৭২ হাজার নারী ফিস্টুলায় আক্রান্ত: ভুল অস্ত্রোপচারে বাড়ছে রোগ by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
বাংলাদেশে
৭২ হাজার অবহেলিত নারী ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত। প্রতিদিনই এ রোগে
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর বাড়ার বহরে গতি জোগাচ্ছে ভুল অস্ত্রোপচারজনিত
ফিস্টুলা। দেশে প্রতিবছর দুই থেকে তিন হাজার নারী নতুন ফিস্টুলা রোগী যোগ
হচ্ছেন। প্রতিবছর ৬০০ থেকে ৭০০ জন ফিস্টুলা রোগীকে অপারেশন করান চিকিৎসকরা।
এনজেন্ডারহেলথ্ বাংলাদেশের ‘ফিস্টুলা কেয়ার প্রকল্প’র গবেষণা প্রতিবেদন
মতে, প্রতি হাজার বিবাহিত নারীর বিপরীতে বাংলাদেশে ফিস্টুলা-আক্রান্ত নারীর
সংখ্যা ১ দশমিক ৭ জন। উপযুক্ত বয়সের আগে বিয়ে ও গর্ভধারণকারী নারীদের
মধ্যে এ রোগের প্রবণতা বেশি বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রসবজনিত কারণে ৭৬ শতাংশ এবং অস্ত্রোপচারজনিত কারণে ২৪ শতাংশ নারী ফিস্টুলায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আর অস্ত্রোপচারজনিত কারণের ৮০ শতাংশ জরায়ু অপসারণের ফলে এবং ২০ শতাংশ সিজার পরবর্তী আঘাতের কারণে ফিস্টুলায় আক্রান্ত হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা অপারেশনের মাধ্যমে ৮০ থেকে ৮৩ ভাগ ফিস্টুলা ঠিক করা সম্ভব বলে তার মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, দেশে ইতিপূবে জাতীয় পর্যায়ে ফিস্টুলা বিষয়ে কোনো জরিপ চালানো হয়নি। কর্মকর্তারা ধারণা দিয়ে বলছেন, গত ১০ বছরে দেশে ফিস্টুলা রোগী দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৬ সালের আইসিডিডিআর,বি এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি হাজার বিবাহিত মহিলাদের শূন্য দশমিক ৪২ জন ফিস্টুলায় আক্রান্ত। সে হিসাবে ১৯ হাজার ৭৫৫ জন মহিলা ফিস্টুলা রোগে ভুগছেন। বছরে নতুন করে যোগ হচ্ছেন এক হাজার নারী।
ফিস্টুলা প্রতিরোধ না করে শুধু চিকিৎসা দিয়ে এ জটিলতা দূর করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশে চিকিৎসকদের মধ্যে গাইনি চিকিৎসক বেশি। এদের মধ্যে ফিস্টুলা চিকিৎসক নেই বললেই চলে। এই সংখ্যা মাত্র ২৫ থেকে ৩০ জন রয়েছেন। দেশে ৬৪ থেকে ৬৫ শতাংশ মায়েদের ডেলিভারি এখনও বাড়িতে হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব দেশে দক্ষ ব্যক্তির সহায়তা ছাড়া বাড়িতে ৫০ শতাংশের বেশি সন্তান প্রসব হয় এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি, সেসব দেশে বছরে দুই হাজার নারী নতুন করে ফিস্টুলায় আক্রান্ত হন। এ হিসাবে বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই হাজার ফিস্টুলা রোগী বাড়ছে। তবে নারীরা লজ্জা পান এবং গোপন রাখেন বলে ফিস্টুলার সঠিক পরিসংখ্যান জানা কঠিন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ মতে, বিশ্বে আনুমানিক ২ মিলিয়নেরও বেশি অর্থাৎ ২০ লাখ নারী ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত এবং প্রতিবছর আনুমানিক এক লাখেরও বেশি নারী নতুর করে এতে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর মাত্রা বেশি।
সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ফিস্টুলা সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বছরে ২৫০ থেকে ৩০০ ফিস্টুলা রোগী সেবা নিচ্ছেন। এখানে আগে ১৬টি বেড ছিল। কিন্তু দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ায় কারণে বর্তমানে বেড সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৫-এ উন্নীত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমানে বিএসএমএমইউতে ৬টি বেড নিয়ে আলাদাভাবে ফিস্টুলা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গত ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে এ সেন্টার থেকে এসব রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রায় দু’বছরে দেড়শতাধিক জনের মতো রোগীকে সেবা দেয়া হয়েছে। সেন্টারে আসা রোগীরদের বেশির ভাগই দরিদ্র এবং গ্রামের বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, অসচেতনতার কারণে মূলত নারীরা ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশ শিশুমৃত্যুর হারে সাফল্য অর্জন করলেও নিরাপদ প্রসব এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। অসতর্কতা, মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া, অদক্ষ দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসব, সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে না যাওয়া এবং পরিবারের অবহেলার কারণে এখনো দেশের অনেক মা প্রসবকালীন সময়ে সঠিক সেবা পান না। ফলে নারীরা ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
