সমুদ্রপৃষ্ঠে উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের জীবনযাত্রাকে অসম্ভব করে তুলছে
সমুদ্রপৃষ্ঠের
উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের প্রথাগত জীবনযাত্রাকে অসম্ভব করে তুলছে। গ্রামীণ
এলাকায় বসবাসকারীরা জীবন টিকিয়ে রাখতে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে
নিচ্ছেন। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন উদ্ভাবন, নমনীয়তা ও
স্থিতিস্থাপকতার সমন্বয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন বন্যাপ্রবণ এই দেশের
মানুষ। কিন্তু পরিবেশ এখন তাদেরকে এমন এক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে যে, তা
যেকারো ধৈর্য্যরে বাইরে চলে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন যতই ত্বরান্বিত
হচ্ছে ততই গ্রামে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের ওপর চাপ তীব্র হচ্ছে। এর আগে
ভয়াবহ মৌসুমী বন্যার সময়ে মানুষ সরে যেতে সক্ষত হতো। এখন নিয়মিত জলাবদ্ধতা
সেখানে।
এতে কৃষিকাজ অসম্ভব হয়ে উঠেছে। লবণাক্ত পানির সঙ্গে বিভিন্ন রকম শস্য বা ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে কৃষকদের পেশা পরিবর্তন করার সুযোগও সীমিত।
তাহলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জন্য কি করা যেতে পারে; যারা বাংলাদেশের গ্রামে বসবাসকারী ধান উৎপাদনকারী কৃষক?
ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশী মানুষ কাজ করেন মৌসুমি বন্যার আগে-পরে। বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় তারা কৃষিকাজ করেন। পানির স্তর বৃদ্ধি পেলে আবার তারা জমিজমা থেকে সরে আসেন। আর জমিগুলো অকেজো হয়ে পড়ার কারণে তারা শহরমুখী হন কাজের সন্ধানে।
এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বাংলাদেশ উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১.৫ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উঠানামার সঙ্গে সঙ্গে এতে মৌসুমী কার্যক্রম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন প্রতি দশকে একবার বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ঝড় ও অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস হয়। কিন্তু ২১০০ সাল নাগাদ এ ঘটনা প্রতি বছর নিয়মিতভাবে তিন থেকে ১৫ বার ঘটতে পারে। এর ফল হিসেবে গ্রামে বসবাসকারী মানুষকে পছন্দ বেছে নেয়া কঠিন হবে। হয়তো তাদেরকে উপায় পরিবর্তন করতে হবে। জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে। অন্য কোথাও তাদেরকে খুঁজতে হবে কাজ এবং থাকার স্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ চেন বলেন, জলবায়ু অধিক পরিমাণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। তাই আমরা উচ্চ হারে ঘন ঘন অভিবাসন দেখছি। আগে যেখানে আমরা অভিবাসন দেখেছি বার্ষিক বন্যা অথবা নদীর তীর ভাঙনের জন্য, এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি লবণাক্ত পানি জনপদে ঢুকে পড়ছে। আর তাতে দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে ফসল উৎপাদন কঠিন হয়ে উঠছে। কারণ, লবণাক্ত পানির জন্য জমির প্রকৃতি স্থায়ীভাবে পাল্টে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগের দিনে মানুষ শহরে যেতেন দু’চার মাস কাজ করার জন্য, যখন বন্যা হতো। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর তারা শহর থেকে ফিরে যেতেন। কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয়। কারণ, মানুষ বুঝতে পারছে যে, গ্রামে ফিরে যাওয়া কোনো নির্ভরযোগ্য উপায় নয়।
কিছু মানুষের জন্য লবণাক্ত পানি সুযোগ নিয়ে আসে। যেখানে এক সময় ধান উৎপাদন হতো, এখন সেখানে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। মাছ চাষের জন্য যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করে দিচ্ছে লবণাক্ত পানি। তাই চেন বলেন, কৃষি উৎপাদন থেকে পেশা পরিবর্তনকারী মানুষের দিকে যখন আমরা তাকাই তখন মনে হয় তারা ভাল উৎপাদন করে যাচ্ছে মৎস্য খাত থেকে। এতে মনে হয় তারা মোটামুটি ভাল আছেন। কিন্তু তারা এই যে মোটামুটি ভাল আছেন, তা ভবিষ্যতে টেকসই হওয়া প্রয়োজন। এই মৎস্য চাষ কিভাবে টেকসই হবে? যদি বিপুল পরিমাণ মানুষ পেশা পরিবর্তন করে এদিকে ঝোঁকেন এবং যদি অধিক হারে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে তাহলে তাতে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে। মানুষ বুঝতে পারবে না এমনভাবে অর্থনীতি পাল্টে যাবে।
(অনলাইন বিবিসিতে প্রকাশিত দীর্ঘ নিবন্ধের সংক্ষিপ্তসার)
এতে কৃষিকাজ অসম্ভব হয়ে উঠেছে। লবণাক্ত পানির সঙ্গে বিভিন্ন রকম শস্য বা ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে কৃষকদের পেশা পরিবর্তন করার সুযোগও সীমিত।
তাহলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জন্য কি করা যেতে পারে; যারা বাংলাদেশের গ্রামে বসবাসকারী ধান উৎপাদনকারী কৃষক?
ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশী মানুষ কাজ করেন মৌসুমি বন্যার আগে-পরে। বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় তারা কৃষিকাজ করেন। পানির স্তর বৃদ্ধি পেলে আবার তারা জমিজমা থেকে সরে আসেন। আর জমিগুলো অকেজো হয়ে পড়ার কারণে তারা শহরমুখী হন কাজের সন্ধানে।
এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বাংলাদেশ উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১.৫ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উঠানামার সঙ্গে সঙ্গে এতে মৌসুমী কার্যক্রম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন প্রতি দশকে একবার বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ঝড় ও অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস হয়। কিন্তু ২১০০ সাল নাগাদ এ ঘটনা প্রতি বছর নিয়মিতভাবে তিন থেকে ১৫ বার ঘটতে পারে। এর ফল হিসেবে গ্রামে বসবাসকারী মানুষকে পছন্দ বেছে নেয়া কঠিন হবে। হয়তো তাদেরকে উপায় পরিবর্তন করতে হবে। জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে। অন্য কোথাও তাদেরকে খুঁজতে হবে কাজ এবং থাকার স্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ চেন বলেন, জলবায়ু অধিক পরিমাণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। তাই আমরা উচ্চ হারে ঘন ঘন অভিবাসন দেখছি। আগে যেখানে আমরা অভিবাসন দেখেছি বার্ষিক বন্যা অথবা নদীর তীর ভাঙনের জন্য, এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি লবণাক্ত পানি জনপদে ঢুকে পড়ছে। আর তাতে দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে ফসল উৎপাদন কঠিন হয়ে উঠছে। কারণ, লবণাক্ত পানির জন্য জমির প্রকৃতি স্থায়ীভাবে পাল্টে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগের দিনে মানুষ শহরে যেতেন দু’চার মাস কাজ করার জন্য, যখন বন্যা হতো। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর তারা শহর থেকে ফিরে যেতেন। কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয়। কারণ, মানুষ বুঝতে পারছে যে, গ্রামে ফিরে যাওয়া কোনো নির্ভরযোগ্য উপায় নয়।
কিছু মানুষের জন্য লবণাক্ত পানি সুযোগ নিয়ে আসে। যেখানে এক সময় ধান উৎপাদন হতো, এখন সেখানে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। মাছ চাষের জন্য যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করে দিচ্ছে লবণাক্ত পানি। তাই চেন বলেন, কৃষি উৎপাদন থেকে পেশা পরিবর্তনকারী মানুষের দিকে যখন আমরা তাকাই তখন মনে হয় তারা ভাল উৎপাদন করে যাচ্ছে মৎস্য খাত থেকে। এতে মনে হয় তারা মোটামুটি ভাল আছেন। কিন্তু তারা এই যে মোটামুটি ভাল আছেন, তা ভবিষ্যতে টেকসই হওয়া প্রয়োজন। এই মৎস্য চাষ কিভাবে টেকসই হবে? যদি বিপুল পরিমাণ মানুষ পেশা পরিবর্তন করে এদিকে ঝোঁকেন এবং যদি অধিক হারে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে তাহলে তাতে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে। মানুষ বুঝতে পারবে না এমনভাবে অর্থনীতি পাল্টে যাবে।
(অনলাইন বিবিসিতে প্রকাশিত দীর্ঘ নিবন্ধের সংক্ষিপ্তসার)
No comments