নির্বাচন ও যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তি আলোচনা নিয়ে অনিশ্চয়তায়, দ্বিধায় আফগানিস্তান by পামেলা কনস্টেবল
তালেবান-যুক্তরাষ্ট্র
শান্তি আলোচনা চলতি সপ্তাহে বড় ধরনের সাফল্য অর্জনের আশা সৃষ্টি করতে
ব্যর্থ হয়েছে। আর বিদ্রোহীরা আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় আফগান প্রেসিডেন্ট
নির্বাচনে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। এর ফলে আফগানরা ভয় পাচ্ছে যে শান্তি
চুক্তি ও নির্বাচনের উভয়টি বা কোনো একটি যদি ব্যর্থ হয়, তবে দেশের
রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হবে।
আফগানিস্তানে ঈদ উৎসব শেষ করে এখন তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। শান্তি আলোচনা নিয়ে নতুন করে সংশয় সৃষ্টি হওয়ায় এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে ২৮ সেপ্টেম্বরের নির্বাচন হওয়া নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকায় দেশটিতে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। তিনি রোববার ঈদের বক্তৃতায় ঘোষণা করেছেন, জাতির জন্য এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, তার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী গত সপ্তাহে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে তার জয়ের সম্ভাবনা আরো বেড়ে গেছে।
কিন্তু সোমবার প্রধান মার্কিন আলোচক জালমি খালিলজাদ কাতারে তালেবানের সাথে তার সর্বশেষ দফার আলোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি পরামর্শ করার জন্য ওয়াশিংটনে ফিরে যাবেন। অথচ তিনি আগে এবার বেশ কিছু সাফল্য লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। এখন তিনি অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে এক তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, আলোচনা ছিল ‘দীর্ঘ ও কার্যকর।’
অনেক আফগান মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি হলে বিদ্রোহীদেরই লাভ হবে। উল্লেখ্য, তালেবানের প্রধান দাবি হলো আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহার এবং ট্রাম্প প্রশাসনও এতে রাজি হয়েছে।
তবে চুক্তির পর কী ঘটবে তা নিয়েই অনেক আফগান বেশি মাথা ঘামাচ্ছে। বিশেষ করে ভবিষ্যত ক্ষমতা ভাগাভাগি ব্যবস্থা, নারীদের অধিকার ইত্যাদি বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে।
সরকারে প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর ভাইস প্রেসিডেন্ট রানিং মেট আনোয়ারুল হক আহাদি বলেন, আমার কাছে নির্বাচনের চেয়ে শান্তি শত গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেপ্টেম্বরের আগে যদি শান্তিচুক্তি না হয়, তবে আরো অন্তত কয়েক মাসের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্থগিত করা উচিত।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৬ প্রার্থীর অন্যতম সাবেক জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান রহমতুল্লাহ নাবিল বলেন, নির্বাচনের সময়কার দলগত ও গোত্রগত সঙ্ঘাত আন্তঃআফগান শান্তি আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এতে করে ইসলামি মিলিশিয়ারা আরো ঐক্যবদ্ধ হবে।
নাবিল বলেন, তালেবানের মোকাবিলার জন্য আমাদের ভবিষ্যত প্রশ্নে জাতীয় সমঝোতার প্রয়োজন। নির্বাচন হলে তা আমাদের আরো বিভক্ত করবে। তিনি নির্বাচনের সময় বিদ্রোহীদের সহিংসতা ও জালিয়াতির অভিযোগ আনেন।
তিনি বলেন, একটি খারাপ চুক্তির পর একটি খারাপ নির্বাচন হলে তালেবানের দ্বিগুণ জয় হবে।
অনেক ভোটারের মধ্যেই এমন নিরুৎসাহভাব ও বিভ্রান্তি রয়েছে। কাবুলের অনেক অধিবাসীই বলেছেন, তারা নির্বাচনের ব্যাপারে তেমন আগ্রহী নন। তবে তারা শান্তি কামনা করছেন। তাদের অনেকে গত বছরের স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা স্মরণ করেন। ওই সময়ে দীর্ঘ দিন পর তারা কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলেন।
