নাট্যকর্মীর ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ by জাহিদ রিপন
‘নাট্যকর্মীরা,
সবাই চেয়ার ছাড়ো, শিল্পীদের বসতে দাও’—১৯৮৫ থেকে যখন আমি ফরিদপুরে সুনিয়ম
নাট্যচক্রে নিয়মিত গ্রুপ থিয়েটার নাট্যচর্চা শুরু করি এবং জাতীয় নানা দিবসে
গভীর অনুরাগে স্বাধীনতা চত্বর অথবা অম্বিকা ময়দানে পথনাট্য মঞ্চায়নে সমবেত
হই, সে সময় দর্শকসারিতে উপবিষ্ট হলে এই ছিল হঠাৎ হঠাৎ আমাদের প্রতি
কর্তৃপক্ষের নির্দেশ। শিল্পী কারা? যাঁরা ওই অনুষ্ঠানে নৃত্য অথবা সংগীত
পরিবেশনে উপস্থিত হয়েছেন। আর আমরা তো শিল্পী নই, শুধুই কর্মী। তখন
প্রকৃতপক্ষেই ওই অল্প বয়সে আমার মস্তিষ্কে এ বিশ্বাস প্রায় স্থায়ী হয়ে যেতে
বসেছিল যে ‘নাট্যচর্চাকারী’ আর ‘শিল্পী’ ভিন্ন জিনিস অথবা নাট্যকর্মী
কখনোই শিল্পীর মর্যাদা পায় না। তৎকালীন সরকারের নাট্যকর্মীর প্রতি সাক্ষাৎ
বিমাতাসুলভ আচরণও হয়তো বা আমার এ ধারণার নেপথ্য-নির্মাণে সক্রিয় ছিল।
এমনই হতাশার কালে হঠাৎ একদিন আমি একটি দিবসের কথা শুনতে পাই, বিশ্ব নাট্য দিবস। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তো নাট্যকর্মী হয়ে কেবল নিন্দার্হই হয়েছি, সেখানে নাট্যকর্মীর জন্য একান্তভাবে একটি বিশেষ দিবস? আবার তা নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ইউনেসকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই)! এই প্রথম আমি আইটিআইয়ের নাম শুনলাম। পরিষ্কার মনে আছে, আমার অন্তরে তখন এমন অনুভূতির উদয় হয়েছিল যে নাট্যকর্মীর সম্মান কেবল আমাদের দেশের প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী নয়, বরং সারা বিশ্বে সমুন্নত মর্যাদায় আগেই নির্ধারিত হয়েছে। এই আত্মবিশ্বাস আমার অন্তরের সব দ্বিধা দূর করে একনিষ্ঠভাবে নাট্যকর্মের প্রেরণা জুগিয়েছিল (যদিও পরে জানতে পেরেছি—‘পঞ্চম বেদ’খ্যাত প্রাচ্যের সুপ্রাচীন নাট্যবিষয়ক প্রামাণ্যগ্রন্থ ভরত নাট্যশাস্ত্রর প্রণেতা ভরত কর্তৃক বর্ণিত সেই অমোঘ বাণী—পৃথিবীর সব জ্ঞান, সব শিল্প, সব কৌশল এবং সব কর্মের মিলিত শিল্পরূপই হচ্ছে নাটক! অতএব, নাট্যকর্মীরা শিল্পী নাকি শিল্পীর অধিক শিল্পী সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়েছে প্রশ্নাতীতভাবে)।
পরে বিশ্ব নাট্য দিবস সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানতে পারি যে ইউনেসকোর উদ্যোগে এবং বিশ্বের কয়েকজন স্বনামখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের সক্রিয় ভূমিকায় ১৯৪৮ সালে প্রাগে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট গঠিত হয়। পরিবেশনা শিল্পের (পারফর্মিং আর্টস) ক্ষেত্রে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আন্তর্জাতিক বিনিময় বাড়ানো, নাটকের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতা ও সহযোগিতাকে উৎসাহ দেওয়া, উন্নয়নে সংস্কৃতির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনমত সৃষ্টি, পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৌভ্রাতৃত্ব ও শান্তি নিশ্চিত করা, ইউনেসকোর উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা দান, সর্বপ্রকার বর্ণ-সামাজিক-রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করা প্রভৃতি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেই আইটিআই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯৬১ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের নবম বিশ্ব কংগ্রেসে আইটিআই, ফিনল্যান্ড কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনকে বিশ্ব নাট্য দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৬২ সালে আইটিআইয়ের প্যারিসে অনুষ্ঠিত থিয়েটার অব নেশনসের উদ্বোধনী তারিখ ছিল ২৭ মার্চ। