পদ্মার ভয়াল গ্রাসে ভূখণ্ড হারাবে বাংলাদেশ by রফিকুল ইসলাম
রাজশাহীর পবা উপজেলার সীমান্তঘেঁষা একটি
এলাকা চরখানপুর। এলাকাবাসী বলে চরতারানগর। চরখানপুর থেকে প্রায় দেড়
কিলোমিটার উত্তরে ছিল চরতারানগর। সেটি এখন আর নেই- পাঁচ-সাত বছর আগে নদীতে
বিলীন হয়ে গেছে।
তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)
চরখানপুর বিওপি ক্যাম্পটি থাকায় চরতারানগর এখন চরখানপুর নামেই পরিচিত। এই
ক্যাম্প থেকে মাত্র ৬০ মিটার দূরে চলছে পদ্মার ভাঙন। আর পাঁচ-সাত শ মিটার
দূরেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চরখানপুর থেকে চরখিদিরপুর
পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা অচিরেই বিলীন হবে নদীতে। তখন
আন্তর্জাতিক নদীশাসন আইন অনুযায়ী এই জলভাগের অর্ধেক দাবি করে বসবে ভারত।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিজিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ নিয়ে তাঁদের
উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন।
সরেজমিন গত বুধবার চরখানপুর ও চরখিদিরপুর সীমান্ত এলাকা ঘুরে পদ্মার গ্রাসের ভয়াল দৃশ্য দেখা যায়। পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ্জাকুল ইসলামের উদ্যোগে এবং বিজিবির স্পিড বোটে চড়ে পদ্মার ভাঙন দৃশ্য দেখতে যাওয়া সাংবাদিক দলের সঙ্গে ছিলেন ইউএনও রাজ্জাকুল ইসলাম, বিজিবির কম্পানি কমান্ডার ডিএডি রিয়াজ উদ্দিন, স্থানীয় হরিয়ান ইউপি চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বাচ্চু ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে ভেঙে গেছে ২৪ মিটার এলাকা। সেই সঙ্গে নদীতে চলে গেছে অন্তত ২০০ বাড়িঘর, অসংখ্যা গাছপালা ও ফসলি জমি। খানপুর বিওপির পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে ঠায় নিয়েছে অন্তত সাড়ে ছয় হাজার মানুষ।
ষাটোর্ধ্ব হাসেম আলী প্রমত্তা পদ্মার দিকে আঙুল তুলে সাংবাদিকদের বলেন, 'ওইখানে (প্রায় ৫০ মিটার দূরে) আমার বাড়ি ছিল। দিন পনের আগে ভেঙে গেছে। এখন আমার আর কিছু নাই। পরের জায়গাতে বাড়ি তুলেছি ধারদেনা করে। কিন্তু সে বাড়িও ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে কি না কে জানে।' হাফিজুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি জানান, কয়েক দিনের ভাঙনে তাঁর বাড়িসহ ওই এলাকার ফাইজাল, তাফাজ উদ্দিন, হাচেন আলী, আয়েনুদ্দিন, হাসেন আলী, আজাদ আলীর ঘরদোর চলে গেছে নদীতে। এভাবে গত ১৫ দিনে চরখানপুর এলাকার অন্তত ২০০ বাড়ি বিলীন হয়েছে। কয়েকজনের নৌকাও মাটিচাপা পড়েছে।
বিওপি কমান্ডার খলিলুর রহমান জানান, ১৯৯৯ সালে এ ক্যাম্পটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখান থেকে ভাঙন মাত্র ৬০ মিটার দূরে। তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন, ভাঙন আসন্ন হলে মালামাল সরিয়ে নিয়ে চরতারানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেবেন। তিনি জানান, এরই মধ্যে ওই বিওপি এলাকায় অবস্থিত তিনটি সীমানা পিলারের দুটি নদীতে চলে গেছে। সেগুলো হলো ১৬৪ ও ১৬৫ নম্বর পিলার। এখন বাকি আছে ১৬৩ নম্বর পিলার। এটিসহ চরখানপুর এলাকা যেকোনো দিন ভেঙে যেতে পারে। তখন ভিটেমাটি হারাবে প্রায় তিন হাজার মানুষ।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, চরখানপুর বিওপি ক্যাম্প ও চরখিদিরপুর ক্যাম্পসহ এই চর এলাকাটি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। তখন আন্তর্জাতিক নদীশাসন বিধি অনুুযায়ী এই তিন-চার বর্গকিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে যাবে।
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, রাজশাহীর সীমান্ত এলাকায় তিনটি বিওপি ক্যাম্প রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে চারখানপুর বিওপিটি। তার পরেই রয়েছে চরখিদিরপুর বিওপি। এই দুটি বিওপি এলাকা নদীগর্ভে চলে গেলে দেশ যে পরিমাণ ভূমি হারাবে তা আর উদ্ধার করা যাবে না। পুরো দখলে যাবে ভারতের। তাই এখনই জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে।'