লোকজন ব্যাপকভাবে মনে করে, ঘানি আবার নির্বাচিত হবেন। বিশেষ করে তার সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে ঘানির সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। অবশ্য অনেকেই ঘানির নেতৃত্ব নিয়ে সংশয় পোষণ করেন। তাদের আশঙ্কা মার্কিন সৈন্য প্রত্যহার করা মাত্র তালেবান কর্তৃপক্ষ আমেরিকানদের কাছে দেয়া তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করবে, ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে দেবে।
ট্যাক্সিচালক আবদুল হামিদ ফৈজি, ৩২, বলেন, সব আফগান শান্তি চায়। শান্তি এলেই আমরা নিরাপত্তা আর চাকরি পাবো। কিন্তু তালেবানের শান্তিতে বিশ্বাস করা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তি যুদ্ধ বন্ধ করবে না। আর বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে আফগানরা আগ্রহী নয়।
গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রিকারী হামিদ বখশি, ২৩, বলেন, ঘানি সরকার অযোগ্য। তারা দেশকে নিরাপদ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি মনে করেন, আমেরিকান সৈন্য চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আফগানিস্তানে আবার ১৯৯০-এর দশকের মতো গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।
আফগান ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের পরিচালক দাভুদ মোরাদিয়ান বলেন, একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেশের জন্য ভালো হবে। তবে নির্বাচন যদি না হতে পারে বা তা যদি গত দুইবারের মতো বিরোধপূর্ণ হয়, তবে তালেবানকে নিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
তিনি বলেন, তালেবান মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার ও আফগান সরকারকে অবৈধ হিসেবে অভিহিত করতে সফল হয়েছে। তবে তারা ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে রাজি হচ্ছে না। তারা বুঝতে পারছে না যে আফগানিস্তান কতটা বদলে গেছে। বর্তমান ব্যবস্থাটি ঝামেলাপূর্ণ, তবে তাতে কাজ হচ্ছে। তালেবান শাসন কেউ গ্রহণ করবে না। এ কারণেই আমাদের প্রয়োজন একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। এটিই আফগান প্রজাতন্ত্রকে শান্তিকে রক্ষা করবে।
আফগানিস্তানে ঈদ উৎসব শেষ করে এখন তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। শান্তি আলোচনা নিয়ে নতুন করে সংশয় সৃষ্টি হওয়ায় এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে ২৮ সেপ্টেম্বরের নির্বাচন হওয়া নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকায় দেশটিতে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। তিনি রোববার ঈদের বক্তৃতায় ঘোষণা করেছেন, জাতির জন্য এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, তার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী গত সপ্তাহে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে তার জয়ের সম্ভাবনা আরো বেড়ে গেছে।
কিন্তু সোমবার প্রধান মার্কিন আলোচক জালমি খালিলজাদ কাতারে তালেবানের সাথে তার সর্বশেষ দফার আলোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি পরামর্শ করার জন্য ওয়াশিংটনে ফিরে যাবেন। অথচ তিনি আগে এবার বেশ কিছু সাফল্য লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। এখন তিনি অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে এক তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, আলোচনা ছিল ‘দীর্ঘ ও কার্যকর।’
অনেক আফগান মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি হলে বিদ্রোহীদেরই লাভ হবে। উল্লেখ্য, তালেবানের প্রধান দাবি হলো আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহার এবং ট্রাম্প প্রশাসনও এতে রাজি হয়েছে।
তবে চুক্তির পর কী ঘটবে তা নিয়েই অনেক আফগান বেশি মাথা ঘামাচ্ছে। বিশেষ করে ভবিষ্যত ক্ষমতা ভাগাভাগি ব্যবস্থা, নারীদের অধিকার ইত্যাদি বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে।