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এ দিনকেই বিশ্ব নাট্য দিবস পালনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতিবছর ২৭ মার্চ বিশেষ মর্যাদা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সারা বিশ্বে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দিবস উদ্যাপিত হয়ে আসছে।
নাট্যকর্মীদের দীর্ঘ নাট্য-আন্দোলনের উজ্জ্বলতর অর্জন এ দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৬২ সাল থেকে পালিত হলেও ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আইটিআইয়ের সহযোগী সদস্যপদ পাওয়ার পর ১৯৮২ সালে এখানে বিশ্ব নাট্য দিবস উদ্যাপন শুরু হয়। আইটিআই প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যগুলো অর্জনের উদ্দেশ্যে নতুন প্রত্যয়ে দৃপ্তমান হওয়ার জন্যই প্রকৃতপক্ষে বিশ্ব নাট্য দিবস পালন করা হয়। নাট্য তথা পরিবেশনাশিল্পের মাধ্যমে মানবিক সম্পর্কের উন্নয়ন, নাট্যকর্মীদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহমর্মিতা বাড়ানো এবং নাট্যকর্মীর সঙ্গে দর্শকের সম্পর্ক জোরদার করার মধ্যেই প্রকৃতপক্ষে এ দিবসটি পালনের সার্থকতা নিহিত। নাট্যকর্মী মাত্রই তো ধর্ম-বর্ণ-সংস্কৃতি-ভাষা-ভূগোলের গণ্ডিমুক্ত হয়ে সর্বদেশের নাট্যকর্মী-নাট্যানুরাগীর আত্মার আত্মীয় হতে প্রত্যাশী, এ দিবসটি প্রকৃতই তাদের সামনে সে সুযোগ নিয়ে উপস্থিত হয়। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার আইটিআই, বিশ্বকেন্দ্রের বর্তমান নির্বাচিত সভাপতি। এটি নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নাট্য তথা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আমাদের সর্বাপেক্ষা বড় অর্জন।
প্রথা অনুযায়ী, এ বছর ‘মানবতার কল্যাণে থিয়েটার’ শিরোনামে বিশ্ব নাট্য দিবসের আন্তর্জাতিক বাণী দিয়েছেন উগান্ডার নাট্যকার, অভিনেত্রী, নির্দেশক ও ম্যাকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জেসিকা এ কাওয়া। বাণীতে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই যেসব মূল্যবোধ পোষণ করি এবং যা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি, থিয়েটার সেসব ধারণা প্রসার ও জোরদারকরণে পরীক্ষিত উপায় হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে...।’
নাট্যকর্মী হিসেবে একটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা: চাকরির বাজারে অনেকখানি নিশ্চয়তা প্রদান করে এমন একটি বিষয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আমি যখন নাট্যানুরাগে সেটি পরিত্যাগ করে ১৯৯০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হই, তখন আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিমূঢ় জননীকে প্রতিবেশী এক প্রকৌশলী বলেছিলেন, ‘মন খারাপ করে আর কী করবেন, কেউ দুধ বেচে মদ খায় আর কেউ...।’ তারপর দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও সাধারণ মানুষের অনুরূপ ধারণার খুব বেশি কি পরিবর্তন হয়েছে? বিশ্ব নাট্য দিবস আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে উদ্যাপনের মাধ্যমে তাই এসব নেতিবাচকতার বিপরীতে নাট্যকর্মী-নাট্যানুরাগীদের অবশ্যই সর্বোচ্চ একাত্মতা আর ইতিবাচকতার শক্তিতে উজ্জ্বল হতে হবে।
