গোলাম আযম ও মুজাহিদের বিচারের রায় কবে? by এম বদি-উজ-জামান
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম ও
বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় যেকোনো দিন ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি)
রেখেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলা দুটির
রায় কবে হবে, তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে; যদিও যেকোনো মামলার রায়ের
তারিখ নির্ধারণের এখতিয়ার একমাত্র ট্রাইব্যুনালেরই।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় গত ১৭ এপ্রিল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে সেদিনই রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। কিন্তু এখনো রায় ঘোষিত হয়নি। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখার আদেশ দেন গত ৫ জুন। সেই অপেক্ষারও শেষ হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৬১টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত সাক্ষ্য, ডকুমেন্ট ও আইন পর্যালোচনা করতে গিয়ে এ মামলায় রায় দিতে সময় নিতে হচ্ছে ট্রাইব্যুনালকে। গোলাম আযম স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির ছিলেন। সে সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে যেসব রাজনৈতিক দল সক্রিয় সমর্থন দিয়েছিল তার মধ্যে জামায়াত অন্যতম। রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশে সংঘটিত সব অপরাধের দায় জামায়াতের তখনকার আমির গোলাম আযমের। আইনজীবীদের মতে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে শীর্ষ নেতার দায়দায়িত্ব যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তা এ মামলায় পর্যালোচনা করা বাঞ্ছনীয়। এ কারণে গোলাম আযমের বিচারের রায় দিতে সময় বেশি লাগাটা স্বাভাবিক। আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রথমে সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ, মুজাহিদ আলবদর বাহিনীরও প্রধান ছিলেন। এ কারণে বদরবাহিনীর সব অপরাধের দায় এ নেতার। ফলে এ মামলায়ও ট্রাইব্যুনালকে একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ও আইনের ব্যাখ্যা দেখতে হচ্ছে। এ কারণেই রায় দিতে দেরি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) ড. তুরিন আফরোজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় রায় দিতে অপরাপর মামলার চেয়ে একটু বেশি সময় লাগছে ঠিক। অপরাপর মামলায় দু-তিন সপ্তাহ লেগেছে। এ মালায় আড়াই মাস অতিবাহিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের মতো আমরাও এ রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। কবে রায় দেওয়া হবে, তা নিয়ে সবার আগ্রহ রয়েছে। তবে তাড়াহুড়া করে ভুল রায় দেওয়ার চেয়ে দেরি করে একটি ভালো রায় দেওয়া হলে তা সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে।' তিনি বলেন, গোলাম আযম একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান ছিলেন। দলের প্রধান হিসেবে ওই সময়ের অপরাধের দায়দায়িত্ব তাঁর ওপর বর্তায়। এ কারণে এ ক্ষেত্রে একটি সুচিন্তিত রায় আসা উচিত। এ মামলায় এমন রায় দিতে হবে, যা দেশে ও বিদেশে সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। এটা দিতে গিয়ে আইন ও সব ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করতে হবে। এ জন্য সময় লাগতেই পারে। ট্রাইব্যুনাল যতটা সময় নেওয়া প্রয়োজন মনে করবেন, ততটাই নিতে পারবেন। তাই সময় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল ছাড়া অন্য কারো কোনো কিছু বলার আইনগত অধিকার নেই।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের দেরি করে রায় দেওয়াই উচিত হবে। এ মামলায় রায় দিতে গিয়ে ট্রাইব্যুনালকে অত্যন্ত মনোযোগী হতে হবে। কারণ গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গোটা বাংলাদেশের অপরাধের দায় চাপানো হয়েছে। এ কারণে এ মামলায় আইনের খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করতে হবে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট দেখতে হবে ট্রাইব্যুনালকে। তিনি বলেন, যেকোনো মামলায় রায় দিতে তাড়াহুড়া করা হলে ভুল হওয়ার সুযোগ থাকে। লাইবেরিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপতি চার্চ টেলরের মামলায় রায় অপেক্ষমাণ রাখার এক বছর পর রায় ঘোষণা করা হয়। আর এখানে গোলাম আযমের মামলায় কেবল আড়াই মাস গেছে। এ মামলায় আইনগত কারণেই রায় দিতে দেরি হতে পারে। তিনি বলেন, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মামলায়ও একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায়ও ট্রাইব্যুনালকে সেটা বিবেচনা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, 'কোন মামলায় বিচারে কত দিন লাগবে, তা নির্ধারণ করবেন আদালত। অধ্যাপক গোলাম আযম বা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ সাহেবের বিরুদ্ধে রায় দিতে যতটা সময় নেওয়া প্রয়োজন মনে করবেন, ততটাই নিতে পারেন ট্রাইব্যুনাল।'
