আসামের এনআরসি ও কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল: নেপথ্যে মোদির মুসলিমবিদ্বেষ
চল্লিশ
লাখের বেশি ভারতীয়, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান; ভারত সরকার বিদেশি অবৈধ
অভিবাসী হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার
কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিতে
যাচ্ছে। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী দরিদ্র আসাম রাজ্যে অভিবাসীদের
চিহ্নিত করার মধ্য দিয়ে এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। যেসব বাসিন্দাদের
নাগরিকত্ব যাচাই করা হচ্ছে তাদের অনেকেরই জন্ম ভারতে এবং এতোদিন ধরে
নির্বাচনের ভোটসহ সব ধরনের অধিকার ভোগ করে আসছিলেন। নাগরিক তালিকা নিয়ে
বিরোধ মীমাংসা করতে রাজ্য সরকার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি ও
নতুন বন্দি শিবির গড়ে তোলার পরিকল্পনার করছে। বিদেশি অভিবাসী সন্দেহে কয়েক
হাজার মানুষকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক এক মুসলমান সদস্য। স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্ট ও
আইনজীবীরা বলছেন, নাগরিক তালিকায় স্থান না পাওয়ার মনোকষ্টে এবং কারাগারে
যাওয়ার আতঙ্কে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন অনেকেই। তবে মোদির নেতৃত্বাধীন
সরকার এই প্রক্রিয়া থেকে পিছু হটছে না।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির অন্যান্য রাজ্যেও নাগরিকত্ব যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে নিরঙ্কুশ জয়ের ফলে মোদির সরকার হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে দেশটির মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আসামে এই নাগরিকত্ব যাচাই নিয়ে উৎকণ্ঠার অবসান এখনও হয়নি। এক বছর আগে শুরু হওয়া নাগরিকত্ব যাচাই শেষ হয় ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর। আসামের মুসলমানদের জন্য এটাকে বড় ধরনের পরাজয় মনে করা হচ্ছে।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আসাম থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে মুসমিল অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মিরের রাজ্য মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নিয়েছে মোদি সরকার। জম্মু-কাশ্মিরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই। এসব নেতাদের অনেকেই আছেন কারাগারে।
মোদির সমালোচকরা বলছেন, আসাম ও কাশ্মিরের ঘটনা প্রমাণ করে বিজেপি সরকার কট্টর হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে শক্তি প্রয়োগের নীতি অবলম্বন করছে এবং ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। রাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষের লোকেরা বলছেন, আসাম ও কাশ্মির ইঙ্গিত দেয় আগামী দিনে ১.৩ বিলিয়ন ভারতীয় জনগণকে কোন পথে নিয়ে যেতে চাইছেন মোদি।
মোদি বিরোধিরা বলছেন, তিনি একটি বিপজ্জনক খেলা শুরু করছেন। তিনি ভারতের শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে ও সামাজিক বিচ্ছেদ তৈরি করছেন। মোদির রাজনৈতিক শেকড় কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের গাঁথা। আরএসএস সবকিছুর ঊর্ধ্বে হিন্দু ধর্মকে স্থান দেয়। তাদের এই বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির ফলে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ও মুসলিম সংখ্যালঘুর ভারতে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় দাঙ্গার সূত্রপাত হয়েছে।
এক সময়ের সরকারি কর্মকর্তা থেকে মানবাধিকার কর্মীতে পরিণত হওয়া হার্শ মান্দার বলেন, আসাম ও কাশ্মিরে যা ঘটছে তা ভারত, স্বাধীনতারযুদ্ধ ও সংবিধানের উপর হামলা। দেশের সবাই সমান- ধারণার ওপর আঘাত। মুসলমানরা এখন শত্রু। এটা ভারতীয় সংবিধানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
ব্রাউন ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়া কর্মসূচির প্রধান আশুতোষ ভার্সনি মনে করেন, যদি ঠেকানো না হয় তাহলে ভারত একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিরোধী দল বিশৃঙ্খল ও নখদন্তহীন এবং আমলা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মোদির নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভারতের সেক্যুলার গণতন্ত্র এখন আদালতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তিনি সতর্ক করে বলছেন, বিচার ব্যবস্থাও নতি স্বীকার করতে পারে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে উৎকণ্ঠিত হওয়ার মতো খবর পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। গাড়ি খাতে বড় ধরনের ছাঁটাই, দেশজেুড়ে বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের গণ সহিংসতার খবরেও মোদির জনপ্রিয়তায় একটু চিড় ধরায়নি।
