পুকুর গিলে খেয়েছেন সেটেলমেন্ট আর পরিবেশ কর্মকর্তা by জাবেদ রহিম বিজন
পুকুর
জ্যান্ত। সবার চোখের সামনেই ভরাট হয়েছে সেটি। ভূমির পুরনো রেকর্ডপত্র,
গোগল ম্যাপ সবখানেই বিদ্যমান পুকুর। কিন্তু সেই পুকুরই গিলে খেয়েছেন
সেটেলম্যান্ট আর পরিবেশ কর্মকর্তা। তাদের সহায়তাতেই পুকুর ভরাট হয় মহোৎসবে।
এরপর সেখানে ‘অস্থায়ী সুপার মার্কেট’ বানানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত করে
জেলা প্রশাসন সেই মার্কেট উচ্ছেদ করে। শহরের কোর্ট রোডের সেই আলোচিত
পুকুরকে আবার বাস্তব করতে চায় জেলা প্রশাসন।
এরই পদক্ষেপ হিসেবে ওই দুই কর্মকর্তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন জেলা প্রশাসক। সংশ্লিষ্ট দুই অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছেন তিনি। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ১৯৭৩ সালে পুকুরটি ভরাট হয়েছে উল্লেখ করে অভিযুক্তদের রেহাই দিয়েছেন। আর ২০১৭ সালে পুকুর বিদ্যমান রেখেই এর শ্রেণি পরিবর্তন করে দেন সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা। ওদিকে পুকুরের মালিকানা নিয়েও আছে লড়াই। মন্দিরের মালিকানাধীন ওই পুকুর কিনে নেয়ার দাবি রয়েছে প্রভাবশালী একটি পক্ষের। ওই পক্ষটি পুকুরের অস্তিত্বই অস্বীকার করছে। আর এসব কারণেই শহরে আলোচিত হয়ে উঠেছে বিষয়টি।
২০শে আগস্ট জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান দুই অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আলাদা আলাদা চিঠিতে তাদের অধীনস্থ দুই কর্মকর্তার কীর্তি তুলে ধরেন। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে দেয়া চিঠিতে পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তনে জড়িত সদরের সহকারী সেটেলম্যান্ট অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসক। আর পুকুর ভরাটে জড়িতদের এই দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরিবেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. আজাদুর রহমান মল্লিক জনমনে ক্ষোভ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি করেছেন বলে তার অধিদপ্তর প্রধানকে জানানো হয়। এর আগে ১৪ই আগস্ট সদর উপজেলা ভূমি অফিস এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে বর্ণিত ওই ভূমির পূর্বাপর রেকর্ড, গোগল ম্যাপ এবং বাস্তবিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জেলা প্রশাসন পুকুর ভরাটে ওই দুই কর্মকর্তার দায় চিহ্নিত করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার এসএ ১৯৭২, বিএস ৩৭৭১ দাগের ভূমিতে সরকারি বাধা অমান্য করে ভরাট সম্পন্ন করার বিষয়ে সহকারী কমিশনার-ভূমির দেয়া ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়- সাবেক ২৭৪ এবং হালে ৭১ নম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার এসএ ১৯৭২ দাগে মোট ভূমির পরিমাণ ০.৬৫ একর। এই ভূমি ১০৬৪ ও ১০৬৫ নং এসএ রেকর্ডে শ্রী শ্রী গৌর নিত্যানন্দ মহাপ্রভু বিষ্ণচক্র রাধা গোবিন্দ জিউ বিগ্রহের পক্ষে সেবাইত রেবতী মোহন চৌধুরী এবং অন্যান্য নামে শ্রেণি পুকুর হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। রেকর্ড দশমিক ৬৫ একর হলেও এসএ নকশামতে ১৯৭২ দাগে মোট ভূমির পরিমাণ প্রায় দশমিক ৫৫ একর। বিএস নকশার পর্যালোচনায় প্রতিবেদনে বলা হয়- এসএ ১৯৭২ এবং পার্শ্ববর্তী দাগের ভূমি বিএস ৩৭৫৬, ৩৭৫৭, ৩৭৫৪, ৩৭৫২, ৩৭৭১ ও ৩৮৩৭ দাগে রূপান্তরিত হয়। বিএস নকশা ও রেকর্ডে ৩৭৫৬, ৩৭৫৪, ৩৭৫২ ও ৩৮৩৭ দাগের শ্রেণি বাড়ি এবং ৩৭৫৭ দাগের শ্রেণি দোকান, এসএ ১৯৭২ দাগ থেকে উদ্ভূত বিএস ৩৭৭১ দাগের শূন্য দশমিক ৩৭২৫ একরের