বিশ্ব নাট্য দিবসের এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নিবেদিতপ্রাণ সব নাট্যকর্মী ও নাট্যানুরাগী দর্শককে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। চলে আসুন আজ বিকেল চারটায় মহিলা সমিতিতে। এখান থেকে নাট্যকর্মীদের আনন্দ শোভাযাত্রা পৌঁছাবে জাতীয় নাট্যশালায়। সেখানে অনুষ্ঠানমালায় থাকছে প্রীতি সম্মিলনী, আলোচনা, বিশ্ব নাট্য দিবস বক্তব্য, সম্মাননা প্রদান আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এমনই হতাশার কালে হঠাৎ একদিন আমি একটি দিবসের কথা শুনতে পাই, বিশ্ব নাট্য দিবস। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তো নাট্যকর্মী হয়ে কেবল নিন্দার্হই হয়েছি, সেখানে নাট্যকর্মীর জন্য একান্তভাবে একটি বিশেষ দিবস? আবার তা নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ইউনেসকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই)! এই প্রথম আমি আইটিআইয়ের নাম শুনলাম। পরিষ্কার মনে আছে, আমার অন্তরে তখন এমন অনুভূতির উদয় হয়েছিল যে নাট্যকর্মীর সম্মান কেবল আমাদের দেশের প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী নয়, বরং সারা বিশ্বে সমুন্নত মর্যাদায় আগেই নির্ধারিত হয়েছে। এই আত্মবিশ্বাস আমার অন্তরের সব দ্বিধা দূর করে একনিষ্ঠভাবে নাট্যকর্মের প্রেরণা জুগিয়েছিল (যদিও পরে জানতে পেরেছি—‘পঞ্চম বেদ’খ্যাত প্রাচ্যের সুপ্রাচীন নাট্যবিষয়ক প্রামাণ্যগ্রন্থ ভরত নাট্যশাস্ত্রর প্রণেতা ভরত কর্তৃক বর্ণিত সেই অমোঘ বাণী—পৃথিবীর সব জ্ঞান, সব শিল্প, সব কৌশল এবং সব কর্মের মিলিত শিল্পরূপই হচ্ছে নাটক! অতএব, নাট্যকর্মীরা শিল্পী নাকি শিল্পীর অধিক শিল্পী সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়েছে প্রশ্নাতীতভাবে)।
পরে বিশ্ব নাট্য দিবস সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানতে পারি যে ইউনেসকোর উদ্যোগে এবং বিশ্বের কয়েকজন স্বনামখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের সক্রিয় ভূমিকায় ১৯৪৮ সালে প্রাগে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট গঠিত হয়। পরিবেশনা শিল্পের (পারফর্মিং আর্টস) ক্ষেত্রে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আন্তর্জাতিক বিনিময় বাড়ানো, নাটকের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতা ও সহযোগিতাকে উৎসাহ দেওয়া, উন্নয়নে সংস্কৃতির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনমত সৃষ্টি, পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৌভ্রাতৃত্ব ও শান্তি নিশ্চিত করা, ইউনেসকোর উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা দান, সর্বপ্রকার বর্ণ-সামাজিক-রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করা প্রভৃতি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেই আইটিআই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯৬১ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের নবম বিশ্ব কংগ্রেসে আইটিআই, ফিনল্যান্ড কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনকে বিশ্ব নাট্য দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৬২ সালে আইটিআইয়ের প্যারিসে অনুষ্ঠিত থিয়েটার অব নেশনসের উদ্বোধনী তারিখ ছিল ২৭ মার্চ। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এ দিনকেই বিশ্ব নাট্য দিবস পালনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতিবছর ২৭ মার্চ বিশেষ মর্যাদা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সারা বিশ্বে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দিবস উদ্যাপিত হয়ে আসছে।
