সাতক্ষীরার ভূমিদস্যুদের তাণ্ডব -বেআইনি ভূমি ইজারায় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
সাতক্ষীরার গ্রামাঞ্চল ভূমিদস্যু বনাম ভূমিহীনদের সংঘাতে মাঝেমধ্যেই অশান্ত হয়ে উঠছে। সোমবারের প্রথম আলো জানাচ্ছে, পুলিশ-র্যাবসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে কয়েক শ সন্ত্রাসী সাতক্ষীরার দুটি গ্রামে ভূমিহীন পল্লিতে হামলা চালিয়ে ৩০০ পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়। পুলিশের ভাষ্য হচ্ছে, তারা অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায়। কিন্তু ঘরবাড়ি ভেঙে বসতি উচ্ছেদ করার সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধারের কী সম্পর্ক? উচ্ছেদ করা পরিবারগুলোর অভিযোগ, ভূমিদস্যুদের দখল সহজ করতেই প্রশাসন-পুলিশ ও মাস্তান চক্র একযোগে তাদের উচ্ছেদ করেছে। কাজটি স্পষ্টভাবে সন্ত্রাসমূলক, বেআইনি ও ভূমিদস্যুতার নজির। সরকারের উচিত, অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া এবং দীর্ঘদিন থেকে চলতে থাকা সমস্যার স্থায়ী ও সুষ্ঠু সমাধান করা।
সাতক্ষীরায় প্রায় ৫৯ হাজার একর খাসজমি রয়েছে। এসব জমির দখল নিয়ে মাঝেমধ্যেই চিংড়িঘেরের মালিক ও ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে সংঘাত হচ্ছে ও রক্ত ঝরছে। ১৯৯৮ সালে ভূমিহীনদের ওপর ব্রাশফায়ার করা হলে একজন নারী নিহত হন এবং শত শত দরিদ্র ভূমিহীন আহত হয়। নিয়মিতভাবে সেখানে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন, হামলাসহ হয়রানিও চলছে। গত ডিসেম্বর মাসে সাতক্ষীরার জনপ্রিয় ভূমিহীন নেতা এবং কৃষক সংগ্রাম সমিতির সভাপতি সাইফুল্লাহ লস্করকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে ভূমিদস্যুদের মদদে এবং পুলিশের সহযোগিতায়—এ জন্যই তদন্তে গড়িমসি চলছে। গত রোববারের ‘উচ্ছেদ অভিযান’ এই দ্বন্দ্বের সর্বশেষ সংযোজন। প্রশ্ন হলো, কৃষি খাসজমিকে ‘বিশেষ চিংড়ি ঘের’ হিসেবে দেখিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ইজারা দেওয়ার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি নয়? গোষ্ঠীস্বার্থের কাছে পুলিশ ও প্রশাসনের এই নতজানু হওয়াকে সরকারের অবশ্যই আমলে নিতে হবে; কেননা সমস্যার গোড়া সেখানেই।
১৯৮৪ সালের খাসজমি বণ্টন নীতিমালা অনুসারে খাসজমির ওপর অধিকার ভূমিহীনদের। এর জন্য সরকারিভাবে কমিটি গঠন করে জমি বিতরণের কর্মপদ্ধতিও ঠিক করা আছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও ভূমিহীনদের ভূমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। ১৯৯৮ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় এসে ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বণ্টনের জন্য নির্বাহী আদেশও দেন। সুতরাং চিংড়িঘের বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ভূমিহীনদের অধিকারে থাকা খাসজমি ইজারা দেওয়াকে ভূমিদস্যুতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। বলা বাহুল্য, প্রশাসনের পক্ষপাত, দুর্নীতি এবং ভূমিদস্যুদের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি ছাড়া এই অন্যায় সম্ভব ছিল না।
আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্দেশ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবেন। একই সঙ্গে সাইফুল্লাহ লস্করের হত্যাকারীসহ ভূমিহীন পল্লিতে হামলার হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আর যাতে রক্ত না ঝরে এবং উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনেরা আর অবিচারের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করে সরকার আইনের শাসনের ওয়াদা পূরণ করবে।
সাতক্ষীরায় প্রায় ৫৯ হাজার একর খাসজমি রয়েছে। এসব জমির দখল নিয়ে মাঝেমধ্যেই চিংড়িঘেরের মালিক ও ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে সংঘাত হচ্ছে ও রক্ত ঝরছে। ১৯৯৮ সালে ভূমিহীনদের ওপর ব্রাশফায়ার করা হলে একজন নারী নিহত হন এবং শত শত দরিদ্র ভূমিহীন আহত হয়। নিয়মিতভাবে সেখানে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন, হামলাসহ হয়রানিও চলছে। গত ডিসেম্বর মাসে সাতক্ষীরার জনপ্রিয় ভূমিহীন নেতা এবং কৃষক সংগ্রাম সমিতির সভাপতি সাইফুল্লাহ লস্করকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে ভূমিদস্যুদের মদদে এবং পুলিশের সহযোগিতায়—এ জন্যই তদন্তে গড়িমসি চলছে। গত রোববারের ‘উচ্ছেদ অভিযান’ এই দ্বন্দ্বের সর্বশেষ সংযোজন। প্রশ্ন হলো, কৃষি খাসজমিকে ‘বিশেষ চিংড়ি ঘের’ হিসেবে দেখিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ইজারা দেওয়ার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি নয়? গোষ্ঠীস্বার্থের কাছে পুলিশ ও প্রশাসনের এই নতজানু হওয়াকে সরকারের অবশ্যই আমলে নিতে হবে; কেননা সমস্যার গোড়া সেখানেই।
১৯৮৪ সালের খাসজমি বণ্টন নীতিমালা অনুসারে খাসজমির ওপর অধিকার ভূমিহীনদের। এর জন্য সরকারিভাবে কমিটি গঠন করে জমি বিতরণের কর্মপদ্ধতিও ঠিক করা আছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও ভূমিহীনদের ভূমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। ১৯৯৮ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় এসে ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বণ্টনের জন্য নির্বাহী আদেশও দেন। সুতরাং চিংড়িঘের বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ভূমিহীনদের অধিকারে থাকা খাসজমি ইজারা দেওয়াকে ভূমিদস্যুতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। বলা বাহুল্য, প্রশাসনের পক্ষপাত, দুর্নীতি এবং ভূমিদস্যুদের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি ছাড়া এই অন্যায় সম্ভব ছিল না।
আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্দেশ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবেন। একই সঙ্গে সাইফুল্লাহ লস্করের হত্যাকারীসহ ভূমিহীন পল্লিতে হামলার হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আর যাতে রক্ত না ঝরে এবং উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনেরা আর অবিচারের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করে সরকার আইনের শাসনের ওয়াদা পূরণ করবে।
No comments