১০ বছরে ৮৭ বার ভূ-কম্পন, নিহত ১৫ by পার্থ শঙ্কর সাহা
দেশে
১০ বছরে ৮৭ বার ভূকম্পন হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় নিহত হয়েছেন ১৫ জন। এর
মধ্যে ১৩ জনই আতঙ্কিত হয়ে মারা যান। এসব ভূমিকম্পের সময় আহত হয়েছেন চার
শতাধিক মানুষ। ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ডিজাস্টার ফোরামের
গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। ১০ বছরে ভূমিকম্পের ফলে প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতির
পরিমাণ শহরাঞ্চলেই বেশি।
নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘দ্রুত নগরায়ণের ফলে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের মতো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। নগরায়ণ হতে হবে পরিকল্পিত। শহরাঞ্চলে ভবন নির্মাণের সময় অবশ্যই নির্মাণ বিধি মানতে হবে।’
ডিজাস্টার ফোরামের ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের উপাত্ত অনুযায়ী, ১০ বছরের মধ্যে ২০০৯ সালে সর্বোচ্চ ২৪ বার ভূকম্পন হয়। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ভূকম্পনের সংখ্যা বেশি ছিল। পরের বছর থেকে কম্পনের সংখ্যা কমতে থাকে। তবে ২০১৫ ও ২০১৬ —এই দুই বছরে কম্পনের ঘটনা কম হলেও এই দুই বছরের প্রাণহানি হয় অনেক বেশি।
পার্বত্য রাঙামাটি জেলার ভারত সীমান্তবর্তী বরকলে ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে ১৭ দিনের ব্যবধানে ১৮ বার ভূকম্পন হয়েছে। এর প্রথম দফা ভূমিকম্প ১৩ জানুয়ারি এবং সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি সংঘটিত হয়। ১৩ ও ৩০ জানুয়ারি পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রামসহ পার্বত্য তিন জেলায় কয়েক দফা ছোট-বড় ঝাঁকুনি অনুভূত হলেও ওই সময়ের মধ্যে শুধু বরকলেই ১৮ বার ভূকম্পন হয় বলে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান। ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে যে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে তার মধ্যে পার্বত্য জেলাগুলোর অবস্থান ১ নম্বরে চিহ্নিত হয়েছে। বারবার ভূমিকম্পের ফলে বরকল উপজেলার অধিকাংশ সরকারি স্থাপনার পাকা দালানসহ কয়েকটি উঁচু পাহাড়ের মাঝখানে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৩ জানুয়ারি ভোররাতে বরকলে সংঘটিত মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প প্রায় ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। ওই সময় তিন দফায় মাঝারি কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী এবং চট্টগ্রামের আমবাগান ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব ও ঢাকা ভূকম্পন কেন্দ্র থেকে ২৫৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। রাঙামাটির বরকল উপজেলার কাছাকাছি এর উৎপত্তিস্থল হওয়ায় রাঙামাটির মানুষ ভূমিকম্পের মাত্রা অধিক অনুভব করে। ভূমিকম্পের মাত্রাটি ছিল রিখটার স্কেলে ৪.৯।
এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৬ প্রতিবছরই ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে।
২০০৯ সালে ২৪ ও ২০১০ সালে ২১ বারের বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৭ মাত্রারও ভূমিকম্প ছিল। নওয়াপাড়া, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, বরকল, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ সারা দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ২০১১ সালে ১৪ বার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মধ্যে ২০১১ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর সারা দেশে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৪৯৬ কিলোমিটার দূরের সিকিম-নেপাল সীমান্ত। সেই সময় ঢাকাসহ সারা দেশে অনেক ভবন ধসে পড়াসহ উল্লেখযোগ্যভাবে নাটোরে ৩০টি ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১৫টি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়। দেয়াল ধসে লালমনিরহাটে শিশুসহ ২ জন আহত হয়। ভূমিকম্প-আতঙ্কে ছোটাছুটিতে সিরাজগঞ্জের শাহবাজপুরে ২ জন ও গাইবান্ধায় ১৫ জন আহত হয়। ২০১২ সালে ১৮ মার্চ সকাল ৮টায় সেকেন্ডে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার দোহার উপজেলা। আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ১৬২ বছরের মধ্যে এই প্রথম ঢাকার এত কাছের একটি উৎপত্তিস্থল (এপিসেন্টার) থেকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। ১৮৫০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে সংঘটিত ভূমিকম্পের যে তথ্যাদি রয়েছে, তাতে ঢাকার এত কাছে আর কোনো ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল না। এই ভূমিকম্পে রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও লাইব্রেরি চত্বরে শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। সাভারে একটি ভবন হেলে পড়ে।