সরকারে প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর ভাইস প্রেসিডেন্ট রানিং মেট আনোয়ারুল হক আহাদি বলেন, আমার কাছে নির্বাচনের চেয়ে শান্তি শত গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেপ্টেম্বরের আগে যদি শান্তিচুক্তি না হয়, তবে আরো অন্তত কয়েক মাসের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্থগিত করা উচিত।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৬ প্রার্থীর অন্যতম সাবেক জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান রহমতুল্লাহ নাবিল বলেন, নির্বাচনের সময়কার দলগত ও গোত্রগত সঙ্ঘাত আন্তঃআফগান শান্তি আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এতে করে ইসলামি মিলিশিয়ারা আরো ঐক্যবদ্ধ হবে।
নাবিল বলেন, তালেবানের মোকাবিলার জন্য আমাদের ভবিষ্যত প্রশ্নে জাতীয় সমঝোতার প্রয়োজন। নির্বাচন হলে তা আমাদের আরো বিভক্ত করবে। তিনি নির্বাচনের সময় বিদ্রোহীদের সহিংসতা ও জালিয়াতির অভিযোগ আনেন।
তিনি বলেন, একটি খারাপ চুক্তির পর একটি খারাপ নির্বাচন হলে তালেবানের দ্বিগুণ জয় হবে।
অনেক ভোটারের মধ্যেই এমন নিরুৎসাহভাব ও বিভ্রান্তি রয়েছে। কাবুলের অনেক অধিবাসীই বলেছেন, তারা নির্বাচনের ব্যাপারে তেমন আগ্রহী নন। তবে তারা শান্তি কামনা করছেন। তাদের অনেকে গত বছরের স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা স্মরণ করেন। ওই সময়ে দীর্ঘ দিন পর তারা কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলেন।
লোকজন ব্যাপকভাবে মনে করে, ঘানি আবার নির্বাচিত হবেন। বিশেষ করে তার সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে ঘানির সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। অবশ্য অনেকেই ঘানির নেতৃত্ব নিয়ে সংশয় পোষণ করেন। তাদের আশঙ্কা মার্কিন সৈন্য প্রত্যহার করা মাত্র তালেবান কর্তৃপক্ষ আমেরিকানদের কাছে দেয়া তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করবে, ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে দেবে।
ট্যাক্সিচালক আবদুল হামিদ ফৈজি, ৩২, বলেন, সব আফগান শান্তি চায়। শান্তি এলেই আমরা নিরাপত্তা আর চাকরি পাবো। কিন্তু তালেবানের শান্তিতে বিশ্বাস করা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তি যুদ্ধ বন্ধ করবে না। আর বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে আফগানরা আগ্রহী নয়।
গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রিকারী হামিদ বখশি, ২৩, বলেন, ঘানি সরকার অযোগ্য। তারা দেশকে নিরাপদ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি মনে করেন, আমেরিকান সৈন্য চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আফগানিস্তানে আবার ১৯৯০-এর দশকের মতো গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।
আফগান ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের পরিচালক দাভুদ মোরাদিয়ান বলেন, একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেশের জন্য ভালো হবে। তবে নির্বাচন যদি না হতে পারে বা তা যদি গত দুইবারের মতো বিরোধপূর্ণ হয়, তবে তালেবানকে নিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
তিনি বলেন, তালেবান মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার ও আফগান সরকারকে অবৈধ হিসেবে অভিহিত করতে সফল হয়েছে। তবে তারা ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে রাজি হচ্ছে না। তারা বুঝতে পারছে না যে আফগানিস্তান কতটা বদলে গেছে। বর্তমান ব্যবস্থাটি ঝামেলাপূর্ণ, তবে তাতে কাজ হচ্ছে। তালেবান শাসন কেউ গ্রহণ করবে না। এ কারণেই আমাদের প্রয়োজন একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। এটিই আফগান প্রজাতন্ত্রকে শান্তিকে রক্ষা করবে।
১১ আগস্ট ঈদুল আযহার জামাতে শরিক হয়েছেন আফগানরা |
No comments