গ্রেপ্তার দম্পতির তথ্য: ধর্ষণচেষ্টা করায় উপাধ্যক্ষকে কুপিয়ে হত্যা

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া হত্যা মামলায় রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি ও নাজিম হোসেন  দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ফরিদপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বঁটি, একটি ধারালো চাকু ও রক্ত মাখা জামা-কাপড় এবং বিছানার চাদর উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জব্দ করা হয়। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি’র উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গত সোমবার রাত ২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা বিল্ডিং এর ৪র্থ তলার ৬নং ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ১১ই মার্চ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ভুক্তভোগী সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈতৃক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩/৪ মাস যাবৎ সে এলাকার একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। ঘটনার দিন বিকালে তিনি সংবাদ পান তার বড় ভাইকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার শয়ন কক্ষের ভেতর ফেলে রেখেছে। স্থানীয় লোকজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় সকাল ৭টার দিকে তিনি মারা যান। উত্তরখান থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠায়।

ডিসি মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, মামলাটি রুজুর পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে উক্ত হত্যা মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন করে উত্তরখান থানা পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর  রেলস্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত হতে দুটি মোবাইল ফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার ২/৩ দিন পূর্বে কমলাপুর রেলস্টেশনে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সঙ্গে নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার সুবাধে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে তার ফ্ল্যাটে আটক করে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে। গ্রেপ্তারকৃতরা নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত রাগ ও ক্ষোভ থেকে সোমবার রাতে ধারালো বঁটি দিয়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে উপর্যুপরি আঘাত করে। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। তাদের  আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.