প্রাপ্তির আনন্দ হারানোর বিষাদ
ড্রেসিংরুমে বাংলাদেশ দলের জয়োৎসব কেমন হয়, সেটা এখন আর কাউকে জিজ্ঞেস করে জানতে হয় না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই কোরাস ধরে ‘আমরা করব জয়, আমরা করব জয় একদিন...।’ কালও তাই হলো, কিন্তু জয়োৎসবের আবহে কি বেজে উঠল একটা বেদনার সুরও?
ম্যাচ জিতলে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে পুরো বাংলাদেশ দলকেই দেখা যায় সব সময়। কাল অনাড়ম্বর সেই আনুষ্ঠানিকতায় কেবল ম্যান অব দ্য ম্যাচ সাকিব আল হাসান ও জুনায়েদ সিদ্দিকের উপস্থিতি। বাকিরা নিশ্চয়ই ড্রেসিংরুমে থেকে গেছেন বিজয়ানন্দে ভাসতে! কথাটা বলতেই মুশফিকুর রহিম সংশোধনী আনলেন, ‘শুধু যে জয় উদ্যাপনই করেছি, তা নয়। মাশরাফি ভাই ওই সময় পায়ে বরফ দিচ্ছিলেন। নাজমুল ভাইয়ের হাতেও তো সেলাই দিতে হলো। সব মিলিয়েই আসলে আমরা আর পুরস্কার বিতরণীতে যাইনি।’
নিউজিল্যান্ড ইনিংসের তৃতীয় আর শেষ ওভারের ইনজুরি সিরিজ থেকেই কেড়ে নিল বাংলাদেশের দুই পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা ও নাজমুল হোসেনকে। জয়ের আনন্দ হয়তো তাই মনের আনন্দে উপভোগ করা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ দল চাইলে অধিনায়ককে অনুসরণ করতে পারে। সিরিজ থেকে ছিটকে পড়া মাশরাফিই যখন বলছেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা, আমরা ম্যাচ জিতেছি। জেতার পর ব্যথা ভুলে গেছি...নাইস বার্থ ডে গিফট’, তখন আর অন্যদের মন খারাপ করে থাকা কেন?
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির বেদনার সুরে আনন্দের রিনিঝিনি শোনা গেল তাঁর পাশেই বসা সাকিবের হাসিতেও। জয় কত কিছুই না ভুলিয়ে দেয়! ইনজুরিতে পড়া কোনো খেলোয়াড়কে পাশে বসিয়ে তাঁরই ইনজুরি সম্পর্কে হাসতে হাসতে প্রতিক্রিয়া জানানোর ঘটনাও সম্ভবত এই প্রথম। মাশরাফির ইনজুরির ‘সৌজন্যে’ কাঁধে অধিনায়কত্ব তুলে নেওয়ার ঘটনা গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টটাকে মনে করিয়ে দিয়েছে কি না জানতে চাইলে সহাস্য সাকিব বললেন, ‘একটু তো মিল আছেই। মাশরাফি ভাই যখন পড়লেন, তখনই মনে হয়েছে আজ (গতকাল) আবার অধিনায়কত্ব করতে হবে। মিডঅনে দাঁড়িয়ে ছিলাম...দেখলাম খুব বাজেভাবে পড়েছেন। ওটা দেখেই মনে হয়েছে আজকের মতো উনি শেষ...।’
মাশরাফির বেদনার দিনে সাকিব সাফল্যের হাসি হাসবেন, এটা যেন নিয়তিই হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে হাসিটা নিশ্চিত করতে সাকিবকেও তো কিছু করতে হয়! ব্যাট হাতে ৫৮ রান আর বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে সেটাই করলেন কাল বাংলাদেশ সহ-অধিনায়ক। সঙ্গে নিউজিল্যান্ড ইনিংসের তৃতীয় ওভার থেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে পেয়ে যাওয়া নেতৃত্বভারও সামলে গেলেন নিপুণভাবে। মাশরাফির অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে গিয়ে একটা চিন্তাই করেছেন সাকিব, ‘শুধু ভেবেছি, ওদের আটকে রাখতে হবে। সেটা করতে পেরে ভালো লাগছে। দল জিতলে সব সময়ই ভালো লাগে।’
