বসনিয়ায় পরিবর্তনের হাওয়া by মুহাম্মদ খায়রুল বাশার
অদক্ষ সরকারের কারণে বসনিয়া একটি অকার্যকর দেশে পরিণত হয়েছে; এ ধরনের বক্তব্য দেয়া সহজ। প্রকৃতপক্ষে সরকারের অসঙ্গত ও একটি জটিল ব্যবস্থা সত্ত্বেও বসনিয়া সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তবে একে আমরা মোটেই সঠিক ও গতিশীল কাজ বলতে পারছি না। আমরা জানি, ১৯৯৫ সালের এক বিভীষিকাময় যুদ্ধের পর দেশটিতে নতুন সরকার গঠিত হয়েছিল। ইউরোপের বুকে প্রথম একটি মুসলিম দেশ হিসেবে বসনিয়ার অদ্ভ্যুদয় হওয়ার জন্য সেখানকার মুসলমানদের বিরাট মূল্য দিতে হয়েছে। সেখানে সার্ব ও ক্রোট ক্রিশ্চিয়ানরা নিরস্ত্র মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালিয়ে অসংখ্য মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করেছে। বসনিয়ার মুসলিম গণহত্যার কথা স্মরণ হলে এখনো গা শিউরে ওঠে। জাতিসঙ্ঘ ও পশ্চিমাদের ছত্রছায়ায় সেখানে মুসলমানদের ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।
গত ১২ অক্টোবর যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে দেশটিতে কোনো পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। বারবার কয়েক দফা পলিটিক্যাল মিউজিক্যাল চেয়ার পরিবর্তন করে কোনো লাভ হবে না। এ ধরনের প্রয়াস চালানো হবে ভুল। অবশ্য এখন কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুদ্ধ বসনিয়াকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। একটি হচ্ছে সার্ব নিয়ন্ত্রিত রিপাবলিকান (আরএস) এবং অপরটি হচ্ছে ফেডারেশন। মুসলিম এবং ক্রোটদের সমন্বয়ে বসনিয়া ফেডারেশন গঠিত। ফেডারেশন দশটি কেন্টনে বিভক্ত। ফেব্রুয়ারিতে বিুব্ধ দাঙ্গাকারীদের দ্বারা বসনিয়া প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। দাঙ্গাকারীরা রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। গত মে মাসে দেশটি প্রায় পুরোপুরি বন্যায় আক্রান্ত হয়। ব্যাপক এই বন্যায় দেশটির মারাত্মক ক্ষতি হয়। বসনিয়ার বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি হয়ে যাওয়ায় দেশটির অবকাঠামো আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণকাজের জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থ দিতে হয়।
বসনিয়া ফেডারেশনের নির্বাচনে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের ব্যাপক ভরাডুবি হয়। চার বছর ধরে দেশটির রাজনীতিতে তারাই প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছিল। ক্ষমতা এখন বসনিয়ার ন্যাশনালিস্ট পার্টির হাতে। কিন্তু অনেক শহরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভোটাররা সম্পূর্ণভাবে একটি নতুন দলের দিকে ধাবিত হয়েছে। নতুন দলটির নাম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট। এ দলটি আগামী দিনের সরকারে একটি ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরএসের মিলোরাড দোদিক দীর্ঘ দিনের একজন নেতা। তিনি তার সমর্থন হারিয়েছেন। তার বিরোধীরাই এখন জনগণের কাছে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছেন। দোদিক আরএস থেকে চলে যেতে চেয়েছিলেনÑ এটা অবশ্য নতুন সঙ্ঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরএসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহাল থাকবেন। কিন্তু তার দল পরবর্তী সরকার গঠন করতে পারবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তার প্রার্থী বসনিয়ার তিন সদস্যের প্রেসিডেন্সিতে পার্টির আসনটি ম্লাদের আইভানিকের কাছে হারিয়েছিলেন। আইভানিক বসনিয়ার প্রথম দিকে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তার সাথে রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। বসনিয়ার প্রেসিডেন্সির তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাসমিন মোজানোভিচ বলেন, আইভানোভিচের ফিরে আসাটা বিশাল ব্যাপার। এতে বসনিয়ার সার্ব রাজনীতিতে ভাদিচের দীর্ঘ প্রতিপত্তির অবসান ঘটবে।
২০১০ সালে বসনিয়ার নির্বাচনের পর সরকার গঠন করতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল। এখন সরকার গঠন হয়তো দ্রুত হয়ে যেতে পারে। সরকার গঠনের চেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, অংশবিভাজন প্রশ্নে সম্মত করানো। পরিবার এবং বন্ধুদের ভোটের জন্য বিভিন্ন প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিতে হাজার হাজার চাকরিকে পুরস্কার হিসেবে দেখানো হয়েছে।
মাত্র ৩৮ লাখ লোকের ছোট্ট এ দেশটিতে কঠিন সিস্টেমে একটি কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর জন্য এসব চাকরি সংরক্ষিত করে রাখা হয়। বসনিয়ার আজব রাজনৈতিক গঠনের অর্থ হচ্ছে যে, রাজনীতিবিদেরা কোন ধরনের সাংবিধানিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন তা জানা সত্ত্বেও তারা এর সমাধান করতে পারেন না। যেকোনো বড় পরিবর্তনের জন্য প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে চুক্তি হওয়া দরকার। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারে থাকুক বা না থাকুক, তাদের মধ্যে অবশ্যই সমঝোতা প্রয়োজন।
