মনোব্যাধির চিকিৎসক by আতাউর রহমান
‘সাইকোলজিস্ট’ ও ‘সাইকিয়াট্রিস্ট’—এ দুটো ইংরেজি শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ যথাক্রমে মনোবিজ্ঞানী ও মনোব্যাধির চিকিৎসক। ইংরেজিতে ‘সাইকোলজি’ শব্দটির বানানও বেশ বিদ্ঘুটে (psychology), আমরা ছোটবেলায় শব্দটির বানান স্মরণ রাখার চেষ্টা করতাম এভাবে, ‘পিসি চলো যাই’। আর এ দুটো শব্দ ছাড়াও ইংরেজিতে অনুরূপ আরেকটি শব্দ আছে ‘সাইকোএনালিস্ট’, যেটার বাংলা প্রতিশব্দ হতে পারে মনঃসমীক্ষক। তা বলা হয়ে থাকে যে মনোবিজ্ঞানী বায়ুতে বাড়ি নির্মাণ করেন, মনঃসমীক্ষক সেখানে বসবাস করেন এবং মনোব্যাধির চিকিৎসক বাড়ি ভাড়া আদায় করেন।
যাহোক, সাইকোলজিস্ট তথা মনোবিজ্ঞানী সম্পর্কে গল্প প্রচলিত আছে: রাস্তায় হঠাৎ দুই মনোবিজ্ঞানীর সাক্ষাৎ ঘটলে একজন অপরজনকে উদ্দেশ করে বলে উঠলেন, ‘আপনি ভালো আছেন। আমি কেমন আছি?’ অর্থাৎ, তিনি অপরের চেহারা দেখে সেই ব্যক্তি কেমন আছেন বলে দিতে পারেন। কিন্তু নিজের চেহারা তো দেখা যায় না, তাই অপর মনোবিজ্ঞানীকে তাঁকে বলে দিতে হয়, তিনি কেমন আছেন। আর সাইকিয়াট্রিস্ট তথা মনোব্যাধির চিকিৎসক সম্পর্কে গল্প প্রচলিত আছে যে জনৈক রোগী তাঁর কাছে গিয়ে নিজেকে জীবনে ব্যর্থকাম বলে অভিহিত করলে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনার ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই, আমার এখানে চিকিৎসা প্রলম্বিত ও ব্যয়বহুল জেনেই তো আমার কাছে এসেছেন এবং আমার এখানে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে যিনি সক্ষম, তিনি জীবনে ব্যর্থকাম হতে পারেন না।’
প্রসঙ্গত মনে পড়ল, নিউইয়র্ক শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে একবার নাকি দিনের বেলায় আগুন লাগলে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এক মহিলা তাঁর প্রতিবেশীকে লোহার খাঁচায় করে একটি গৃহপালিত মোরগকে নিয়ে নামতে দেখে অজ্ঞান হয়ে যান এবং খানিকক্ষণ সেবা-শুশ্রূষার পর জ্ঞান ফিরলে তিনি বলতে লাগলেন, ‘আমি পূর্বে কখনো জ্ঞান হারাইনি। কিন্তু দেখুন, বিগত এক বছর যাবৎ আমি একজন মনোব্যাধি-চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন আছি। কারণ আমি প্রতিনিয়তই কংক্রিটের এই শহরে একটা মোরগের ডাক শুনে আসছিলাম।’
সাইকোএনালিস্ট তথা মনঃসমীক্ষক সম্পর্কেও গল্প প্রচলিত আছে: এক লোকের ‘ক্লেপ্টোমেনিয়া’ রোগ ছিল। জনৈক মনঃসমীক্ষকের চিকিৎসায় আরোগ্যলাভের পর সে বলল, ‘আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি বিনিময়ে আপনার কী সেবা করতে পারি, বলুন?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘আপনি আমার ফি পরিশোধ করেছেন, আর কোনো সেবার প্রয়োজন নেই।’ কিন্তু লোকটি পীড়াপীড়ি করায় তিনি বললেন, ‘আপনার এই রোগটি যদি ফিরে আসে তাহলে জানবেন, আমার ছেলেটার বহুদিন থেকে একটি ছোট্ট বহনযোগ্য কালার টিভির শখ।’
