সংকটে জাতীয় পার্টি, চাপে এরশাদ, ভুল না বুঝতে বিএনপিকে বার্তা by সেলিম জাহিদ
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ
মুহূর্তে আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে
নিজ দলের ভেতরে-বাইরে চাপে পড়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম
এরশাদ।
এ নিয়ে দলের ভেতরে সংকটেরও সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা ইতিমধ্যে এরশাদের কাছে তাঁদের
অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।
জাপার গুরুত্বপূর্ণ তিনজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু নিজ দলেই নয়, একই সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতেও সংকটে পড়েছেন এরশাদ। তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে কয়েক মাস ধরে দর-কষাকষির মহড়া দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর সমর্থনের পরও গাজীপুরে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় তা কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। এ অবস্থায় এরশাদ বার্তাবাহক মারফত বিএনপির শীর্ষস্থানীয় দুজন নেতার কাছে গাজীপুরের বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন। তাতে তিনি শেষ মুহূর্তে বাধ্য হয়ে সরকার-সমর্থিত প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানান এবং এতে বিএনপির নেতারা যেন ভুল না বোঝেন, সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, জাপার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে বড় একটি অংশ অনেক দিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ছেড়ে আসার জন্য এরশাদকে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিল। জ্যেষ্ঠ নেতা কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বে এই অংশে জাপার সভাপতিমণ্ডলীর ৪২ জন সদস্যের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন রয়েছেন। এ অংশটি বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল বলেও প্রচার আছে। চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পরাজয়ের পরও গাজীপুরে সরকারদলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। এই ক্ষোভ এখন দলের মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় দলে ভাঙনের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
এদিকে এরশাদের এ সমর্থন দেওয়ার নেপথ্যে আর্থিক টোপ ও দীর্ঘদিন আটকে থাকা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচারে যাওয়ার ছাড়পত্রের আশ্বাসের বিষয়টি কাজ করেছে বলে দলের ভেতরে আলোচনা আছে। তবে এরশাদ তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, সরকারের প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর চাপ এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের একজন সাবেক নেতা, পুঁজিবাজারে আলোচিত একজন শিল্পপতি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষপর্যায়ের এক কর্মকর্তার অনুরোধে তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দিয়েছেন।
অবশ্য গাজীপুরের নির্বাচনে এরশাদের নির্দেশের বিপরীতে কাজ করেছেন জাপার অধিকাংশ নেতা-কর্মী। তাঁরা বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে কেবল কাজই করেননি, এমনকি দলীয় চেয়ারম্যান এরশাদের নির্দেশ মানতে অপারগতা জানিয়ে বক্তব্যও দেন।
জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁর দল কিছুটা দেরি করে ফেলেছে। এ কারণে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তিনি দাবি করেন, ‘জাপার শেষ মুহূর্তের সমর্থন গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে বড় ধরনের সাহায্য করেছে।’
জাপার সভাপতিমণ্ডলীর প্রভাবশালী এক সদস্য বলেন, এরশাদের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও গাজীপুরে তৃণমূল পর্যায়ে এর সামান্যতম প্রভাবও পড়েনি। বরং যাঁরা নিরপেক্ষ ছিলেন, তাঁরাও বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে নেমে পড়েন। এতে এরশাদ রাজনৈতিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে।
দলটির একাধিক সূত্র জানায়, এ নির্বাচনে মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করার যে নজির দেখিয়েছেন, তাতে আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে কতটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে বা ভবিষ্যতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে কি না, সে আশঙ্কায় গভীর উৎকণ্ঠায় পড়েছেন এরশাদ। তাই তিনি নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ কমাতে গত সোম ও মঙ্গলবার রাজধানীতে দুটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা যে সময় এম এ মান্নানের পক্ষে কাজ করছেন, তখন আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দেওয়ার অর্থ ছিল না। এ সমর্থনের কারণে দলে অনেকের মনে ক্ষোভ রয়েছে।
অবশ্য এরশাদ এখন দলের নেতা-কর্মীদের এই বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন যে তাঁর এই সমর্থনের পেছনে বড় ধরনের রহস্য আছে, যা দলের নেতা-কর্মীরা একদিন দেখতে পাবেন। একই সঙ্গে আবার সরকারবিরোধী কথাবার্তায় জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয় জাপার জনমত জরিপ প্রতিবেদন। নানা দিক থেকে সরকারের জন্য বেশ নেতিবাচক এই জরিপ প্রতিবেদন গাজীপুর নির্বাচনের দুই দিন আগে, অর্থাৎ ৩ জুলাই প্রকাশ করার কথা ছিল।
জানতে চাইলে জাপার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের আগে আরও অনেক ঘটনা ঘটবে। তখন এসব বিষয় আর কেউ মনে রাখবে না।
জাপার আরেকটি সূত্র জানায়, গাজীপুরে ভোট গ্রহণের পরদিনই এরশাদ আস্থাভাজন দলীয় তিন নেতাকে বাসায় ডেকে পাঠান। তিনি মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার অভিপ্রায় জানান। বৈঠকে উপস্থিত থাকা দুজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এখনই মহাজোট না ছেড়ে আরেকটু সময় নেওয়ার জন্য এরশাদকে পরামর্শ দেন। এরপর তিনি ঈদের পর দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন আয়োজন করতে বলেন। ওই সম্মেলনে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিতে এরশাদ আপাতত মনঃস্থির করেছেন বলে সূত্রটি জানায়।
