ধ্বংসস্তুপ থেকে জেগে উঠছে আফগানিস্তানের দারুলআমান প্রাসাদ
কাবুলের
অতিকায় এক প্রাসাদের ভেতরে একদল ঝালাই কর্মী দ্রুত অভিজাত সিঁড়ির দুই পাশে
ধাতব রেলিং লাগাচ্ছিল। বাইরে, বাগানকর্মীরা মাটিতে পানি দিচ্ছিল, যাতে
দ্রুত সেখানে ঘাস জন্মায়।
এক সময়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত দারুলআমান প্রাসাদের পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ করার জন্য মাত্র আর কয়েকদিন সময় হাতে আছে তাদের। আফগান স্থাপত্যের একটা আকর্ষণীয় শো-পিস এই প্রাসাদ যেটা বহু দশকের যুদ্ধের সময় দেশের বিপর্যস্ত অবস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন ঝুলছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের মধ্যে একটা চুক্তির বিষয় নিয়ে যখন অপেক্ষা চলছে, এ অবস্থায় সামান্য সময়ের জন্য হলেও অতীতকে উদযাপন করতে চায় যুদ্ধবিধ্বস্ত এই জাতি আর এই উদযাপনের কেন্দ্রে থাকবে দারুলআমান প্রাসাদ।
১৯ আগস্টের মধ্যেই প্রাসাদের কাজ শেষ করতে হবে। ১০০ বছর আগে এই দিনেই ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছিল আফগানিস্তান। এ দিন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি নতুন মেরামতকৃত ভবনের উদ্বোধন করবেন।
দারুলআমান শব্দের অর্থ ‘শান্তির আবাস’। শেষ পর্যন্ত এখানে কি কাজ করা হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত না হলেও, এর একটা অংশকে যাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
ভবনটির অবস্থান একটি পাহাড়ের উপর, যেখান থেকে কাবুলকে চমৎকারভাবে দেখা যায়। সর্বসাম্প্রতিককালে প্রাসাদটি পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। ছাদগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। দেয়ালগুলো ভেঙ্গে পড়েছিল এবং গুলির আঘাতে জর্জরিত হয়ে ছিল। এবং এককালের অসামান্য নিও-ক্লাসিক্যাল বহিরাবরণ গ্রাফিতিতে ঢাকা পড়েছিল আর ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছিল।
কিন্তু ২০১৬ সালে ঘানি এই প্রাসাদের পুনর্নির্মাণের নির্দেশ দেন। ডিজাইন পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের মার্চে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক জাভিদ হাম্মাদ বলেন, দারুলআমানের পুনর্নির্মাণটা আফগানিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই কাজটা বহু সঙ্ঘাতের পর একটা নতুন সূচনার প্রতিশ্রুতি দেয়।
১০.৫ মিলিয়ন ডলারের এই মেরামত কাজ কাবুলের জনশক্তির জন্য একটা আশীর্বাদ হয়ে আসে। ভবনের কক্ষগুলোর জন্য সিডার গাছের সিলিং এসেছে পশ্চিমের কুনার প্রদেশ থেকে। আর মেঝের মার্বেল পাথর এসেছে পশ্চিমের শহর হেরাত থেকে। এর অর্থ হলো পুরো দেশেই এটাকে কেন্দ্র করে ব্যবসা বেড়েছে।
কিন্তু প্রাসাদটিতে আগের ঐশ্বর্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় সবাই একই রকম খুশি নয়। বিশ্বের দরিদ্রতম একটা দেশে অর্থগুলো অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো যেতো বলে মনে করেন তারা।
স্থানীয় দোকানদার আলী বললেন, “দারুলআমান প্রাসাদ পুনর্নির্মাণ করা ভালো। কিন্তু অর্থগুলো মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজে লাগানো যেতো”।
কাবুলের আরেক বাসিন্দা গুলাম মোহাম্মদ বললেন ভাঙাচোরা প্রাসাদটিকে সেভাবেই ফেলে রাখা উচিত ছিল, যাতে সেটা দেখে আফগানিস্তানের সমস্যাশঙ্কুল অতীতের ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়।
মোহাম্মদ বলেন, “একই রকম রাখলে ভালো হতো। মানুষ স্মরণ করতো যে যুদ্ধ কত ভয়াবহ। পুনর্নির্মাণের আগে, প্রাসাদটা সুন্দর ছিল”।
১৯১৯ সালের ১৯ আগস্ট লন্ডন আর কাবুলের মধ্যে ইঙ্গ-আফগান চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তিতে ব্রিটেন আফগানিস্তানের স্বাধীনতাকে মেনে নিয়েছিল এবং এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ব্রিটিশ ভারত পশ্চিমে খাইবার পাসের পরে আর সম্প্রসারিত হবে না।
বিশের দশকের শুরুর দিকে রাজা আমানুল্লাহ খানের জন্য এই প্রাসাদটির ডিজাইন করেছিলেন জার্মান প্রকৌশলীরা। প্রাসাদটি মূলত আফগানিস্তানের নতুন পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে রাজনীতির পট পরিবর্তনের কারণে এটা বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। বেশ কিছু মন্ত্রণালয়ের অফিস ছিল এখানে। সেই সাথে একটি মেডিকেল স্কুল ও যাদুঘরও গড়ে তোলা হয় এখানে।
