কঙ্গোতে এলআরএর গণহত্যার তথ্য ফাঁস
আফ্রিকার নৃশংসতম গুপ্ত বাহিনী লর্ডস রেজিস্টেন্স আর্মির (এলআরএ) সর্বশেষ গণহত্যার খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলেছে, উগান্ডাভিত্তিক এ ভয়ংকর সংগঠনের ঘাতকেরা গত ডিসেম্বরে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর কয়েকটি গ্রামে হানা দিয়ে কমপক্ষে ৩২১ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া তারা প্রায় ২৫০ জন তরুণ ও শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার তিন মাস পার হয়ে গেলেও এর আগে অন্য কোনো সূত্র বা সংবাদমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেনি।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিউ কঙ্গো গণহত্যার ওপর ৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে গতকাল রোববার। ‘ট্রেইল অব ডেথ: এলআরএ অ্যাট্রোসাইটিস ইন নর্থ-ইস্টার্ন কঙ্গো’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে যে হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা আদিম মানুষখেকো বর্বরদের পৈশাচিকতাকেও হার মানাবে বলে বিশ্লেষকেরা মন্তব্য করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ গণহত্যার ঘটনায় এলআরএর সদস্যরা উগান্ডা থেকে নদী পার হয়ে কঙ্গোর প্রত্যন্ত গ্রামে ঢুকে পড়ে। তারা প্রথমে প্রতিরোধ করতে সক্ষম শক্ত-সমর্থ যুবক ও দুর্বল বৃদ্ধদের বেঁধে ফেলে। তারপর চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে তাদের হত্যা করে। গাছের মোটা ডাল ও গুঁড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়। শহর থেকে বিচ্ছিন্ন অরণ্যসংলগ্ন এলাকায় তারা টানা চার দিন হত্যাযজ্ঞ চালায়। যাওয়ার সময় তারা সেখানকার প্রায় ২৫০ জন ছেলেমেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। লুট করা মাল তাদের দিয়ে বহন করানো হয়। অপহূত ছেলেশিশুদের যোদ্ধা এবং মেয়েশিশুদের যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তাদের অপহরণ করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এলআরএর দস্যুদের বন্দিদশা থেকে পালিয়ে বাঁচা ১৭ বছরের তরুণ জ্যঁ ক্লাউদে সিংবাতিলে বলে, গত ১৩ ডিসেম্বর উয়েলে নদী পাড়ি দিয়ে উগান্ডা থেকে দস্যুরা তাদের গ্রাম মাবাঙ্গা ইয়া তালোর পাশের একটি বাজারে এসে হাজির হয়। তারা সংখ্যায় ছিল ৪৫ থেকে ৫০ জন। তাদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক। গ্রামবাসী প্রথমে তাদের কঙ্গোর সেনা মনে করেছিল।
সিংবাতিলে বলে, দস্যুরা গ্রামবাসীদের তাদের খাবার ও মালামাল নদীর ওপারে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। গ্রামবাসী তাদের কথা মানতে রাজি না হলে তারা রোমহর্ষক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। অস্ত্রের মুখে তারা সব শক্ত-সমর্থ লোকের হাত-পা বেঁধে ফেলে। তারপর তারা গাছের মোটা ডাল অথবা পাথর দিয়ে কারও কারও মাথার খুলি ফাটিয়ে হত্যা করে। অনেক লোককে তারা তাদের হাতে থাকা চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। নারী ও শিশুদের আর্তচিত্কারও তাদের স্পর্শ করেনি। তাদের এ হত্যাযজ্ঞে অন্তত ৮০ জন শিশুও প্রাণ হারায়।
বেঁচে থাকা ২৫০ জন তরুণ-তরুণীকে বন্দী করে তাদের মাথায় খাদ্যশস্য ও লবণের বস্তা চাপিয়ে দিয়ে বহনের কাজে ব্যবহার করা হয়।
সিংবাতিলে জানায়, সে কৌশলে দস্যুদের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে পেরেছে। তবে অপহূত অন্য ব্যক্তিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা সে জানে না।
কঙ্গোর কর্মকর্তারা বলেছেন, জাতিসংঘের শান্তি মিশন আগেই লোকমুখে শুনেছিল বড়দিন সামনে রেখে কঙ্গোতে এলআরএ হামলা চালাতে পারে। সে অনুযায়ী তারা শহর এলাকায় শান্তি বাহিনী মোতায়েনও করেছিল। কিন্তু দস্যুরা শেষ পর্যন্ত হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে প্রত্যন্ত গ্রামগুলো বেছে নেওয়ায় তারা কিছুই করতে পারেনি।
