দক্ষিণ আফ্রিকায় কর্মজীবী মায়েদের অবলম্বন বেবি হোটেল
পাঁচ দিনের হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে এল কাঙ্ক্ষিত সাপ্তাহিক ছুটি। ছুটি উপভোগের জন্য করেছেন নানা পরিকল্পনা। সিনেমা ও নাটক দেখা থেকে শুরু করে অনেক কিছু। পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়তো কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গেলেন, সঙ্গে শিশু সন্তান। কিন্তু অনুষ্ঠানের মাঝপথে কেঁদে উঠল সে। আশপাশের দর্শকেরা বিরক্ত, আপনি বিব্রত। কিংবা ধরুন, অফিস শেষে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আপনি। হঠাত্ ডাক পড়ল বসের কক্ষ থেকে। জরুরি কিছু কাজ করে দিতে হবে। সারা দিনের কাজ শেষে সন্তানের কাছে যাওয়ার জন্য তখন আপনার মন ছটফট করছে। আপনি উদ্বিগ্ন, কারণ সন্তানকে রেখে এসেছেন গৃহপরিচারিকার কাছে। কিন্তু উপায় নেই। কাজ শেষ করেই বাসায় যেতে হবে। তখন আপনার মনে হয়তো কাজ করবে অপরাধবোধ। চাকরির জন্য সন্তানের যথাযথ যত্ন করতে পারছেন না আপনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই ধরনের মায়েদের মুশকিল আসানে এগিয়ে এসেছে ‘বেবি হোটেল’। সন্তানকে ওই হোটেলে রেখে এখন একদম নিশ্চিন্ত মনে অফিস করছেন, কিংবা সাপ্তাহিক ছুটি উপভোগ করছেন অনেক মা।
কর্মজীবী মায়েদের সুবিধার্থে চালু করা হয়েছে নতুন ধরনের এই বেবি হোটেল। হোটেলটি খোলা থাকে দিনে ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে সাত দিন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সাধারণত নার্সারি বা ডে কেয়ার সেন্টারগুলোতে এক বা দুই ঘণ্টার জন্য সন্তান রাখা যায় না। সেখানে সন্তান রাখতে হলে পুরো দিনের জন্য রাখতে হবে। এক বা দুই ঘণ্টা রাখলেও গুনতে হবে পুরো দিনের টাকা। কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সন্তানকে নিতে না পারলে দিতে হয় কড়া জরিমানা। কিন্তু বেবি হোটেলে নেই এসব কড়াকড়ি।
অভিনব এই হোটেলের ভাবনাটি আসে ইসমে জেডউইননিস নামের এক নারীর। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি পড়েছিলেন অকূল পাথারে। সন্তানদের বাসায় রেখে কাজে যেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তখন তাঁর মাথায় আসে অভিনব এই ধারণাটি। যেই ভাবা সেই কাজ। ২০০৪ সালে এই বেবি হোটেল খুলে বসেন ইসমে জেডউইননিস।
হোটেলটির অবস্থান জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে অভিজাত মর্নিংসাইড এলাকায়। হোটেলটিতে রয়েছে ৫০টি শয্যা। শিশুদের দেখভালের জন্য রয়েছেন ১০ কর্মী। এক রাতের জন্য পরিশোধ করতে হয় ৫৪৫ র্যান্ড বা ৬৮ ডলার।
শেরি গালাজারর্ড, আট মাস বয়সী শিশু এমার মা। স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন এই নারীর কাছে হোটেলটি পরমাত্মীয়ের মতো। কারণ তার শিশুর দেখভালে দায়িত্ব নিয়েছে বেবি হোটেল। একটি বহুজাতিক কোম্পানির হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শেরি এখন একেবারেই নির্ভার। এখন একেবারে শেষ মুহূর্তেও তিনি গ্রহণ করতে পারেন ডিনারের কোনো আমন্ত্রণ। অপ্রত্যাশিত কোনো কারণে যদি কর্মস্থলে বেশি সময় ধরে থাকতে হয়, তাতেও তিনি নিরুদ্বিগ্ন। শেরি বলেন, মাসিক বাজারের জন্য শনিবার সকালে তাঁকে শপিংমলে যেতে হয়। কিন্তু ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে শনিবার সকালে শপিংমলে যাওয়া বুদ্ধিমানের কোনো কাজ নয়। তাই সন্তানকে বেবি হোটেলে রেখেই তিনি বাজার করতে যান।
হোটেলটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে সাঈদ পরিবারের জন্যও। তসলিম সাঈদ বলেন, ‘সন্তানদের সারা দিন হোটেলে রেখে সন্ধ্যার দিকে নিয়ে যাই। সন্তানদের নিজের কাছে রাখতে পারি না। কারণ কাজ নিয়ে সারা দিন ছোটোছুটি করতে হয়। বেবি হোটেল আমাদের জন্য খুবই সহায়ক।’ গৃহপরিচারিকাদের ওপর একদমই আস্থা নেই তসলিমা সাঈদের। তিনি বলেন, ‘আমি চলে যাওয়ার পর তারা বসে বসে টেলিভিশন দেখে এবং নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকে। তারা আমার সন্তানের যত্ন নেয় না।’
এই অভিযোগ শুধু তসলিম সাঈদের নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক মায়েরই। শুধু যত্ন-আত্তির বিষয় নয়, সারা দিন কাজের মানুষের কাছে পড়ে থাকলে সন্তানের শিক্ষা-দীক্ষার কী হবে? এই বিষয়টিও ভাবতে হচ্ছে মায়েদের। কারণ গৃহপরিচারিকার কাছে থাকা মানে হচ্ছে, শিক্ষা-দীক্ষা থেকে দূরে থাকা। মায়েদের এ ভাবনাটিও দূর করে দিচ্ছে বেবি হোটেল। শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে হোটেল কর্তৃপক্ষ খুবই সচেতন।
