মুরসি কোথায়?
সেনা অভ্যুত্থানে মিসরের ইতিহাসে প্রথম
নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উচ্ছেদের পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে
গেছে। মুরসি সমর্থকদের আন্দোলন-বিক্ষোভ ও তা দমন প্রচেষ্টার কারণে দেশজুড়ে
চলছে বিশৃঙ্খলা।
কিন্তু মুরসি ঠিক কোথায় আছেন তা কেউ জানে
না। সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারও স্পষ্ট করে বলছে না। শুধু বলছে,
মুরসি নিরাপদে আছেন। যারা মুরসির পক্ষে বিক্ষোভ করছে তাদের দমন করছে কঠোর
হাতে। এমন অবস্থায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ার সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে সেনা সমর্থিত
সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে। অভিযোগ উঠেছে, বিগত সরকারগুলো বিরোধী মত দমনে যা
করেছে বর্তমান সরকারও তাই করে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী ৩ জুলাই মুরসিকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে। সে সময় মুরসিকে তাঁর অন্তত সাতজন ঘনিষ্ঠ নেতাসহ আটক করে তারা। তাঁর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তবে গত বুধবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১১ সালে কারাগার থেকে মুরসির পালানোর ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভিযোগ রয়েছে, মুবারকবিরোধী আন্দোলনের সময় কারাগার থেকে মুরসিসহ অনেকের পালানোর ঘটনায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র হামাস গোষ্ঠীর সহায়তা ছিল। প্রধান আইনজীবী হেশাম বারাকাত এ ব্যাপারে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করছেন।
ধারণা করা হচ্ছিল কায়রোর প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের সদর দপ্তরে মুরসিকে আটক রাখা হয়েছে। গত সোমবার মুরসির রাজনৈতিক দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি ও মূল দল মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকরা ওই সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। সেনাবাহিনী তাদের হটাতে গুলি চালালে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়। ঘটনার পর দেশের পরিস্থিতি চরম অস্থিরতার দিকে মোড় নেয়। সেনা সরকার মুসলিম ব্রাদারহুডের সর্বোচ্চ নেতা মোহাম্মদ বাদিসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
সেনা অভ্যুত্থানের রাতে নিখোঁজ হওয়া মুরসির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর আত্মীয় জানান, ঘটনার রাত থেকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরিবারের কারোর যোগাযোগ নেই। নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আত্মীয় বলেন, গত কয়েক দিনে ফোনে তাঁর সঙ্গে যে কথা হয়েছে তাতে তিনি শুধু বলতে পেরেছেন- 'আমি ঠিক আছি। তাঁরা কোথায় আছেন আমরা জানি না। তাঁদের কারা আটকে রেখেছে বা কয়জনকে আটকে রেখেছে তাও জানি না।' আত্মীয়টি জানান, তাঁরা কয়েক ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু ফোনকল পেয়েছেন। মনে হচ্ছে তাঁরা নিরাপত্তা বাহিনীর লোক। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারে তারা বলেছে কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা যেন না চাওয়া হয়।
সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ আলি গত মঙ্গলবার জানান, মুরসি ও তাঁর সহযোগীদের রিপাবলিকান গার্ড সদর দপ্তর থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তিনি জায়গার নাম বলেননি।
মুসলিম ব্রাদারহুডের মুখপাত্র জেহাদ আল হাদ্দাদ টুইটারে অভিযোগ করেন, দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁদের আন্দোলন বানচালের লক্ষ্যে সরকার এটা করেছে।
তবে সরকারের তরফ থেকে ব্রাদারহুডের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বদর আবদেলাত্তি বলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। যারা সহিংসতায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে শুধু।'
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মোহাম্মদ বাদিসহ ব্রাদারহুডের নেতাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হলেও তাদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।
কর্মকর্তারা বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির একগাদা ভিডিও ফুটেজ তৈরি করেছেন। মুরসিকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে এক কর্মকর্তা উত্তেজিত হয়ে বলেন, 'তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি। কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি তো আপনি দেখছেন! আপনাকে সরকারের নির্দেশ মানতে হবে। এটা কোনো দেশ হলো! সরকারের নির্দেশ কেউ মানছে না।'
বিরোধীদের ওপর বর্তমান সেনা সমর্থিত সরকারের আচরণের সমালোচনা করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। তারা বলছে, বিগত দিনে হোসনি মুবারক বা মুরসি সরকার বিরোধীদের প্রতি যেমন আচরণ করেছে বর্তমান সরকারও তেমনই করছে। আগের সরকারগুলোর সঙ্গে এর কোনো তফাত নেই। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক গবেষক হেবা মোরায়েফ বলেন, 'বিগত কয়েক বছরে মিসরে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে একটি নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে। কিন্তু গত কয়েক দিনের ঘটনায় মনে হচ্ছে, সেই আগের অবস্থাই এখনো চলছে। তাঁর মতে, মুবারকের আমলে ব্রাদারহুডের নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হতো নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হওয়ার কারণে। আর এখন হচ্ছে সহিংসতায় মদদ দেওয়ার অভিযোগে। চালাকিটা এখানেই।