প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল কালের কণ্ঠকে বলেন, সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি হিসেবে মুজাহিদের বিচার হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগও রয়েছে। তাই সব কিছু খতিয়ে দেখে ট্রাইব্যুনালকে রায় দিতে দেরি হতেই পারে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয় গত ১৬ এপ্রিল। এর পরদিন ১৭ এপ্রিল গোলাম আযমের মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে গত ৯ মে রায় দেন ২ নম্বর ট্রাইব্যুনাল। এরও আগে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় ২৯ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষ হয় এবং রায় ঘোষণা করা হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। এ ছাড়া জামায়াতের আরেক নেতা আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলায় ১৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়, আর রায় ঘোষণা করা হয় ৫ ফেব্রুয়ারি।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। তিনি সে সময়কার পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির হওয়ায় দলটির অপরাধের দায়ও তাঁর ওপর বর্তিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা দেশে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, এক কোটি মানুষকে দেশান্তরিত করা, হিন্দু সম্প্রদায়কে ধর্মান্তরিত করাসহ মানবতাবিরোধী পাঁচ ধরনের অপরাধে ৬১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা সিরু মিয়া ও তাঁর ছেলেসহ ৩৮ ব্যক্তিকে হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগও আনা হয়েছে। তাঁর কমান্ডেই এ দেশে আলবদর, আলশামস, রাজাকাররা অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ। এসব অভিযোগ প্রমাণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ১০ হাজার পৃষ্ঠার নথি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে।
অন্যদিকে মুজাহিদের বিচার হচ্ছে শহীদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সুরকার আলতাফ মাহমুদসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ সাতটি ঘটনায় ৩৪টি অভিযোগে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কখনো এককভাবে, আবার কখনো দলবদ্ধভাবে সরাসরি অপরাধ সংঘটিত করেন।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় গত ১৭ এপ্রিল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে সেদিনই রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। কিন্তু এখনো রায় ঘোষিত হয়নি। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখার আদেশ দেন গত ৫ জুন। সেই অপেক্ষারও শেষ হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৬১টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত সাক্ষ্য, ডকুমেন্ট ও আইন পর্যালোচনা করতে গিয়ে এ মামলায় রায় দিতে সময় নিতে হচ্ছে ট্রাইব্যুনালকে। গোলাম আযম স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির ছিলেন। সে সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে যেসব রাজনৈতিক দল সক্রিয় সমর্থন দিয়েছিল তার মধ্যে জামায়াত অন্যতম। রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশে সংঘটিত সব অপরাধের দায় জামায়াতের তখনকার আমির গোলাম আযমের। আইনজীবীদের মতে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে শীর্ষ নেতার দায়দায়িত্ব যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তা এ মামলায় পর্যালোচনা করা বাঞ্ছনীয়। এ কারণে গোলাম আযমের বিচারের রায় দিতে সময় বেশি লাগাটা স্বাভাবিক। আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রথমে সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ, মুজাহিদ আলবদর বাহিনীরও প্রধান ছিলেন। এ কারণে বদরবাহিনীর সব অপরাধের দায় এ নেতার। ফলে এ মামলায়ও ট্রাইব্যুনালকে একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ও আইনের ব্যাখ্যা দেখতে হচ্ছে। এ কারণেই রায় দিতে দেরি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) ড. তুরিন আফরোজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় রায় দিতে অপরাপর মামলার চেয়ে একটু বেশি সময় লাগছে ঠিক। অপরাপর মামলায় দু-তিন সপ্তাহ লেগেছে। এ মালায় আড়াই মাস অতিবাহিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের মতো আমরাও এ রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। কবে রায় দেওয়া হবে, তা নিয়ে সবার আগ্রহ রয়েছে। তবে তাড়াহুড়া করে ভুল রায় দেওয়ার চেয়ে দেরি করে একটি ভালো রায় দেওয়া হলে তা সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে।' তিনি বলেন, গোলাম আযম একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান ছিলেন। দলের প্রধান হিসেবে ওই সময়ের অপরাধের দায়দায়িত্ব তাঁর ওপর বর্তায়। এ কারণে এ ক্ষেত্রে একটি সুচিন্তিত রায় আসা উচিত। এ মামলায় এমন রায় দিতে হবে, যা দেশে ও বিদেশে সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। এটা দিতে গিয়ে আইন ও সব ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করতে হবে। এ জন্য সময় লাগতেই পারে। ট্রাইব্যুনাল যতটা সময় নেওয়া প্রয়োজন মনে করবেন, ততটাই নিতে পারবেন। তাই সময় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল ছাড়া অন্য কারো কোনো কিছু বলার আইনগত অধিকার নেই।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের দেরি করে রায় দেওয়াই উচিত হবে। এ মামলায় রায় দিতে গিয়ে ট্রাইব্যুনালকে অত্যন্ত মনোযোগী হতে হবে। কারণ গোলাম আযমের বিরুদ্ধে গোটা বাংলাদেশের অপরাধের দায় চাপানো হয়েছে। এ কারণে এ মামলায় আইনের খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করতে হবে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট দেখতে হবে ট্রাইব্যুনালকে। তিনি বলেন, যেকোনো মামলায় রায় দিতে তাড়াহুড়া করা হলে ভুল হওয়ার সুযোগ থাকে। লাইবেরিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপতি চার্চ টেলরের মামলায় রায় অপেক্ষমাণ রাখার এক বছর পর রায় ঘোষণা করা হয়। আর এখানে গোলাম আযমের মামলায় কেবল আড়াই মাস গেছে। এ মামলায় আইনগত কারণেই রায় দিতে দেরি হতে পারে। তিনি বলেন, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মামলায়ও একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায়ও ট্রাইব্যুনালকে সেটা বিবেচনা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, 'কোন মামলায় বিচারে কত দিন লাগবে, তা নির্ধারণ করবেন আদালত। অধ্যাপক গোলাম আযম বা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ সাহেবের বিরুদ্ধে রায় দিতে যতটা সময় নেওয়া প্রয়োজন মনে করবেন, ততটাই নিতে পারেন ট্রাইব্যুনাল।'
প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল কালের কণ্ঠকে বলেন, সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি হিসেবে মুজাহিদের বিচার হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগও রয়েছে। তাই সব কিছু খতিয়ে দেখে ট্রাইব্যুনালকে রায় দিতে দেরি হতেই পারে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয় গত ১৬ এপ্রিল। এর পরদিন ১৭ এপ্রিল গোলাম আযমের মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে গত ৯ মে রায় দেন ২ নম্বর ট্রাইব্যুনাল। এরও আগে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় ২৯ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষ হয় এবং রায় ঘোষণা করা হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। এ ছাড়া জামায়াতের আরেক নেতা আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলায় ১৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়, আর রায় ঘোষণা করা হয় ৫ ফেব্রুয়ারি।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। তিনি সে সময়কার পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির হওয়ায় দলটির অপরাধের দায়ও তাঁর ওপর বর্তিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা দেশে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, এক কোটি মানুষকে দেশান্তরিত করা, হিন্দু সম্প্রদায়কে ধর্মান্তরিত করাসহ মানবতাবিরোধী পাঁচ ধরনের অপরাধে ৬১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা সিরু মিয়া ও তাঁর ছেলেসহ ৩৮ ব্যক্তিকে হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগও আনা হয়েছে। তাঁর কমান্ডেই এ দেশে আলবদর, আলশামস, রাজাকাররা অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ। এসব অভিযোগ প্রমাণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ১০ হাজার পৃষ্ঠার নথি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে।
অন্যদিকে মুজাহিদের বিচার হচ্ছে শহীদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সুরকার আলতাফ মাহমুদসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ সাতটি ঘটনায় ৩৪টি অভিযোগে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কখনো এককভাবে, আবার কখনো দলবদ্ধভাবে সরাসরি অপরাধ সংঘটিত করেন।
No comments