ছাত্র-জনতার ওপর নানা ভঙ্গিমায় টার্গেট করে গুলি চালায় সুজন
সূত্র জানায়, উত্তরা থেকে পুলিশ কনস্টেবল সুজনকে ৫ই আগস্ট চানখাঁরপুলে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে শান্তিপূর্ণ ছাত্র-জনতার ওপর খুব ঠাণ্ডা মাথায় গুলি চালায়। খুব আরাম-আয়েশ করে, ভাবভঙ্গি নিয়ে গুলি করার কারণে সাতজন মারা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চানখাঁরপুলে বোরহানউদ্দিন কলেজের পাশে সুজন হোসেনকে কখনো দাঁড়িয়ে বা কখনো শুয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে দেখা গেছে, যা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। ওই এলাকার মানুষকে নিশানা করে গুলি করছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। তাদের মধ্যে এপিবিএন-১৩ সদস্য কনস্টেবল সুজন অন্যতম ভঙ্গিমায় গুলি চালায়। তৎকালীন রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আখতার হোসেনকে পাশে থেকে নির্দেশনা দিতে দেখা যায়।
গতকাল চানখাঁরপুলে সাতজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গণহত্যার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য মো. সুজন হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখায় এবং ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন প্রসিডিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন- চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, মো. মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। পরে ট্রাইব্যুনালের সামনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার কর্মসূচি চলাকালে ৫ই আগস্ট চানখাঁরপুলে খুব আয়েশ ভাবভঙ্গি নিয়ে গুলি চালিয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল সুজন হোসেন। এ সময় তাকে খুবই ঠাণ্ডা মাথায় গুলি চালাতে দেখা যায়। এ সময় তার গুলিতে সাতজন নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল, এটাকে তিনি পারসোনালি নিয়েছিলেন। প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বলেন, রাজধানীর চানখাঁরপুলে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ সুজন হোসেনকে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টমূলে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদন শুনানি শেষে আসামি সুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
No comments