প্রতিরোধ: চিকিৎসকদের মতে, ফিস্টুলা একটি নিরাময়যোগ্য শারীরিক সমস্যা। দক্ষ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এ সমস্যা নিরাময় সম্ভব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা অপারেশনের মাধ্যমে ফিস্টুলা ঠিক করা যায়। বাল্যবিয়েকে নারীজনিত ফিস্টুলার অন্যতম কারণ বলা হয়। বাল্যবিয়ে বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কম বয়সে গর্ভধারণ করলে ফিস্টুলা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই উপযুক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করে পরিণত বয়সে সন্তান নেয়া উচিত। উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর সহায়তায় প্রসব করালে ফিস্টুলা ঝুঁকি কম থাকে। বাধাগ্রস্ত প্রসবের ক্ষেত্রে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জাতীয় ফিস্টুলা সেন্টারসহ দেশের ১১টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে ফিস্টুলা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা এবং যশোরের আদ-দ্বীন হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতাল এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ল্যাম্বসহ ৮টি বেসরকারি হাসপাতালে এনজেন্ডারহেলথ্? ফিস্টুলা রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে। ঢাকায় এই রোগীদের জন্য একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রও পরিচালিত হচ্ছে। সূত্র জানায়, নগরের ১৮/২ বকশীবাজারে প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগী চিকিৎসা, আরোগ্য ও পুনর্বাসন প্রকল্পের কার্যালয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইউএনএফপিএর সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পের আওতায় এ পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২৮ জন নারীর থাকার ব্যবস্থা আছে। কেন্দ্রের ভেতরেই বেকারি, সেলাই, রান্না, সবজির বাগান তৈরি, হাঁস মুরগি পালনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার ব্যবস্থা আছে। প্রশিক্ষণ পেয়ে এক সময়ে সমাজচ্যুত এই নারীরা এখন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী।
ন্যাশনাল ফিস্টুলা সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. ফেরদৌসি ইসলাম লিপি জানান, বাড়িতে বাধাগ্রস্ত প্রসব কমাতে দরকার দক্ষ ধাত্রী। তাহলে ফিস্টুলা কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রসবের সঠিক সময়ে পাটোগ্রাফ ব্যবহার করতে হবে। থাকতে হবে পূর্ব প্রস্তুতিও। মানুষের মধ্যে সচেতনতাই পারে এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে। বিলম্বিত প্রসব রোধ করতে মায়েদের পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করতে হবে। তিনি বলেন, বাধাগ্রস্ত ফিস্টুল কিছুটা কমলেও গাইনোকোলজিকাল অস্ত্রোপচারে বাড়ছে ফিস্টুলা। এজন্য চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রসবজনিত ফিস্টুলা সংক্রান্ত জাতীয় কৌশলপত্র (২০১৭-২০২২) উদ্বোধনী এক অনুষ্ঠানে নার্সি ও মিডওইয়াফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তন্দ্র সিকদার জানান, বাংলাদেশে ৭২ হাজার নারী ফিস্টুলা রোগের সমস্যয় ভুগছেন। আমাদের সচেতন হতে হবে। বাল্যবিবাহ রোধ করতে হবে। তাহলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রসবজনিত কারণে ৭৬ শতাংশ এবং অস্ত্রোপচারজনিত কারণে ২৪ শতাংশ নারী ফিস্টুলায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আর অস্ত্রোপচারজনিত কারণের ৮০ শতাংশ জরায়ু অপসারণের ফলে এবং ২০ শতাংশ সিজার পরবর্তী আঘাতের কারণে ফিস্টুলায় আক্রান্ত হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা অপারেশনের মাধ্যমে ৮০ থেকে ৮৩ ভাগ ফিস্টুলা ঠিক করা সম্ভব বলে তার মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, দেশে ইতিপূবে জাতীয় পর্যায়ে ফিস্টুলা বিষয়ে কোনো জরিপ চালানো হয়নি। কর্মকর্তারা ধারণা দিয়ে বলছেন, গত ১০ বছরে দেশে ফিস্টুলা রোগী দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৬ সালের আইসিডিডিআর,বি এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি হাজার বিবাহিত মহিলাদের শূন্য দশমিক ৪২ জন ফিস্টুলায় আক্রান্ত। সে হিসাবে ১৯ হাজার ৭৫৫ জন মহিলা ফিস্টুলা রোগে ভুগছেন। বছরে নতুন করে যোগ হচ্ছেন এক হাজার নারী।
ফিস্টুলা প্রতিরোধ না করে শুধু চিকিৎসা দিয়ে এ জটিলতা দূর করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশে চিকিৎসকদের মধ্যে গাইনি চিকিৎসক বেশি। এদের মধ্যে ফিস্টুলা চিকিৎসক নেই বললেই চলে। এই সংখ্যা মাত্র ২৫ থেকে ৩০ জন রয়েছেন। দেশে ৬৪ থেকে ৬৫ শতাংশ মায়েদের ডেলিভারি এখনও বাড়িতে হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব দেশে দক্ষ ব্যক্তির সহায়তা ছাড়া বাড়িতে ৫০ শতাংশের বেশি সন্তান প্রসব হয় এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি, সেসব দেশে বছরে দুই হাজার নারী নতুন করে ফিস্টুলায় আক্রান্ত হন। এ হিসাবে বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই হাজার ফিস্টুলা রোগী বাড়ছে। তবে নারীরা লজ্জা পান এবং গোপন রাখেন বলে ফিস্টুলার সঠিক পরিসংখ্যান জানা কঠিন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ মতে, বিশ্বে আনুমানিক ২ মিলিয়নেরও বেশি অর্থাৎ ২০ লাখ নারী ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত এবং প্রতিবছর আনুমানিক এক লাখেরও বেশি নারী নতুর করে এতে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর মাত্রা বেশি।
সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ফিস্টুলা সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বছরে ২৫০ থেকে ৩০০ ফিস্টুলা রোগী সেবা নিচ্ছেন। এখানে আগে ১৬টি বেড ছিল। কিন্তু দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ায় কারণে বর্তমানে বেড সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৫-এ উন্নীত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমানে বিএসএমএমইউতে ৬টি বেড নিয়ে আলাদাভাবে ফিস্টুলা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গত ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে এ সেন্টার থেকে এসব রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রায় দু’বছরে দেড়শতাধিক জনের মতো রোগীকে সেবা দেয়া হয়েছে। সেন্টারে আসা রোগীরদের বেশির ভাগই দরিদ্র এবং গ্রামের বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, অসচেতনতার কারণে মূলত নারীরা ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশ শিশুমৃত্যুর হারে সাফল্য অর্জন করলেও নিরাপদ প্রসব এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। অসতর্কতা, মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া, অদক্ষ দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসব, সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে না যাওয়া এবং পরিবারের অবহেলার কারণে এখনো দেশের অনেক মা প্রসবকালীন সময়ে সঠিক সেবা পান না। ফলে নারীরা ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
প্রতিরোধ: চিকিৎসকদের মতে, ফিস্টুলা একটি নিরাময়যোগ্য শারীরিক সমস্যা। দক্ষ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এ সমস্যা নিরাময় সম্ভব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা অপারেশনের মাধ্যমে ফিস্টুলা ঠিক করা যায়। বাল্যবিয়েকে নারীজনিত ফিস্টুলার অন্যতম কারণ বলা হয়। বাল্যবিয়ে বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কম বয়সে গর্ভধারণ করলে ফিস্টুলা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই উপযুক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করে পরিণত বয়সে সন্তান নেয়া উচিত। উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর সহায়তায় প্রসব করালে ফিস্টুলা ঝুঁকি কম থাকে। বাধাগ্রস্ত প্রসবের ক্ষেত্রে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জাতীয় ফিস্টুলা সেন্টারসহ দেশের ১১টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে ফিস্টুলা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা এবং যশোরের আদ-দ্বীন হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতাল এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ল্যাম্বসহ ৮টি বেসরকারি হাসপাতালে এনজেন্ডারহেলথ্? ফিস্টুলা রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে। ঢাকায় এই রোগীদের জন্য একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রও পরিচালিত হচ্ছে। সূত্র জানায়, নগরের ১৮/২ বকশীবাজারে প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগী চিকিৎসা, আরোগ্য ও পুনর্বাসন প্রকল্পের কার্যালয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইউএনএফপিএর সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পের আওতায় এ পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২৮ জন নারীর থাকার ব্যবস্থা আছে। কেন্দ্রের ভেতরেই বেকারি, সেলাই, রান্না, সবজির বাগান তৈরি, হাঁস মুরগি পালনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার ব্যবস্থা আছে। প্রশিক্ষণ পেয়ে এক সময়ে সমাজচ্যুত এই নারীরা এখন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী।
ন্যাশনাল ফিস্টুলা সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. ফেরদৌসি ইসলাম লিপি জানান, বাড়িতে বাধাগ্রস্ত প্রসব কমাতে দরকার দক্ষ ধাত্রী। তাহলে ফিস্টুলা কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রসবের সঠিক সময়ে পাটোগ্রাফ ব্যবহার করতে হবে। থাকতে হবে পূর্ব প্রস্তুতিও। মানুষের মধ্যে সচেতনতাই পারে এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে। বিলম্বিত প্রসব রোধ করতে মায়েদের পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করতে হবে। তিনি বলেন, বাধাগ্রস্ত ফিস্টুল কিছুটা কমলেও গাইনোকোলজিকাল অস্ত্রোপচারে বাড়ছে ফিস্টুলা। এজন্য চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রসবজনিত ফিস্টুলা সংক্রান্ত জাতীয় কৌশলপত্র (২০১৭-২০২২) উদ্বোধনী এক অনুষ্ঠানে নার্সি ও মিডওইয়াফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তন্দ্র সিকদার জানান, বাংলাদেশে ৭২ হাজার নারী ফিস্টুলা রোগের সমস্যয় ভুগছেন। আমাদের সচেতন হতে হবে। বাল্যবিবাহ রোধ করতে হবে। তাহলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
No comments