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমেরিকায় সাইকিয়াট্রিস্টকে বিকল্পভাবে বলা হয় ‘শ্রিংক’ (shrink) এবং, আমরা জানি, শ্রিংক মানে হচ্ছে সংকুচিত হওয়া; যেমন, কোনো কোনো কাপড় ধোয়ার পরে শ্রিংক করে। বাস্তবে সাইকিয়াট্রিস্ট চিকিৎসা করে আপনার মানসিক ব্যালান্স বা ভারসাম্য বজায় রাখেন বটে, তবে আপনার ব্যাংক ব্যালান্স অবশ্যই সংকুচিত করে ফেলেন। আর বর্তমানের যে হতাশাগ্রস্ত যুগে আমরা বাস করছি, তাতে সাইকিয়াট্রিস্টরা নিজেরাই এতটা স্নায়বিক দৌর্বল্যে ভোগেন যে তাঁদের বোধ করি একে অন্যের কাছে চিকিৎসার জন্য ধরনা দিতে হচ্ছে।
এবারে তাহলে নিজের কথায় আসি। দীর্ঘমেয়াদি রোগভোগের একপর্যায়ে ডিপ্রেশন তথা বিষণ্নতা রোগ আমাকে পেয়ে বসে। একদিন প্রত্যুষে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করি, এযাবৎ যা কিছু পছন্দ করে আসছি তার কিছুই ভালো লাগছে না, ইচ্ছে হচ্ছে গভীর জঙ্গলে নিয়ে একাকী বসে থাকি। বিলেতে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পর্কে একটা কৌতুক আছে: জনৈক সরকারি কর্মকর্তা ঘুম কমের অনুযোগ নিয়ে গেলেন ডাক্তারের কাছে এবং ‘আপনার রাতের ঘুম কি কম হচ্ছে?’— ডাক্তারের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ‘না, আমার রাতের ও সকালের ঘুম ঠিকই হচ্ছে, দুপুরে খাবারের পরে যে ঘুমাই, আসলে ওটা কম হচ্ছে।’ তা আমারও দীর্ঘদিনের দিবানিদ্রার অভ্যাস, সেটা তো উবে গেলই, রাতের ঘুমও হারাম হয়ে গেল।
অনন্যোপায় হয়ে গেলাম রাজধানীর নামকরা এক মনোব্যাধি চিকিৎসকের কাছে। তিনি প্রথম আলোর নিয়মিত পাঠক। তাই পরিচয় পেয়েই মন্তব্য করে বসলেন, যিনি মানুষকে হাসান, তিনি কেন বিষণ্নতায় ভুগবেন? আমি তখন তাঁকে বিবিসির ‘মি. বিন’ খ্যাত রোয়ান এটিকনসনের উপাখ্যান শোনালাম। এটিকনসন সাহেব বিচিত্র অঙ্গভঙ্গিসহকারে সবাইকে হাসান। কিন্তু কয়েক বছর আগে পত্রিকায় বেরিয়েছিল, তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্যে আমেরিকায় গেছেন। যাহোক, তিনি একটা ব্যবস্থাপত্র দিলেন। স্রষ্টার অশেষ কৃপায় তাতেই কাজ হলো, আর প্রলম্বিত ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ল না। অনেকটা সেই গল্পের মতো আরকি।
মার্কিন নাগরিক জ্যাকসন জনৈক মনোব্যাধি চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বললেন, ‘ডক্টর, আমি বড় বিপদে পড়েছি। যখনই আমি বিছানায় শুতে যাই, আমার ধারণা হয় বিছানার নিচে কেউ একজন শুয়ে আছে। আবার বিছানার নিচে গেলে মনে হয় বিছানার ওপরে কেউ একজন শুয়ে আছে। এই ওপর-নিচ করতে করতে আমি পাগল হয়ে যাব।’ ‘আপনি দুবছর আমার চিকিৎসাধীন থাকেন’, প্রত্যুত্তরে চিকিৎসক বললেন, ‘সপ্তাহে তিন দিন আমার এখানে আসেন; আমি আপনাকে সুস্থ করে তুলব।’
‘আপনার ফি কত?’