ইনজুরি থাকে, ব্যথা-বেদনা থাকে, তার পরও জয়ের মোড়ক উৎসবের রং মাখানোই হয়। বহুদিন পর নস্টালজিক কেউ হয়তো মনে করার চেষ্টা করবেন, ‘নিউজিল্যান্ডকে ৯ রানে হারানো ওই ম্যাচেই তো মাশরাফি আর নাজমুল ইনজুরিতে পড়ল, তাই না?’ জয়ের রেণু ভেসে বেড়ানো সন্ধ্যায় কালও একসময় হারানোর হাহাকার হারিয়ে গেল জয়ধ্বনির আড়ালে।
অতৃপ্তিও ছিল, তবে সেটা আরও ভালো কিছু না হওয়ায়। ‘আমার কাছে মনে হয়েছিল আমরা ১২ রানের মতো কম করেছি। পরিকল্পনা ছিল ২৪০-২৫০ রান করার। তার পরও সবাই খুব ভালো বোলিং-ফিল্ডিং করেছে। একজন বোলার কম থাকার পরও জিততে পেরে ভালো লাগছে’—বলছিলেন মাশরাফি নিজেই। ২২৮ রান করেও জেতা সম্ভব, সেই বিশ্বাসও নাকি ছিল তাঁর মনে, ‘আমার মনে হয়েছিল, শুরুতে ৩-৪ উইকেট নিতে পারলেই জেতা সম্ভব। কারণ সাকিব-রাজকে এই উইকেটে খেলা কঠিন। রিয়াদ, নাঈমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে।’
কে একজন জানতে চাইলেন, বৃষ্টিতে খেলা ৫৫ মিনিট বন্ধ থাকাটাও বাংলাদেশের পক্ষে গেল কি না। এমন দিনে আবহাওয়াকে কৃতিত্ব দিতে কে চায়? মাশরাফির কণ্ঠে একরকম প্রতিবাদের সুর, ‘এটা খেলার অংশ। আবহাওয়ায় তো কারও হাত নেই। আমরাও হারতে পারতাম। আর বৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব যে সুবিধা পেয়েছি, তা নয়।’
সিরিজ শুরুর আগে মাশরাফি সবার আগে চেয়েছিলেন, একটা ভালো শুরু। সেটা পেয়ে যাওয়ার পর এখন বড় স্বপ্ন ভর করেছে তাঁর চোখে, ‘খুব ভালো সুযোগ আছে সামনে। তবে প্রথম ম্যাচের চেয়ে আরও অনেক ভালো খেলতে হবে। আজ (গতকাল) অনেক ব্যাটসম্যান সেট হয়ে আউট হয়ে গেছে। এই জায়গাগুলোতে, সঙ্গে বোলিং-ফিল্ডিংয়েও উন্নতি আনতে হবে। প্রথম ম্যাচ জিতে থাকলে সব সময়ই সুবিধা পাওয়া যায়।’
মাশরাফি-নাজমুলকে হারানোর দিনে এটাই তো সান্ত্বনা।
ম্যাচ জিতলে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে পুরো বাংলাদেশ দলকেই দেখা যায় সব সময়। কাল অনাড়ম্বর সেই আনুষ্ঠানিকতায় কেবল ম্যান অব দ্য ম্যাচ সাকিব আল হাসান ও জুনায়েদ সিদ্দিকের উপস্থিতি। বাকিরা নিশ্চয়ই ড্রেসিংরুমে থেকে গেছেন বিজয়ানন্দে ভাসতে! কথাটা বলতেই মুশফিকুর রহিম সংশোধনী আনলেন, ‘শুধু যে জয় উদ্যাপনই করেছি, তা নয়। মাশরাফি ভাই ওই সময় পায়ে বরফ দিচ্ছিলেন। নাজমুল ভাইয়ের হাতেও তো সেলাই দিতে হলো। সব মিলিয়েই আসলে আমরা আর পুরস্কার বিতরণীতে যাইনি।’
নিউজিল্যান্ড ইনিংসের তৃতীয় আর শেষ ওভারের ইনজুরি সিরিজ থেকেই কেড়ে নিল বাংলাদেশের দুই পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা ও নাজমুল হোসেনকে। জয়ের আনন্দ হয়তো তাই মনের আনন্দে উপভোগ করা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ দল চাইলে অধিনায়ককে অনুসরণ করতে পারে। সিরিজ থেকে ছিটকে পড়া মাশরাফিই যখন বলছেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা, আমরা ম্যাচ জিতেছি। জেতার পর ব্যথা ভুলে গেছি...নাইস বার্থ ডে গিফট’, তখন আর অন্যদের মন খারাপ করে থাকা কেন?
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির বেদনার সুরে আনন্দের রিনিঝিনি শোনা গেল তাঁর পাশেই বসা সাকিবের হাসিতেও। জয় কত কিছুই না ভুলিয়ে দেয়! ইনজুরিতে পড়া কোনো খেলোয়াড়কে পাশে বসিয়ে তাঁরই ইনজুরি সম্পর্কে হাসতে হাসতে প্রতিক্রিয়া জানানোর ঘটনাও সম্ভবত এই প্রথম। মাশরাফির ইনজুরির ‘সৌজন্যে’ কাঁধে অধিনায়কত্ব তুলে নেওয়ার ঘটনা গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টটাকে মনে করিয়ে দিয়েছে কি না জানতে চাইলে সহাস্য সাকিব বললেন, ‘একটু তো মিল আছেই। মাশরাফি ভাই যখন পড়লেন, তখনই মনে হয়েছে আজ (গতকাল) আবার অধিনায়কত্ব করতে হবে। মিডঅনে দাঁড়িয়ে ছিলাম...দেখলাম খুব বাজেভাবে পড়েছেন। ওটা দেখেই মনে হয়েছে আজকের মতো উনি শেষ...।’
মাশরাফির বেদনার দিনে সাকিব সাফল্যের হাসি হাসবেন, এটা যেন নিয়তিই হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে হাসিটা নিশ্চিত করতে সাকিবকেও তো কিছু করতে হয়! ব্যাট হাতে ৫৮ রান আর বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে সেটাই করলেন কাল বাংলাদেশ সহ-অধিনায়ক। সঙ্গে নিউজিল্যান্ড ইনিংসের তৃতীয় ওভার থেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে পেয়ে যাওয়া নেতৃত্বভারও সামলে গেলেন নিপুণভাবে। মাশরাফির অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে গিয়ে একটা চিন্তাই করেছেন সাকিব, ‘শুধু ভেবেছি, ওদের আটকে রাখতে হবে। সেটা করতে পেরে ভালো লাগছে। দল জিতলে সব সময়ই ভালো লাগে।’
ইনজুরি থাকে, ব্যথা-বেদনা থাকে, তার পরও জয়ের মোড়ক উৎসবের রং মাখানোই হয়। বহুদিন পর নস্টালজিক কেউ হয়তো মনে করার চেষ্টা করবেন, ‘নিউজিল্যান্ডকে ৯ রানে হারানো ওই ম্যাচেই তো মাশরাফি আর নাজমুল ইনজুরিতে পড়ল, তাই না?’ জয়ের রেণু ভেসে বেড়ানো সন্ধ্যায় কালও একসময় হারানোর হাহাকার হারিয়ে গেল জয়ধ্বনির আড়ালে।
অতৃপ্তিও ছিল, তবে সেটা আরও ভালো কিছু না হওয়ায়। ‘আমার কাছে মনে হয়েছিল আমরা ১২ রানের মতো কম করেছি। পরিকল্পনা ছিল ২৪০-২৫০ রান করার। তার পরও সবাই খুব ভালো বোলিং-ফিল্ডিং করেছে। একজন বোলার কম থাকার পরও জিততে পেরে ভালো লাগছে’—বলছিলেন মাশরাফি নিজেই। ২২৮ রান করেও জেতা সম্ভব, সেই বিশ্বাসও নাকি ছিল তাঁর মনে, ‘আমার মনে হয়েছিল, শুরুতে ৩-৪ উইকেট নিতে পারলেই জেতা সম্ভব। কারণ সাকিব-রাজকে এই উইকেটে খেলা কঠিন। রিয়াদ, নাঈমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে।’
কে একজন জানতে চাইলেন, বৃষ্টিতে খেলা ৫৫ মিনিট বন্ধ থাকাটাও বাংলাদেশের পক্ষে গেল কি না। এমন দিনে আবহাওয়াকে কৃতিত্ব দিতে কে চায়? মাশরাফির কণ্ঠে একরকম প্রতিবাদের সুর, ‘এটা খেলার অংশ। আবহাওয়ায় তো কারও হাত নেই। আমরাও হারতে পারতাম। আর বৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব যে সুবিধা পেয়েছি, তা নয়।’
সিরিজ শুরুর আগে মাশরাফি সবার আগে চেয়েছিলেন, একটা ভালো শুরু। সেটা পেয়ে যাওয়ার পর এখন বড় স্বপ্ন ভর করেছে তাঁর চোখে, ‘খুব ভালো সুযোগ আছে সামনে। তবে প্রথম ম্যাচের চেয়ে আরও অনেক ভালো খেলতে হবে। আজ (গতকাল) অনেক ব্যাটসম্যান সেট হয়ে আউট হয়ে গেছে। এই জায়গাগুলোতে, সঙ্গে বোলিং-ফিল্ডিংয়েও উন্নতি আনতে হবে। প্রথম ম্যাচ জিতে থাকলে সব সময়ই সুবিধা পাওয়া যায়।’
মাশরাফি-নাজমুলকে হারানোর দিনে এটাই তো সান্ত্বনা।
No comments