বহিরাগতরা প্রশ্ন তুলতে পারেন কীভাবে কোনও রাজনৈতিক দল ভারতের সমাজে মুসলমানদের অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। ভারত বহু সংস্কৃতির হিসেবে পরিচিত, কয়েক শতাব্দী ধরে মুসলমানদের অবদান রয়েছে ভারতীয় সমাজে। এমনকি দেশটি শাসন করেছেন এক সময়। মুসলমান সম্রাটরা ভারতের সাংস্কৃতিক সম্পদের অনেকগুলোই নির্মাণ করেছেন। তাজমহল সেগুলোর একটি। কিন্তু ২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতা গ্রহণের পর তার সরকার ইতিহাসের বইগুলো পুনরায় লিখেছে, মুসলমানদের শাসকদের কথা মুছে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গার মুসলমান নাম পাল্টে হিন্দুকরণ করা হয়েছে। হিন্দুদের হাতে গণপিটুনিতে অনেক মুসলমান নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া হিন্দুদের খুব কমক্ষেত্রেই সাজা হয়েছে।
মোদি ও বিজেপির মিত্ররা মুসলিমবিরোধী অবস্থানের কথা অস্বীকার করেছে। আসামের নাগরিকত্ব যাচাই নিয়ে ওঠা সমালোচনাকেও অস্বীকার করেছে। আসামের রাজ্য পর্যায়ের কর্মকর্তারা বরছেন এটা শুধু প্রশাসনিক ক্ষমতার প্রয়োগ যাতে করে ভারতের বসবাসের অধিকার নেই এমন মানুষদের খুঁজে বের করা।
চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশের পর বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আসাম সরকার কয়েক শ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়া মুসলমানদের জন্য বৈষম্যমূলক। এখানেই থেমে নেই আসামের বিজেপি। আসামের নাগরিক তালিকায় ৩৫ লাখ মানুষ বাদ পড়েছেন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করছে ১০ টি বন্দি শিবির গড়ে তোলার জন্য। যেসব বন্দি শিবিরে কয়েক হাজার মানুষকে আটক রাখা যাবে। ভারত আসামের অবৈধ অভিবাসীদের বাংলাদেশি উল্লেখ করলেও ঢাকা তাদের গ্রহণে রাজি নয়। ফলে এসব মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে যাচ্ছেন।
সমালোচকরা বলছেন, আসাম ও কাশ্মিরে যা ঘটছে তা উভয় অঞ্চলকে হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পরিকল্পনা। কাশ্মিরিরা আশঙ্কা করছেন, রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের প্রধান কারণ হচ্ছে সেখানে হিন্দুদের বসতি স্থাপন এবং ভারতে একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যের পরিচয় নির্মূল করা।
ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মিরিরা তাদের ভূমির বিশেষ অধিকার হারাবে। এই অধিকারের ফলেই রাজ্যটিতে ভারতের অন্য রাজ্যের কেউ ভূমি কিনতে পারতেন না। মোদি বলছেন, নতুন ব্যবস্থার ফলে কাশ্মিরে বাইরের বিনিয়োগ আসবে, ভালো শাসনব্যবস্থা জারি হবে এবং আসবে নতুন প্রভাত। কিন্তু ভারতের আরও কয়েকটি রাজ্যে এমন সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মোদির সরকার সেখানে এমন পরিবর্তনের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।
সমালোচকরা পার্থক্য তুলে ধরে বলছেন: ওই রাজ্যগুলো মুসলমান নয়।
>>>নিউ ইয়র্ক টাইমস অবলম্বনে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির অন্যান্য রাজ্যেও নাগরিকত্ব যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে নিরঙ্কুশ জয়ের ফলে মোদির সরকার হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে দেশটির মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আসামে এই নাগরিকত্ব যাচাই নিয়ে উৎকণ্ঠার অবসান এখনও হয়নি। এক বছর আগে শুরু হওয়া নাগরিকত্ব যাচাই শেষ হয় ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর। আসামের মুসলমানদের জন্য এটাকে বড় ধরনের পরাজয় মনে করা হচ্ছে।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আসাম থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে মুসমিল অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মিরের রাজ্য মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নিয়েছে মোদি সরকার। জম্মু-কাশ্মিরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই। এসব নেতাদের অনেকেই আছেন কারাগারে।
মোদির সমালোচকরা বলছেন, আসাম ও কাশ্মিরের ঘটনা প্রমাণ করে বিজেপি সরকার কট্টর হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে শক্তি প্রয়োগের নীতি অবলম্বন করছে এবং ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। রাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষের লোকেরা বলছেন, আসাম ও কাশ্মির ইঙ্গিত দেয় আগামী দিনে ১.৩ বিলিয়ন ভারতীয় জনগণকে কোন পথে নিয়ে যেতে চাইছেন মোদি।
