কিছু দুর্বৃত্তের কারণে চিকিৎসা পেশার সুনাম নষ্ট হচ্ছে - হাইকোর্ট
কতিপয়
দুর্বৃত্তের কারণে চিকিৎসা পেশার সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন
হাইকোর্ট। আদালত আরো বলেছেন, নিজেদের ভুলকে যথাযথ করতে ধর্মঘট ডাকা অন্যায়।
চুয়াডাঙ্গায় চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণ
দেয়া সংক্রান্ত রুলের শুনানিকালে গতকাল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও
বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন।
চুয়াডাঙ্গায় একটি বেসরকারি কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণ দিতে জারি করা রুলের জবাব না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মো. খাইরুল আলমকে তলব করে গত ৩রা জুলাই আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে গতকাল তারা সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে শুনানিতে আদালত এসব মন্তব্য করেন। আদালতে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত, সঙ্গে ছিলেন শুভাষ চন্দ্র দাস।
অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম আমিনুল ইসলাম।
শুনানির শুরুতে আদালতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন রুলের বিষয়ে তাদের লিখিত জবাব দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, লিখিত জবাব দাখিলের জন্য সময় পাবেন। যেহেতু দুইজন (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন) আছেন, তাই আপনাদের জবাব ব্যক্তিগত ভাবে শুনবো। এরপর আদালত চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চক্ষু শিবির করার আগে আপনার অনুমতি নেয়া হয়েছিল কিনা? জবাবে তিনি জানান, অনুমতি নেয়া হয়নি। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্য শুনতে চান আদালত। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখিয়ে আদালত বলেন, চট্টগ্রামে (চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকদের ধর্মঘট) যা হয়েছে সেটি দু:খজনক। আজকের মামলার সঙ্গে এটি সম্পর্কিত নয়। কিন্তু যেহেতু আপনি (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) আছেন তাই বলছি, ‘মানুষ বিপদে পড়লে তিন পেশার লোকের কাছে যায়। তারা হচ্ছেন- ডাক্তার, পুলিশ, আইনজীবী। কিছু দুর্বৃত্তের কারণে তিনটি পেশার পেশাদারিত্ব যদি ধ্বংস হয়, তাহলে মানুষ বিপদে পড়বে।’ আদালত আরো বলেন, ‘মেয়েটাকে (চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিশু রাইফার মৃত্যু) তো ফিরিয়ে আনা যাবে না। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। আমাদের (মানুষের) ভুল হবে বলে আমাদের একটা উচ্চ আদালত রয়েছে। ভুলটা অন্যায় নয়। কিন্তু ভুলটা জাস্টিফাই (যথাযথ) করার জন্য যদি হরতাল (ধর্মঘট) ডাকা হয়, তবে তা অন্যায়। এ সময় আদালত আরো বলেন, ‘কতিপয় দুর্বৃত্তের কর্মকাণ্ডের কারণে চিকিৎসা সেবার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দেশে অনেক স্বনামধন্য চিকিৎসক এবং ভালো মানের চিকিৎসা সেবার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কতিপয় ভুল চিকিৎসার ভয়ে রোগীরা পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছে। এতে করে দেশীয় মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে।’ আর এ ধরনের পরিস্থিতি কমিয়ে আনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে নির্দেশ দেন আদালত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আদালতের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। কিভাবে স্বাস্থ্য খাতকে রক্ষা করা যায় সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি। শুনানি শেষে আদালত আগামী ১৬ই জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
গত ২৯শে মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। গত ১লা এপ্রিল শুনানি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষুশিবিরে চিকিৎসাপ্রাপ্ত চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রল জারি করেন হাইকোর্ট। আদেশের দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার কর্তৃপক্ষসহ ১০ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
চুয়াডাঙ্গায় একটি বেসরকারি কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণ দিতে জারি করা রুলের জবাব না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মো. খাইরুল আলমকে তলব করে গত ৩রা জুলাই আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে গতকাল তারা সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে শুনানিতে আদালত এসব মন্তব্য করেন। আদালতে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত, সঙ্গে ছিলেন শুভাষ চন্দ্র দাস।
অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম আমিনুল ইসলাম।
শুনানির শুরুতে আদালতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন রুলের বিষয়ে তাদের লিখিত জবাব দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, লিখিত জবাব দাখিলের জন্য সময় পাবেন। যেহেতু দুইজন (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন) আছেন, তাই আপনাদের জবাব ব্যক্তিগত ভাবে শুনবো। এরপর আদালত চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চক্ষু শিবির করার আগে আপনার অনুমতি নেয়া হয়েছিল কিনা? জবাবে তিনি জানান, অনুমতি নেয়া হয়নি। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্য শুনতে চান আদালত। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখিয়ে আদালত বলেন, চট্টগ্রামে (চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকদের ধর্মঘট) যা হয়েছে সেটি দু:খজনক। আজকের মামলার সঙ্গে এটি সম্পর্কিত নয়। কিন্তু যেহেতু আপনি (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) আছেন তাই বলছি, ‘মানুষ বিপদে পড়লে তিন পেশার লোকের কাছে যায়। তারা হচ্ছেন- ডাক্তার, পুলিশ, আইনজীবী। কিছু দুর্বৃত্তের কারণে তিনটি পেশার পেশাদারিত্ব যদি ধ্বংস হয়, তাহলে মানুষ বিপদে পড়বে।’ আদালত আরো বলেন, ‘মেয়েটাকে (চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিশু রাইফার মৃত্যু) তো ফিরিয়ে আনা যাবে না। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। আমাদের (মানুষের) ভুল হবে বলে আমাদের একটা উচ্চ আদালত রয়েছে। ভুলটা অন্যায় নয়। কিন্তু ভুলটা জাস্টিফাই (যথাযথ) করার জন্য যদি হরতাল (ধর্মঘট) ডাকা হয়, তবে তা অন্যায়। এ সময় আদালত আরো বলেন, ‘কতিপয় দুর্বৃত্তের কর্মকাণ্ডের কারণে চিকিৎসা সেবার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দেশে অনেক স্বনামধন্য চিকিৎসক এবং ভালো মানের চিকিৎসা সেবার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কতিপয় ভুল চিকিৎসার ভয়ে রোগীরা পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছে। এতে করে দেশীয় মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে।’ আর এ ধরনের পরিস্থিতি কমিয়ে আনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে নির্দেশ দেন আদালত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আদালতের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। কিভাবে স্বাস্থ্য খাতকে রক্ষা করা যায় সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি। শুনানি শেষে আদালত আগামী ১৬ই জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
গত ২৯শে মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। গত ১লা এপ্রিল শুনানি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষুশিবিরে চিকিৎসাপ্রাপ্ত চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রল জারি করেন হাইকোর্ট। আদেশের দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার কর্তৃপক্ষসহ ১০ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
No comments