নাট্যকর্মীদের দীর্ঘ নাট্য-আন্দোলনের উজ্জ্বলতর অর্জন এ দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৬২ সাল থেকে পালিত হলেও ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আইটিআইয়ের সহযোগী সদস্যপদ পাওয়ার পর ১৯৮২ সালে এখানে বিশ্ব নাট্য দিবস উদ্যাপন শুরু হয়। আইটিআই প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যগুলো অর্জনের উদ্দেশ্যে নতুন প্রত্যয়ে দৃপ্তমান হওয়ার জন্যই প্রকৃতপক্ষে বিশ্ব নাট্য দিবস পালন করা হয়। নাট্য তথা পরিবেশনাশিল্পের মাধ্যমে মানবিক সম্পর্কের উন্নয়ন, নাট্যকর্মীদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহমর্মিতা বাড়ানো এবং নাট্যকর্মীর সঙ্গে দর্শকের সম্পর্ক জোরদার করার মধ্যেই প্রকৃতপক্ষে এ দিবসটি পালনের সার্থকতা নিহিত। নাট্যকর্মী মাত্রই তো ধর্ম-বর্ণ-সংস্কৃতি-ভাষা-ভূগোলের গণ্ডিমুক্ত হয়ে সর্বদেশের নাট্যকর্মী-নাট্যানুরাগীর আত্মার আত্মীয় হতে প্রত্যাশী, এ দিবসটি প্রকৃতই তাদের সামনে সে সুযোগ নিয়ে উপস্থিত হয়। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার আইটিআই, বিশ্বকেন্দ্রের বর্তমান নির্বাচিত সভাপতি। এটি নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নাট্য তথা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আমাদের সর্বাপেক্ষা বড় অর্জন।
প্রথা অনুযায়ী, এ বছর ‘মানবতার কল্যাণে থিয়েটার’ শিরোনামে বিশ্ব নাট্য দিবসের আন্তর্জাতিক বাণী দিয়েছেন উগান্ডার নাট্যকার, অভিনেত্রী, নির্দেশক ও ম্যাকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জেসিকা এ কাওয়া। বাণীতে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই যেসব মূল্যবোধ পোষণ করি এবং যা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি, থিয়েটার সেসব ধারণা প্রসার ও জোরদারকরণে পরীক্ষিত উপায় হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে...।’
নাট্যকর্মী হিসেবে একটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা: চাকরির বাজারে অনেকখানি নিশ্চয়তা প্রদান করে এমন একটি বিষয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আমি যখন নাট্যানুরাগে সেটি পরিত্যাগ করে ১৯৯০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হই, তখন আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিমূঢ় জননীকে প্রতিবেশী এক প্রকৌশলী বলেছিলেন, ‘মন খারাপ করে আর কী করবেন, কেউ দুধ বেচে মদ খায় আর কেউ...।’ তারপর দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও সাধারণ মানুষের অনুরূপ ধারণার খুব বেশি কি পরিবর্তন হয়েছে? বিশ্ব নাট্য দিবস আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে উদ্যাপনের মাধ্যমে তাই এসব নেতিবাচকতার বিপরীতে নাট্যকর্মী-নাট্যানুরাগীদের অবশ্যই সর্বোচ্চ একাত্মতা আর ইতিবাচকতার শক্তিতে উজ্জ্বল হতে হবে।
বিশ্ব নাট্য দিবসের এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নিবেদিতপ্রাণ সব নাট্যকর্মী ও নাট্যানুরাগী দর্শককে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। চলে আসুন আজ বিকেল চারটায় মহিলা সমিতিতে। এখান থেকে নাট্যকর্মীদের আনন্দ শোভাযাত্রা পৌঁছাবে জাতীয় নাট্যশালায়। সেখানে অনুষ্ঠানমালায় থাকছে প্রীতি সম্মিলনী, আলোচনা, বিশ্ব নাট্য দিবস বক্তব্য, সম্মাননা প্রদান আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
No comments