কাশ্মীর প্রশ্নে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ প্রস্তাবের কথা বলল রাশিয়া by দেবিরুপা মিত্র
কাশ্মীর
প্রশ্নে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায়
রাশিয়ার অবস্থান নিয়ে কিছুটা রহস্য ছিল। ভারতকে রাশিয়া সমর্থন করলেও
দিল্লির দীর্ঘ দিন আগে বাতিল করা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের উল্লেখ করায়
এই সমর্থন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বিলোপ ও রাজ্যটিকে দ্বিখণ্ডিত করে ভারতীয় ইউনিয়নভুক্ত ভূখণ্ডে পরিণত করার ভারতীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করে। সভাটি রুদ্ধদ্বার হলেও এটিই ছিল ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের পর ‘ভারত-পাকিস্তান প্রশ্নে’ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সভা।
পরিষদের সভাপতি পোল্যান্ডোর জোয়ানা রংনেকা অবশ্য প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতে সব সদস্যের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাননি। চীন বৈঠকের একতরফা সিদ্ধান্তের বিপরীতে সাধারণ ইচ্ছার বার্তা প্রকাশ করার অনুরোধ জানায়।
তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় দূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন তা প্রত্যাখ্যান করেন। কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি জাং উনকে অন্যান্য সদস্যের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখার বিষয়টি অনুমোদন করেনি।
বৈঠকে ভারতের অবস্থান সমর্থন করে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সও কার্যত চীনা প্রস্তাব আটকে দিয়ে প্রকাশ্য বিবৃতি দেয়া থেকে বিরত রাখতে সভাপতিকে বলেন।
তবে সভায় রাশিয়ার অবস্থানে পর্যবেক্ষকেরা বেশ দোটানা ভাব দেখেছেন।
রাশিয়ার প্রথম উপ স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পোলিনস্কি সভাটি শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ‘দ্বিপক্ষীয় আলোচনা’ চান।
তিনি এক টুইটে আশা প্রকাশ করেন যে কাশ্মীর ইস্যুটি কেবল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে মীমাংসিত হবে। টুইটটি সামাজিক মাধ্যমে বিশেষ করে ভারতীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
তার দ্বিতীয় টুইটটি তেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। তবে তাতে কাশ্মীর প্রশ্নে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী অবস্থানে পরিবর্তন দেখা যায়। তিনি লিখেন, কাশ্মীর বিরোধটি ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি ও লাহোর ঘোষণার আলোকে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে মীমাসা করা উচিত। তারপর তিনি জাতিসংঘ সনদ ও সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘ প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর তিনি আরেক টুইটে বলেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই রাশিয়ার বন্ধু ও অংশীদার। রাশিয়ার কোনো ‘গোপন এজেন্ডা’ নেই।
রাশিয়ার কূটনীতিবিদের সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘ প্রস্তাবের প্রসঙ্গ উত্থাপন করতেই নড়চেড়ে বসেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। কারণ জাতিসংঘ প্রস্তাবটি মোটামুটিভাবে পাকিস্তান ও চীনের অবস্থান। শুক্রবার চীনা দূত তার বিবৃতিতে বলেন, কাশ্মীর ইস্যুটি জাতিসংঘ সনদ, জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে অনুযায়ী সুরাহা হওয়া উচিত।
অন্যদিকে ভারত মনে করে ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তির পর ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
রাশিয়া কখনো কাশ্মীরের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের কথা বলেনি। ভারতের সাথে তার ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণেই তারা ওই অবস্থান গ্রহণ করেছিল। ১৯৫০-এর দশকে সোভিয়েত নেতারা শ্রীনগর সফর করতেন এবং নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের অনুকূলে ভেটো দিতেন।
রুশ কূটনীতিকের এই টুইট মস্কোর আগের মন্তব্য থেকে ভিন্ন। ৫ সেপ্টেম্বরের পর মস্কো জানিয়েছিল যে কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের তাৎক্ষণিক কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
আর ৯ আগস্ট রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারভা মিডিয়ায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কাশ্মীর প্রশ্নে মতবিরোধ মিটিয়ে ফেলা উচিত দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে। তা হতে পারে ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি ও ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণার আলোকে। তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের কথা বলেননি।
একইভাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কোরেশির সাথে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের টেলিফোন সংলাপের পর রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছিল তাতে বলা হয়, মস্কো চায় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে এই সমস্যার সমাধান করা হোক। এখানেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ নেই।
এ কারণেই নিউ ইয়র্কে রুশ কূটনীতিক যখন সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘ প্রস্তাবের কথা বললেন, তখন সবাই চমকে ওঠে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো মনে করছে, নিউ ইয়র্কে রাশিয়া আসলে উন্মুক্ত সভা আয়োজনের রুশ প্রস্তাবই সমর্থন করেছে। তবে ভারত সরকার এ ধরনের বৈঠকের ঘোর বিরোধী।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়া তাদের পক্ষে কথা বলেছে।
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের সম্পর্ক উষ্ণ থাকলেও তারা একে অপরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে চিন্তা করছে। কারণ উভয় দেশই নতুন নতুন বন্ধু সংগ্রহের অভিযানে নেমেছে।
মস্কোর অভিযোগ হলো, ভারত খুব বেশি করে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। আর পাশ্চাত্য রাশিয়াকে টার্গেট করায় অস্বস্তিতে আছে ভারত। বিশেষ করে চীনকে রাশিয়ার ব্যাপকভাবে গ্রহণ করাটা ভারত ভালোভাবে দেখছে না।
চলতি বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফর করার কথা। সেখানে তার প্রধান অতিথি হিসেবে ইস্টার্ন ইকোনমিক সামিটে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। আবার মার্কিন অবরোধের হুমকির মুখেও রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে ভারত। আরো কিছু প্রতিরক্ষা চুক্তিও আছে হাতের নাগালে।
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নিবিড় থাকলেও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে তা তেমনভাবে নেই।
ভারতের এক কর্মকর্তা বলেন, পাশ্চাত্যের সাথে বিরোধের কারণেই জৈশ-ই-মোহাম্মদের মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘ কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার মতো ইস্যুতে ভারতের পক্ষে নেই রাশিয়া। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন, জাতিসংঘের সত্যিকারের ভোট প্রক্রিয়ায় ভারতের পক্ষেই থাকবে রাশিয়া।
আবার আফগান শান্তি প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করেছে রাশিয়া।
এই প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের গিলগিট-বাল্টিস্তানে একটি দ্বিপক্ষীয় সামরিক মহড়ার খবর দেয় রাশিয়া।
কিন্তু ভারত জানায়, তারা পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অংশ মনে করে। কিন্তু ভারত পছন্দ না করলেও এর পর থেকে খাইবার-পাখতুনখাওয়ায় পাকিস্তানের সাথে দ্বিপক্ষীয় মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
গত শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বিলোপ ও রাজ্যটিকে দ্বিখণ্ডিত করে ভারতীয় ইউনিয়নভুক্ত ভূখণ্ডে পরিণত করার ভারতীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করে। সভাটি রুদ্ধদ্বার হলেও এটিই ছিল ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের পর ‘ভারত-পাকিস্তান প্রশ্নে’ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সভা।
পরিষদের সভাপতি পোল্যান্ডোর জোয়ানা রংনেকা অবশ্য প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতে সব সদস্যের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাননি। চীন বৈঠকের একতরফা সিদ্ধান্তের বিপরীতে সাধারণ ইচ্ছার বার্তা প্রকাশ করার অনুরোধ জানায়।
তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় দূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন তা প্রত্যাখ্যান করেন। কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি জাং উনকে অন্যান্য সদস্যের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখার বিষয়টি অনুমোদন করেনি।
বৈঠকে ভারতের অবস্থান সমর্থন করে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সও কার্যত চীনা প্রস্তাব আটকে দিয়ে প্রকাশ্য বিবৃতি দেয়া থেকে বিরত রাখতে সভাপতিকে বলেন।
তবে সভায় রাশিয়ার অবস্থানে পর্যবেক্ষকেরা বেশ দোটানা ভাব দেখেছেন।
রাশিয়ার প্রথম উপ স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পোলিনস্কি সভাটি শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ‘দ্বিপক্ষীয় আলোচনা’ চান।
তিনি এক টুইটে আশা প্রকাশ করেন যে কাশ্মীর ইস্যুটি কেবল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে মীমাংসিত হবে। টুইটটি সামাজিক মাধ্যমে বিশেষ করে ভারতীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
তার দ্বিতীয় টুইটটি তেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। তবে তাতে কাশ্মীর প্রশ্নে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী অবস্থানে পরিবর্তন দেখা যায়। তিনি লিখেন, কাশ্মীর বিরোধটি ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি ও লাহোর ঘোষণার আলোকে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে মীমাসা করা উচিত। তারপর তিনি জাতিসংঘ সনদ ও সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘ প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর তিনি আরেক টুইটে বলেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই রাশিয়ার বন্ধু ও অংশীদার। রাশিয়ার কোনো ‘গোপন এজেন্ডা’ নেই।