সাধারণ ও কেন্টনাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যেই স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতা ভাগাভাগির ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে আবার দ্রুত স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় নির্বাচন এবং মতামত জরিপ থেকে জানা গেছে, পরিবর্তনই হচ্ছে সবার দাবি। তাই পরিবর্তনের দাবিটি এখন একটি জনপ্রিয় দাবি। দেশটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্থবির হয়ে আছে। বসনিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি পিটার সোরেন সেন বলেছেন, ভালো সংবাদ হচ্ছেÑ বসনিয়ায় পরিবর্তনের প্রয়োজনে অনেক কাজ করা হয়েছে। বসনিয়ার জনগণ দ্রুত পরিবর্তন চায়। নতুন সরকারকে এই জনপ্রিয় দাবিটিকে সামনে রেখে ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
গত ১২ অক্টোবর যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে দেশটিতে কোনো পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। বারবার কয়েক দফা পলিটিক্যাল মিউজিক্যাল চেয়ার পরিবর্তন করে কোনো লাভ হবে না। এ ধরনের প্রয়াস চালানো হবে ভুল। অবশ্য এখন কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুদ্ধ বসনিয়াকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। একটি হচ্ছে সার্ব নিয়ন্ত্রিত রিপাবলিকান (আরএস) এবং অপরটি হচ্ছে ফেডারেশন। মুসলিম এবং ক্রোটদের সমন্বয়ে বসনিয়া ফেডারেশন গঠিত। ফেডারেশন দশটি কেন্টনে বিভক্ত। ফেব্রুয়ারিতে বিুব্ধ দাঙ্গাকারীদের দ্বারা বসনিয়া প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। দাঙ্গাকারীরা রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। গত মে মাসে দেশটি প্রায় পুরোপুরি বন্যায় আক্রান্ত হয়। ব্যাপক এই বন্যায় দেশটির মারাত্মক ক্ষতি হয়। বসনিয়ার বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি হয়ে যাওয়ায় দেশটির অবকাঠামো আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণকাজের জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থ দিতে হয়।
বসনিয়া ফেডারেশনের নির্বাচনে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের ব্যাপক ভরাডুবি হয়। চার বছর ধরে দেশটির রাজনীতিতে তারাই প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছিল। ক্ষমতা এখন বসনিয়ার ন্যাশনালিস্ট পার্টির হাতে। কিন্তু অনেক শহরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভোটাররা সম্পূর্ণভাবে একটি নতুন দলের দিকে ধাবিত হয়েছে। নতুন দলটির নাম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট। এ দলটি আগামী দিনের সরকারে একটি ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরএসের মিলোরাড দোদিক দীর্ঘ দিনের একজন নেতা। তিনি তার সমর্থন হারিয়েছেন। তার বিরোধীরাই এখন জনগণের কাছে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছেন। দোদিক আরএস থেকে চলে যেতে চেয়েছিলেনÑ এটা অবশ্য নতুন সঙ্ঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরএসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহাল থাকবেন। কিন্তু তার দল পরবর্তী সরকার গঠন করতে পারবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তার প্রার্থী বসনিয়ার তিন সদস্যের প্রেসিডেন্সিতে পার্টির আসনটি ম্লাদের আইভানিকের কাছে হারিয়েছিলেন। আইভানিক বসনিয়ার প্রথম দিকে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তার সাথে রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। বসনিয়ার প্রেসিডেন্সির তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাসমিন মোজানোভিচ বলেন, আইভানোভিচের ফিরে আসাটা বিশাল ব্যাপার। এতে বসনিয়ার সার্ব রাজনীতিতে ভাদিচের দীর্ঘ প্রতিপত্তির অবসান ঘটবে।
২০১০ সালে বসনিয়ার নির্বাচনের পর সরকার গঠন করতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল। এখন সরকার গঠন হয়তো দ্রুত হয়ে যেতে পারে। সরকার গঠনের চেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, অংশবিভাজন প্রশ্নে সম্মত করানো। পরিবার এবং বন্ধুদের ভোটের জন্য বিভিন্ন প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিতে হাজার হাজার চাকরিকে পুরস্কার হিসেবে দেখানো হয়েছে।
মাত্র ৩৮ লাখ লোকের ছোট্ট এ দেশটিতে কঠিন সিস্টেমে একটি কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর জন্য এসব চাকরি সংরক্ষিত করে রাখা হয়। বসনিয়ার আজব রাজনৈতিক গঠনের অর্থ হচ্ছে যে, রাজনীতিবিদেরা কোন ধরনের সাংবিধানিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন তা জানা সত্ত্বেও তারা এর সমাধান করতে পারেন না। যেকোনো বড় পরিবর্তনের জন্য প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে চুক্তি হওয়া দরকার। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারে থাকুক বা না থাকুক, তাদের মধ্যে অবশ্যই সমঝোতা প্রয়োজন।
সাধারণ ও কেন্টনাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যেই স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতা ভাগাভাগির ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে আবার দ্রুত স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় নির্বাচন এবং মতামত জরিপ থেকে জানা গেছে, পরিবর্তনই হচ্ছে সবার দাবি। তাই পরিবর্তনের দাবিটি এখন একটি জনপ্রিয় দাবি। দেশটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্থবির হয়ে আছে। বসনিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি পিটার সোরেন সেন বলেছেন, ভালো সংবাদ হচ্ছেÑ বসনিয়ায় পরিবর্তনের প্রয়োজনে অনেক কাজ করা হয়েছে। বসনিয়ার জনগণ দ্রুত পরিবর্তন চায়। নতুন সরকারকে এই জনপ্রিয় দাবিটিকে সামনে রেখে ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
No comments