উল্টো স্রোতে আশরাফুল-নাফীস
অনুশীলন প্রায় শেষ। অনেকে ড্রেসিংরুমেও ফিরে গেছেন। মোহাম্মদ আশরাফুল আর শাহরিয়ার নাফীসের ব্যাটিং করার সুযোগ মিলল তখন। দলের মূল বোলাররা সব ক্লান্ত, শেষ বিকেলে গুটি কয়েক নেট বোলার নিয়েই তাই চলল দুজনের নেট প্র্যাকটিস। দূরে কোচ জেমি সিডন্স আর ফিল্ডিং কোচ জুলিয়েন ফাউন্টেন মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ প্র্যাকটিস করাচ্ছেন। নেটে কারা ব্যাট করছেন, সেদিকে ফিরেও তাকালেন না কেউ।
দৃশ্যটা গত পরশুর হলেও বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে এ ঘটনা নিয়মিতই। জেমি সিডন্সের অনুশীলনের ছকটাই এমন যে, সেখানে ‘ব্যাকআপ’ খেলোয়াড়েরা দূরের মানুষ। সবাইকে নিয়ে হাঁটার নীতি থেকে একটু যেন দূরে কোচ। কোনো সিরিজের জন্য ১৮-২০ সদস্যের প্রাথমিক দল দিলে সেটাকে ছেঁটে ১৪-১৫ জনে নামিয়ে আনার জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন। আর ১৪-১৫ জনের দল পেয়ে গেলে তাঁর মাথায় ঢুকে যায় প্রথম একাদশের চিন্তা। সম্ভাব্য যেসব ক্রিকেটারকে খেলাবেন বলে মনে মনে ঠিক করে রাখেন, অনুশীলনে তাঁদেরই প্রাধান্য। অন্যরা হয়ে যান আশরাফুল-শাহরিয়ারের মতো ‘ব্যাকআপ’ খেলোয়াড়!
বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণার পরদিনই এই দুই ব্যাটসম্যানকে ডেকে কোচ বলে দিয়েছেন, অন্যরা খারাপ খেললেই কেবল খেলার সুযোগ মিলবে তাঁদের। টপ-অর্ডারে যেমন তামিম, ইমরুল বা জুনায়েদের বিকল্প শাহরিয়ার, তেমনি মিডল-অর্ডারে রকিবুল ভালো না করলেই শুধু আশরাফুলের দরজা খুলতে পারে। তার পর থেকেই আশরাফুল-শাহরিয়ার দলে ‘ব্যাকআপ’ ক্রিকেটারের ‘মর্যাদা’ পাচ্ছেন। সবার যখন শেষ, তাঁদের তখন শুরু। সিডন্সের অনুশীলনে অবশ্য ‘ব্যাকআপ’ খেলোয়াড়দের জন্য একটা ‘ব্যাকআপ’ ছকও রাখা আছে। অনুশীলনের শুরুতে ৫০ মিনিটের ‘ফ্রি টাইম’ দেওয়া হয় যাঁর যে রকম প্রয়োজন সে রকম অনুশীলন করার জন্য। শাহরিয়ার ওই সুযোগটাকেই দেখছেন বড় পাওয়া হিসেবে, ‘এই ৫০ মিনিট আমি আমার মতো ব্যাটিং করি। এ ছাড়া অন্যদের অনুশীলনের সময় নেট না পেলেও আমরা চাইলে নিজেদের মতো অনুশীলন করতে পারি। আজ (গতকাল) যেমন দুই ঘণ্টা ধরে শুধু নক করলাম। কাজেই এ নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই।’
ক্যারিয়ারে এর চেয়েও খারাপ সময় গেছে। শাহরিয়ার হয়তো সে অভিজ্ঞতা দিয়েই বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন। কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুল? সব সময়ই দলের মধ্যে আলাদা গুরুত্ব পেয়ে অভ্যস্ত সাবেক এই অধিনায়কের কাছে মুদ্রার উল্টো পিঠ দর্শন ভালো না লাগারই কথা। বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের নায়ককে আজ নেট প্র্যাকটিসের জন্যও অপেক্ষায় থাকতে হয়! জায়গা হয় না অনুশীলন ম্যাচের ১২ জনের দলেও! সময়ের উল্টো স্রোত আশরাফুলের কাছে তিক্তই ঠেকছে, ‘এবার শুরু থেকেই আমি সবার শেষে ব্যাটিং করছি। প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও এখন মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
