মাওবাদী দমনে বুদ্ধদেব আন্তরিক: নারায়ণন
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী দমনের রূপরেখা তৈরি করলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। গতকাল মঙ্গলবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে আসার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নারায়ণনের এটাই প্রথম বৈঠক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার সম্পর্কে তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া যে ইতিবাচক, সে কথাও প্রধানমন্ত্রীকে এদিন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল।
নারায়ণনকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর পেছনে কেন্দ্রের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য—গোয়েন্দাপ্রধান হিসেবে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে মাওবাদী দমনে কাজে লাগানো। সেই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বুদ্ধদেবের সরকারের আগ্রহ এবং তার প্রতি সরকারের প্রাথমিক মনোভাবে নারায়ণন সন্তুষ্ট। বস্তুত বুদ্ধদেবের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, মাওবাদী দমনে মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক আগ্রহ রয়েছে, এ কাজে তাঁর সক্রিয় সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দেওয়া রূপরেখায় মাওবাদীদের প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর বিপক্ষেই সওয়াল করেন নারায়ণন। তাঁর যুক্তি, মাওবাদীদের সঙ্গে এখন আলোচনায় বসলে তাদের শর্ত মানতে হবে, অনেকটা নতিস্বীকার করতে হবে। তাঁর প্রস্তাব, আগে মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে জোরদার অভিযান হোক। মাওবাদীদের দুর্বল করে আলোচনায় বসলে তাদের শান্তির পথে ফিরতে রাজি করানো সহজ হবে।
সেদিক থেকে দেখতে গেলে তৃণমূল নেত্রী ও রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাওবাদী সমস্যা নিয়ে যে পথে চলতে চাইছিলেন, তাকে আপাতত উপেক্ষাই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অতিসম্প্রতি ঝাড়গ্রামের জনসভায় মাওবাদীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা। তার উত্তরে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষনেতা কিষেণজি অস্ত্র না ছাড়া, যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার ও দলিলপুর চকের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা—এই তিন শর্তে আলোচনায় বসতে চেয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন মমতাকে। কিন্তু সেই শর্ত মানতে কেন্দ্র নারাজ।
এদিকে মাওবাদী দমনে পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া তিনটি রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ৯ ফেব্রুয়ারি মহাকরণে বৈঠক ডেকেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। এত দিন সমস্যা ছিল ঝাড়খন্ড নিয়ে। বুদ্ধদেব বারবার অভিযোগ করছিলেন, মাওবাদীরা এ রাজ্যে অপারেশন চালিয়ে ঝাড়খন্ডে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু সে রাজ্যে নির্বাচিত সরকার না থাকায় সমন্বয়ের ভিত্তিতে অভিযান চালানো যাচ্ছিল না। আবার শিবু সরেন মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মাওবাদীদের বিষয়ে নরম মনোভাব নেন। এই অবস্থায় গত সপ্তাহে শিবু সরেনের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁকে চাপ দেন চিদাম্ব্বরম। চাপ দেয় তাঁর জোট শরিক বিজেপিও। এর পরই কেন্দ্রীয় অভিযানে সহায়তা দিতে এবং অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করতে রাজি হয়েছেন শিবু সরেন।
চিদাম্বরম এদিন বলেন, ‘মাঝেমধ্যে মাওবাদী দমন অভিযানের অগ্রগতির দিকগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। ২২ জানুয়ারি রায়পুরে চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছিল। এবার অন্য এলাকায় অভিযানের অগ্রগতি এবং সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখব।’
মমতা অবশ্য মনে করেন, মহাকরণে চিদাম্ব্বরমের বৈঠকে লাভ বিশেষ কিছু হবে না। কারণ, রাজ্যে মাওবাদী সমস্যা মূলত সিপিএমের তৈরি। যৌথ বাহিনীর উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধিই করতে চাইছে রাজ্যের প্রধান শাসক দল। তৃণমূল নেত্রীর মতে, কেন্দ্রের উচিত সামগ্রিকভাবে রাজ্যের রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া। তাঁর দলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী এদিন বলেন, চিদাম্বরমের উচিত রাজ্যে গিয়ে মাওবাদী সমস্যার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলা। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়, ৯ ফেব্রুয়ারির আলোচ্যসূচিতে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নেই। কারণ, সেটি রাজ্যের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়। এমনকি ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ডাকা মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকেও (যেখানে বুদ্ধদেবের বদলে সূর্যকান্ত মিশ্রের থাকার কথা) কথা হবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে আসার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নারায়ণনের এটাই প্রথম বৈঠক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার সম্পর্কে তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া যে ইতিবাচক, সে কথাও প্রধানমন্ত্রীকে এদিন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল।
