কোরবানির পশুর চামড়ার দর নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মোহাম্মদপুরের টাউন হলে গত রোববার কোরবানির পশুর বেশ কিছু চামড়া নিয়ে বসে ছিলেন এক ব্যবসায়ী। সকাল সাড়ে ১০টায়ও আড়তদার বা ট্যানারির মালিকদের কোনো প্রতিনিধি সেখানে পৌঁছাননি। অনেকটা হতাশার সুরে ওই ব্যবসায়ী বললেন, ট্যানারির মালিকেরা আসছেন না, অন্যবার খুব সকালেই চলে আসেন তাঁরা। ভালো দাম পাওয়া যাবে না বলে মনে করেন তিনি।
কোরবানির পর রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও আড়তগুলোতে চামড়ার দর-দাম ও বেচাকেনা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র লক্ষ করা গেছে। পশু কোরবানির সংখ্যা বেশি হওয়ায় মহল্লার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ট্যানারির মালিকদের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও অনেক কম দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু আড়তদারদের দাবি, তাঁরা নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনেছেন। যদিও যাঁরা পশু কোরবানি করেছেন, তাঁরা চামড়া বিক্রি করেছেন অনেক কম দামে। আড়তদারদের দাবি, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এবার লাভবান হয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দর অনেক কমে গেছে। আর এ কারণে ট্যানারির মালিকেরা কোরবানির আগেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে কাঁচা চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেন।
ট্যানারির মালিকেরা ঢাকায় গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৩০ টাকা, মহিষের ২০ টাকা, খাসির ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকায় নির্ধারণ করে দেন।
এ ছাড়া ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার সর্বোচ্চ দর প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং খাসির চামড়ার দর ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যদিও অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা পশু কোরবানি করেছেন, তাঁদের কাছ থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কম দামে চামড়া কিনেছেন। অন্যদিকে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দরে এই ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেছেন। ট্যানারি ও কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার পশু কোরবানির সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। ফলে কাঁচা চামড়ার জোগান এবার ৫-১০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি হতে পারে।
সাধারণভাবে সারা বছর যে পরিমাণ চামড়া সংগ্রহ করা হয়, তার ৪০ শতাংশ আসে কোরবানির পশু থেকে। এবার পশু কোরবানি বেশি হওয়ায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চামড়া এই মৌসুমে সংগ্রহ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দর কমে যাওয়ায় রপ্তানি কমেছে। গত বছরের অনেক চামড়া এখনো অবিক্রীত রয়েছে, যে কারণে কোরবানির আগেই এবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
ট্যানারির মালিকদের ধারণা, এবার সব মিলিয়ে সারা দেশে প্রায় ৪৫ লাখ গরু ও খাসি কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ গরু। তাঁদের হিসাবে, গত বছর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ পশু কোরবানি হয়েছিল। রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে জানা যায়, গত চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পশু কোরবানি দিয়েছে নগরবাসী। রাজধানীর ১০টি অস্থায়ী পশুর হাটে প্রায় ১০ লাখ ৭০ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া খাসি, মহিষ, উটও কোরবানি হয়েছে।
ব্যবসায়ী ও ট্যানারি শিল্পের মালিকেরা মনে করছেন, এবার গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসায় এবং গরুর দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় পশু কোরবানির সংখ্যা বেড়েছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের অনেকে এবার কোরবানি করেছেন। রাস্তায় চাঁদাবাজিও কম হয়েছে। গত বছর সিডর ও আইলার মতো দুর্যোগের কারণে অনেকেই কোরবানি দিতে পারেননি।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আফতাব বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় চামড়া কেনাবেচায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঢাকার ভেতর থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ চামড়া আড়তে চলে এসেছে। ঢাকার বাইরে থেকে চামড়া আসা এখনো শুরু হয়নি। তবে দু-এক দিনের মধ্যে আসা শুরু হবে।
চামড়ার কম দাম নির্ধারণের সমালোচনা করেছেন পোস্তার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, টেনারির মালিকেরা কম দাম নির্ধারণ করে নিজেরাই বেশি দামে সব চামড়া কিনে নিয়েছেন। এ কারণে যে পরিমাণ চামড়া এখন পোস্তায় আসার কথা, সেভাবে আসছে না। অপর এক ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘চামড়া কোথায়? চামড়াই তো নেই। সেভাবে চামড়া এলে এখানে এখন রিকশা চলার কথা নয়।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের চামড়া রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ কম। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ২৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের চামড়া রপ্তানি হয়েছিল।
কোরবানির পর রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও আড়তগুলোতে চামড়ার দর-দাম ও বেচাকেনা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র লক্ষ করা গেছে। পশু কোরবানির সংখ্যা বেশি হওয়ায় মহল্লার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ট্যানারির মালিকদের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও অনেক কম দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু আড়তদারদের দাবি, তাঁরা নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনেছেন। যদিও যাঁরা পশু কোরবানি করেছেন, তাঁরা চামড়া বিক্রি করেছেন অনেক কম দামে। আড়তদারদের দাবি, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এবার লাভবান হয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দর অনেক কমে গেছে। আর এ কারণে ট্যানারির মালিকেরা কোরবানির আগেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে কাঁচা চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেন।
ট্যানারির মালিকেরা ঢাকায় গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৩০ টাকা, মহিষের ২০ টাকা, খাসির ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকায় নির্ধারণ করে দেন।
এ ছাড়া ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার সর্বোচ্চ দর প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং খাসির চামড়ার দর ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যদিও অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা পশু কোরবানি করেছেন, তাঁদের কাছ থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কম দামে চামড়া কিনেছেন। অন্যদিকে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দরে এই ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেছেন। ট্যানারি ও কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার পশু কোরবানির সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। ফলে কাঁচা চামড়ার জোগান এবার ৫-১০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি হতে পারে।
সাধারণভাবে সারা বছর যে পরিমাণ চামড়া সংগ্রহ করা হয়, তার ৪০ শতাংশ আসে কোরবানির পশু থেকে। এবার পশু কোরবানি বেশি হওয়ায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চামড়া এই মৌসুমে সংগ্রহ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দর কমে যাওয়ায় রপ্তানি কমেছে। গত বছরের অনেক চামড়া এখনো অবিক্রীত রয়েছে, যে কারণে কোরবানির আগেই এবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
ট্যানারির মালিকদের ধারণা, এবার সব মিলিয়ে সারা দেশে প্রায় ৪৫ লাখ গরু ও খাসি কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ গরু। তাঁদের হিসাবে, গত বছর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ পশু কোরবানি হয়েছিল। রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে জানা যায়, গত চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পশু কোরবানি দিয়েছে নগরবাসী। রাজধানীর ১০টি অস্থায়ী পশুর হাটে প্রায় ১০ লাখ ৭০ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া খাসি, মহিষ, উটও কোরবানি হয়েছে।
ব্যবসায়ী ও ট্যানারি শিল্পের মালিকেরা মনে করছেন, এবার গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসায় এবং গরুর দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় পশু কোরবানির সংখ্যা বেড়েছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের অনেকে এবার কোরবানি করেছেন। রাস্তায় চাঁদাবাজিও কম হয়েছে। গত বছর সিডর ও আইলার মতো দুর্যোগের কারণে অনেকেই কোরবানি দিতে পারেননি।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আফতাব বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় চামড়া কেনাবেচায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঢাকার ভেতর থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ চামড়া আড়তে চলে এসেছে। ঢাকার বাইরে থেকে চামড়া আসা এখনো শুরু হয়নি। তবে দু-এক দিনের মধ্যে আসা শুরু হবে।
চামড়ার কম দাম নির্ধারণের সমালোচনা করেছেন পোস্তার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, টেনারির মালিকেরা কম দাম নির্ধারণ করে নিজেরাই বেশি দামে সব চামড়া কিনে নিয়েছেন। এ কারণে যে পরিমাণ চামড়া এখন পোস্তায় আসার কথা, সেভাবে আসছে না। অপর এক ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘চামড়া কোথায়? চামড়াই তো নেই। সেভাবে চামড়া এলে এখানে এখন রিকশা চলার কথা নয়।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের চামড়া রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ কম। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ২৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের চামড়া রপ্তানি হয়েছিল।
No comments