মোদি বিরোধিরা বলছেন, তিনি একটি বিপজ্জনক খেলা শুরু করছেন। তিনি ভারতের শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে ও সামাজিক বিচ্ছেদ তৈরি করছেন। মোদির রাজনৈতিক শেকড় কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের গাঁথা। আরএসএস সবকিছুর ঊর্ধ্বে হিন্দু ধর্মকে স্থান দেয়। তাদের এই বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির ফলে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ও মুসলিম সংখ্যালঘুর ভারতে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় দাঙ্গার সূত্রপাত হয়েছে।
এক সময়ের সরকারি কর্মকর্তা থেকে মানবাধিকার কর্মীতে পরিণত হওয়া হার্শ মান্দার বলেন, আসাম ও কাশ্মিরে যা ঘটছে তা ভারত, স্বাধীনতারযুদ্ধ ও সংবিধানের উপর হামলা। দেশের সবাই সমান- ধারণার ওপর আঘাত। মুসলমানরা এখন শত্রু। এটা ভারতীয় সংবিধানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
ব্রাউন ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়া কর্মসূচির প্রধান আশুতোষ ভার্সনি মনে করেন, যদি ঠেকানো না হয় তাহলে ভারত একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিরোধী দল বিশৃঙ্খল ও নখদন্তহীন এবং আমলা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মোদির নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভারতের সেক্যুলার গণতন্ত্র এখন আদালতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তিনি সতর্ক করে বলছেন, বিচার ব্যবস্থাও নতি স্বীকার করতে পারে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে উৎকণ্ঠিত হওয়ার মতো খবর পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। গাড়ি খাতে বড় ধরনের ছাঁটাই, দেশজেুড়ে বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের গণ সহিংসতার খবরেও মোদির জনপ্রিয়তায় একটু চিড় ধরায়নি।
বহিরাগতরা প্রশ্ন তুলতে পারেন কীভাবে কোনও রাজনৈতিক দল ভারতের সমাজে মুসলমানদের অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। ভারত বহু সংস্কৃতির হিসেবে পরিচিত, কয়েক শতাব্দী ধরে মুসলমানদের অবদান রয়েছে ভারতীয় সমাজে। এমনকি দেশটি শাসন করেছেন এক সময়। মুসলমান সম্রাটরা ভারতের সাংস্কৃতিক সম্পদের অনেকগুলোই নির্মাণ করেছেন। তাজমহল সেগুলোর একটি। কিন্তু ২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতা গ্রহণের পর তার সরকার ইতিহাসের বইগুলো পুনরায় লিখেছে, মুসলমানদের শাসকদের কথা মুছে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গার মুসলমান নাম পাল্টে হিন্দুকরণ করা হয়েছে। হিন্দুদের হাতে গণপিটুনিতে অনেক মুসলমান নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া হিন্দুদের খুব কমক্ষেত্রেই সাজা হয়েছে।
মোদি ও বিজেপির মিত্ররা মুসলিমবিরোধী অবস্থানের কথা অস্বীকার করেছে। আসামের নাগরিকত্ব যাচাই নিয়ে ওঠা সমালোচনাকেও অস্বীকার করেছে। আসামের রাজ্য পর্যায়ের কর্মকর্তারা বরছেন এটা শুধু প্রশাসনিক ক্ষমতার প্রয়োগ যাতে করে ভারতের বসবাসের অধিকার নেই এমন মানুষদের খুঁজে বের করা।
চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশের পর বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আসাম সরকার কয়েক শ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়া মুসলমানদের জন্য বৈষম্যমূলক। এখানেই থেমে নেই আসামের বিজেপি। আসামের নাগরিক তালিকায় ৩৫ লাখ মানুষ বাদ পড়েছেন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করছে ১০ টি বন্দি শিবির গড়ে তোলার জন্য। যেসব বন্দি শিবিরে কয়েক হাজার মানুষকে আটক রাখা যাবে। ভারত আসামের অবৈধ অভিবাসীদের বাংলাদেশি উল্লেখ করলেও ঢাকা তাদের গ্রহণে রাজি নয়। ফলে এসব মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে যাচ্ছেন।
সমালোচকরা বলছেন, আসাম ও কাশ্মিরে যা ঘটছে তা উভয় অঞ্চলকে হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পরিকল্পনা। কাশ্মিরিরা আশঙ্কা করছেন, রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের প্রধান কারণ হচ্ছে সেখানে হিন্দুদের বসতি স্থাপন এবং ভারতে একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যের পরিচয় নির্মূল করা।
ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মিরিরা তাদের ভূমির বিশেষ অধিকার হারাবে। এই অধিকারের ফলেই রাজ্যটিতে ভারতের অন্য রাজ্যের কেউ ভূমি কিনতে পারতেন না। মোদি বলছেন, নতুন ব্যবস্থার ফলে কাশ্মিরে বাইরের বিনিয়োগ আসবে, ভালো শাসনব্যবস্থা জারি হবে এবং আসবে নতুন প্রভাত। কিন্তু ভারতের আরও কয়েকটি রাজ্যে এমন সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মোদির সরকার সেখানে এমন পরিবর্তনের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।
সমালোচকরা পার্থক্য তুলে ধরে বলছেন: ওই রাজ্যগুলো মুসলমান নয়।
>>>নিউ ইয়র্ক টাইমস অবলম্বনে।
No comments