রাইডার যখন ‘নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট’
আমাকে চেনো না? আমি হলাম নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট।’ কথাটা বলেছিলেন মাতাল অবস্থায়। নিজেকে ক্রিকেটারের বদলে পরিচয় দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বলে! তবে জেসি রাইডার যেদিন তাঁর মতো খেলেন, সত্যিই তাঁকে ‘নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট’ই মনে হয়।
না, কাল সে হিসেবে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেননি। ওয়ানডেতে যাঁর স্ট্রাইক রেট ৯৫-এর কাছাকাছি, সেই তিনি ৮৩ রানের ইনিংসটা খেলতে ব্যয় করলেন ১২১ বল। আটটি চার থাকার পরও স্ট্রাইক রেট ৬৮.৫৯। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটির গুরুত্ব বাড়ল বৈ কমল না। ১৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলা নিউজিল্যান্ডকে ভালো ভিত্তি এনে দিয়েছিলেন বড় রানের। এবং আকার-আকৃতিতে দুই মেরুর ব্যবধান থাকলেও কাল ক্রিকেট রোমান্টিকদের কারও কারও ব্রায়ান লারার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন।
আরও স্পষ্ট করে বললে, লারার সেই ১১১ রানের ইনিংসটার পূর্বাভাসই ছিল তাঁর ব্যাটে। যে ইনিংসটি লারা খেলেছিলেন ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। ক্রিকেট বিশ্বকাপে সর্বশেষ কোয়ার্টার ফাইনাল হয়েছিল সেবারই। এবং লারার সেই দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হারিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
রাইডার কাল শেষ পর্যন্ত ‘লারা’ হয়ে উঠতে পারেননি। তবে নিউজিল্যান্ড কিন্তু ঠিকই ’৯৬-এর কোয়ার্টার ফাইনালের ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ’ হয়ে গেল। ফেবারিট তত্ত্বকে কাঁচকলা দেখিয়ে ষষ্ঠবারের মতো উঠে গেল সেমিফাইনালে। এই বিশ্বকাপে ৪১.২৫ গড়ে ব্যাটিং করে একটা প্রশ্নের উত্তরও রাইডার দিয়ে দিলেন—উপমহাদেশে তাঁর জন্য আসলেই কোনো জুজু নেই।
প্রশ্নটা তাঁর ব্যাটিং রেকর্ডের জন্যই উঠেছিল। দেশের মাটিতে তাঁর ওয়ানডে ব্যাটিং-গড় ৪৬-এর ওপরে; দেশের বাইরে সেটি কমে দাঁড়ায় ২০.৭। এশিয়ায় আরও দৈন্যদশা। এখানে গড় বিশ্বকাপের আগে ছিল ১৫.৬২। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পাঁচটি সেঞ্চুরির চারটিই দেশের মাটিতে। দেশের বাইরে একমাত্র সেঞ্চুরিটিও ভারতে বলে সেটিকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। ভারতই যে রাইডারের প্রিয় প্রতিপক্ষ। চারটি সেঞ্চুরিই ভারতের বিপক্ষে।
বিশ্বকাপের আগে আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এই বিশ্বকাপেও তাঁর ব্যাটে বড় একটা ইনিংসের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু নিজের ক্যারিয়ারটাই যেখানে উত্থান আর পতনের গ্রাফ দিয়ে আঁকা; সেখানে পারতে পারতে পারবেন না—এটাও তো স্বাভাবিক। কালকের ম্যাচের আগে যে তিন ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন, তাতে ২৫, ৩৮ আর ১৯-এর মধ্যেই যাবতীয় সম্ভাবনার ইতি টেনেছেন।
সেদিক দিয়েও কাল তাঁর ব্যাটে ছিল পরিণতি বোধের চূড়ান্ত প্রদর্শনী। টস জিতে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং নেওয়ায় প্রেসবক্সে ৫৮-৭৮-এর যে ফিসফিসানি উঠেছিল, সেটি মৃদু গুঞ্জনে রূপ নিল নিউজিল্যান্ডের নড়বড়ে শুরুতে। কিন্তু রাইডার চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন উইকেটে। রস টেলরের সঙ্গে ১১৪ রানের জুটি গড়লেন। দুজন মিলে পার করে দিলেন ২৭ ওভার। সবচেয়ে বড় কথা, এই জুটি ওভারপিছু কিন্তু ঠিকই চারের ওপরেই রান তুলে গেছে। কাল ম্যাচ শেষে গ্রায়েম স্মিথ, ড্যানিয়েল ভেট্টোরিও অকুণ্ঠ প্রশংসা করলেন ‘অচেনা’ রাইডারের।
শেষের দিকে অবশ্য স্বভাবসুলভ ঝড় তুলে শুরুর ধীরগতিটাকে পুষিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সেটা করতেই সর্বনাশ। ইমরান তাহিরের বলে ধরা পড়লেন ডিপ মিড উইকেটে। ১৭ রানের জন্য নিজের প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেলেন না। তবে হতাশ পায়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় সেঞ্চুরি না পাওয়ার চেয়ে রাইডারকে বেশি বিষণ্ন দেখাল দলকে আরেকটু ভালো জায়গায় রেখে না আসতে পারার কারণে।
পরিণত রাইডারকে পাওয়াও এই বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বড় প্রাপ্তি!
