পবিত্র কোরআনের আলো-সব সময় সিজদা একমাত্র আল্লাহর তরে
১০০. ওয়া রাফা'আ আবাওয়াইহি 'আলাল 'আরশি
ওয়া খাররূ লাহূ সুজ্জাদান, ওয়া কা-লা য়া--- আবাতি হা-যা তা'বীলু রু'ইয়ায়া
মিন কাবলু, কাদ জা'আলাহা- রাব্বী হাক্কান, ওয়া কাদ আহসানা বী--- ইয
আখরাজানী মিনাস সিজনি ওয়া জা----আ বিকুম মিনাল
বাদভি, মিম
বা'দি আন নাযা'আশ শাইতা-নু বাইনী ওয়া বাইনা ইখওয়াতী, ইন্না রাব্বী লাতীফুল
লিমা- য়াশা----উ, ইন্নাহূ হুওয়াল 'আলীমুল হাকীমু। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ১০০. এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনে বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সিজদাবনত হলো।* তিনি বললেন, পিতাজি, এ হলো আমার ইতিপূর্বে দেখা স্বপ্নের বর্ণনা। আমার রব একে সত্যে পরিণত করেছেন। তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমাকে কারাগার থেকে বের করেছেন। শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করার পরও আপনাদের গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন। আমার রব যা চান, কৌশলে তা সম্পন্ন করেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।*
তাফসির : * ইউসুফ (আ.)-এর পিতা-মাতা এবং সব ভাই তাঁর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, 'কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনসূচক এ সিজদাটি ইউসুফ (আ.)-এর উদ্দেশে ছিল না, তা ছিল আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশেই।' তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, উপাসনামূলক সিজদা প্রত্যেক নবী-রাসুলের শরিয়তেই একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য যেকোনো কিছুর উদ্দেশেই অবৈধ ছিল। তবে সম্মানসূচক সিজদা পূর্ববর্তী বিভিন্ন নবী-রাসুলের শরিয়তে বৈধ ছিল। এটি শিরকের সিঁড়ি হওয়ার কারণে ইসলামী শরিয়তে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা বৈধ নয়। স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করার কথা বলে ইউসুফ (আ.)-এর শৈশবে দেখা স্বপ্নের কথা বোঝানো হয়েছে। স্বপ্নে দেখা চন্দ্র-সূর্য বলে পিতা-মাতা এবং ১১টি তারকা বলে ১১ ভাইকে বোঝানো হয়েছে। স্বপ্নের ব্যাখ্যা বাস্তবে চোখে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করলেন।
* চিন্তাশীল পাঠকরা এখানে একটু ভাবুন। ইউসুফ (আ.) পিতা-মাতা ও পরিবারের লোকজনকে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কাছে পেয়েই অতীতের স্মৃতিচারণা শুরু করলেন। তাঁর অতীত জীবন তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমত, ভাইদের অত্যাচার ও হত্যাচেষ্টা। দ্বিতীয়ত, পিতা-মাতার কাছ থেকে দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদ। তৃতীয়ত, কারাগারের কষ্ট। ইউসুফ (আ.) সেই অতীত বর্ণনায় ঘটনার ধারাবাহিকতা বদলে শেষের অধ্যায় দিয়েই শুরু করেছেন। প্রতিটি পর্বে তিনি আল্লাহ তায়ালার নিয়ামত ও অনুগ্রহের কথা আবিষ্কার করে তাঁর শুকরিয়া আদায় করেছেন। যেমন- কারাগারে কেন গেলেন, কী কষ্ট করলেন, তা উল্লেখ না করে কারাগার থেকে মুক্তিলাভের কথা বলেছেন। এখানে কৌশলে তাঁদের জানাচ্ছেন, তিনি কারাবরণও করেছিলেন। ভাইয়েরা তাঁকে কূপে নিক্ষেপ করে হত্যাচেষ্টা করেছিল। আগেই তিনি তাদের ক্ষমা করে দেওয়ায় সে কথা উল্লেখই করেননি। দীর্ঘ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে তিনি শয়তানকে দোষারোপ করলেন। পিতাকে সম্বোধন করে বললেন, আল্লাহ আপনাকে গ্রাম থেকে মিসরে নিয়ে এসেছেন। ইয়াকুব (আ.)