‘প্রতি ভিজিটে এক শ ডলার।’
‘আমি ভেবে দেখি’, এই বলে মি. জ্যাকসন যে গেলেন আর তাঁর খোঁজ নেই। মাস ছয়েক পরে রাস্তায় হঠাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর দেখা হলো। চিকিৎসক তাঁকে ফিরে না আসার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘প্রতি ভিজিটে এক শ ডলারের’ কথা শুনেই মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একজন মদের দোকানের পরিবেশক মাত্র ১০ ডলারে আমাকে রোগমুক্ত করে দিয়েছে। সে আমাকে পরামর্শ দিল, খাটের পায়াগুলো কেটে ফেলতে। আমি তাই করলাম, ফলে আমি এখন রোগমুক্ত।’
শেষ করছি রিডার্স ডাইজেস্ট-এ প্রকাশিত এ–সংক্রান্ত আরেকটি মজার গল্প দিয়ে: মনোব্যাধির চিকিৎসক নতুন রোগীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। ‘আপনি বলছেন আপনি এখানে এসেছেন’, তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘কারণ আপনার পরিবারের সদস্যবৃন্দ আপনার মোজা আসক্তির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন?’ ‘হ্যাঁ তাই’, রোগী প্রত্যুত্তরে বললেন, ‘আমি উলেন মোজা পছন্দ করি।’
‘কিন্তু সেটা তো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক’, চিকিৎসক এবারে বললেন, ‘অনেক লোকই তো তুলা বা নাইলনের মোজার চাইতে উলেন মোজা বেশি পছন্দ করেন। সত্যি বলতে কি, আমার নিজেরও উলেন মোজাই পছন্দ।’
‘তাই নাকি!’ রোগী উল্লসিত হয়ে বলে উঠলেন, ‘তা তেল ও ভিনেগার নাকি শুধু লবণ আর লেবু দিয়ে?’
আতাউর রহমান: রম্যলেখক৷ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক৷
যাহোক, সাইকোলজিস্ট তথা মনোবিজ্ঞানী সম্পর্কে গল্প প্রচলিত আছে: রাস্তায় হঠাৎ দুই মনোবিজ্ঞানীর সাক্ষাৎ ঘটলে একজন অপরজনকে উদ্দেশ করে বলে উঠলেন, ‘আপনি ভালো আছেন। আমি কেমন আছি?’ অর্থাৎ, তিনি অপরের চেহারা দেখে সেই ব্যক্তি কেমন আছেন বলে দিতে পারেন। কিন্তু নিজের চেহারা তো দেখা যায় না, তাই অপর মনোবিজ্ঞানীকে তাঁকে বলে দিতে হয়, তিনি কেমন আছেন। আর সাইকিয়াট্রিস্ট তথা মনোব্যাধির চিকিৎসক সম্পর্কে গল্প প্রচলিত আছে যে জনৈক রোগী তাঁর কাছে গিয়ে নিজেকে জীবনে ব্যর্থকাম বলে অভিহিত করলে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনার ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই, আমার এখানে চিকিৎসা প্রলম্বিত ও ব্যয়বহুল জেনেই তো আমার কাছে এসেছেন এবং আমার এখানে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে যিনি সক্ষম, তিনি জীবনে ব্যর্থকাম হতে পারেন না।’
প্রসঙ্গত মনে পড়ল, নিউইয়র্ক শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে একবার নাকি দিনের বেলায় আগুন লাগলে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এক মহিলা তাঁর প্রতিবেশীকে লোহার খাঁচায় করে একটি গৃহপালিত মোরগকে নিয়ে নামতে দেখে অজ্ঞান হয়ে যান এবং খানিকক্ষণ সেবা-শুশ্রূষার পর জ্ঞান ফিরলে তিনি বলতে লাগলেন, ‘আমি পূর্বে কখনো জ্ঞান হারাইনি। কিন্তু দেখুন, বিগত এক বছর যাবৎ আমি একজন মনোব্যাধি-চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন আছি। কারণ আমি প্রতিনিয়তই কংক্রিটের এই শহরে একটা মোরগের ডাক শুনে আসছিলাম।’
সাইকোএনালিস্ট তথা মনঃসমীক্ষক সম্পর্কেও গল্প প্রচলিত আছে: এক লোকের ‘ক্লেপ্টোমেনিয়া’ রোগ ছিল। জনৈক মনঃসমীক্ষকের চিকিৎসায় আরোগ্যলাভের পর সে বলল, ‘আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি বিনিময়ে আপনার কী সেবা করতে পারি, বলুন?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘আপনি আমার ফি পরিশোধ করেছেন, আর কোনো সেবার প্রয়োজন নেই।’ কিন্তু লোকটি পীড়াপীড়ি করায় তিনি বললেন, ‘আপনার এই রোগটি যদি ফিরে আসে তাহলে জানবেন, আমার ছেলেটার বহুদিন থেকে একটি ছোট্ট বহনযোগ্য কালার টিভির শখ।’
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমেরিকায় সাইকিয়াট্রিস্টকে বিকল্পভাবে বলা হয় ‘শ্রিংক’ (shrink) এবং, আমরা জানি, শ্রিংক মানে হচ্ছে সংকুচিত হওয়া; যেমন, কোনো কোনো কাপড় ধোয়ার পরে শ্রিংক করে। বাস্তবে সাইকিয়াট্রিস্ট চিকিৎসা করে আপনার মানসিক ব্যালান্স বা ভারসাম্য বজায় রাখেন বটে, তবে আপনার ব্যাংক ব্যালান্স অবশ্যই সংকুচিত করে ফেলেন। আর বর্তমানের যে হতাশাগ্রস্ত যুগে আমরা বাস করছি, তাতে সাইকিয়াট্রিস্টরা নিজেরাই এতটা স্নায়বিক দৌর্বল্যে ভোগেন যে তাঁদের বোধ করি একে অন্যের কাছে চিকিৎসার জন্য ধরনা দিতে হচ্ছে।
এবারে তাহলে নিজের কথায় আসি। দীর্ঘমেয়াদি রোগভোগের একপর্যায়ে ডিপ্রেশন তথা বিষণ্নতা রোগ আমাকে পেয়ে বসে। একদিন প্রত্যুষে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করি, এযাবৎ যা কিছু পছন্দ করে আসছি তার কিছুই ভালো লাগছে না, ইচ্ছে হচ্ছে গভীর জঙ্গলে নিয়ে একাকী বসে থাকি। বিলেতে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পর্কে একটা কৌতুক আছে: জনৈক সরকারি কর্মকর্তা ঘুম কমের অনুযোগ নিয়ে গেলেন ডাক্তারের কাছে এবং ‘আপনার রাতের ঘুম কি কম হচ্ছে?’— ডাক্তারের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ‘না, আমার রাতের ও সকালের ঘুম ঠিকই হচ্ছে, দুপুরে খাবারের পরে যে ঘুমাই, আসলে ওটা কম হচ্ছে।’ তা আমারও দীর্ঘদিনের দিবানিদ্রার অভ্যাস, সেটা তো উবে গেলই, রাতের ঘুমও হারাম হয়ে গেল।
