মাদকাসক্তদের চিকিৎসায় হ-য-ব-র-ল by মহিউদ্দিন অদুল
দেশে
মরণ নেশা মাদকের বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭০
লাখ ছাড়িয়েছে বলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য। আর তাদের প্রায়
সবার নিরাময় ও পুনর্বাসন প্রয়োজন হলেও এক্ষেত্রে বিরাজ করছে এক নাজুক
পরিস্থিতি। চিকিৎসার সুযোগ এতই সীমিত যে, গত অর্ধযুগে একভাগ মাদকাসক্তও
চিকিৎসার আওতায় আসেনি। ফলে একবার অন্ধকার জগতে পা বাড়িয়ে আর সুস্থ জীবনে
ফেরার সুযোগ পাচ্ছে না অনেক মাদকাসক্ত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দীন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, একদিকে মাদকের বিস্তার ভয়াবহ।
অন্যদিকে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার সুযোগও অতি সীমিত। মাদকাসক্তদের প্রায় সবার চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলেও সুযোগ পাচ্ছে এক ভাগেরও কম লোক। দেশের ২৭ জেলায় তো সরকারি-বেসরকারি কোনো মাদক নিরাময় কেন্দ্রই নেই। এই নাজুক পরিস্থিতি চলতে থাকলে নেশার প্রবণতা আরো বাড়বে। তবে সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে শয্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কেউ একবার মাদকের নেশায় ঝুঁকলে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এ অন্ধকার জগৎ থেকে বের হতে প্রয়োজন চিকিৎসা, কাউন্সেলিং বা পুনর্বাসন। কিন্তু এজন্য ৭০ লাখ মাদকাসক্তের বিপরীতে দেশে নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে হাতেগোনা। ২৭ জেলায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো মাদক নিরাময় কেন্দ্রই নেই। সারা দেশে সরকারি পর্যায়ে রয়েছে মাত্র চারটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র। এগুলোর শয্যা সংখ্যাও অতি অল্প। সব মিলিয়ে মাত্র ১১৫ শয্যা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র ৫০ থেকে সম্প্রতি ১০০ শয্যায় উন্নীত হলো।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে শয্যা সংখ্যা এখনো পাঁচটি। তিন কেন্দ্রে মোট শয্যা ১৫। ফলে বিভাগীয় শহরগুলোতে ব্যাপক চাহিদার বিপরীতে এগুলোতে প্রতি বছর হাতেগোনা মাদকাসক্ত চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে। অপরদিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় নিরাময় কেন্দ্রে ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত এক দশকের দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে ১৫ হাজার ৭০৪ মাদকাসক্ত। ৩৭ জেলায় অনুমোদিত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে ১৯৭টি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সব নিরাময় কেন্দ্রে এখন রয়েছে ২ হাজার ৩৮০ শয্যা। এর মধ্যে বেসরকারি ১৯৭ নিরাময় কেন্দ্রে ২০১২ থেকে ২০১৭ সালে ছয় বছরে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৩ মাদকাসক্ত। এ নিয়ে গত ১০ বছরে কেন্দ্রীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র ও ছয় বছরে বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে ৫৯ হাজার ৫৭ মাদকাসক্ত। বর্তমানে দেশে ৭০ লাখ মাদকাসক্তের হিসাবের বিপরীতে এই দীর্ঘ সময়ে সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসা পাওয়ার হার একভাগেরও কম। মাত্র দশমিক ৮৪ ভাগ। এ হিসাবে কয়েক বছরেও এক ভাগ মাদকাসক্ত চিকিৎসার আওতায় আসেনি। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক মাদকাসক্ত চিকিৎসার সুযোগের অভাবে নেশার অন্ধকার জগত থেকে ফিরতে পারছে না। এতে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দেশের অপরাধ প্রবণতাও। এদিকে দেশের কারাগারগুলোতেও মাদকাসক্তদের চিকিৎসার তেমন সুযোগ নেই। প্রতিবছর হাজার হাজার মাদকাসক্ত গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাচ্ছে। তারা সেখানেও পাচ্ছে না চিকিৎসা। ফলে ছাড়া পেয়ে আবার মাদকে ঝুঁকছে। বের হতে পারছে না অপরাধের চক্র থেকে। ফের জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে।
কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের চিফ কনসালটেন্ট ডা. সৈয়দ ইমামুল হোসেন বলেন, বাস্তবে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার সুযোগ অতি অল্প। এ চিকিৎসা মূলত সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। এক-দু’মাস থেকে পাঁচ-ছয় মাসও লেগে যায়। প্রতিবছর যদি ১০ হাজার মাদকাসক্তকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় তাও মোট মাদকাসক্তের বিপরীতে সংখ্যাটি অতি নগণ্য। মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি মাদকের প্রাপ্যতা হ্রাসের উপর গুরুত্ব দেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দীন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, একদিকে মাদকের বিস্তার ভয়াবহ।
অন্যদিকে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার সুযোগও অতি সীমিত। মাদকাসক্তদের প্রায় সবার চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলেও সুযোগ পাচ্ছে এক ভাগেরও কম লোক। দেশের ২৭ জেলায় তো সরকারি-বেসরকারি কোনো মাদক নিরাময় কেন্দ্রই নেই। এই নাজুক পরিস্থিতি চলতে থাকলে নেশার প্রবণতা আরো বাড়বে। তবে সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে শয্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কেউ একবার মাদকের নেশায় ঝুঁকলে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এ অন্ধকার জগৎ থেকে বের হতে প্রয়োজন চিকিৎসা, কাউন্সেলিং বা পুনর্বাসন। কিন্তু এজন্য ৭০ লাখ মাদকাসক্তের বিপরীতে দেশে নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে হাতেগোনা। ২৭ জেলায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো মাদক নিরাময় কেন্দ্রই নেই। সারা দেশে সরকারি পর্যায়ে রয়েছে মাত্র চারটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র। এগুলোর শয্যা সংখ্যাও অতি অল্প। সব মিলিয়ে মাত্র ১১৫ শয্যা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র ৫০ থেকে সম্প্রতি ১০০ শয্যায় উন্নীত হলো।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে শয্যা সংখ্যা এখনো পাঁচটি। তিন কেন্দ্রে মোট শয্যা ১৫। ফলে বিভাগীয় শহরগুলোতে ব্যাপক চাহিদার বিপরীতে এগুলোতে প্রতি বছর হাতেগোনা মাদকাসক্ত চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে। অপরদিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় নিরাময় কেন্দ্রে ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত এক দশকের দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে ১৫ হাজার ৭০৪ মাদকাসক্ত। ৩৭ জেলায় অনুমোদিত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে ১৯৭টি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সব নিরাময় কেন্দ্রে এখন রয়েছে ২ হাজার ৩৮০ শয্যা। এর মধ্যে বেসরকারি ১৯৭ নিরাময় কেন্দ্রে ২০১২ থেকে ২০১৭ সালে ছয় বছরে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৩ মাদকাসক্ত। এ নিয়ে গত ১০ বছরে কেন্দ্রীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র ও ছয় বছরে বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে ৫৯ হাজার ৫৭ মাদকাসক্ত। বর্তমানে দেশে ৭০ লাখ মাদকাসক্তের হিসাবের বিপরীতে এই দীর্ঘ সময়ে সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসা পাওয়ার হার একভাগেরও কম। মাত্র দশমিক ৮৪ ভাগ। এ হিসাবে কয়েক বছরেও এক ভাগ মাদকাসক্ত চিকিৎসার আওতায় আসেনি। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক মাদকাসক্ত চিকিৎসার সুযোগের অভাবে নেশার অন্ধকার জগত থেকে ফিরতে পারছে না। এতে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দেশের অপরাধ প্রবণতাও। এদিকে দেশের কারাগারগুলোতেও মাদকাসক্তদের চিকিৎসার তেমন সুযোগ নেই। প্রতিবছর হাজার হাজার মাদকাসক্ত গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাচ্ছে। তারা সেখানেও পাচ্ছে না চিকিৎসা। ফলে ছাড়া পেয়ে আবার মাদকে ঝুঁকছে। বের হতে পারছে না অপরাধের চক্র থেকে। ফের জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে।
কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের চিফ কনসালটেন্ট ডা. সৈয়দ ইমামুল হোসেন বলেন, বাস্তবে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার সুযোগ অতি অল্প। এ চিকিৎসা মূলত সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। এক-দু’মাস থেকে পাঁচ-ছয় মাসও লেগে যায়। প্রতিবছর যদি ১০ হাজার মাদকাসক্তকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় তাও মোট মাদকাসক্তের বিপরীতে সংখ্যাটি অতি নগণ্য। মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি মাদকের প্রাপ্যতা হ্রাসের উপর গুরুত্ব দেন।
No comments