-এর বাসভূমি কেনান ছিল অনুন্নত গ্রাম এবং সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপনের সুযোগ-সুবিধা কম ছিল। শহুরে জীবনের অধিকারী করায় আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা হলো। এগুলোই নবী-রাসুলদের শান ও মহান বৈশিষ্ট্য।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ১০০. এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনে বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সিজদাবনত হলো।* তিনি বললেন, পিতাজি, এ হলো আমার ইতিপূর্বে দেখা স্বপ্নের বর্ণনা। আমার রব একে সত্যে পরিণত করেছেন। তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমাকে কারাগার থেকে বের করেছেন। শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করার পরও আপনাদের গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন। আমার রব যা চান, কৌশলে তা সম্পন্ন করেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।*
তাফসির : * ইউসুফ (আ.)-এর পিতা-মাতা এবং সব ভাই তাঁর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, 'কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনসূচক এ সিজদাটি ইউসুফ (আ.)-এর উদ্দেশে ছিল না, তা ছিল আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশেই।' তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, উপাসনামূলক সিজদা প্রত্যেক নবী-রাসুলের শরিয়তেই একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য যেকোনো কিছুর উদ্দেশেই অবৈধ ছিল। তবে সম্মানসূচক সিজদা পূর্ববর্তী বিভিন্ন নবী-রাসুলের শরিয়তে বৈধ ছিল। এটি শিরকের সিঁড়ি হওয়ার কারণে ইসলামী শরিয়তে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা বৈধ নয়। স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করার কথা বলে ইউসুফ (আ.)-এর শৈশবে দেখা স্বপ্নের কথা বোঝানো হয়েছে। স্বপ্নে দেখা চন্দ্র-সূর্য বলে পিতা-মাতা এবং ১১টি তারকা বলে ১১ ভাইকে বোঝানো হয়েছে। স্বপ্নের ব্যাখ্যা বাস্তবে চোখে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করলেন।
* চিন্তাশীল পাঠকরা এখানে একটু ভাবুন। ইউসুফ (আ.) পিতা-মাতা ও পরিবারের লোকজনকে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কাছে পেয়েই অতীতের স্মৃতিচারণা শুরু করলেন। তাঁর অতীত জীবন তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমত, ভাইদের অত্যাচার ও হত্যাচেষ্টা। দ্বিতীয়ত, পিতা-মাতার কাছ থেকে দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদ। তৃতীয়ত, কারাগারের কষ্ট। ইউসুফ (আ.) সেই অতীত বর্ণনায় ঘটনার ধারাবাহিকতা বদলে শেষের অধ্যায় দিয়েই শুরু করেছেন। প্রতিটি পর্বে তিনি আল্লাহ তায়ালার নিয়ামত ও অনুগ্রহের কথা আবিষ্কার করে তাঁর শুকরিয়া আদায় করেছেন। যেমন- কারাগারে কেন গেলেন, কী কষ্ট করলেন, তা উল্লেখ না করে কারাগার থেকে মুক্তিলাভের কথা বলেছেন। এখানে কৌশলে তাঁদের জানাচ্ছেন, তিনি কারাবরণও করেছিলেন। ভাইয়েরা তাঁকে কূপে নিক্ষেপ করে হত্যাচেষ্টা করেছিল। আগেই তিনি তাদের ক্ষমা করে দেওয়ায় সে কথা উল্লেখই করেননি। দীর্ঘ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে তিনি শয়তানকে দোষারোপ করলেন। পিতাকে সম্বোধন করে বললেন, আল্লাহ আপনাকে গ্রাম থেকে মিসরে নিয়ে এসেছেন। ইয়াকুব (আ.)-এর বাসভূমি কেনান ছিল অনুন্নত গ্রাম এবং সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপনের সুযোগ-সুবিধা কম ছিল। শহুরে জীবনের অধিকারী করায় আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা হলো। এগুলোই নবী-রাসুলদের শান ও মহান বৈশিষ্ট্য।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments