২৮ বছরেও মেলেনি ঘর by প্রতীক ওমর
দুঃখ
যাদের বুকে স্থায়ী আবাস গেড়েছে আর কষ্ট যাদের চতুর্দিক থেকে ঘিরে রেখেছে
যুগ যুগ ধরে, যারা প্রতি বছর বন্যায় দুর্দশার নতুন রূপের সঙ্গে পরিচিত হয়,
তারপরেও যারা আপসহীনভাবে জীবন বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম টিকিয়ে রাখে তারা
নদীপাড়ের মানুষ। এরকম একটি নদী তীরবর্তী গ্রামের নাম সহড়াবাড়ী। যেটি বগুড়া
জেলার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের অন্তর্গত। এক সময় সহড়াবাড়ী একটি
গ্রাম নামে পরিচিত থাকলেও প্রায় ২২ বছর আগে সম্পূর্ণ গ্রামটি বিলীন হয়
যমুনার গর্ভে। তারপর গ্রামের মানুষগুলো ঘরবাড়ি, জমি জিরেত সব হারিয়ে আশ্রয়
নেয় বাঁধে। বসতি গড়ে সেখানেই।
সেই বাঁধটি এখন সহড়াবাড়ী নামে পরিচিত। এই বাঁধেই তখন থেকে আশ্রয় নিয়ে এখন অবধি তারা কাটিয়ে দিচ্ছে বছরের পর বছর। বাঁধে আশ্রয় নেয়া এই মানুষগুলোর এক সময় অনেক জমি ছিল। যে জমিতে ফসল ফলিয়ে তারা ঘরে তুলতো অথচ এখন তাদের বাড়ি বলতে বাঁধের উপর টিনের চালা দিয়ে কোনোরকমে মাথা গোঁজা। খাদ্য জোগানের জন্য তাদের অনেকেই মানুষের বাড়ি কাজ করছে। কৃষিজমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। নদী ভাঙা এই মানুষগুলোর জীবনে গ্রীষ্ম আসে, বর্ষা আসে। আসে হেমন্ত ও শীত কিন্তু বসন্ত আসে না কখনোই। তবু তারা প্রত্যাশা করে তাদের পুনর্বাসনের। একটি গুচ্ছগ্রামেই বদলে যেতে পারে এই মানুষগুলোর জীবনধারণ। কিন্তু বছরের পর বছর বাঁধে দুর্দশা ও অবহেলায় তারা জীবন কাটালেও এখন অবধি তাদের পুনর্বাসনের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সহড়াবাড়ী বাঁধের ওপর বসে থাকা শরিফুন্নেছা জানালেন তার কষ্টের কথা। বললেন, যমুনা কিভাবে রাক্ষুসী রূপ ধারণ করে গিলে ফেলেছে তার সংসারের সবকিছু। নদীগর্ভে সব হারিয়ে নিঃস্ব ৬৮ বছরের শরিফুন্নেছা যমুনার পানির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন, ওখানে তার বাড়ি ছিল। তার ৩টা গরু ছিল। জমি ছিল ১৪ বিঘা। একবার বানের পানিতে তার সব তলিয়ে গেছে। ২২ বছর ধরে তিনি এই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধে আশ্রয় নেয়া সোফা বেগমও জানালেন একই কথা। বেঁচে থাকার তাগিদে তিনি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। শরিফুন্নেছা ও সোফা বেগমের মতো যারা সব হারিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের জীবন একই সুঁতোই গাঁথা। বেঁচে থাকার জন্য অন্যের ধান রোদে শুকানোর পর কুলায় ধানের চিটা উড়িয়ে বস্তায় ভরেন। আবার কেউবা গোবর শুকানোর পর বিক্রি করেন দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগানের জন্য। বাঁধে আশ্রয় নেয়া তোজাম আলী জানালেন, প্রায় ২২ বছর আগে তাদের সহড়াবাড়ী গ্রাম যমুনায় তলিয়ে যায়। গ্রামটিতে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ী ছিল। এরপর তারা এই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। তার মতো আরো অনেকেই কখনও মাঠে কাজ করে আবার কখনও রিকশা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। ধুনটের ৫নং ওয়ার্ড ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের মেম্বার আনোয়ার হোসেন জানালেন, বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়ে আছে ৫ থেকে প্রায় ৬ হাজারের বেশি মানুষ। যাদের পুনর্বাসনের জন্য গুচ্ছগ্রাম অত্যন্ত জরুরী। ইতিপূর্বে বেশ ক’বার গুচ্ছগ্রামের জন্য বাঁধের পাশে জায়গার মাপযোগ করা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত গুচ্ছগ্রামের কোন আশা বা আকাঙ্ক্ষা নেই। শেরপুর-ধুনট আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান জানালেন, গুচ্ছগ্রামের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা হয়েছে। চলতি বছরেই সহড়াবাড়ী বাঁধের পাশে গুচ্ছগ্রাম তৈরির আশ্বাস দিলেন তিনি।
