পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হচ্ছে তিনটি সীমান্ত হাট
বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তে পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে সীমান্ত হাট। হাটের বাংলাদেশ অংশে যতটুকু জায়গায় বাজার থাকবে, ভারতের অংশেও থাকবে ঠিক ততটুকুই।
তবে হাটগুলো বসবে উভয় দেশের তুলনামূলক দুর্গম এলাকায়। পণ্য কেনাবেচা হবে শুল্কমুক্তভাবে। এতে স্থায়ী কোনো অবকাঠামো থাকবে না। বাজারের আয়তন হবে কমপক্ষে ৭৫ বর্গমিটার।
গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের সঙ্গে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রজিত মিত্রর এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন সরকার এবং ভারতীয় দূতাবাসের প্রথম সচিব সুশীল সিংহল উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পক্ষ থেকে ২২টি হাটের প্রস্তাব থাকলেও পরীক্ষামূলকভাবে তিনটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো—সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সোনারহাট ও ভারতের লিংখাট; সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউয়ারঘর ও ভারতের কালিয়া চর এবং কুড়িগ্রামের বাজিতপুর উপজেলার বালিয়াবাড়ি ও ভারতের নলিকাতা সীমান্ত।
বৈঠক সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যে যৌথ ঘোষণা গৃহীত হয়েছে, তার ৩২ থেকে ৩৮ অনুচ্ছেদে থাকা উভয় দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়গুলোও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এসব ঘোষণা বাস্তবায়নে পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে উভয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও যুগ্ম সচিব পর্যায়ে সভা করে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। আর চুক্তি করা হবে উভয় দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে।
সূত্র জানায়, উভয় দেশের মধ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণ এবং স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা কমিয়ে আনার ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে হাইকমিশনার একমত পোষণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কার্যদলের ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারত বাংলাদেশকে প্রথম সীমান্ত হাটের প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশ তখন এ বিষয়ে ভারতকে একটি ধারণাপত্র দিতে অনুরোধ জানায়। ভারত ধারণাপত্রটি পাঠায় গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল। পরে এ ধারণাপত্রের ওপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের মতামত চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তবে তখন হাট স্থাপনে ‘নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে আরও পরীক্ষার দরকার রয়েছে’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও ট্যারিফ কমিশন অবশ্য ওই ধারণাপত্রের কিছু সংশোধন সাপেক্ষে সীমান্ত হাট স্থাপনের পক্ষেই মতামত দেয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে (২০০৮ সালের ২৩ আগস্ট) এসব মতামত নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাল্টা ধারণাপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটকে (বিএফটিআই)।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের শুরুর দিক থেকেই বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে।
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, বিএফটিআই এবং কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত একটি দল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তসংলগ্ন বালাট এলাকা পরিদর্শন করে। এ সময় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও মেঘালয় রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষেও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উল্লিখিত তিনটি স্থানেই সীমান্ত হাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর বাংলাদেশ দল সীমান্ত হাটের সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে, যাতে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। প্রতিনিধিদল খোঁজ নিয়ে দেখে, ২২টি সম্ভাব্য বাজারের মধ্যে ১০টিই হলো মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলায়। বাকি ১২টি অন্য পাঁচ জেলার সীমান্তে।
জানা গেছে, সীমান্ত হাটে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা চানাচুর, চিপস, আলু, তৈরি পোশাক, মাছ, শুঁটকি, মুরগি, ডিম, সাবান, শিম, সবজি, গামছা ও তোয়ালে, কাঠের টেবিল ও চেয়ার, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহূত লোহার তৈরি পণ্য নিয়ে বসাবেন। আর ভারতীয়রা ওই হাটে নিয়ে আসবেন ফল, সবজি, মসলা, মরিচ, হলুদ, পান, সুপারি, আলু, মধু, বাঁশ ইত্যাদি পণ্য।
প্রসঙ্গত, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারত ২৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে আর বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে ২৮৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য।
তবে হাটগুলো বসবে উভয় দেশের তুলনামূলক দুর্গম এলাকায়। পণ্য কেনাবেচা হবে শুল্কমুক্তভাবে। এতে স্থায়ী কোনো অবকাঠামো থাকবে না। বাজারের আয়তন হবে কমপক্ষে ৭৫ বর্গমিটার।
গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের সঙ্গে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রজিত মিত্রর এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন সরকার এবং ভারতীয় দূতাবাসের প্রথম সচিব সুশীল সিংহল উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পক্ষ থেকে ২২টি হাটের প্রস্তাব থাকলেও পরীক্ষামূলকভাবে তিনটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো—সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সোনারহাট ও ভারতের লিংখাট; সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউয়ারঘর ও ভারতের কালিয়া চর এবং কুড়িগ্রামের বাজিতপুর উপজেলার বালিয়াবাড়ি ও ভারতের নলিকাতা সীমান্ত।
বৈঠক সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যে যৌথ ঘোষণা গৃহীত হয়েছে, তার ৩২ থেকে ৩৮ অনুচ্ছেদে থাকা উভয় দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়গুলোও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এসব ঘোষণা বাস্তবায়নে পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে উভয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও যুগ্ম সচিব পর্যায়ে সভা করে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। আর চুক্তি করা হবে উভয় দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে।
সূত্র জানায়, উভয় দেশের মধ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণ এবং স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা কমিয়ে আনার ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে হাইকমিশনার একমত পোষণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কার্যদলের ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারত বাংলাদেশকে প্রথম সীমান্ত হাটের প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশ তখন এ বিষয়ে ভারতকে একটি ধারণাপত্র দিতে অনুরোধ জানায়। ভারত ধারণাপত্রটি পাঠায় গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল। পরে এ ধারণাপত্রের ওপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের মতামত চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তবে তখন হাট স্থাপনে ‘নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে আরও পরীক্ষার দরকার রয়েছে’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও ট্যারিফ কমিশন অবশ্য ওই ধারণাপত্রের কিছু সংশোধন সাপেক্ষে সীমান্ত হাট স্থাপনের পক্ষেই মতামত দেয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে (২০০৮ সালের ২৩ আগস্ট) এসব মতামত নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাল্টা ধারণাপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটকে (বিএফটিআই)।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের শুরুর দিক থেকেই বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে।
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, বিএফটিআই এবং কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত একটি দল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তসংলগ্ন বালাট এলাকা পরিদর্শন করে। এ সময় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও মেঘালয় রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষেও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উল্লিখিত তিনটি স্থানেই সীমান্ত হাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর বাংলাদেশ দল সীমান্ত হাটের সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে, যাতে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। প্রতিনিধিদল খোঁজ নিয়ে দেখে, ২২টি সম্ভাব্য বাজারের মধ্যে ১০টিই হলো মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলায়। বাকি ১২টি অন্য পাঁচ জেলার সীমান্তে।
জানা গেছে, সীমান্ত হাটে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা চানাচুর, চিপস, আলু, তৈরি পোশাক, মাছ, শুঁটকি, মুরগি, ডিম, সাবান, শিম, সবজি, গামছা ও তোয়ালে, কাঠের টেবিল ও চেয়ার, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহূত লোহার তৈরি পণ্য নিয়ে বসাবেন। আর ভারতীয়রা ওই হাটে নিয়ে আসবেন ফল, সবজি, মসলা, মরিচ, হলুদ, পান, সুপারি, আলু, মধু, বাঁশ ইত্যাদি পণ্য।
প্রসঙ্গত, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারত ২৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে আর বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে ২৮৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য।
No comments