১৯৬৪ সালে ভবনে একবার আগুন লেগেছিল। এর পর থেকে অব্যাহতভাবে আফগানিস্তানের সঙ্ঘাতের সাক্ষী হয়ে আছে এই প্রাসাদ।
এক সময়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত দারুলআমান প্রাসাদের পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ করার জন্য মাত্র আর কয়েকদিন সময় হাতে আছে তাদের। আফগান স্থাপত্যের একটা আকর্ষণীয় শো-পিস এই প্রাসাদ যেটা বহু দশকের যুদ্ধের সময় দেশের বিপর্যস্ত অবস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন ঝুলছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের মধ্যে একটা চুক্তির বিষয় নিয়ে যখন অপেক্ষা চলছে, এ অবস্থায় সামান্য সময়ের জন্য হলেও অতীতকে উদযাপন করতে চায় যুদ্ধবিধ্বস্ত এই জাতি আর এই উদযাপনের কেন্দ্রে থাকবে দারুলআমান প্রাসাদ।
১৯ আগস্টের মধ্যেই প্রাসাদের কাজ শেষ করতে হবে। ১০০ বছর আগে এই দিনেই ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছিল আফগানিস্তান। এ দিন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি নতুন মেরামতকৃত ভবনের উদ্বোধন করবেন।
দারুলআমান শব্দের অর্থ ‘শান্তির আবাস’। শেষ পর্যন্ত এখানে কি কাজ করা হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত না হলেও, এর একটা অংশকে যাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
ভবনটির অবস্থান একটি পাহাড়ের উপর, যেখান থেকে কাবুলকে চমৎকারভাবে দেখা যায়। সর্বসাম্প্রতিককালে প্রাসাদটি পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। ছাদগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। দেয়ালগুলো ভেঙ্গে পড়েছিল এবং গুলির আঘাতে জর্জরিত হয়ে ছিল। এবং এককালের অসামান্য নিও-ক্লাসিক্যাল বহিরাবরণ গ্রাফিতিতে ঢাকা পড়েছিল আর ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছিল।
কিন্তু ২০১৬ সালে ঘানি এই প্রাসাদের পুনর্নির্মাণের নির্দেশ দেন। ডিজাইন পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের মার্চে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক জাভিদ হাম্মাদ বলেন, দারুলআমানের পুনর্নির্মাণটা আফগানিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই কাজটা বহু সঙ্ঘাতের পর একটা নতুন সূচনার প্রতিশ্রুতি দেয়।
১০.৫ মিলিয়ন ডলারের এই মেরামত কাজ কাবুলের জনশক্তির জন্য একটা আশীর্বাদ হয়ে আসে। ভবনের কক্ষগুলোর জন্য সিডার গাছের সিলিং এসেছে পশ্চিমের কুনার প্রদেশ থেকে। আর মেঝের মার্বেল পাথর এসেছে পশ্চিমের শহর হেরাত থেকে। এর অর্থ হলো পুরো দেশেই এটাকে কেন্দ্র করে ব্যবসা বেড়েছে।
কিন্তু প্রাসাদটিতে আগের ঐশ্বর্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় সবাই একই রকম খুশি নয়। বিশ্বের দরিদ্রতম একটা দেশে অর্থগুলো অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো যেতো বলে মনে করেন তারা।
স্থানীয় দোকানদার আলী বললেন, “দারুলআমান প্রাসাদ পুনর্নির্মাণ করা ভালো। কিন্তু অর্থগুলো মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজে লাগানো যেতো”।
কাবুলের আরেক বাসিন্দা গুলাম মোহাম্মদ বললেন ভাঙাচোরা প্রাসাদটিকে সেভাবেই ফেলে রাখা উচিত ছিল, যাতে সেটা দেখে আফগানিস্তানের সমস্যাশঙ্কুল অতীতের ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়।
মোহাম্মদ বলেন, “একই রকম রাখলে ভালো হতো। মানুষ স্মরণ করতো যে যুদ্ধ কত ভয়াবহ। পুনর্নির্মাণের আগে, প্রাসাদটা সুন্দর ছিল”।
১৯১৯ সালের ১৯ আগস্ট লন্ডন আর কাবুলের মধ্যে ইঙ্গ-আফগান চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তিতে ব্রিটেন আফগানিস্তানের স্বাধীনতাকে মেনে নিয়েছিল এবং এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ব্রিটিশ ভারত পশ্চিমে খাইবার পাসের পরে আর সম্প্রসারিত হবে না।
বিশের দশকের শুরুর দিকে রাজা আমানুল্লাহ খানের জন্য এই প্রাসাদটির ডিজাইন করেছিলেন জার্মান প্রকৌশলীরা। প্রাসাদটি মূলত আফগানিস্তানের নতুন পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে রাজনীতির পট পরিবর্তনের কারণে এটা বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। বেশ কিছু মন্ত্রণালয়ের অফিস ছিল এখানে। সেই সাথে একটি মেডিকেল স্কুল ও যাদুঘরও গড়ে তোলা হয় এখানে।
১৯৬৪ সালে ভবনে একবার আগুন লেগেছিল। এর পর থেকে অব্যাহতভাবে আফগানিস্তানের সঙ্ঘাতের সাক্ষী হয়ে আছে এই প্রাসাদ।
No comments