শাহরিয়ার যতই বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবে নেন, আর আশরাফুল মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন, চূড়ান্ত দলের ১৫ জন ক্রিকেটারকে আলাদা করে ফেলাটা চোখে পড়ছে বৈকি। আগে দলের সবাইকে নিয়েই ব্যাটিং-অর্ডার ধরে ধরে নেট প্র্যাকটিস হতো। এখন বেশির ভাগ সময়ই সেটা হয় ১১ জন হিসাব করে। তামিম, ইমরুল, জুনায়েদ, মুশফিকুর (বিশ্বকাপে তাঁকে চার নম্বরে খেলানোর পরিকল্পনা আছে), সাকিব, রকিবুল...এভাবেই এগোতে থাকে নেট প্র্যাকটিস। এরপর সময় থাকলে সুযোগ মেলে ‘ব্যাকআপ’দের।
সিডন্সের এই নীতির সঙ্গে একমত নন জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ খালেদ মাহমুদ। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকার সময়ও এ নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করতেন, এখনো তাই করছেন, ‘শাহরিয়ার ওপেনিং বা তিন নম্বরে খেলে বলে ওর নতুন বলে ব্যাটিং প্র্যাকটিস দরকার। ওকে সবার শেষে ব্যাটিং দিলে তো ওর লাভ হবে না।’ একাদশে না রাখার সিদ্ধান্তটি কাউকে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়াটাও তাঁর কাছে ক্রিকেটীয় মনে হয় না, ‘একজন খেলোয়াড় ম্যাচের দিন সকালেও ইনজুরিতে পড়তে পারে। এখন আমি যদি অন্যদের জানিয়ে দিই, তোমরা দলে নেই, তারা তো প্রস্তুত থাকবে না। তা ছাড়া ক্রিকেটাররা অনেক সংস্কার মেনে চলে। কেউ হয়তো খেলার আগের রাতে নয়টার সময় ঘুমিয়ে পড়ে। যদি জানে যে সে দলে নেই, খেলার আগের দিন হয়তো সে রাত জাগবে। পরদিন খেলতে হলে সে তখন কী করবে?’
প্রশ্নটার উত্তর বোধ হয় ভালো দিতে পারবেন জেমি সিডন্সই।
দৃশ্যটা গত পরশুর হলেও বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে এ ঘটনা নিয়মিতই। জেমি সিডন্সের অনুশীলনের ছকটাই এমন যে, সেখানে ‘ব্যাকআপ’ খেলোয়াড়েরা দূরের মানুষ। সবাইকে নিয়ে হাঁটার নীতি থেকে একটু যেন দূরে কোচ। কোনো সিরিজের জন্য ১৮-২০ সদস্যের প্রাথমিক দল দিলে সেটাকে ছেঁটে ১৪-১৫ জনে নামিয়ে আনার জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন। আর ১৪-১৫ জনের দল পেয়ে গেলে তাঁর মাথায় ঢুকে যায় প্রথম একাদশের চিন্তা। সম্ভাব্য যেসব ক্রিকেটারকে খেলাবেন বলে মনে মনে ঠিক করে রাখেন, অনুশীলনে তাঁদেরই প্রাধান্য। অন্যরা হয়ে যান আশরাফুল-শাহরিয়ারের মতো ‘ব্যাকআপ’ খেলোয়াড়!
বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণার পরদিনই এই দুই ব্যাটসম্যানকে ডেকে কোচ বলে দিয়েছেন, অন্যরা খারাপ খেললেই কেবল খেলার সুযোগ মিলবে তাঁদের। টপ-অর্ডারে যেমন তামিম, ইমরুল বা জুনায়েদের বিকল্প শাহরিয়ার, তেমনি মিডল-অর্ডারে রকিবুল ভালো না করলেই শুধু আশরাফুলের দরজা খুলতে পারে। তার পর থেকেই আশরাফুল-শাহরিয়ার দলে ‘ব্যাকআপ’ ক্রিকেটারের ‘মর্যাদা’ পাচ্ছেন। সবার যখন শেষ, তাঁদের তখন শুরু। সিডন্সের অনুশীলনে অবশ্য ‘ব্যাকআপ’ খেলোয়াড়দের জন্য একটা ‘ব্যাকআপ’ ছকও রাখা আছে। অনুশীলনের শুরুতে ৫০ মিনিটের ‘ফ্রি টাইম’ দেওয়া হয় যাঁর যে রকম প্রয়োজন সে রকম অনুশীলন করার জন্য। শাহরিয়ার ওই সুযোগটাকেই দেখছেন বড় পাওয়া হিসেবে, ‘এই ৫০ মিনিট আমি আমার মতো ব্যাটিং করি। এ ছাড়া অন্যদের অনুশীলনের সময় নেট না পেলেও আমরা চাইলে নিজেদের মতো অনুশীলন করতে পারি। আজ (গতকাল) যেমন দুই ঘণ্টা ধরে শুধু নক করলাম। কাজেই এ নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই।’
ক্যারিয়ারে এর চেয়েও খারাপ সময় গেছে। শাহরিয়ার হয়তো সে অভিজ্ঞতা দিয়েই বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন। কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুল? সব সময়ই দলের মধ্যে আলাদা গুরুত্ব পেয়ে অভ্যস্ত সাবেক এই অধিনায়কের কাছে মুদ্রার উল্টো পিঠ দর্শন ভালো না লাগারই কথা। বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের নায়ককে আজ নেট প্র্যাকটিসের জন্যও অপেক্ষায় থাকতে হয়! জায়গা হয় না অনুশীলন ম্যাচের ১২ জনের দলেও! সময়ের উল্টো স্রোত আশরাফুলের কাছে তিক্তই ঠেকছে, ‘এবার শুরু থেকেই আমি সবার শেষে ব্যাটিং করছি। প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও এখন মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
শাহরিয়ার যতই বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবে নেন, আর আশরাফুল মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন, চূড়ান্ত দলের ১৫ জন ক্রিকেটারকে আলাদা করে ফেলাটা চোখে পড়ছে বৈকি। আগে দলের সবাইকে নিয়েই ব্যাটিং-অর্ডার ধরে ধরে নেট প্র্যাকটিস হতো। এখন বেশির ভাগ সময়ই সেটা হয় ১১ জন হিসাব করে। তামিম, ইমরুল, জুনায়েদ, মুশফিকুর (বিশ্বকাপে তাঁকে চার নম্বরে খেলানোর পরিকল্পনা আছে), সাকিব, রকিবুল...এভাবেই এগোতে থাকে নেট প্র্যাকটিস। এরপর সময় থাকলে সুযোগ মেলে ‘ব্যাকআপ’দের।
সিডন্সের এই নীতির সঙ্গে একমত নন জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ খালেদ মাহমুদ। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকার সময়ও এ নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করতেন, এখনো তাই করছেন, ‘শাহরিয়ার ওপেনিং বা তিন নম্বরে খেলে বলে ওর নতুন বলে ব্যাটিং প্র্যাকটিস দরকার। ওকে সবার শেষে ব্যাটিং দিলে তো ওর লাভ হবে না।’ একাদশে না রাখার সিদ্ধান্তটি কাউকে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়াটাও তাঁর কাছে ক্রিকেটীয় মনে হয় না, ‘একজন খেলোয়াড় ম্যাচের দিন সকালেও ইনজুরিতে পড়তে পারে। এখন আমি যদি অন্যদের জানিয়ে দিই, তোমরা দলে নেই, তারা তো প্রস্তুত থাকবে না। তা ছাড়া ক্রিকেটাররা অনেক সংস্কার মেনে চলে। কেউ হয়তো খেলার আগের রাতে নয়টার সময় ঘুমিয়ে পড়ে। যদি জানে যে সে দলে নেই, খেলার আগের দিন হয়তো সে রাত জাগবে। পরদিন খেলতে হলে সে তখন কী করবে?’
প্রশ্নটার উত্তর বোধ হয় ভালো দিতে পারবেন জেমি সিডন্সই।
No comments