ঘর থেকেই কার্যকর পররাষ্ট্রনীতির সূচনা করতে হবে নেপালকে by গৌরব শামসের থাপা
বিপুল
জয়ের মাধ্যমে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসার প্রায় দেড় বছর পর
সরকারের কর্ম সম্পাদন দক্ষতার কারণে উচ্চ প্রত্যাশা চুপসে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি ও তার সরকার বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে।
এসবের মধ্যে রয়েছে অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা, উগ্র বামদের সহিংস কার্যক্রম,
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ।
নেপাল গত দুই দশক ধরে যে টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, স্থিতিশীল সরকার এর অবসান ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু ঘরোয়া রাজনীতির অনিশ্চয়তা ও সরকারি কার্যক্রমের মন্থরতা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। আর এগুলোই নেপালের আন্তর্জাতিক সম্পর্কে প্রতিফলিত হচ্ছে।
অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নেপালে ওলি সরকারের আগমনের পর থেকে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। অবশ্য অতি সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে কিছু সুবিধা পাচ্ছে এবং অর্থমন্ত্রীর গ্রহণ করা কয়েকটি পদক্ষেপের ফলে দীর্ঘ মেয়াদে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ‘সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপাল’ গঠনের ধারণা বাস্তবায়নের জন্য প্রথম বছরটিতে আরো কিছু সাফল্য অর্জন করা উচিত ছিল বর্তমান সরকারের।
যেকোনো দেশের জন্যই ঘরোয়া রাজনীতিই শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির পথ দেখায়। নেপালের গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থানের ফলে দেশটির উচিত হবে দুই বৃহৎ শক্তির কাছ থেকেই সর্বোচ্চ ফায়দা হাসিল করা। এক দেশের বিরুদ্ধে অপর দেশকে ভারসাম্য বিধানর দিকে যাওয়া কোনোভাবেই নেপালের জন্য কল্যাণকর হবে না।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নানা উত্থান-পতন দেখা গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির পুনঃনির্বাচন ওলি সরকারের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন করে বিবেচনার দাবি জানাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও জনগণ পর্যায়ের সম্পর্ক নজিরবিহীন। ভারত হলো নেপালের শীর্ষ বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদার। নেপাল হলো হিন্দু প্রাধান্যপূর্ণ দেশ। ফলে নিবেদিতপ্রাণ হিন্দু মোদির শুভেচ্ছা ও সমর্থন লাভের সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত নেপালের। আবার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতের উচিত হবে নেপালের সাথে কাজ করার সময় আধিপত্যমূলক মনোভাব ত্যাগ করা। আর নেপালের উচিত হবে ছোট রাষ্ট্রের সিনড্রোম থেকে সৃষ্ট ভয় থেকে নিজেকে মুক্ত করা। আবার নিরাপত্তার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী স্থিতিশীল প্রতিবেশী হওয়া উচিত ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে যুগ-প্রাচীন সম্পর্ক থাকলেও সহজেই বোঝা যায় যে ওলি ও মোদি সরকারের মধ্যে আস্থার কিছু ঘাটতি রয়েছে। ফলে কাঠমান্ডুর উচিত হবে নয়া দিল্লির সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত হওয়া। ক্যারিয়ার ডিপ্লোম্যাট এস জয়শঙ্করকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ করাটা নেপালের মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার কারণ হলো ২০১৫ সালে নেপালের সংবিধান ঘোষিত হওয়ার পর ভারত যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, তার কারিগর ছিলেন তিনি। তিনি ব্যক্তিগত অহমিকাবোধে চালিত হয়ে তা করেছিলেন, তা বলা হয়তো এখন যৌক্তিক হবে না। তবে মনে রাখতে হবে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি নেপালি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগে তেমন আগ্রহ দেখাননি।
বিশ্ব নেতাদের জন্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি কঠিন কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বস্তি দিতে পারে। ওলি ও মোদির উচিত হবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নয়ন করা। উভয় নেতাই দেশবাসীর কাছ থেকে বিপুল ম্যান্ডেট পেয়েছেন।
চীনের সাথে নেপালের সম্পর্ক প্রতিনিয়ত জোরদার হচ্ছে। ওলির কাছে সুযোগ এসেছে চীনের সাথে সম্পর্ককে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে মোকাবিলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির উদ্যোগে পরিণত হয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি। ফলে নেপালের মতো ছোট দেশগুলোর পরাশক্তিগুলোর এই খেলায় ঘুঁটিতে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। নেপাল তার ভূগোলকে অতিক্রম করতে পারবে না। ফলে অন্য গোলার্ধের দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে গ্রহণ করার জন্য প্রতিবেশী চীনকে এড়িয়ে ভালো করতে পারবে নেপাল?