আন্দরে শূন্য দশমিক ০২০০ একর ভূমি ৭৭নং বিএস খতিয়ানে অর্পণ কুমার মোদক, শূন্য দশমিক ৩৩২৫ একর ভূমি ২২০নং বিএস খতিয়ানে আনিস উর রহমান, হুমায়ুন কবির, ফারুক আহমেদ, গোলাপ মিয়া এবং শূন্য দশমিক ০২০০ একর ভূমি ১৪৮৭ বিএস খতিয়ানে গোলাম মোস্তফা ও কফিল উদ্দিনের নামে লিপিবদ্ধ হয়। বিএস রেকর্ডে প্রাথমিক পর্যায়ে পুকুর হিসেবেই লিপিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সহকারী সেটেলম্যান্ট অফিসারের কার্যালয়ের বিবিধ মোকদ্দমা নং ৩১১৩/১৬, ৩১১৪/১৬ ও ৩১১৫/১৬ এর বরাত দিয়ে এসএ ম্যানুয়েলের ৫৩৩/৫৩৪ ধারামতে ২০১৭ সালের বিএস ৩৭৭১ দাগের শ্রেণি পুকুরস্থলে ভিটি লিপিবদ্ধ করা হয়। বিএস ৩৭৭১ দাগের রেকর্ডীয় শ্রেণি ভিটি হলেও বাস্তবে এটি পুকুর। অতিসম্প্রতি বিএস রেকর্ডীয় মালিকগণ/তাদের স্থলবর্তীগণ বিএস রেকর্ডে শ্রেণি ভিটি থাকার দোহাই দিয়ে এসএ ১৯৭২, বিএস ৩৭৩৭ দাগের পুকুর ভরাট করার প্রয়াস চালাচ্ছেন এবং সরকারি বাধা অমান্য করে অনেকাংশ ভরাট করে ফেলেছেন। এই প্রতিবেদনের উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে তার দেয়া চিঠিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার বিএস ৩৭৩৭ দাগের শ্রেণি ভিটিস্থলে পুকুর লিপিবদ্ধকরণের বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে জেলা প্রশাসকের দেয়া চিঠিতে বিএস রেকর্ডে শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়ে বলা হয়- খোলাচোখে অদ্যাবধি যা পুকুর এবং ২০০৭ ও ২০১৯ সালে গোগল স্থির চিত্রে তা পুকুর হিসেবে চিহ্নিত। এতে তিনি আরো বলেন পুকুরের মালিক ২০১৭ সালে পুকুর ভরাটের উদ্যোগ নিলে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে পরিবেশের জেলা কার্যালয় সরজমিন তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে এবং অভিযুক্তদের নোটিশ দিলে তারা অনুপস্থিত থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় পুকুরটি ভরাট করার উদ্যোগ নিলে স্থানীয় জনগণ ও গণমাধ্যম এটি প্রতিহতের চেষ্টা করে এবং পুনরায় পরিবেশের জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করে। এরপর উক্ত কার্যালয় পুনরায় সরজমিন তদন্ত করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। আঞ্চলিক কার্যালয় এই প্রতিবেদন, স্থানীয় জনগণ ও গণমাধ্যমের আপত্তি এবং বাস্তবিক অবস্থা (অদ্যাবধি পুকুর) উপেক্ষা করে ১৮ই আগস্ট একটি আদেশ দেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. আজাদুর রহমান মল্লিক প্রদত্ত ওই আদেশে বলা হয়-‘১৯৭৩ সালে বর্ণিত স্থানে বিবাদী পুকুর ভরাট করলেও তখন ওই আইনের কোনো অস্তিত্ব ছিল না মর্মে অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে আনীত পুকুর ভরাটের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো’। এই আদেশে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের দেয়া চিঠিতে জেলা পরিবেশ কার্যালয়ের চলতি বছরের ১৯শে জুন দেয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের ১৮ই আগস্ট দেয়া আদেশ বাতিল পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়। এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তর ২৫শে জুলাই এনফোর্সমেন্ট মামলা (৭৯৫/২০১৯-২১৫১) করে পুকুর ভরাটে জড়িত শহরের পৈরতলার গোলাপ মিয়া, মো. সোহেল কবির ও মো. পায়েল মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে। এদিকে ২০শে আগস্ট জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পুকুর ভরাট করে বানানো অস্থায়ী মার্কেট উচ্ছেদ করে। ওই সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন- রাতের আঁধারে বালু ফেলে একটি পুকুরের মৃত্যু ঘটানো হয়েছে। বালু অপসারণ করে পুকুর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি পুকুর ভরাট ও সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে চলমান আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরই পদক্ষেপ হিসেবে ওই দুই কর্মকর্তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন জেলা প্রশাসক। সংশ্লিষ্ট দুই অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছেন তিনি। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ১৯৭৩ সালে পুকুরটি ভরাট হয়েছে উল্লেখ করে অভিযুক্তদের রেহাই দিয়েছেন। আর ২০১৭ সালে পুকুর বিদ্যমান রেখেই এর শ্রেণি পরিবর্তন করে দেন সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা। ওদিকে পুকুরের মালিকানা নিয়েও আছে লড়াই। মন্দিরের মালিকানাধীন ওই পুকুর কিনে নেয়ার দাবি রয়েছে প্রভাবশালী একটি পক্ষের। ওই পক্ষটি পুকুরের অস্তিত্বই অস্বীকার করছে। আর এসব কারণেই শহরে আলোচিত হয়ে উঠেছে বিষয়টি।
২০শে আগস্ট জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান দুই অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আলাদা আলাদা চিঠিতে তাদের অধীনস্থ দুই কর্মকর্তার কীর্তি তুলে ধরেন। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে দেয়া চিঠিতে পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তনে জড়িত সদরের সহকারী সেটেলম্যান্ট অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসক। আর পুকুর ভরাটে জড়িতদের এই দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরিবেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. আজাদুর রহমান মল্লিক জনমনে ক্ষোভ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি করেছেন বলে তার অধিদপ্তর প্রধানকে জানানো হয়। এর আগে ১৪ই আগস্ট সদর উপজেলা ভূমি অফিস এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে বর্ণিত ওই ভূমির পূর্বাপর রেকর্ড, গোগল ম্যাপ এবং বাস্তবিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জেলা প্রশাসন পুকুর ভরাটে ওই দুই কর্মকর্তার দায় চিহ্নিত করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার এসএ ১৯৭২, বিএস ৩৭৭১ দাগের ভূমিতে সরকারি বাধা অমান্য করে ভরাট সম্পন্ন করার বিষয়ে সহকারী কমিশনার-ভূমির দেয়া ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়- সাবেক ২৭৪ এবং হালে ৭১ নম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার এসএ ১৯৭২ দাগে মোট ভূমির পরিমাণ ০.৬৫ একর। এই ভূমি ১০৬৪ ও ১০৬৫ নং এসএ রেকর্ডে শ্রী শ্রী গৌর নিত্যানন্দ মহাপ্রভু বিষ্ণচক্র রাধা গোবিন্দ জিউ বিগ্রহের পক্ষে সেবাইত রেবতী মোহন চৌধুরী এবং অন্যান্য নামে শ্রেণি পুকুর হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। রেকর্ড দশমিক ৬৫ একর হলেও এসএ নকশামতে ১৯৭২ দাগে মোট ভূমির পরিমাণ প্রায় দশমিক ৫৫ একর। বিএস নকশার পর্যালোচনায় প্রতিবেদনে বলা হয়- এসএ ১৯৭২ এবং পার্শ্ববর্তী দাগের ভূমি বিএস ৩৭৫৬, ৩৭৫৭, ৩৭৫৪, ৩৭৫২, ৩৭৭১ ও ৩৮৩৭ দাগে রূপান্তরিত হয়। বিএস নকশা ও রেকর্ডে ৩৭৫৬, ৩৭৫৪, ৩৭৫২ ও ৩৮৩৭ দাগের শ্রেণি বাড়ি এবং ৩৭৫৭ দাগের শ্রেণি দোকান, এসএ ১৯৭২ দাগ থেকে উদ্ভূত বিএস ৩৭৭১ দাগের শূন্য দশমিক ৩৭২৫ একরের আন্দরে শূন্য দশমিক ০২০০ একর ভূমি ৭৭নং বিএস খতিয়ানে অর্পণ কুমার মোদক, শূন্য দশমিক ৩৩২৫ একর ভূমি ২২০নং বিএস খতিয়ানে আনিস উর রহমান, হুমায়ুন কবির, ফারুক আহমেদ, গোলাপ মিয়া এবং শূন্য দশমিক ০২০০ একর ভূমি ১৪৮৭ বিএস খতিয়ানে গোলাম মোস্তফা ও কফিল উদ্দিনের