জাপার গুরুত্বপূর্ণ তিনজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু নিজ দলেই নয়, একই সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতেও সংকটে পড়েছেন এরশাদ। তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে কয়েক মাস ধরে দর-কষাকষির মহড়া দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর সমর্থনের পরও গাজীপুরে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় তা কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। এ অবস্থায় এরশাদ বার্তাবাহক মারফত বিএনপির শীর্ষস্থানীয় দুজন নেতার কাছে গাজীপুরের বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন। তাতে তিনি শেষ মুহূর্তে বাধ্য হয়ে সরকার-সমর্থিত প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানান এবং এতে বিএনপির নেতারা যেন ভুল না বোঝেন, সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, জাপার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে বড় একটি অংশ অনেক দিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ছেড়ে আসার জন্য এরশাদকে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিল। জ্যেষ্ঠ নেতা কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বে এই অংশে জাপার সভাপতিমণ্ডলীর ৪২ জন সদস্যের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন রয়েছেন। এ অংশটি বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল বলেও প্রচার আছে। চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পরাজয়ের পরও গাজীপুরে সরকারদলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। এই ক্ষোভ এখন দলের মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় দলে ভাঙনের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
এদিকে এরশাদের এ সমর্থন দেওয়ার নেপথ্যে আর্থিক টোপ ও দীর্ঘদিন আটকে থাকা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচারে যাওয়ার ছাড়পত্রের আশ্বাসের বিষয়টি কাজ করেছে বলে দলের ভেতরে আলোচনা আছে। তবে এরশাদ তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, সরকারের প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর চাপ এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের একজন সাবেক নেতা, পুঁজিবাজারে আলোচিত একজন শিল্পপতি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষপর্যায়ের এক কর্মকর্তার অনুরোধে তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দিয়েছেন।
অবশ্য গাজীপুরের নির্বাচনে এরশাদের নির্দেশের বিপরীতে কাজ করেছেন জাপার অধিকাংশ নেতা-কর্মী। তাঁরা বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে কেবল কাজই করেননি, এমনকি দলীয় চেয়ারম্যান এরশাদের নির্দেশ মানতে অপারগতা জানিয়ে বক্তব্যও দেন।
জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁর দল কিছুটা দেরি করে ফেলেছে। এ কারণে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তিনি দাবি করেন, ‘জাপার শেষ মুহূর্তের সমর্থন গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে বড় ধরনের সাহায্য করেছে।’
জাপার সভাপতিমণ্ডলীর প্রভাবশালী এক সদস্য বলেন, এরশাদের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও গাজীপুরে তৃণমূল পর্যায়ে এর সামান্যতম প্রভাবও পড়েনি। বরং যাঁরা নিরপেক্ষ ছিলেন, তাঁরাও বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে নেমে পড়েন। এতে এরশাদ রাজনৈতিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে।
দলটির একাধিক সূত্র জানায়, এ নির্বাচনে মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করার যে নজির দেখিয়েছেন, তাতে আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে কতটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে বা ভবিষ্যতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে কি না, সে আশঙ্কায় গভীর উৎকণ্ঠায় পড়েছেন এরশাদ। তাই তিনি নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ কমাতে গত সোম ও মঙ্গলবার রাজধানীতে দুটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা যে সময় এম এ মান্নানের পক্ষে কাজ করছেন, তখন আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দেওয়ার অর্থ ছিল না। এ সমর্থনের কারণে দলে অনেকের মনে ক্ষোভ রয়েছে।
অবশ্য এরশাদ এখন দলের নেতা-কর্মীদের এই বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন যে তাঁর এই সমর্থনের পেছনে বড় ধরনের রহস্য আছে, যা দলের নেতা-কর্মীরা একদিন দেখতে পাবেন। একই সঙ্গে আবার সরকারবিরোধী কথাবার্তায় জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয় জাপার জনমত জরিপ প্রতিবেদন। নানা দিক থেকে সরকারের জন্য বেশ নেতিবাচক এই জরিপ প্রতিবেদন গাজীপুর নির্বাচনের দুই দিন আগে, অর্থাৎ ৩ জুলাই প্রকাশ করার কথা ছিল।
জানতে চাইলে জাপার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের আগে আরও অনেক ঘটনা ঘটবে। তখন এসব বিষয় আর কেউ মনে রাখবে না।
জাপার আরেকটি সূত্র জানায়, গাজীপুরে ভোট গ্রহণের পরদিনই এরশাদ আস্থাভাজন দলীয় তিন নেতাকে বাসায় ডেকে পাঠান। তিনি মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার অভিপ্রায় জানান। বৈঠকে উপস্থিত থাকা দুজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এখনই মহাজোট না ছেড়ে আরেকটু সময় নেওয়ার জন্য এরশাদকে পরামর্শ দেন। এরপর তিনি ঈদের পর দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন আয়োজন করতে বলেন। ওই সম্মেলনে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিতে এরশাদ আপাতত মনঃস্থির করেছেন বলে সূত্রটি জানায়।
No comments