সেই বাঁধটি এখন সহড়াবাড়ী নামে পরিচিত। এই বাঁধেই তখন থেকে আশ্রয় নিয়ে এখন অবধি তারা কাটিয়ে দিচ্ছে বছরের পর বছর। বাঁধে আশ্রয় নেয়া এই মানুষগুলোর এক সময় অনেক জমি ছিল। যে জমিতে ফসল ফলিয়ে তারা ঘরে তুলতো অথচ এখন তাদের বাড়ি বলতে বাঁধের উপর টিনের চালা দিয়ে কোনোরকমে মাথা গোঁজা। খাদ্য জোগানের জন্য তাদের অনেকেই মানুষের বাড়ি কাজ করছে। কৃষিজমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। নদী ভাঙা এই মানুষগুলোর জীবনে গ্রীষ্ম আসে, বর্ষা আসে। আসে হেমন্ত ও শীত কিন্তু বসন্ত আসে না কখনোই। তবু তারা প্রত্যাশা করে তাদের পুনর্বাসনের। একটি গুচ্ছগ্রামেই বদলে যেতে পারে এই মানুষগুলোর জীবনধারণ। কিন্তু বছরের পর বছর বাঁধে দুর্দশা ও অবহেলায় তারা জীবন কাটালেও এখন অবধি তাদের পুনর্বাসনের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সহড়াবাড়ী বাঁধের ওপর বসে থাকা শরিফুন্নেছা জানালেন তার কষ্টের কথা। বললেন, যমুনা কিভাবে রাক্ষুসী রূপ ধারণ করে গিলে ফেলেছে তার সংসারের সবকিছু। নদীগর্ভে সব হারিয়ে নিঃস্ব ৬৮ বছরের শরিফুন্নেছা যমুনার পানির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন, ওখানে তার বাড়ি ছিল। তার ৩টা গরু ছিল। জমি ছিল ১৪ বিঘা। একবার বানের পানিতে তার সব তলিয়ে গেছে। ২২ বছর ধরে তিনি এই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধে আশ্রয় নেয়া সোফা বেগমও জানালেন একই কথা। বেঁচে থাকার তাগিদে তিনি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। শরিফুন্নেছা ও সোফা বেগমের মতো যারা সব হারিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের জীবন একই সুঁতোই গাঁথা। বেঁচে থাকার জন্য অন্যের ধান রোদে শুকানোর পর কুলায় ধানের চিটা উড়িয়ে বস্তায় ভরেন। আবার কেউবা গোবর শুকানোর পর বিক্রি করেন দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগানের জন্য। বাঁধে আশ্রয় নেয়া তোজাম আলী জানালেন, প্রায় ২২ বছর আগে তাদের সহড়াবাড়ী গ্রাম যমুনায় তলিয়ে যায়। গ্রামটিতে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ী ছিল। এরপর তারা এই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। তার মতো আরো অনেকেই কখনও মাঠে কাজ করে আবার কখনও রিকশা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। ধুনটের ৫নং ওয়ার্ড ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের মেম্বার আনোয়ার হোসেন জানালেন, বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়ে আছে ৫ থেকে প্রায় ৬ হাজারের বেশি মানুষ। যাদের পুনর্বাসনের জন্য গুচ্ছগ্রাম অত্যন্ত জরুরী। ইতিপূর্বে বেশ ক’বার গুচ্ছগ্রামের জন্য বাঁধের পাশে জায়গার মাপযোগ করা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত গুচ্ছগ্রামের কোন আশা বা আকাঙ্ক্ষা নেই। শেরপুর-ধুনট আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান জানালেন, গুচ্ছগ্রামের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা হয়েছে। চলতি বছরেই সহড়াবাড়ী বাঁধের পাশে গুচ্ছগ্রাম তৈরির আশ্বাস দিলেন তিনি।
No comments