নামে লিপিবদ্ধ হয়। বিএস রেকর্ডে প্রাথমিক পর্যায়ে পুকুর হিসেবেই লিপিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সহকারী সেটেলম্যান্ট অফিসারের কার্যালয়ের বিবিধ মোকদ্দমা নং ৩১১৩/১৬, ৩১১৪/১৬ ও ৩১১৫/১৬ এর বরাত দিয়ে এসএ ম্যানুয়েলের ৫৩৩/৫৩৪ ধারামতে ২০১৭ সালের বিএস ৩৭৭১ দাগের শ্রেণি পুকুরস্থলে ভিটি লিপিবদ্ধ করা হয়। বিএস ৩৭৭১ দাগের রেকর্ডীয় শ্রেণি ভিটি হলেও বাস্তবে এটি পুকুর। অতিসম্প্রতি বিএস রেকর্ডীয় মালিকগণ/তাদের স্থলবর্তীগণ বিএস রেকর্ডে শ্রেণি ভিটি থাকার দোহাই দিয়ে এসএ ১৯৭২, বিএস ৩৭৩৭ দাগের পুকুর ভরাট করার প্রয়াস চালাচ্ছেন এবং সরকারি বাধা অমান্য করে অনেকাংশ ভরাট করে ফেলেছেন। এই প্রতিবেদনের উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে তার দেয়া চিঠিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার বিএস ৩৭৩৭ দাগের শ্রেণি ভিটিস্থলে পুকুর লিপিবদ্ধকরণের বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে জেলা প্রশাসকের দেয়া চিঠিতে বিএস রেকর্ডে শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়ে বলা হয়- খোলাচোখে অদ্যাবধি যা পুকুর এবং ২০০৭ ও ২০১৯ সালে গোগল স্থির চিত্রে তা পুকুর হিসেবে চিহ্নিত। এতে তিনি আরো বলেন পুকুরের মালিক ২০১৭ সালে পুকুর ভরাটের উদ্যোগ নিলে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে পরিবেশের জেলা কার্যালয় সরজমিন তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে এবং অভিযুক্তদের নোটিশ দিলে তারা অনুপস্থিত থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় পুকুরটি ভরাট করার উদ্যোগ নিলে স্থানীয় জনগণ ও গণমাধ্যম এটি প্রতিহতের চেষ্টা করে এবং পুনরায় পরিবেশের জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করে। এরপর উক্ত কার্যালয় পুনরায় সরজমিন তদন্ত করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। আঞ্চলিক কার্যালয় এই প্রতিবেদন, স্থানীয় জনগণ ও গণমাধ্যমের আপত্তি এবং বাস্তবিক অবস্থা (অদ্যাবধি পুকুর) উপেক্ষা করে ১৮ই আগস্ট একটি আদেশ দেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. আজাদুর রহমান মল্লিক প্রদত্ত ওই আদেশে বলা হয়-‘১৯৭৩ সালে বর্ণিত স্থানে বিবাদী পুকুর ভরাট করলেও তখন ওই আইনের কোনো অস্তিত্ব ছিল না মর্মে অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে আনীত পুকুর ভরাটের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো’। এই আদেশে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের দেয়া চিঠিতে জেলা পরিবেশ কার্যালয়ের চলতি বছরের ১৯শে জুন দেয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের ১৮ই আগস্ট দেয়া আদেশ বাতিল পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়। এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তর ২৫শে জুলাই এনফোর্সমেন্ট মামলা (৭৯৫/২০১৯-২১৫১) করে পুকুর ভরাটে জড়িত শহরের পৈরতলার গোলাপ মিয়া, মো. সোহেল কবির ও মো. পায়েল মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে। এদিকে ২০শে আগস্ট জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পুকুর ভরাট করে বানানো অস্থায়ী মার্কেট উচ্ছেদ করে। ওই সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন- রাতের আঁধারে বালু ফেলে একটি পুকুরের মৃত্যু ঘটানো হয়েছে। বালু অপসারণ করে পুকুর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি পুকুর ভরাট ও সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে চলমান আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments