নিয়ন্ত্রণ আইন কতটুকু কার্যকর by ফেরদৌস ফয়সাল
এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় এসিডের অপব্যবহার কমছে না। প্রতি মাসে কেউ না কেউ এসিড-সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সারা দেশে হাজারখানেক প্রতিষ্ঠান এসিড ব্যবহার করলেও অনুমতিপত্র সবার নেই। তারা অবৈধ উপায়ে এসিড সংগ্রহ করছে। জেলায় জেলায় জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল থাকলেও বিক্রয় ও ব্যবহারের ওপর কোনো তদারকি নেই। আইন থাকলেও যথাযথ প্রয়োগ নেই, এসিডের অপব্যবহার কমছে না।
এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এসিড-আক্রান্তের শিকার হয়েছেন ৮৩ জন (এর মধ্যে ৪৪ জন নারীর পাশাপশি ২৩ জন পুরুষ ও ১৬টি শিশু)।
এই সাত মাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জুলাই মাসে ঘটনা ঘটেছে বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এর কারণ হিসেবে মনে করছেন, অসহ্য গরমে গ্রামের অনেকেই জানালা খুলে ঘুমান, দুর্বৃত্তরা এই সুযোগে এসিড নিক্ষেপ করে।
জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সারা দেশে এক হাজার ৪৯৬টি মামলা হয়েছে। অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে ৮৯১টির আর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে ৫৭৫টির। এসব মামলায় মাত্র ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯৫ জনের যাবজ্জীবন আর অন্যান্য শাস্তি পেয়েছে ১৬৫ জন। অর্থাৎ ২৭৩ জনের সাজা হয়েছে। মামলায় এক হাজার ৪৮৮ জন আসামি খালাস পেয়েছে। যদিও এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ১৯৯৫ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ৩২।
আইনে আছে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর হয়েছে কি না এমন তথ্য কারও জানা নেই। এরশাদ সিকদার বা বাংলাভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডের কথা দেশবাসী জানে। তাদের মৃত্যুর খবর পত্রিকা, টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়েছে, দেশবাসী দেখেছে। কিন্তু এসিড নিক্ষেপকারীর মৃত্যুদণ্ডের কথা সেভাবে কেউ জানে না। সারা দেশে একইভাবে প্রচার করা হলে শাস্তির ভয়াবহতা দেখে এর প্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে। দেশবাসী জানতে পারবে। এসিড নিক্ষেপের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অনেকেই এখনো জানে না যে এসিড নিক্ষেপ করা এক ধরনের অপরাধ। আর এই অপরাধ করলে, এমনকি সহযোগিতা করলেও পেতে হয় শাস্তি।
সম্প্রতি এসিড অপরাধ-সংক্রান্ত মিথ্যা মামলার জন্য শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে এসিড নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল, ২০১০ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এ আইনে এসিড অপরাধ-সংক্রান্ত মিথ্যা মামলার জন্য শাস্তির মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সাত বছর করা হয়েছে। বিলে ২৫ সদস্যের জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল পুনর্গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়। এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০২ সংশোধন করে নতুন বিলটি উত্থাপন করা হয়। এ আইন অনুসারে জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কাউন্সিলের জেলা কমিটিতে উপদেষ্টা থাকবেন একজন সাংসদ। সংশ্লিষ্ট পিপি, জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী, স্থানীয় প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি, জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও নির্বাচিত মহিলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের একজনকে সদস্য রাখা হবে।
এসিডের আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার-নিয়ন্ত্রণ, ক্ষয়কারী দাহ্য পদার্থ হিসেবে এসিডের অপব্যবহার রোধ এবং এসিড দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও আইনগত সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০২ প্রণীত হয়। এতে ১৬ সদস্যের জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল গঠন করা হয়। এ কাউন্সিলে আইনসচিব, সমাজকল্যাণসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় এবং নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে সদস্যসংখ্যা ২২ করে কাউন্সিল পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে। এসিড অপরাধ-সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা রোধকল্পে মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তিও বাড়ানো যুক্তিসংগত।
