অনড় সুলতান মনসুর ১৫ই মার্চের মধ্যে শপথ
সুলতান
মোহাম্মদ মনসুর অনড়। সংসদে যাবেন। শপথ নেবেন। স্বাধীনতার মাসেই। ১৫ই
মার্চের মধ্যে। কারণ হিসেবে বললেন, অনেক কথা। জানালেন, তার নির্বাচনী
এলাকার শতভাগ মানুষ চায় তিনি সংসদে যান। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে
খোলামেলা কথা বলেন ডাকসুর এই সাবেক ভিপি।
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে যারা সরব হয়েছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর তাদের মধ্যে অন্যতম। ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে সংস্কার ইস্যুতে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। একসময় সরব হন ঐক্যপ্রক্রিয়ায়। ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নেন গণফোরামের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে। ঐক্যফ্রন্টের জয়ী হওয়া আট এমপির মধ্যে তিনি একজন।
ঐক্যফ্রন্ট এরই মধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচন। বলেছে, রাতেই ব্যালট বাক্স বোঝাই হয়ে গেছে। বিজয়ী এমপিদের শপথ না নেয়ার কথাও বলা হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। কিন্তু সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলছেন তিনি শপথ নেবেন। মানবজমিনের সঙ্গে তার আলাপচারিতা-
আপনি কী শপথ নিতে যাচ্ছেন?
আমার সংসদীয় এলাকার জনগণ চায়, তারা যেহেতু আমাকে ভোট দিয়েছে। তাদের দাবি হচ্ছে- সংসদে গিয়ে তাদের পক্ষে কথা বলা। তাদের দাবি আদায় করা। পাশাপাশি জাতীয় দাবিও বাস্তবায়ন করা। সেক্ষেত্রে আমাকে প্রথম অগ্রাধিকার দিতে হবে আমার সংসদীয় এলাকার জনগণের মতামতকে। আমার সংসদীয় এলাকা মৌলভীবাজার-২ আসনের শতকরা ১০০ জনের উপরে আর তো কোনো কথা থাকে না। দলমতনির্বিশেষে সবাই চায় আমি জাতীয় সংসদে গিয়ে তাদের পক্ষে কথা বলি। জনগণের পক্ষে কথা বলি এবং মানুষের দাবি তুলে ধরি।
আপনার দল তো শপথ নেয়ার বিপক্ষে
আমি গণফোরামের সদস্য হয়ে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তবে প্রকৃতপক্ষে আমি গণফোরামের কোনো কর্মকর্তা না। আর আমি গণফোরাম দলগতভাবে কখনো করিও নাই। যেহেতু নির্বাচনে একটি নিবন্ধিত দলের মাধ্যমে প্রার্থী হতে হয় সেই ক্ষেত্রে আমি মূলত ছিলাম জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার মুখপাত্র বা জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে ছিলাম। যখন নির্বাচনের প্রশ্নটি আসলো তখন আমি ভাবলাম আমি যে রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করি, আমি যে রাজনীতি দীর্ঘদিন যাবৎ করে আসছি বা গত ৫০ বছর যাবৎ সেই অর্থে আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করি। আমি মুক্তি সংগ্রামের চেতনায় বিশ্বাসী। কাজেই সেই অবস্থান এবং বিশ্বাস থেকে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আমি ভেবেছি যে, আমার চিন্তার পাশাপাশি দল হচ্ছে গণফোরাম। সেই হিসেবে আমি গণফোরামের সদস্য হয়ে, তাদের দলের তালিকাভুক্ত হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেই। ঐক্যফ্রন্টের সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ধানের শীষ মার্কাটি নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেহেতু আমি ধানের শীষে নির্বাচন করেছি। ধানের শীষ মার্কা একসময়ের মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সাহেবের মার্কা ছিল। এটা এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মার্কা।
আপনাকে দল যদি বহিষ্কার করে তখন কী করবেন?
আমি যতটুকু জানি গণফোরাম যার সদস্য পদ নিয়ে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম সেই দল সংসদে যাবে না এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি। কারণ আমি গণফোরামের সিদ্ধান্ত জানি। গণফোরামের শীর্ষ নেতা নির্বাচনের পর প্রথম যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সেখানে তিনি বলেছিলেন যে, জাতীয় সংসদে যাওয়ার প্রশ্নে তিনি এবং তার দল ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। অর্থাৎ যাওয়ার পক্ষে থাকবে।
কিন্তু পরবর্তীকালের সিদ্ধান্ত তো পাল্টে গেছে না এরকম কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয় নি। ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন সম্ভবত দেখবেন তার দলের আমরা নির্বাচিত হয়েছি দু’জন। আমরা শপথ গ্রহণ করবো।
ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন? না পুরনো দলেই ফিরে যাবেন?
আমার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্যে বিশেষ করে ২০১২ সাল থেকে আমি মুক্তি সংগ্রামের ধারায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে জনগণের সেবা করে যাবো। যতদিন আমি বেঁচে থাকবো। আমি এমন কোনো কাজ করবো না যে কাজটি জনগণের চিন্তার বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামের বিরুদ্ধে বা স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে। জনগণের পক্ষে থাকবো এবং সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলেই রাজনীতি করার মানসিকতা আমার রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমি সেই রাজনীতিই করবো।
নির্বাচনটা কেমন ছিল
আমার সংসদীয় এলাকায় একটা ভয়ানক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাকে ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হয়েছে। স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ বলতে যেটা বোঝায় যা ১৯৯১ বা ’৯৬ বা ২০০৮ সালে হয়েছিলো সেরকম নির্বাচন হলে আমি লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করতাম। কাজেই একটা প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করে জনগণ যেহেতু আমার এলাকার মানুষ দলমতনির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ছিল সেই কারণেই হয়তো জয়ের ব্যবধান কমেছে কিন্তু সেই নির্বাচনে কিছু অস্বাভাবিকতা কাজ করেছে এবং কিছু অতি উৎসাহী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক বিশেষ করে পুলিশ। আমি পুরো পুলিশ বাহিনীকে বলবো না কিন্তু অতি উৎসাহী এই বাহিনীর কিছু লোকজন বিভিন্নভাবে এই নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে আমার এলাকায় কোনো ষড়যন্ত্রই আমার জয় বানচাল করতে পারে নি।
এটা কি শুধু কুলাউড়া? সারা দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল?
আমি যেহেতু নির্বাচন কুলাউড়ায় করেছি সেহেতু কুলাউড়ারটা বলতে পারি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অবশ্যই অনিয়ম হয়েছে, না হলে এরকম ফলাফল হতো না। তবে এটাও ঠিক আজ পর্যন্ত ২৯২টি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পরাজিত হয়েছে দেখানো হয়েছে। ২৯২ জন লোক কোথাও একটা মিছিল করে নি। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯২টি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পরাজিত হয়েছে অথবা পরাজিত করা হয়েছে কিন্তু এই যে ২৯২টি আসনের কোথাও একটি আসনেও ২৯২ জন লোকের প্রতিবাদ মিছিল হয়নি এখন পর্যন্ত।
সেটার কারণ কি?
এটার কারণ ব্যর্থতা। যারা দল করেন, দলের মধ্যে যারা আছেন যা ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক দল যেটি তাদের সাংগঠনিক অবস্থার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, মতপার্থক্য আছে- সেই কারণে তাদের কর্মীবাহিনী রাস্তায় নামে নাই। আর যতোটুকু আমি জানি এবং আমার কথা হয়েছে তাদের দলের অবস্থা সবাই একমত না বিভিন্ন প্রশ্নে। সে কারণেই তাদের দলের কর্মীরা দলের ঘোষিত কোনো কর্মসূচিতে নামছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রথমত এটলিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাগারে আছেন আজ পর্যন্ত পল্টন ময়দান থেকে কারাগার পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেখানে আছেন ম্যাক্সিমাম ১ কিলোমিটার হবে- একটা মিছিলও তো আজ পর্যন্ত হয় নি ওইভাবে।
বাস্তব অবস্থাটা কি তাই?
বাস্তব অবস্থা বলতে এগুলো মোকাবিলা করেই পাকিস্তান আমলে আমরা মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে বা স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলাম। কাজেই রাজনীতি করতে হলে পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন গণতান্ত্রিক ভাবেই মানুষকে সংগঠিত করে করতে হবে। এবং আমি মনে করি কোনো কারণে মানুষের অনাস্থার অথবা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে তারা ডাকলে হয়তো মানুষ তাদের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যতদিন গাঁটছড়া বাঁধা থাকবে ততদিন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। পাশাপাশি আমি গেলে যে সুশাসন বা আমি যে অন্যের চেয়ে ভালো সেটা প্রমাণ না করা পর্যন্ত মানুষ পাশে আসবে না। কাজেই সাধারণ মানুষ দেখবে যে আমি যার সঙ্গে যাবো বা যার নেতৃত্বে এগুবো সেই লোকটি কি চলমান যে নেতৃত্ব আছে এর চেয়ে বেটার কিনা। বিশেষ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সাহেবকে যদি সামনে রাখা হতো এবং তার সকল কথা শোনা হতো বা তার সকল পরামর্শ শোনা হতো তাহলে হয়তো আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
আপনি কখন শপথ নেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?
আমি স্বাধীনতার মাসে শপথ গ্রহণ করবো।
এটা কি শুরুর দিকে?
