পার্বত্য চুক্তির এক যুগ -পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই হবে মূল দায়িত্ব
যে উত্সাহ-উদ্দীপনা ও প্রত্যাশা নিয়ে এক যুগ আগে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল, তার অনেকখানি আজ ম্লান হয়ে গেছে। চুক্তির বেশ কিছু বিধান বিগত দুই সরকারের আমলে অবাস্তবায়িত থেকে যাওয়ার কারণেই এ পরিস্থিতির উদ্ভব। বর্তমান বাস্তবতায় প্রধান কাজ হবে চুক্তি সত্ত্বেও অপ্রাপ্তি বোধের যে বেদনা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে এখনো প্রতি মুহূর্তে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, তার একটি সুরাহা করা। চুক্তির সঠিক ও পূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই তা সম্ভব।
এটা অনস্বীকার্য যে পাহাড়িদের মূল দাবিটি স্বীকৃতি ও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং এর চেয়ারম্যান সন্তু লারমা চুক্তি অনুযায়ী সীমিতভাবে হলেও কাজ পরিচালনা করছেন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর চুক্তি সম্পাদনের সময় মূল প্রশ্নটি ছিল পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা তাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও পাহাড়িদের প্রচলিত বিধিবিধান অনুযায়ী নিজেদের শাসনের অধিকার পাবে কি না। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চালিয়ে আসছিল, তার পরিসমাপ্তি হবে কি না। চুক্তির ফলে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার শুভ সূচনা ঘটে। সেদিক থেকে এটা ছিল বড় সাফল্য।
কোনো সরকার বা রাষ্ট্র যখন কোনো চুক্তি করে, তার বাস্তবায়নের মূল দায়িত্বও তখন তার ওপর বর্তায়। কিন্তু এটা দুঃখজনক যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চুক্তি বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা গেছে। পরবর্তীকালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে চুক্তির বাস্তবায়ন বলতে গেলে প্রায় থামিয়ে রাখে, যদিও তারা চুক্তি বাতিল করেনি। এসব কারণে পার্বত্য অঞ্চলে জেলা পরিষদ নির্বাচন এখনো হতে পারেনি, জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভোটার তালিকা প্রণীত হয়নি, ভূমির মালিকানা নির্ধারণে কমিটি গঠিত হলেও কাজ এগোয়নি, ভূমি হস্তান্তরের এখতিয়ার জেলা প্রশাসকের অধীনেই রয়ে গেছে। পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের কাজটিও চলছে ঢিমে তালে।
কথা ছিল পার্বত্য অঞ্চলে সেনানিবাসগুলো থাকবে, কিন্তু এর বাইরে স্থাপিত অস্থায়ী সেনাক্যাম্পগুলো পর্যায়ক্রমে গুটিয়ে আনা হবে। কিছু ক্যাম্প গুটিয়ে আনা হলেও নানা অজুহাতে অনেক ক্যাম্প এখনো রয়ে গেছে। পার্বত্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ ব্যাপারটি ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করছে। একসময় বলা হতো, চুক্তি হলে পার্বত্য অঞ্চল দেশের হাতছাড়া হয়ে যাবে, তাই সেখানে নিরাপত্তা জোরদার রাখা দরকার। কিন্তু বিগত এক যুগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যথেষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে ওই ধরনের উদ্বেগের বাস্তব ভিত্তি নেই।
পার্বত্যবাসীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ তাদের মৌলিক অধিকার। তাই বর্তমান সরকারের অন্যতম কর্তব্য হবে চুক্তির শর্তগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা। এটা ঠিক যে অনেক বিষয়ে জটিলতা আছে। সমতলের যে বাঙালিরা সেখানে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করছে, যারা ‘সেটলার’ নামে পরিচিত, তাদের বিষয়টির একটি যুক্তিসংগত সমাধান দরকার। এখন দরকার চুক্তির সব শর্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদ ও সরকারপক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে একটি রূপরেখা তৈরি করা এবং তার নিশ্চিত অনুসরণের ব্যবস্থা। এ ধরনের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চুক্তির যুগপূর্তি অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে।
এটা অনস্বীকার্য যে পাহাড়িদের মূল দাবিটি স্বীকৃতি ও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং এর চেয়ারম্যান সন্তু লারমা চুক্তি অনুযায়ী সীমিতভাবে হলেও কাজ পরিচালনা করছেন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর চুক্তি সম্পাদনের সময় মূল প্রশ্নটি ছিল পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা তাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও পাহাড়িদের প্রচলিত বিধিবিধান অনুযায়ী নিজেদের শাসনের অধিকার পাবে কি না। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চালিয়ে আসছিল, তার পরিসমাপ্তি হবে কি না। চুক্তির ফলে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার শুভ সূচনা ঘটে। সেদিক থেকে এটা ছিল বড় সাফল্য।
কোনো সরকার বা রাষ্ট্র যখন কোনো চুক্তি করে, তার বাস্তবায়নের মূল দায়িত্বও তখন তার ওপর বর্তায়। কিন্তু এটা দুঃখজনক যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চুক্তি বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা গেছে। পরবর্তীকালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে চুক্তির বাস্তবায়ন বলতে গেলে প্রায় থামিয়ে রাখে, যদিও তারা চুক্তি বাতিল করেনি। এসব কারণে পার্বত্য অঞ্চলে জেলা পরিষদ নির্বাচন এখনো হতে পারেনি, জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভোটার তালিকা প্রণীত হয়নি, ভূমির মালিকানা নির্ধারণে কমিটি গঠিত হলেও কাজ এগোয়নি, ভূমি হস্তান্তরের এখতিয়ার জেলা প্রশাসকের অধীনেই রয়ে গেছে। পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের কাজটিও চলছে ঢিমে তালে।
কথা ছিল পার্বত্য অঞ্চলে সেনানিবাসগুলো থাকবে, কিন্তু এর বাইরে স্থাপিত অস্থায়ী সেনাক্যাম্পগুলো পর্যায়ক্রমে গুটিয়ে আনা হবে। কিছু ক্যাম্প গুটিয়ে আনা হলেও নানা অজুহাতে অনেক ক্যাম্প এখনো রয়ে গেছে। পার্বত্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ ব্যাপারটি ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করছে। একসময় বলা হতো, চুক্তি হলে পার্বত্য অঞ্চল দেশের হাতছাড়া হয়ে যাবে, তাই সেখানে নিরাপত্তা জোরদার রাখা দরকার। কিন্তু বিগত এক যুগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যথেষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে ওই ধরনের উদ্বেগের বাস্তব ভিত্তি নেই।
পার্বত্যবাসীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ তাদের মৌলিক অধিকার। তাই বর্তমান সরকারের অন্যতম কর্তব্য হবে চুক্তির শর্তগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা। এটা ঠিক যে অনেক বিষয়ে জটিলতা আছে। সমতলের যে বাঙালিরা সেখানে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করছে, যারা ‘সেটলার’ নামে পরিচিত, তাদের বিষয়টির একটি যুক্তিসংগত সমাধান দরকার। এখন দরকার চুক্তির সব শর্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদ ও সরকারপক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে একটি রূপরেখা তৈরি করা এবং তার নিশ্চিত অনুসরণের ব্যবস্থা। এ ধরনের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চুক্তির যুগপূর্তি অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে।
No comments