২০০২ সালের ১৭ মার্চ প্রকাশিত গেজেটের ১ নম্বর আইনের সপ্তম অধ্যায়ে উল্লেখ আছে, ‘লাইসেন্স ব্যতীত এসিডের উৎপাদন, আমদানি, পরিবহন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহার করা দণ্ডণীয় অপরাধ। যারা লাইসেন্স করবে না এবং লাইসেন্সের শর্তগুলো পালন করবে না, তাদের জন্য অনূর্ধ্ব ১০ বছর ও অন্যূন তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।’
এসিড অপরাধ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে ‘এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২’ থাকলেও সাজা হয়েছে কম। আইনে আছে দহনকারী, ক্ষয়কারী ও বিষাক্ত যেকোনো পদার্থ এসিড। এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল: ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা ও দায়রা জজ অথবা সমপদমর্যাদাসম্পন্ন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজও এ অর্থে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। এসিডে মৃত্যু হলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা: অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড। এসিডে আহত করা হলে ক. দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিক নষ্ট হলে, মুখমণ্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড। খ. শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হলে বা শরীরের কোনো স্থান আঘাতপ্রাপ্ত হলে এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর; কিন্তু অন্যূন সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড। এসিড নিক্ষেপ করা বা নিক্ষেপের চেষ্টা করলে (ক্ষতি না হলেও) শাস্তি অনধিক সাত বছর; কিন্তু অন্যূন তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড। অপরাধে সহায়তা করলে এর শাস্তি মূল অপরাধীর সঙ্গে একই দণ্ডে দণ্ডণীয়। মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ করলে এর শাস্তি অনধিক সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা, অতিরিক্ত অর্থদণ্ড। জরিমানার অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি পাবেন। মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সরাসরি ট্রাইব্যুনালে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। এসিড-সহিংসতার অপরাধ অ-আপসযোগ্য ও অজামিনযোগ্য। তবে জামিন দেওয়ার বিষয়টি আইনের বিধান অনুযায়ী আদালতের যুক্তিসংগত সন্তুষ্টির ওপর নির্ভর করে।
ফেরদৌস ফয়সাল: সমন্বয়ক, সহায়ক তহবিল, প্রথম আলো ট্রাস্ট।
afef78@yahoo.com
এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এসিড-আক্রান্তের শিকার হয়েছেন ৮৩ জন (এর মধ্যে ৪৪ জন নারীর পাশাপশি ২৩ জন পুরুষ ও ১৬টি শিশু)।
এই সাত মাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জুলাই মাসে ঘটনা ঘটেছে বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এর কারণ হিসেবে মনে করছেন, অসহ্য গরমে গ্রামের অনেকেই জানালা খুলে ঘুমান, দুর্বৃত্তরা এই সুযোগে এসিড নিক্ষেপ করে।
জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সারা দেশে এক হাজার ৪৯৬টি মামলা হয়েছে। অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে ৮৯১টির আর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে ৫৭৫টির। এসব মামলায় মাত্র ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯৫ জনের যাবজ্জীবন আর অন্যান্য শাস্তি পেয়েছে ১৬৫ জন। অর্থাৎ ২৭৩ জনের সাজা হয়েছে। মামলায় এক হাজার ৪৮৮ জন আসামি খালাস পেয়েছে। যদিও এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ১৯৯৫ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ৩২।
আইনে আছে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর হয়েছে কি না এমন তথ্য কারও জানা নেই। এরশাদ সিকদার বা বাংলাভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডের কথা দেশবাসী জানে। তাদের মৃত্যুর খবর পত্রিকা, টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়েছে, দেশবাসী দেখেছে। কিন্তু এসিড নিক্ষেপকারীর মৃত্যুদণ্ডের কথা সেভাবে কেউ জানে না। সারা দেশে একইভাবে প্রচার করা হলে শাস্তির ভয়াবহতা দেখে এর প্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে। দেশবাসী জানতে পারবে। এসিড নিক্ষেপের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অনেকেই এখনো জানে না যে এসিড নিক্ষেপ করা এক ধরনের অপরাধ। আর এই অপরাধ করলে, এমনকি সহযোগিতা করলেও পেতে হয় শাস্তি।