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-উর-রশিদ বলেন, এখানে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ মিটার এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। পাশেই পদ্মার গভীরতা তিন থেকে সাত মিটার বলে ভাঙন রোধ করাও কঠিন হয়েছে। তারপরও পাউবো বিকল্প উপায় নিয়ে ভাবছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।'
সরেজমিন গত বুধবার চরখানপুর ও চরখিদিরপুর সীমান্ত এলাকা ঘুরে পদ্মার গ্রাসের ভয়াল দৃশ্য দেখা যায়। পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ্জাকুল ইসলামের উদ্যোগে এবং বিজিবির স্পিড বোটে চড়ে পদ্মার ভাঙন দৃশ্য দেখতে যাওয়া সাংবাদিক দলের সঙ্গে ছিলেন ইউএনও রাজ্জাকুল ইসলাম, বিজিবির কম্পানি কমান্ডার ডিএডি রিয়াজ উদ্দিন, স্থানীয় হরিয়ান ইউপি চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বাচ্চু ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে ভেঙে গেছে ২৪ মিটার এলাকা। সেই সঙ্গে নদীতে চলে গেছে অন্তত ২০০ বাড়িঘর, অসংখ্যা গাছপালা ও ফসলি জমি। খানপুর বিওপির পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে ঠায় নিয়েছে অন্তত সাড়ে ছয় হাজার মানুষ।
ষাটোর্ধ্ব হাসেম আলী প্রমত্তা পদ্মার দিকে আঙুল তুলে সাংবাদিকদের বলেন, 'ওইখানে (প্রায় ৫০ মিটার দূরে) আমার বাড়ি ছিল। দিন পনের আগে ভেঙে গেছে। এখন আমার আর কিছু নাই। পরের জায়গাতে বাড়ি তুলেছি ধারদেনা করে। কিন্তু সে বাড়িও ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে কি না কে জানে।' হাফিজুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি জানান, কয়েক দিনের ভাঙনে তাঁর বাড়িসহ ওই এলাকার ফাইজাল, তাফাজ উদ্দিন, হাচেন আলী, আয়েনুদ্দিন, হাসেন আলী, আজাদ আলীর ঘরদোর চলে গেছে নদীতে। এভাবে গত ১৫ দিনে চরখানপুর এলাকার অন্তত ২০০ বাড়ি বিলীন হয়েছে। কয়েকজনের নৌকাও মাটিচাপা পড়েছে।
বিওপি কমান্ডার খলিলুর রহমান জানান, ১৯৯৯ সালে এ ক্যাম্পটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখান থেকে ভাঙন মাত্র ৬০ মিটার দূরে। তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন, ভাঙন আসন্ন হলে মালামাল সরিয়ে নিয়ে চরতারানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেবেন। তিনি জানান, এরই মধ্যে ওই বিওপি এলাকায় অবস্থিত তিনটি সীমানা পিলারের দুটি নদীতে চলে গেছে। সেগুলো হলো ১৬৪ ও ১৬৫ নম্বর পিলার। এখন বাকি আছে ১৬৩ নম্বর পিলার। এটিসহ চরখানপুর এলাকা যেকোনো দিন ভেঙে যেতে পারে। তখন ভিটেমাটি হারাবে প্রায় তিন হাজার মানুষ।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, চরখানপুর বিওপি ক্যাম্প ও চরখিদিরপুর ক্যাম্পসহ এই চর এলাকাটি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। তখন আন্তর্জাতিক নদীশাসন বিধি অনুুযায়ী এই তিন-চার বর্গকিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে যাবে।
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, রাজশাহীর সীমান্ত এলাকায় তিনটি বিওপি ক্যাম্প রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে চারখানপুর বিওপিটি। তার পরেই রয়েছে চরখিদিরপুর বিওপি। এই দুটি বিওপি এলাকা নদীগর্ভে চলে গেলে দেশ যে পরিমাণ ভূমি হারাবে তা আর উদ্ধার করা যাবে না। পুরো দখলে যাবে ভারতের। তাই এখনই জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে।'
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-উর-রশিদ বলেন, এখানে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ মিটার এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। পাশেই পদ্মার গভীরতা তিন থেকে সাত মিটার বলে ভাঙন রোধ করাও কঠিন হয়েছে। তারপরও পাউবো বিকল্প উপায় নিয়ে ভাবছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।'
No comments