কাশ্মীর নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত এল
জম্মু-কাশ্মীরের
বিশেষ মর্যাদা বিলোপের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরিদের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার
ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধে শুক্রবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বলে কূটনীতিকদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর বিষয়ে আলোচনা হলো।
তবে প্রবল ক্ষমতাধর নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের এ আলোচনায় কাশ্মীর সংকট সমাধানে তেমন কোনো ফল আসেনি বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। জাতিসংঘের একজন কূটনীতিকের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকের পর নিরপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে কাশ্মীর ইস্যুতে কোনো কথা বলা হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয়াকে পরিষদের ন্যূনতম কাজ হিসেবে দেখা হয়। কাশ্মীর ইস্যুতে এবার ন্যূনতম পদক্ষেপটি নেয়া হয়নি।
জাতিসংঘের ওই কূটনীতিক আরও জানান, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর কোনো বিবৃতি দেয়া হলে তা কাশ্মীরের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আরো বাড়িয়ে তুলবে মনে করে এর বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের একাংশ। আবার পরিষদের আরেকটি অংশ এই বৈঠক শেষে কোনো বিবৃতি দেয়া হলে তা হবে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়া— এমন ভাবনা থেকে বিবৃতি দেয়ার বিরোধিতা করে।
এছাড়া বৈঠকে ফ্রান্স, জার্মানি ও জাতিসংঘ কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ নষ্ট হওয়াসহ পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে পারে— এমন ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধে মত দেয়।
জাতিসংঘের আরেকজন কূটনীতিক জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকেই কাশ্মীর ইস্যুতে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
কাশ্মীর নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে এবং চীন পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে আসছে। এ কারণে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবারের বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে আগে থেকেই ধারণা করে আসছিলেন পর্যবেক্ষকরা। সেটিই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো।
এই ফলহীন বৈঠকের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধি। তিনি বলেন, ‘এ বৈঠক প্রমাণ করেছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনগণের চিৎকার-ধ্বনি জাতিসংঘের কানে পৌঁছেছে।’
মালিহা লোধি দাবি করেন, এ বৈঠক প্রমাণ করে কাশ্মীর ইস্যু একটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। কাশ্মীর ইস্যুর একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, ‘কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের আন্তর্জাতিক কোনো পক্ষকে প্রয়োজন নেই।’
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই একতরফা পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত বলে মনে করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।’
৫ আগস্ট ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়। এ কারণে স্বায়ত্তশাসন হারান কাশ্মীরিরা। সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনা ও বিয়ে করার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন কাশ্মীরিরা। তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। অবরোধও চলছে। এদিকে ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর একটি চিঠি লেখেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরাইশি। তিনি চিঠিতে ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
চিঠিতে কোরাইশি লিখেছেন, ‘পাকিস্তান কাশ্মীরে যুদ্ধের উসকানি দেবে না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে। ভারত যদি ফের শক্তি প্রয়োগ করার পথে যায়, আত্মরক্ষার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে পাকিস্তান জবাব দিতে বাধ্য হবে।’
এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। কাশ্মীরের ভারতীয় অংশে বিধিনিষেধ আরোপের খবরে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন মহাসচিব।
১৯৪৮ ও ১৯৫০ সালের দশকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গণভোট নেয়ার কথাও ছিল।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৯৪৯ সাল থেকে জম্মু-কাশ্মীরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন আছে।
চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধে শুক্রবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বলে কূটনীতিকদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর বিষয়ে আলোচনা হলো।
তবে প্রবল ক্ষমতাধর নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের এ আলোচনায় কাশ্মীর সংকট সমাধানে তেমন কোনো ফল আসেনি বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। জাতিসংঘের একজন কূটনীতিকের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকের পর নিরপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে কাশ্মীর ইস্যুতে কোনো কথা বলা হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয়াকে পরিষদের ন্যূনতম কাজ হিসেবে দেখা হয়। কাশ্মীর ইস্যুতে এবার ন্যূনতম পদক্ষেপটি নেয়া হয়নি।
জাতিসংঘের ওই কূটনীতিক আরও জানান, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর কোনো বিবৃতি দেয়া হলে তা কাশ্মীরের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আরো বাড়িয়ে তুলবে মনে করে এর বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের একাংশ। আবার পরিষদের আরেকটি অংশ এই বৈঠক শেষে কোনো বিবৃতি দেয়া হলে তা হবে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়া— এমন ভাবনা থেকে বিবৃতি দেয়ার বিরোধিতা করে।
এছাড়া বৈঠকে ফ্রান্স, জার্মানি ও জাতিসংঘ কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ নষ্ট হওয়াসহ পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে পারে— এমন ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধে মত দেয়।
জাতিসংঘের আরেকজন কূটনীতিক জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকেই কাশ্মীর ইস্যুতে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
কাশ্মীর নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে এবং চীন পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে আসছে। এ কারণে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবারের বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে আগে থেকেই ধারণা করে আসছিলেন পর্যবেক্ষকরা। সেটিই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো।
এই ফলহীন বৈঠকের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধি। তিনি বলেন, ‘এ বৈঠক প্রমাণ করেছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনগণের চিৎকার-ধ্বনি জাতিসংঘের কানে পৌঁছেছে।’
মালিহা লোধি দাবি করেন, এ বৈঠক প্রমাণ করে কাশ্মীর ইস্যু একটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। কাশ্মীর ইস্যুর একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, ‘কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের আন্তর্জাতিক কোনো পক্ষকে প্রয়োজন নেই।’
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই একতরফা পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত বলে মনে করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।’
৫ আগস্ট ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়। এ কারণে স্বায়ত্তশাসন হারান কাশ্মীরিরা। সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনা ও বিয়ে করার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন কাশ্মীরিরা। তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। অবরোধও চলছে। এদিকে ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর একটি চিঠি লেখেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরাইশি। তিনি চিঠিতে ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
চিঠিতে কোরাইশি লিখেছেন, ‘পাকিস্তান কাশ্মীরে যুদ্ধের উসকানি দেবে না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে। ভারত যদি ফের শক্তি প্রয়োগ করার পথে যায়, আত্মরক্ষার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে পাকিস্তান জবাব দিতে বাধ্য হবে।’
এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। কাশ্মীরের ভারতীয় অংশে বিধিনিষেধ আরোপের খবরে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন মহাসচিব।
১৯৪৮ ও ১৯৫০ সালের দশকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গণভোট নেয়ার কথাও ছিল।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৯৪৯ সাল থেকে জম্মু-কাশ্মীরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন আছে।
>>>সাউথ এশিয়ান মনিটর
No comments