নবজাতকদের জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে হোটেলটিতে। অধিকাংশ নার্সারিই তিন মাসের কম বয়সী শিশুদের গ্রহণ করে না, কিন্তু বেবি হোটেলে এর চেয়ে কমবয়সী শিশুদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরই মধ্যে হোটেলটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলতি বছরই পোর্ট এলিজাবেথে এর দ্বিতীয় শাখা খোলা হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই ধরনের মায়েদের মুশকিল আসানে এগিয়ে এসেছে ‘বেবি হোটেল’। সন্তানকে ওই হোটেলে রেখে এখন একদম নিশ্চিন্ত মনে অফিস করছেন, কিংবা সাপ্তাহিক ছুটি উপভোগ করছেন অনেক মা।
কর্মজীবী মায়েদের সুবিধার্থে চালু করা হয়েছে নতুন ধরনের এই বেবি হোটেল। হোটেলটি খোলা থাকে দিনে ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে সাত দিন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সাধারণত নার্সারি বা ডে কেয়ার সেন্টারগুলোতে এক বা দুই ঘণ্টার জন্য সন্তান রাখা যায় না। সেখানে সন্তান রাখতে হলে পুরো দিনের জন্য রাখতে হবে। এক বা দুই ঘণ্টা রাখলেও গুনতে হবে পুরো দিনের টাকা। কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সন্তানকে নিতে না পারলে দিতে হয় কড়া জরিমানা। কিন্তু বেবি হোটেলে নেই এসব কড়াকড়ি।
অভিনব এই হোটেলের ভাবনাটি আসে ইসমে জেডউইননিস নামের এক নারীর। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি পড়েছিলেন অকূল পাথারে। সন্তানদের বাসায় রেখে কাজে যেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তখন তাঁর মাথায় আসে অভিনব এই ধারণাটি। যেই ভাবা সেই কাজ। ২০০৪ সালে এই বেবি হোটেল খুলে বসেন ইসমে জেডউইননিস।
হোটেলটির অবস্থান জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে অভিজাত মর্নিংসাইড এলাকায়। হোটেলটিতে রয়েছে ৫০টি শয্যা। শিশুদের দেখভালের জন্য রয়েছেন ১০ কর্মী। এক রাতের জন্য পরিশোধ করতে হয় ৫৪৫ র্যান্ড বা ৬৮ ডলার।
শেরি গালাজারর্ড, আট মাস বয়সী শিশু এমার মা। স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন এই নারীর কাছে হোটেলটি পরমাত্মীয়ের মতো। কারণ তার শিশুর দেখভালে দায়িত্ব নিয়েছে বেবি হোটেল। একটি বহুজাতিক কোম্পানির হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শেরি এখন একেবারেই নির্ভার। এখন একেবারে শেষ মুহূর্তেও তিনি গ্রহণ করতে পারেন ডিনারের কোনো আমন্ত্রণ। অপ্রত্যাশিত কোনো কারণে যদি কর্মস্থলে বেশি সময় ধরে থাকতে হয়, তাতেও তিনি নিরুদ্বিগ্ন। শেরি বলেন, মাসিক বাজারের জন্য শনিবার সকালে তাঁকে শপিংমলে যেতে হয়। কিন্তু ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে শনিবার সকালে শপিংমলে যাওয়া বুদ্ধিমানের কোনো কাজ নয়। তাই সন্তানকে বেবি হোটেলে রেখেই তিনি বাজার করতে যান।
হোটেলটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে সাঈদ পরিবারের জন্যও। তসলিম সাঈদ বলেন, ‘সন্তানদের সারা দিন হোটেলে রেখে সন্ধ্যার দিকে নিয়ে যাই। সন্তানদের নিজের কাছে রাখতে পারি না। কারণ কাজ নিয়ে সারা দিন ছোটোছুটি করতে হয়। বেবি হোটেল আমাদের জন্য খুবই সহায়ক।’ গৃহপরিচারিকাদের ওপর একদমই আস্থা নেই তসলিমা সাঈদের। তিনি বলেন, ‘আমি চলে যাওয়ার পর তারা বসে বসে টেলিভিশন দেখে এবং নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকে। তারা আমার সন্তানের যত্ন নেয় না।’
এই অভিযোগ শুধু তসলিম সাঈদের নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক মায়েরই। শুধু যত্ন-আত্তির বিষয় নয়, সারা দিন কাজের মানুষের কাছে পড়ে থাকলে সন্তানের শিক্ষা-দীক্ষার কী হবে? এই বিষয়টিও ভাবতে হচ্ছে মায়েদের। কারণ গৃহপরিচারিকার কাছে থাকা মানে হচ্ছে, শিক্ষা-দীক্ষা থেকে দূরে থাকা। মায়েদের এ ভাবনাটিও দূর করে দিচ্ছে বেবি হোটেল। শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে হোটেল কর্তৃপক্ষ খুবই সচেতন।
নবজাতকদের জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে হোটেলটিতে। অধিকাংশ নার্সারিই তিন মাসের কম বয়সী শিশুদের গ্রহণ করে না, কিন্তু বেবি হোটেলে এর চেয়ে কমবয়সী শিশুদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরই মধ্যে হোটেলটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলতি বছরই পোর্ট এলিজাবেথে এর দ্বিতীয় শাখা খোলা হবে।
No comments