নারায়ণনকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর পেছনে কেন্দ্রের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য—গোয়েন্দাপ্রধান হিসেবে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে মাওবাদী দমনে কাজে লাগানো। সেই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বুদ্ধদেবের সরকারের আগ্রহ এবং তার প্রতি সরকারের প্রাথমিক মনোভাবে নারায়ণন সন্তুষ্ট। বস্তুত বুদ্ধদেবের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, মাওবাদী দমনে মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক আগ্রহ রয়েছে, এ কাজে তাঁর সক্রিয় সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দেওয়া রূপরেখায় মাওবাদীদের প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর বিপক্ষেই সওয়াল করেন নারায়ণন। তাঁর যুক্তি, মাওবাদীদের সঙ্গে এখন আলোচনায় বসলে তাদের শর্ত মানতে হবে, অনেকটা নতিস্বীকার করতে হবে। তাঁর প্রস্তাব, আগে মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে জোরদার অভিযান হোক। মাওবাদীদের দুর্বল করে আলোচনায় বসলে তাদের শান্তির পথে ফিরতে রাজি করানো সহজ হবে।
সেদিক থেকে দেখতে গেলে তৃণমূল নেত্রী ও রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাওবাদী সমস্যা নিয়ে যে পথে চলতে চাইছিলেন, তাকে আপাতত উপেক্ষাই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অতিসম্প্রতি ঝাড়গ্রামের জনসভায় মাওবাদীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা। তার উত্তরে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষনেতা কিষেণজি অস্ত্র না ছাড়া, যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার ও দলিলপুর চকের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা—এই তিন শর্তে আলোচনায় বসতে চেয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন মমতাকে। কিন্তু সেই শর্ত মানতে কেন্দ্র নারাজ।
এদিকে মাওবাদী দমনে পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া তিনটি রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ৯ ফেব্রুয়ারি মহাকরণে বৈঠক ডেকেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। এত দিন সমস্যা ছিল ঝাড়খন্ড নিয়ে। বুদ্ধদেব বারবার অভিযোগ করছিলেন, মাওবাদীরা এ রাজ্যে অপারেশন চালিয়ে ঝাড়খন্ডে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু সে রাজ্যে নির্বাচিত সরকার না থাকায় সমন্বয়ের ভিত্তিতে অভিযান চালানো যাচ্ছিল না। আবার শিবু সরেন মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মাওবাদীদের বিষয়ে নরম মনোভাব নেন। এই অবস্থায় গত সপ্তাহে শিবু সরেনের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁকে চাপ দেন চিদাম্ব্বরম। চাপ দেয় তাঁর জোট শরিক বিজেপিও। এর পরই কেন্দ্রীয় অভিযানে সহায়তা দিতে এবং অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করতে রাজি হয়েছেন শিবু সরেন।
চিদাম্বরম এদিন বলেন, ‘মাঝেমধ্যে মাওবাদী দমন অভিযানের অগ্রগতির দিকগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। ২২ জানুয়ারি রায়পুরে চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছিল। এবার অন্য এলাকায় অভিযানের অগ্রগতি এবং সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখব।’
মমতা অবশ্য মনে করেন, মহাকরণে চিদাম্ব্বরমের বৈঠকে লাভ বিশেষ কিছু হবে না। কারণ, রাজ্যে মাওবাদী সমস্যা মূলত সিপিএমের তৈরি। যৌথ বাহিনীর উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধিই করতে চাইছে রাজ্যের প্রধান শাসক দল। তৃণমূল নেত্রীর মতে, কেন্দ্রের উচিত সামগ্রিকভাবে রাজ্যের রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া। তাঁর দলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী এদিন বলেন, চিদাম্বরমের উচিত রাজ্যে গিয়ে মাওবাদী সমস্যার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলা। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়, ৯ ফেব্রুয়ারির আলোচ্যসূচিতে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নেই। কারণ, সেটি রাজ্যের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়। এমনকি ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ডাকা মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকেও (যেখানে বুদ্ধদেবের বদলে সূর্যকান্ত মিশ্রের থাকার কথা) কথা হবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নয়।
No comments