মূলত উগান্ডার বিদ্রোহী গ্রুপ হিসেবে এলআরএর উত্থান হয়। শুরুর দিকে এ বিদ্রোহীরা উগান্ডায় হিব্রু বাইবেলের (ওল্ড টেস্টামেন্ট) দশ হিতোপদেশ (টেন কমান্ডমেন্টস) অনুযায়ী ‘মুসায়ী ধর্মরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা সুদান, মধ্য আফ্রিকা ও কঙ্গোর মতো এলাকায় তাদের রক্ত হিম করা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেয়। তাদের মানুষ হত্যার মূল উদ্দেশ্য কী, তা এখনো নৃতাত্ত্বিকদের কাছে এক রহস্য।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিউ কঙ্গো গণহত্যার ওপর ৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে গতকাল রোববার। ‘ট্রেইল অব ডেথ: এলআরএ অ্যাট্রোসাইটিস ইন নর্থ-ইস্টার্ন কঙ্গো’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে যে হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা আদিম মানুষখেকো বর্বরদের পৈশাচিকতাকেও হার মানাবে বলে বিশ্লেষকেরা মন্তব্য করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ গণহত্যার ঘটনায় এলআরএর সদস্যরা উগান্ডা থেকে নদী পার হয়ে কঙ্গোর প্রত্যন্ত গ্রামে ঢুকে পড়ে। তারা প্রথমে প্রতিরোধ করতে সক্ষম শক্ত-সমর্থ যুবক ও দুর্বল বৃদ্ধদের বেঁধে ফেলে। তারপর চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে তাদের হত্যা করে। গাছের মোটা ডাল ও গুঁড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়। শহর থেকে বিচ্ছিন্ন অরণ্যসংলগ্ন এলাকায় তারা টানা চার দিন হত্যাযজ্ঞ চালায়। যাওয়ার সময় তারা সেখানকার প্রায় ২৫০ জন ছেলেমেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। লুট করা মাল তাদের দিয়ে বহন করানো হয়। অপহূত ছেলেশিশুদের যোদ্ধা এবং মেয়েশিশুদের যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তাদের অপহরণ করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এলআরএর দস্যুদের বন্দিদশা থেকে পালিয়ে বাঁচা ১৭ বছরের তরুণ জ্যঁ ক্লাউদে সিংবাতিলে বলে, গত ১৩ ডিসেম্বর উয়েলে নদী পাড়ি দিয়ে উগান্ডা থেকে দস্যুরা তাদের গ্রাম মাবাঙ্গা ইয়া তালোর পাশের একটি বাজারে এসে হাজির হয়। তারা সংখ্যায় ছিল ৪৫ থেকে ৫০ জন। তাদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক। গ্রামবাসী প্রথমে তাদের কঙ্গোর সেনা মনে করেছিল।
সিংবাতিলে বলে, দস্যুরা গ্রামবাসীদের তাদের খাবার ও মালামাল নদীর ওপারে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। গ্রামবাসী তাদের কথা মানতে রাজি না হলে তারা রোমহর্ষক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। অস্ত্রের মুখে তারা সব শক্ত-সমর্থ লোকের হাত-পা বেঁধে ফেলে। তারপর তারা গাছের মোটা ডাল অথবা পাথর দিয়ে কারও কারও মাথার খুলি ফাটিয়ে হত্যা করে। অনেক লোককে তারা তাদের হাতে থাকা চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। নারী ও শিশুদের আর্তচিত্কারও তাদের স্পর্শ করেনি। তাদের এ হত্যাযজ্ঞে অন্তত ৮০ জন শিশুও প্রাণ হারায়।
বেঁচে থাকা ২৫০ জন তরুণ-তরুণীকে বন্দী করে তাদের মাথায় খাদ্যশস্য ও লবণের বস্তা চাপিয়ে দিয়ে বহনের কাজে ব্যবহার করা হয়।
সিংবাতিলে জানায়, সে কৌশলে দস্যুদের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে পেরেছে। তবে অপহূত অন্য ব্যক্তিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা সে জানে না।
কঙ্গোর কর্মকর্তারা বলেছেন, জাতিসংঘের শান্তি মিশন আগেই লোকমুখে শুনেছিল বড়দিন সামনে রেখে কঙ্গোতে এলআরএ হামলা চালাতে পারে। সে অনুযায়ী তারা শহর এলাকায় শান্তি বাহিনী মোতায়েনও করেছিল। কিন্তু দস্যুরা শেষ পর্যন্ত হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে প্রত্যন্ত গ্রামগুলো বেছে নেওয়ায় তারা কিছুই করতে পারেনি।
মূলত উগান্ডার বিদ্রোহী গ্রুপ হিসেবে এলআরএর উত্থান হয়। শুরুর দিকে এ বিদ্রোহীরা উগান্ডায় হিব্রু বাইবেলের (ওল্ড টেস্টামেন্ট) দশ হিতোপদেশ (টেন কমান্ডমেন্টস) অনুযায়ী ‘মুসায়ী ধর্মরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা সুদান, মধ্য আফ্রিকা ও কঙ্গোর মতো এলাকায় তাদের রক্ত হিম করা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেয়। তাদের মানুষ হত্যার মূল উদ্দেশ্য কী, তা এখনো নৃতাত্ত্বিকদের কাছে এক রহস্য।
No comments