তিনি জানান, কারো কারো বিরুদ্ধে হয়তো অভিযোগের প্রমাণ দাঁড় করানো যাবে; কিন্তু বেশির ভাগের বিরুদ্ধেই করা যাবে না। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।
সেনাবাহিনী ৩ জুলাই মুরসিকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে। সে সময় মুরসিকে তাঁর অন্তত সাতজন ঘনিষ্ঠ নেতাসহ আটক করে তারা। তাঁর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তবে গত বুধবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১১ সালে কারাগার থেকে মুরসির পালানোর ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভিযোগ রয়েছে, মুবারকবিরোধী আন্দোলনের সময় কারাগার থেকে মুরসিসহ অনেকের পালানোর ঘটনায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র হামাস গোষ্ঠীর সহায়তা ছিল। প্রধান আইনজীবী হেশাম বারাকাত এ ব্যাপারে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করছেন।
ধারণা করা হচ্ছিল কায়রোর প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের সদর দপ্তরে মুরসিকে আটক রাখা হয়েছে। গত সোমবার মুরসির রাজনৈতিক দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি ও মূল দল মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকরা ওই সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। সেনাবাহিনী তাদের হটাতে গুলি চালালে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়। ঘটনার পর দেশের পরিস্থিতি চরম অস্থিরতার দিকে মোড় নেয়। সেনা সরকার মুসলিম ব্রাদারহুডের সর্বোচ্চ নেতা মোহাম্মদ বাদিসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
সেনা অভ্যুত্থানের রাতে নিখোঁজ হওয়া মুরসির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর আত্মীয় জানান, ঘটনার রাত থেকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরিবারের কারোর যোগাযোগ নেই। নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আত্মীয় বলেন, গত কয়েক দিনে ফোনে তাঁর সঙ্গে যে কথা হয়েছে তাতে তিনি শুধু বলতে পেরেছেন- 'আমি ঠিক আছি। তাঁরা কোথায় আছেন আমরা জানি না। তাঁদের কারা আটকে রেখেছে বা কয়জনকে আটকে রেখেছে তাও জানি না।' আত্মীয়টি জানান, তাঁরা কয়েক ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু ফোনকল পেয়েছেন। মনে হচ্ছে তাঁরা নিরাপত্তা বাহিনীর লোক। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারে তারা বলেছে কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা যেন না চাওয়া হয়।
সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ আলি গত মঙ্গলবার জানান, মুরসি ও তাঁর সহযোগীদের রিপাবলিকান গার্ড সদর দপ্তর থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তিনি জায়গার নাম বলেননি।
মুসলিম ব্রাদারহুডের মুখপাত্র জেহাদ আল হাদ্দাদ টুইটারে অভিযোগ করেন, দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁদের আন্দোলন বানচালের লক্ষ্যে সরকার এটা করেছে।
তবে সরকারের তরফ থেকে ব্রাদারহুডের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বদর আবদেলাত্তি বলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। যারা সহিংসতায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে শুধু।'
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মোহাম্মদ বাদিসহ ব্রাদারহুডের নেতাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হলেও তাদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।
কর্মকর্তারা বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির একগাদা ভিডিও ফুটেজ তৈরি করেছেন। মুরসিকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে এক কর্মকর্তা উত্তেজিত হয়ে বলেন, 'তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি। কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি তো আপনি দেখছেন! আপনাকে সরকারের নির্দেশ মানতে হবে। এটা কোনো দেশ হলো! সরকারের নির্দেশ কেউ মানছে না।'
বিরোধীদের ওপর বর্তমান সেনা সমর্থিত সরকারের আচরণের সমালোচনা করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। তারা বলছে, বিগত দিনে হোসনি মুবারক বা মুরসি সরকার বিরোধীদের প্রতি যেমন আচরণ করেছে বর্তমান সরকারও তেমনই করছে। আগের সরকারগুলোর সঙ্গে এর কোনো তফাত নেই। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক গবেষক হেবা মোরায়েফ বলেন, 'বিগত কয়েক বছরে মিসরে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে একটি নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে। কিন্তু গত কয়েক দিনের ঘটনায় মনে হচ্ছে, সেই আগের অবস্থাই এখনো চলছে। তাঁর মতে, মুবারকের আমলে ব্রাদারহুডের নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হতো নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হওয়ার কারণে। আর এখন হচ্ছে সহিংসতায় মদদ দেওয়ার অভিযোগে। চালাকিটা এখানেই।
তিনি জানান, কারো কারো বিরুদ্ধে হয়তো অভিযোগের প্রমাণ দাঁড় করানো যাবে; কিন্তু বেশির ভাগের বিরুদ্ধেই করা যাবে না। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।
No comments