না, কাল সে হিসেবে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেননি। ওয়ানডেতে যাঁর স্ট্রাইক রেট ৯৫-এর কাছাকাছি, সেই তিনি ৮৩ রানের ইনিংসটা খেলতে ব্যয় করলেন ১২১ বল। আটটি চার থাকার পরও স্ট্রাইক রেট ৬৮.৫৯। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটির গুরুত্ব বাড়ল বৈ কমল না। ১৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলা নিউজিল্যান্ডকে ভালো ভিত্তি এনে দিয়েছিলেন বড় রানের। এবং আকার-আকৃতিতে দুই মেরুর ব্যবধান থাকলেও কাল ক্রিকেট রোমান্টিকদের কারও কারও ব্রায়ান লারার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন।
আরও স্পষ্ট করে বললে, লারার সেই ১১১ রানের ইনিংসটার পূর্বাভাসই ছিল তাঁর ব্যাটে। যে ইনিংসটি লারা খেলেছিলেন ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। ক্রিকেট বিশ্বকাপে সর্বশেষ কোয়ার্টার ফাইনাল হয়েছিল সেবারই। এবং লারার সেই দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হারিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
রাইডার কাল শেষ পর্যন্ত ‘লারা’ হয়ে উঠতে পারেননি। তবে নিউজিল্যান্ড কিন্তু ঠিকই ’৯৬-এর কোয়ার্টার ফাইনালের ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ’ হয়ে গেল। ফেবারিট তত্ত্বকে কাঁচকলা দেখিয়ে ষষ্ঠবারের মতো উঠে গেল সেমিফাইনালে। এই বিশ্বকাপে ৪১.২৫ গড়ে ব্যাটিং করে একটা প্রশ্নের উত্তরও রাইডার দিয়ে দিলেন—উপমহাদেশে তাঁর জন্য আসলেই কোনো জুজু নেই।
প্রশ্নটা তাঁর ব্যাটিং রেকর্ডের জন্যই উঠেছিল। দেশের মাটিতে তাঁর ওয়ানডে ব্যাটিং-গড় ৪৬-এর ওপরে; দেশের বাইরে সেটি কমে দাঁড়ায় ২০.৭। এশিয়ায় আরও দৈন্যদশা। এখানে গড় বিশ্বকাপের আগে ছিল ১৫.৬২। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পাঁচটি সেঞ্চুরির চারটিই দেশের মাটিতে। দেশের বাইরে একমাত্র সেঞ্চুরিটিও ভারতে বলে সেটিকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। ভারতই যে রাইডারের প্রিয় প্রতিপক্ষ। চারটি সেঞ্চুরিই ভারতের বিপক্ষে।
বিশ্বকাপের আগে আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এই বিশ্বকাপেও তাঁর ব্যাটে বড় একটা ইনিংসের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু নিজের ক্যারিয়ারটাই যেখানে উত্থান আর পতনের গ্রাফ দিয়ে আঁকা; সেখানে পারতে পারতে পারবেন না—এটাও তো স্বাভাবিক। কালকের ম্যাচের আগে যে তিন ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন, তাতে ২৫, ৩৮ আর ১৯-এর মধ্যেই যাবতীয় সম্ভাবনার ইতি টেনেছেন।
সেদিক দিয়েও কাল তাঁর ব্যাটে ছিল পরিণতি বোধের চূড়ান্ত প্রদর্শনী। টস জিতে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং নেওয়ায় প্রেসবক্সে ৫৮-৭৮-এর যে ফিসফিসানি উঠেছিল, সেটি মৃদু গুঞ্জনে রূপ নিল নিউজিল্যান্ডের নড়বড়ে শুরুতে। কিন্তু রাইডার চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন উইকেটে। রস টেলরের সঙ্গে ১১৪ রানের জুটি গড়লেন। দুজন মিলে পার করে দিলেন ২৭ ওভার। সবচেয়ে বড় কথা, এই জুটি ওভারপিছু কিন্তু ঠিকই চারের ওপরেই রান তুলে গেছে। কাল ম্যাচ শেষে গ্রায়েম স্মিথ, ড্যানিয়েল ভেট্টোরিও অকুণ্ঠ প্রশংসা করলেন ‘অচেনা’ রাইডারের।
শেষের দিকে অবশ্য স্বভাবসুলভ ঝড় তুলে শুরুর ধীরগতিটাকে পুষিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সেটা করতেই সর্বনাশ। ইমরান তাহিরের বলে ধরা পড়লেন ডিপ মিড উইকেটে। ১৭ রানের জন্য নিজের প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেলেন না। তবে হতাশ পায়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় সেঞ্চুরি না পাওয়ার চেয়ে রাইডারকে বেশি বিষণ্ন দেখাল দলকে আরেকটু ভালো জায়গায় রেখে না আসতে পারার কারণে।
পরিণত রাইডারকে পাওয়াও এই বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বড় প্রাপ্তি!
No comments