সি জেলে থোলাডা আমরুও এদের একজন। তিনি বলেন, মাত্র দুসরা উৎসব শেষ হলো। এখন আমাদের মাছ ধরা আর গঙ্গা মায়ের পূজা করার সময়। কিন্তু এই হুদহুদের খবরে সবই ভেস্তে গেলো। কয়েকদিন ধরে তো একেবারেই সাগরে যেতে পারছি না।
তিনি জানালেন, উত্তাল সাগরে যেতে না পারলে তাদের খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার অন্য কোনো অবলম্বন নেই। সাগরই এদের খাবার জোগায়। সাগর রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেও মেনে নিতে হয়। অন্নযোগানো সাগরের সাথে রাগ অভিমান চলে না। এই সাগরই মাঝে মাঝে আমরুর মতো জেলেদের নৌকা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর একেকটি নৌকা ভেসে যাওয়া মানে ছয় লাখ রুপি ভেসে যাওয়া। একবার নৌকা হারালে, নতুন আরেকটি কেনার সমার্থ আমরুদের মতো জেলের পক্ষে সম্ভব নয়।
আমরু বললেন, আমাদের জীবন গেলে যাক। কিন্তু নৌকা ভেসে গেলে পুরো পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হবে। একটি নৌকা ভেসে গেলে আমাদের মতো জেলেদের বেঁচে থাকার অর্থ নেই।
জেলে গ্রামের এক রাজনৈতিক নেতা বললেন, সরকার আমাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র করেছে। কিন্তু আমাদের নৌকাগুলোর জন্য কিছুই করেনি। আমরা দাবি করেছিলাম নৌকাগুলো নিরাপদে রাখার জন্য একটি জেটি বানিয়ে দিতে। কিন্তু সেটা হয় নি। তবে যতটুকু ব্যবস্থা হয়েছে, ততটুকু দিয়েই হুদহুদের বিপরীতে দাঁড়াতে হয়েছে তাদের। জেলেরা নিজের দায়িত্বেই নৌকাগুলোকে আগলে রেখেছেন।
অবশেষে রোববার এলো। অন্যান্য এলাকার মতো চাপালাভুপাড়া গ্রামেও আঘাত হানলো হুদহুদ। বাতাস বইলো ঘন্টায় ১৭০ কিলোমিটার বেগে। সাগর ফুলে ফেঁপে ঢেউগুলো বড়ো হলো। দুই থেকে তিন মিটার উঁচু হয়ে আছড়ে পড়লো বিশাখাপত্তনম এলাকায়। এতে মারাও গেলো পাঁচজন। কিন্তু সেই জেলে গ্রাম চাপালাভুপাড়ার নৌকাগুলোর কী হলো? এখনো এ বিষয়ে খারাপ কোনো সংবাদ আসেনি। তাই একরকম ধরেই নেয়া যায় জেলেদের নৌকা জেলেদের কাছেই আছে। আবার ঢেউয়ের ফিরতি টানে দু’একটি নৌকা যে সাগরে ভেসে যায়নি, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
No comments