পরাশক্তিগুলোর স্বার্থ ব্যবস্থাপনা নিয়ে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে ওলি সরকারকে সুস্পষ্ট হতে হবে। বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তিটির সাথে নেপালকে অবশ্যই সুসম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। তবে প্রথমে নিজের স্বার্থকেই দেখতে হবে।
আর নেপালের প্রথম স্বার্থ হলো তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আবার সম্পদ না থাকলে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না নেপাল। এ কারণেই লাগোয়া প্রতিবেশীদের পাশাপাশি বড় শক্তিগুলোর সহায়তাও প্রয়োজন নেপালের। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে।
বৈশ্বিক রাজনীতি এতটাই অনিশ্চত হয়ে পড়েছে যে পুরনো মিত্ররা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, ঐতিহ্যবাহী প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে গলায় গলায় ভাব। ফলে ওলি সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডায় একমত হয়ে ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হওয়াটা আগে নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিত না হলে বিদেশী হস্তক্ষেপ ও অযাচিত প্রভাব ভয়াবহ মাত্রায় বাড়তে থাকবে। ভূরাজনৈতিক দাবাবোর্ডে নিজেকে না দেখার জন্য সব প্রয়াস চালাতে হবে নেপালকে।
নেপাল গত দুই দশক ধরে যে টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, স্থিতিশীল সরকার এর অবসান ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু ঘরোয়া রাজনীতির অনিশ্চয়তা ও সরকারি কার্যক্রমের মন্থরতা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। আর এগুলোই নেপালের আন্তর্জাতিক সম্পর্কে প্রতিফলিত হচ্ছে।
অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নেপালে ওলি সরকারের আগমনের পর থেকে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। অবশ্য অতি সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে কিছু সুবিধা পাচ্ছে এবং অর্থমন্ত্রীর গ্রহণ করা কয়েকটি পদক্ষেপের ফলে দীর্ঘ মেয়াদে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ‘সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপাল’ গঠনের ধারণা বাস্তবায়নের জন্য প্রথম বছরটিতে আরো কিছু সাফল্য অর্জন করা উচিত ছিল বর্তমান সরকারের।
যেকোনো দেশের জন্যই ঘরোয়া রাজনীতিই শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির পথ দেখায়। নেপালের গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থানের ফলে দেশটির উচিত হবে দুই বৃহৎ শক্তির কাছ থেকেই সর্বোচ্চ ফায়দা হাসিল করা। এক দেশের বিরুদ্ধে অপর দেশকে ভারসাম্য বিধানর দিকে যাওয়া কোনোভাবেই নেপালের জন্য কল্যাণকর হবে না।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নানা উত্থান-পতন দেখা গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির পুনঃনির্বাচন ওলি সরকারের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন করে বিবেচনার দাবি জানাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও জনগণ পর্যায়ের সম্পর্ক নজিরবিহীন। ভারত হলো নেপালের শীর্ষ বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদার। নেপাল হলো হিন্দু প্রাধান্যপূর্ণ দেশ। ফলে নিবেদিতপ্রাণ হিন্দু মোদির শুভেচ্ছা ও সমর্থন লাভের সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত নেপালের। আবার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতের উচিত হবে নেপালের সাথে কাজ করার সময় আধিপত্যমূলক মনোভাব ত্যাগ করা। আর নেপালের উচিত হবে ছোট রাষ্ট্রের সিনড্রোম থেকে সৃষ্ট ভয় থেকে নিজেকে মুক্ত করা। আবার নিরাপত্তার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী স্থিতিশীল প্রতিবেশী হওয়া উচিত ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে যুগ-প্রাচীন সম্পর্ক থাকলেও সহজেই বোঝা যায় যে ওলি ও মোদি সরকারের মধ্যে আস্থার কিছু ঘাটতি রয়েছে। ফলে কাঠমান্ডুর উচিত হবে নয়া দিল্লির সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত হওয়া। ক্যারিয়ার ডিপ্লোম্যাট এস জয়শঙ্করকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ করাটা নেপালের মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার কারণ হলো ২০১৫ সালে নেপালের সংবিধান ঘোষিত হওয়ার পর ভারত যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, তার কারিগর ছিলেন তিনি। তিনি ব্যক্তিগত অহমিকাবোধে চালিত হয়ে তা করেছিলেন, তা বলা হয়তো এখন যৌক্তিক হবে না। তবে মনে রাখতে হবে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি নেপালি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগে তেমন আগ্রহ দেখাননি।
বিশ্ব নেতাদের জন্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি কঠিন কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বস্তি দিতে পারে। ওলি ও মোদির উচিত হবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নয়ন করা। উভয় নেতাই দেশবাসীর কাছ থেকে বিপুল ম্যান্ডেট পেয়েছেন।
চীনের সাথে নেপালের সম্পর্ক প্রতিনিয়ত জোরদার হচ্ছে। ওলির কাছে সুযোগ এসেছে চীনের সাথে সম্পর্ককে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে মোকাবিলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির উদ্যোগে পরিণত হয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি। ফলে নেপালের মতো ছোট দেশগুলোর পরাশক্তিগুলোর এই খেলায় ঘুঁটিতে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। নেপাল তার ভূগোলকে অতিক্রম করতে পারবে না। ফলে অন্য গোলার্ধের দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে গ্রহণ করার জন্য প্রতিবেশী চীনকে এড়িয়ে ভালো করতে পারবে নেপাল?
পরাশক্তিগুলোর স্বার্থ ব্যবস্থাপনা নিয়ে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে ওলি সরকারকে সুস্পষ্ট হতে হবে। বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তিটির সাথে নেপালকে অবশ্যই সুসম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। তবে প্রথমে নিজের স্বার্থকেই দেখতে হবে।
আর নেপালের প্রথম স্বার্থ হলো তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আবার সম্পদ না থাকলে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না নেপাল। এ কারণেই লাগোয়া প্রতিবেশীদের পাশাপাশি বড় শক্তিগুলোর সহায়তাও প্রয়োজন নেপালের। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে।
বৈশ্বিক রাজনীতি এতটাই অনিশ্চত হয়ে পড়েছে যে পুরনো মিত্ররা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, ঐতিহ্যবাহী প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে গলায় গলায় ভাব। ফলে ওলি সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডায় একমত হয়ে ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হওয়াটা আগে নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিত না হলে বিদেশী হস্তক্ষেপ ও অযাচিত প্রভাব ভয়াবহ মাত্রায় বাড়তে থাকবে। ভূরাজনৈতিক দাবাবোর্ডে নিজেকে না দেখার জন্য সব প্রয়াস চালাতে হবে নেপালকে।
No comments