রাশিয়ার কূটনীতিবিদের সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘ প্রস্তাবের প্রসঙ্গ উত্থাপন করতেই নড়চেড়ে বসেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। কারণ জাতিসংঘ প্রস্তাবটি মোটামুটিভাবে পাকিস্তান ও চীনের অবস্থান। শুক্রবার চীনা দূত তার বিবৃতিতে বলেন, কাশ্মীর ইস্যুটি জাতিসংঘ সনদ, জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে অনুযায়ী সুরাহা হওয়া উচিত।
অন্যদিকে ভারত মনে করে ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তির পর ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
রাশিয়া কখনো কাশ্মীরের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের কথা বলেনি। ভারতের সাথে তার ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণেই তারা ওই অবস্থান গ্রহণ করেছিল। ১৯৫০-এর দশকে সোভিয়েত নেতারা শ্রীনগর সফর করতেন এবং নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের অনুকূলে ভেটো দিতেন।
রুশ কূটনীতিকের এই টুইট মস্কোর আগের মন্তব্য থেকে ভিন্ন। ৫ সেপ্টেম্বরের পর মস্কো জানিয়েছিল যে কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের তাৎক্ষণিক কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
আর ৯ আগস্ট রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারভা মিডিয়ায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কাশ্মীর প্রশ্নে মতবিরোধ মিটিয়ে ফেলা উচিত দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে। তা হতে পারে ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি ও ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণার আলোকে। তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের কথা বলেননি।
একইভাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কোরেশির সাথে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের টেলিফোন সংলাপের পর রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছিল তাতে বলা হয়, মস্কো চায় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে এই সমস্যার সমাধান করা হোক। এখানেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ নেই।
এ কারণেই নিউ ইয়র্কে রুশ কূটনীতিক যখন সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘ প্রস্তাবের কথা বললেন, তখন সবাই চমকে ওঠে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো মনে করছে, নিউ ইয়র্কে রাশিয়া আসলে উন্মুক্ত সভা আয়োজনের রুশ প্রস্তাবই সমর্থন করেছে। তবে ভারত সরকার এ ধরনের বৈঠকের ঘোর বিরোধী।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়া তাদের পক্ষে কথা বলেছে।
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের সম্পর্ক উষ্ণ থাকলেও তারা একে অপরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে চিন্তা করছে। কারণ উভয় দেশই নতুন নতুন বন্ধু সংগ্রহের অভিযানে নেমেছে।
মস্কোর অভিযোগ হলো, ভারত খুব বেশি করে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। আর পাশ্চাত্য রাশিয়াকে টার্গেট করায় অস্বস্তিতে আছে ভারত। বিশেষ করে চীনকে রাশিয়ার ব্যাপকভাবে গ্রহণ করাটা ভারত ভালোভাবে দেখছে না।
চলতি বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফর করার কথা। সেখানে তার প্রধান অতিথি হিসেবে ইস্টার্ন ইকোনমিক সামিটে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। আবার মার্কিন অবরোধের হুমকির মুখেও রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে ভারত। আরো কিছু প্রতিরক্ষা চুক্তিও আছে হাতের নাগালে।
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নিবিড় থাকলেও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে তা তেমনভাবে নেই।
ভারতের এক কর্মকর্তা বলেন, পাশ্চাত্যের সাথে বিরোধের কারণেই জৈশ-ই-মোহাম্মদের মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘ কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার মতো ইস্যুতে ভারতের পক্ষে নেই রাশিয়া। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন, জাতিসংঘের সত্যিকারের ভোট প্রক্রিয়ায় ভারতের পক্ষেই থাকবে রাশিয়া।
আবার আফগান শান্তি প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করেছে রাশিয়া।
এই প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের গিলগিট-বাল্টিস্তানে একটি দ্বিপক্ষীয় সামরিক মহড়ার খবর দেয় রাশিয়া।
কিন্তু ভারত জানায়, তারা পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অংশ মনে করে। কিন্তু ভারত পছন্দ না করলেও এর পর থেকে খাইবার-পাখতুনখাওয়ায় পাকিস্তানের সাথে দ্বিপক্ষীয় মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
No comments