স্বাধীনতার মাসে আমি এতটুকু বলতে পারি। ১৫ই মার্চের ভেতরে। আমি এখন অসুস্থ সে কারণে নিতে পারছি না। কাজেই কিছুদিন সময় আছে। ১৫ই মার্চের মধ্যে ইনশাআল্লাহ শপথ গ্রহণ করবো।
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে যারা সরব হয়েছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর তাদের মধ্যে অন্যতম। ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে সংস্কার ইস্যুতে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। একসময় সরব হন ঐক্যপ্রক্রিয়ায়। ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নেন গণফোরামের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে। ঐক্যফ্রন্টের জয়ী হওয়া আট এমপির মধ্যে তিনি একজন।
ঐক্যফ্রন্ট এরই মধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচন। বলেছে, রাতেই ব্যালট বাক্স বোঝাই হয়ে গেছে। বিজয়ী এমপিদের শপথ না নেয়ার কথাও বলা হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। কিন্তু সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলছেন তিনি শপথ নেবেন। মানবজমিনের সঙ্গে তার আলাপচারিতা-
আপনি কী শপথ নিতে যাচ্ছেন?
আমার সংসদীয় এলাকার জনগণ চায়, তারা যেহেতু আমাকে ভোট দিয়েছে। তাদের দাবি হচ্ছে- সংসদে গিয়ে তাদের পক্ষে কথা বলা। তাদের দাবি আদায় করা। পাশাপাশি জাতীয় দাবিও বাস্তবায়ন করা। সেক্ষেত্রে আমাকে প্রথম অগ্রাধিকার দিতে হবে আমার সংসদীয় এলাকার জনগণের মতামতকে। আমার সংসদীয় এলাকা মৌলভীবাজার-২ আসনের শতকরা ১০০ জনের উপরে আর তো কোনো কথা থাকে না। দলমতনির্বিশেষে সবাই চায় আমি জাতীয় সংসদে গিয়ে তাদের পক্ষে কথা বলি। জনগণের পক্ষে কথা বলি এবং মানুষের দাবি তুলে ধরি।
আপনার দল তো শপথ নেয়ার বিপক্ষে
আমি গণফোরামের সদস্য হয়ে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তবে প্রকৃতপক্ষে আমি গণফোরামের কোনো কর্মকর্তা না। আর আমি গণফোরাম দলগতভাবে কখনো করিও নাই। যেহেতু নির্বাচনে একটি নিবন্ধিত দলের মাধ্যমে প্রার্থী হতে হয় সেই ক্ষেত্রে আমি মূলত ছিলাম জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার মুখপাত্র বা জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে ছিলাম। যখন নির্বাচনের প্রশ্নটি আসলো তখন আমি ভাবলাম আমি যে রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করি, আমি যে রাজনীতি দীর্ঘদিন যাবৎ করে আসছি বা গত ৫০ বছর যাবৎ সেই অর্থে আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করি। আমি মুক্তি সংগ্রামের চেতনায় বিশ্বাসী। কাজেই সেই অবস্থান এবং বিশ্বাস থেকে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আমি ভেবেছি যে, আমার চিন্তার পাশাপাশি দল হচ্ছে গণফোরাম। সেই হিসেবে আমি গণফোরামের সদস্য হয়ে, তাদের দলের তালিকাভুক্ত হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেই। ঐক্যফ্রন্টের সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ধানের শীষ মার্কাটি নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেহেতু আমি ধানের শীষে নির্বাচন করেছি। ধানের শীষ মার্কা একসময়ের মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সাহেবের মার্কা ছিল। এটা এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মার্কা।
আপনাকে দল যদি বহিষ্কার করে তখন কী করবেন?
আমি যতটুকু জানি গণফোরাম যার সদস্য পদ নিয়ে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম সেই দল সংসদে যাবে না এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি। কারণ আমি গণফোরামের সিদ্ধান্ত জানি। গণফোরামের শীর্ষ নেতা নির্বাচনের পর প্রথম যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সেখানে তিনি বলেছিলেন যে, জাতীয় সংসদে যাওয়ার প্রশ্নে তিনি এবং তার দল ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। অর্থাৎ যাওয়ার পক্ষে থাকবে।
কিন্তু পরবর্তীকালের সিদ্ধান্ত তো পাল্টে গেছে না এরকম কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয় নি। ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন সম্ভবত দেখবেন তার দলের আমরা নির্বাচিত হয়েছি দু’জন। আমরা শপথ গ্রহণ করবো।
ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন? না পুরনো দলেই ফিরে যাবেন?
আমার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্যে বিশেষ করে ২০১২ সাল থেকে আমি মুক্তি সংগ্রামের ধারায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে জনগণের সেবা করে যাবো। যতদিন আমি বেঁচে থাকবো। আমি এমন কোনো কাজ করবো না যে কাজটি জনগণের চিন্তার বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামের বিরুদ্ধে বা স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে। জনগণের পক্ষে থাকবো এবং সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলেই রাজনীতি করার মানসিকতা আমার রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমি সেই রাজনীতিই করবো।
নির্বাচনটা কেমন ছিল
আমার সংসদীয় এলাকায় একটা ভয়ানক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাকে ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হয়েছে। স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ বলতে যেটা বোঝায় যা ১৯৯১ বা ’৯৬ বা ২০০৮ সালে হয়েছিলো সেরকম নির্বাচন হলে আমি লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করতাম। কাজেই একটা প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করে জনগণ যেহেতু আমার এলাকার মানুষ দলমতনির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ছিল সেই কারণেই হয়তো জয়ের ব্যবধান কমেছে কিন্তু সেই নির্বাচনে কিছু অস্বাভাবিকতা কাজ করেছে এবং কিছু অতি উৎসাহী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক বিশেষ করে পুলিশ। আমি পুরো পুলিশ বাহিনীকে বলবো না কিন্তু অতি উৎসাহী এই বাহিনীর কিছু লোকজন বিভিন্নভাবে এই নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে আমার এলাকায় কোনো ষড়যন্ত্রই আমার জয় বানচাল করতে পারে নি।
এটা কি শুধু কুলাউড়া? সারা দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল?
আমি যেহেতু নির্বাচন কুলাউড়ায় করেছি সেহেতু কুলাউড়ারটা বলতে পারি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অবশ্যই অনিয়ম হয়েছে, না হলে এরকম ফলাফল হতো না। তবে এটাও ঠিক আজ পর্যন্ত ২৯২টি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পরাজিত হয়েছে দেখানো হয়েছে। ২৯২ জন লোক কোথাও একটা মিছিল করে নি। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯২টি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পরাজিত হয়েছে অথবা পরাজিত করা হয়েছে কিন্তু এই যে ২৯২টি আসনের কোথাও একটি আসনেও ২৯২ জন লোকের প্রতিবাদ মিছিল হয়নি এখন পর্যন্ত।
সেটার কারণ কি?
এটার কারণ ব্যর্থতা। যারা দল করেন, দলের মধ্যে যারা আছেন যা ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক দল যেটি তাদের সাংগঠনিক অবস্থার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, মতপার্থক্য আছে- সেই কারণে তাদের কর্মীবাহিনী রাস্তায় নামে নাই। আর যতোটুকু আমি জানি এবং আমার কথা হয়েছে তাদের দলের অবস্থা সবাই একমত না বিভিন্ন প্রশ্নে। সে কারণেই তাদের দলের কর্মীরা দলের ঘোষিত কোনো কর্মসূচিতে নামছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রথমত এটলিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাগারে আছেন আজ পর্যন্ত পল্টন ময়দান থেকে কারাগার পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেখানে আছেন ম্যাক্সিমাম ১ কিলোমিটার হবে- একটা মিছিলও তো আজ পর্যন্ত হয় নি ওইভাবে।
বাস্তব অবস্থাটা কি তাই?
বাস্তব অবস্থা বলতে এগুলো মোকাবিলা করেই পাকিস্তান আমলে আমরা মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে বা স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলাম। কাজেই রাজনীতি করতে হলে পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন গণতান্ত্রিক ভাবেই মানুষকে সংগঠিত করে করতে হবে। এবং আমি মনে করি কোনো কারণে মানুষের অনাস্থার অথবা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে তারা ডাকলে হয়তো মানুষ তাদের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যতদিন গাঁটছড়া বাঁধা থাকবে ততদিন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। পাশাপাশি আমি গেলে যে সুশাসন বা আমি যে অন্যের চেয়ে ভালো সেটা প্রমাণ না করা পর্যন্ত মানুষ পাশে আসবে না। কাজেই সাধারণ মানুষ দেখবে যে আমি যার সঙ্গে যাবো বা যার নেতৃত্বে এগুবো সেই লোকটি কি চলমান যে নেতৃত্ব আছে এর চেয়ে বেটার কিনা। বিশেষ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সাহেবকে যদি সামনে রাখা হতো এবং তার সকল কথা শোনা হতো বা তার সকল পরামর্শ শোনা হতো তাহলে হয়তো আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
আপনি কখন শপথ নেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?
আমি স্বাধীনতার মাসে শপথ গ্রহণ করবো।
এটা কি শুরুর দিকে?
স্বাধীনতার মাসে আমি এতটুকু বলতে পারি। ১৫ই মার্চের ভেতরে। আমি এখন অসুস্থ সে কারণে নিতে পারছি না। কাজেই কিছুদিন সময় আছে। ১৫ই মার্চের মধ্যে ইনশাআল্লাহ শপথ গ্রহণ করবো।
No comments