সম্প্রতি এসিড অপরাধ-সংক্রান্ত মিথ্যা মামলার জন্য শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে এসিড নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল, ২০১০ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এ আইনে এসিড অপরাধ-সংক্রান্ত মিথ্যা মামলার জন্য শাস্তির মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সাত বছর করা হয়েছে। বিলে ২৫ সদস্যের জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল পুনর্গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়। এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০২ সংশোধন করে নতুন বিলটি উত্থাপন করা হয়। এ আইন অনুসারে জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কাউন্সিলের জেলা কমিটিতে উপদেষ্টা থাকবেন একজন সাংসদ। সংশ্লিষ্ট পিপি, জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী, স্থানীয় প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি, জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও নির্বাচিত মহিলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের একজনকে সদস্য রাখা হবে।
এসিডের আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার-নিয়ন্ত্রণ, ক্ষয়কারী দাহ্য পদার্থ হিসেবে এসিডের অপব্যবহার রোধ এবং এসিড দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও আইনগত সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০২ প্রণীত হয়। এতে ১৬ সদস্যের জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিল গঠন করা হয়। এ কাউন্সিলে আইনসচিব, সমাজকল্যাণসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় এবং নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে সদস্যসংখ্যা ২২ করে কাউন্সিল পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে। এসিড অপরাধ-সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা রোধকল্পে মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তিও বাড়ানো যুক্তিসংগত।
২০০২ সালের ১৭ মার্চ প্রকাশিত গেজেটের ১ নম্বর আইনের সপ্তম অধ্যায়ে উল্লেখ আছে, ‘লাইসেন্স ব্যতীত এসিডের উৎপাদন, আমদানি, পরিবহন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহার করা দণ্ডণীয় অপরাধ। যারা লাইসেন্স করবে না এবং লাইসেন্সের শর্তগুলো পালন করবে না, তাদের জন্য অনূর্ধ্ব ১০ বছর ও অন্যূন তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।’
এসিড অপরাধ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে ‘এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২’ থাকলেও সাজা হয়েছে কম। আইনে আছে দহনকারী, ক্ষয়কারী ও বিষাক্ত যেকোনো পদার্থ এসিড। এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল: ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা ও দায়রা জজ অথবা সমপদমর্যাদাসম্পন্ন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজও এ অর্থে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। এসিডে মৃত্যু হলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা: অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড। এসিডে আহত করা হলে ক. দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিক নষ্ট হলে, মুখমণ্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড। খ. শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হলে বা শরীরের কোনো স্থান আঘাতপ্রাপ্ত হলে এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর; কিন্তু অন্যূন সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড। এসিড নিক্ষেপ করা বা নিক্ষেপের চেষ্টা করলে (ক্ষতি না হলেও) শাস্তি অনধিক সাত বছর; কিন্তু অন্যূন তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড। জরিমানা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড। অপরাধে সহায়তা করলে এর শাস্তি মূল অপরাধীর সঙ্গে একই দণ্ডে দণ্ডণীয়। মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ করলে এর শাস্তি অনধিক সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা, অতিরিক্ত অর্থদণ্ড। জরিমানার অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি পাবেন। মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সরাসরি ট্রাইব্যুনালে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। এসিড-সহিংসতার অপরাধ অ-আপসযোগ্য ও অজামিনযোগ্য। তবে জামিন দেওয়ার বিষয়টি আইনের বিধান অনুযায়ী আদালতের যুক্তিসংগত সন্তুষ্টির ওপর নির্ভর করে।
ফেরদৌস ফয়সাল: সমন্বয়ক, সহায়ক তহবিল, প্রথম আলো ট্রাস্ট।
afef78@yahoo.com
No comments