নগর বিশেষজ্ঞ ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব ভূমিকম্প আমাদের জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছে। ঢাকার নগরায়ণ ঘটেছে যত্রতত্রভাবে। নেপালে যে ভূমিকম্প হয়েছে এর চেয়ে ছোট মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবনধস না, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং গ্যাসলাইন এ শহরকে একটি অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে নিক্ষেপ করবে।’
মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে যেকোনো মাত্রার ভূমিকম্পই আমাদের জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। এখন যে বিশাল সংখ্যায় ভবন নির্মাণ হয়ে গেছে, সেগুলো রক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। আর নতুন করে তৈরি ভবন যেন নিয়ম মেনে হয়, সে জন্য নজরদারিটা হওয়া উচিত যথাযথ।’
২০১৫ ও ২০১৬ —এ দুই বছর দেশে ভূকম্পন হয় মোট ৮ বার। তবে দুই বছরে মানুষ মারা গেছে ১৩ জন। সবাই আতঙ্কিত হয়ে।
দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহার নইম ওয়ারা বলেন, আতঙ্কিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করে মানুষের সচেতনতার ব্যাপক অভাব আছে। ভবনের নিরাপত্তায় নানা ব্যবস্থার পাশাপাশি জরুরি হলো সচেতনতা তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা বেশি।
ডিজাস্টার ফোরামের সদস্যসচিব গওহার নইম ওয়ারা বলেন, অনেক সময় সচেতনতার জন্য যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে ভয় ছড়ানোর লক্ষণ আছে। ভয় না ছড়িয়ে বার্তা যেন সঠিক কথাটা তুলে ধরে, সেই বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
ভূমিকম্পের ক্ষতি প্রশমনের মতো কর্মসূচি নয়, একেবারে জাপানের মতো ভূমিকম্প-সহনীয় দেশ হিসেবে গড়ে তোলা যায় কীভাবে, সেটাই ভাবছে সরকার। জাপানের সহযোগিতায় এমন ধরনের উদ্যোগের কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এখন রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্পেও ভবন ভেঙে না পড়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে জাপান। আমরাও এ ব্যাপারে জাপানের সহযোগিতা চেয়েছি। ইতিমধ্যে জাইকার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার।’
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘ভূমিকম্পসহনীয় এ কাজে প্রয়োজনীয় ঋণ জাপান দেবে সহজ শর্তে। জাপান বলেছে, তাদের এ কাজটি করতে ৩০ বছর লেগেছে। আমাদের সে ক্ষেত্রে হয়তো ৫০ বছর লাগবে। তবে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা আমরা চাই।’
নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘দ্রুত নগরায়ণের ফলে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের মতো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। নগরায়ণ হতে হবে পরিকল্পিত। শহরাঞ্চলে ভবন নির্মাণের সময় অবশ্যই নির্মাণ বিধি মানতে হবে।’
ডিজাস্টার ফোরামের ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের উপাত্ত অনুযায়ী, ১০ বছরের মধ্যে ২০০৯ সালে সর্বোচ্চ ২৪ বার ভূকম্পন হয়। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ভূকম্পনের সংখ্যা বেশি ছিল। পরের বছর থেকে কম্পনের সংখ্যা কমতে থাকে। তবে ২০১৫ ও ২০১৬ —এই দুই বছরে কম্পনের ঘটনা কম হলেও এই দুই বছরের প্রাণহানি হয় অনেক বেশি।
পার্বত্য রাঙামাটি জেলার ভারত সীমান্তবর্তী বরকলে ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে ১৭ দিনের ব্যবধানে ১৮ বার ভূকম্পন হয়েছে। এর প্রথম দফা ভূমিকম্প ১৩ জানুয়ারি এবং সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি সংঘটিত হয়। ১৩ ও ৩০ জানুয়ারি পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রামসহ পার্বত্য তিন জেলায় কয়েক দফা ছোট-বড় ঝাঁকুনি অনুভূত হলেও ওই সময়ের মধ্যে শুধু বরকলেই ১৮ বার ভূকম্পন হয় বলে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান। ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে যে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে তার মধ্যে পার্বত্য জেলাগুলোর অবস্থান ১ নম্বরে চিহ্নিত হয়েছে। বারবার ভূমিকম্পের ফলে বরকল উপজেলার অধিকাংশ সরকারি স্থাপনার পাকা দালানসহ কয়েকটি উঁচু পাহাড়ের মাঝখানে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৩ জানুয়ারি ভোররাতে বরকলে সংঘটিত মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প প্রায় ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। ওই সময় তিন দফায় মাঝারি কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী এবং চট্টগ্রামের আমবাগান ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব ও ঢাকা ভূকম্পন কেন্দ্র থেকে ২৫৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। রাঙামাটির বরকল উপজেলার কাছাকাছি এর উৎপত্তিস্থল হওয়ায় রাঙামাটির মানুষ ভূমিকম্পের মাত্রা অধিক অনুভব করে। ভূমিকম্পের মাত্রাটি ছিল রিখটার স্কেলে ৪.৯।
এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৬ প্রতিবছরই ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে।
২০০৯ সালে ২৪ ও ২০১০ সালে ২১ বারের বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৭ মাত্রারও ভূমিকম্প ছিল। নওয়াপাড়া, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, বরকল, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ সারা দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ২০১১ সালে ১৪ বার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মধ্যে ২০১১ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর সারা দেশে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৪৯৬ কিলোমিটার দূরের সিকিম-নেপাল সীমান্ত। সেই সময় ঢাকাসহ সারা দেশে অনেক ভবন ধসে পড়াসহ উল্লেখযোগ্যভাবে নাটোরে ৩০টি ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১৫টি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়। দেয়াল ধসে লালমনিরহাটে শিশুসহ ২ জন আহত হয়। ভূমিকম্প-আতঙ্কে ছোটাছুটিতে সিরাজগঞ্জের শাহবাজপুরে ২ জন ও গাইবান্ধায় ১৫ জন আহত হয়। ২০১২ সালে ১৮ মার্চ সকাল ৮টায় সেকেন্ডে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার দোহার উপজেলা। আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ১৬২ বছরের মধ্যে এই প্রথম ঢাকার এত কাছের একটি উৎপত্তিস্থল (এপিসেন্টার) থেকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। ১৮৫০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে সংঘটিত ভূমিকম্পের যে তথ্যাদি রয়েছে, তাতে ঢাকার এত কাছে আর কোনো ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল না। এই ভূমিকম্পে রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও লাইব্রেরি চত্বরে শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। সাভারে একটি ভবন হেলে পড়ে।
নগর বিশেষজ্ঞ ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব ভূমিকম্প আমাদের জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছে। ঢাকার নগরায়ণ ঘটেছে যত্রতত্রভাবে। নেপালে যে ভূমিকম্প হয়েছে এর চেয়ে ছোট মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবনধস না, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং গ্যাসলাইন এ শহরকে একটি অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে নিক্ষেপ করবে।’
মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে যেকোনো মাত্রার ভূমিকম্পই আমাদের জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। এখন যে বিশাল সংখ্যায় ভবন নির্মাণ হয়ে গেছে, সেগুলো রক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। আর নতুন করে তৈরি ভবন যেন নিয়ম মেনে হয়, সে জন্য নজরদারিটা হওয়া উচিত যথাযথ।’
২০১৫ ও ২০১৬ —এ দুই বছর দেশে ভূকম্পন হয় মোট ৮ বার। তবে দুই বছরে মানুষ মারা গেছে ১৩ জন। সবাই আতঙ্কিত হয়ে।
দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহার নইম ওয়ারা বলেন, আতঙ্কিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করে মানুষের সচেতনতার ব্যাপক অভাব আছে। ভবনের নিরাপত্তায় নানা ব্যবস্থার পাশাপাশি জরুরি হলো সচেতনতা তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা বেশি।
ডিজাস্টার ফোরামের সদস্যসচিব গওহার নইম ওয়ারা বলেন, অনেক সময় সচেতনতার জন্য যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে ভয় ছড়ানোর লক্ষণ আছে। ভয় না ছড়িয়ে বার্তা যেন সঠিক কথাটা তুলে ধরে, সেই বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
ভূমিকম্পের ক্ষতি প্রশমনের মতো কর্মসূচি নয়, একেবারে জাপানের মতো ভূমিকম্প-সহনীয় দেশ হিসেবে গড়ে তোলা যায় কীভাবে, সেটাই ভাবছে সরকার। জাপানের সহযোগিতায় এমন ধরনের উদ্যোগের কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এখন রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্পেও ভবন ভেঙে না পড়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে জাপান। আমরাও এ ব্যাপারে জাপানের সহযোগিতা চেয়েছি। ইতিমধ্যে জাইকার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার।’
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘ভূমিকম্পসহনীয় এ কাজে প্রয়োজনীয় ঋণ জাপান দেবে সহজ শর্তে। জাপান বলেছে, তাদের এ কাজটি করতে ৩০ বছর লেগেছে। আমাদের সে ক্ষেত্রে হয়তো ৫০ বছর লাগবে। তবে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা আমরা চাই।’
No comments