অনন্যোপায় হয়ে গেলাম রাজধানীর নামকরা এক মনোব্যাধি চিকিৎসকের কাছে। তিনি প্রথম আলোর নিয়মিত পাঠক। তাই পরিচয় পেয়েই মন্তব্য করে বসলেন, যিনি মানুষকে হাসান, তিনি কেন বিষণ্নতায় ভুগবেন? আমি তখন তাঁকে বিবিসির ‘মি. বিন’ খ্যাত রোয়ান এটিকনসনের উপাখ্যান শোনালাম। এটিকনসন সাহেব বিচিত্র অঙ্গভঙ্গিসহকারে সবাইকে হাসান। কিন্তু কয়েক বছর আগে পত্রিকায় বেরিয়েছিল, তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্যে আমেরিকায় গেছেন। যাহোক, তিনি একটা ব্যবস্থাপত্র দিলেন। স্রষ্টার অশেষ কৃপায় তাতেই কাজ হলো, আর প্রলম্বিত ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ল না। অনেকটা সেই গল্পের মতো আরকি।
মার্কিন নাগরিক জ্যাকসন জনৈক মনোব্যাধি চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বললেন, ‘ডক্টর, আমি বড় বিপদে পড়েছি। যখনই আমি বিছানায় শুতে যাই, আমার ধারণা হয় বিছানার নিচে কেউ একজন শুয়ে আছে। আবার বিছানার নিচে গেলে মনে হয় বিছানার ওপরে কেউ একজন শুয়ে আছে। এই ওপর-নিচ করতে করতে আমি পাগল হয়ে যাব।’ ‘আপনি দুবছর আমার চিকিৎসাধীন থাকেন’, প্রত্যুত্তরে চিকিৎসক বললেন, ‘সপ্তাহে তিন দিন আমার এখানে আসেন; আমি আপনাকে সুস্থ করে তুলব।’
‘আপনার ফি কত?’
‘প্রতি ভিজিটে এক শ ডলার।’
‘আমি ভেবে দেখি’, এই বলে মি. জ্যাকসন যে গেলেন আর তাঁর খোঁজ নেই। মাস ছয়েক পরে রাস্তায় হঠাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর দেখা হলো। চিকিৎসক তাঁকে ফিরে না আসার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘প্রতি ভিজিটে এক শ ডলারের’ কথা শুনেই মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একজন মদের দোকানের পরিবেশক মাত্র ১০ ডলারে আমাকে রোগমুক্ত করে দিয়েছে। সে আমাকে পরামর্শ দিল, খাটের পায়াগুলো কেটে ফেলতে। আমি তাই করলাম, ফলে আমি এখন রোগমুক্ত।’
শেষ করছি রিডার্স ডাইজেস্ট-এ প্রকাশিত এ–সংক্রান্ত আরেকটি মজার গল্প দিয়ে: মনোব্যাধির চিকিৎসক নতুন রোগীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। ‘আপনি বলছেন আপনি এখানে এসেছেন’, তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘কারণ আপনার পরিবারের সদস্যবৃন্দ আপনার মোজা আসক্তির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন?’ ‘হ্যাঁ তাই’, রোগী প্রত্যুত্তরে বললেন, ‘আমি উলেন মোজা পছন্দ করি।’
‘কিন্তু সেটা তো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক’, চিকিৎসক এবারে বললেন, ‘অনেক লোকই তো তুলা বা নাইলনের মোজার চাইতে উলেন মোজা বেশি পছন্দ করেন। সত্যি বলতে কি, আমার নিজেরও উলেন মোজাই পছন্দ।’
‘তাই নাকি!’ রোগী উল্লসিত হয়ে বলে উঠলেন, ‘তা তেল ও ভিনেগার নাকি শুধু লবণ আর লেবু দিয়ে?’
আতাউর রহমান: রম্যলেখক৷ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক৷
No comments