আপন বলতে তাদের কেউ নেই
তিন
মাস আগের কথা। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুই ভাই শামসুল ও জাফরের ছিল একটি
হাসিখুশি পরিবার। নদীর কাছেই ছিল তাদের ছোট্ট বাড়ি। সেখানেই তারা খড়কুটোয়
তৈরি একটি বল নিয়ে খেলা করতো। তাদের ছিল ১৫টি গরু। তার বেশির ভাগই দিত দুধ।
কিন্তু তার সবই চলে গেছে। কিছু নেই এখন আর। পরিবারে সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাদের বাড়ি। গরুগুলো চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। এই ভয়াবহতার মুখে কোনোমতে নিজেদের জীবন রক্ষা করে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে পালিয়ে এসেছে শামসুল (৮) ও জাফর (১১)। ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হয়। এর পাঁচদিন পরের ঘটনা। সেনাবাহিনী শামসুল ও জাফরদের গ্রাম ঘিরে ফেলে। তারা অকাতরে নারীদের ধর্ষণ করে। হত্যা করে গ্রামবাসীকে। জ্বালিয়ে দেয় বাড়িঘর। তারপর বুকে পাথর বেঁধে তারা বাংলাদেশমুখী জনতার ঢলের সঙ্গে শরীক হয়। ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এমন প্রায় ১৮০০ শিশু রয়েছে। তাদের দেখাশোনা করার কেউ নেই। অর্থাৎ তারা নিঃসঙ্গ। তাদেরই দু’জন শামসুল ও জাফর। তাদের অনেককে দূর সম্পর্কের আত্মীয়রা ঠাঁই দিয়েছেন না হয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বসবাস করছে তারা। এসব শিশুই পাচার, নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার না হয় পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই। তাই শামসুলের বুকফাটা আর্তনাদ- সবারই তো পিতামাতা আছেন। আমাদের তো কিছুই নেই।
আগস্টের এক সকালবেলা। সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলে গ্রাম। তাদের হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। কাঁধ থেকে নিক্ষেপযোগ্য রকেট লঞ্চার। তারা বাতাসে কিছু একটা স্প্রে করে ছড়িয়ে দিলো। গ্রামবাসী বিশৃংখল হয়ে ছড়িয়ে পড়লেন। অনেকে নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিলেন জঙ্গলে। এমন অবস্থায় বাড়ির কাছে একটি ছোট্ট পাহাড়ে আশ্রয় নিলো জাফর। সেখান থেকে তার বাড়ি দেখা যায়। সে সেখান থেকে দেখতে পেল সেনারা তার মা মনিরা, তিন ভাইবোন সোমুদা (১৫), খুরশিদ (৭) ও শালিদা (৩ মাস) কে প্রহার করছে। তারা জোর করে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করছে। বাড়ির দরজায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছে। তারপর সেই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সেই আগুনেই জীবন্ত পুড়ে মরেছে তারা। ঘটনাটি তুলাতলি গ্রামের। সেখান থেকে তাদের পিতাও পালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাকে নদীর পাড়ে হত্যা করা হয়েছে। অক্টোবরে এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাতে বলা হয়, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল তুলাতলির অবস্থা। এ অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও স্টেট কাউন্সেল অং সান সুচি।
তুলাতলি থেকে শামসুল ও জাফরের পালিয়ে আসার পথে ছিল খর¯্রােতা একট নদী। সেনাবাহিনীর ধাওয়া খেয়ে সেখানে আলাদা হয়ে যায় জাফর। শামসুল তখন একটি নৌকায় পাড়ি দিচ্ছে। সে দেখতে পায় তার ভাই জাফর সাঁতরাচ্ছে ওই খরস্রোতা নদী। সঙ্গে সঙ্গে শামসুল তার ভাইকে রক্ষা করতে নেমে পড়ে। ভাইকে কাছে পেতে জাফরও তার সর্বশক্তি দিয়ে নদী সাঁতরাতে থাকে। এরপর তারা কোনোমতে পাড়ি ধরতে পেরেছে। তারা ঠাঁই খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু নিঃসঙ্গ। তাদের আপন বলতে কেউ নেই।
কিন্তু তার সবই চলে গেছে। কিছু নেই এখন আর। পরিবারে সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাদের বাড়ি। গরুগুলো চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। এই ভয়াবহতার মুখে কোনোমতে নিজেদের জীবন রক্ষা করে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে পালিয়ে এসেছে শামসুল (৮) ও জাফর (১১)। ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হয়। এর পাঁচদিন পরের ঘটনা। সেনাবাহিনী শামসুল ও জাফরদের গ্রাম ঘিরে ফেলে। তারা অকাতরে নারীদের ধর্ষণ করে। হত্যা করে গ্রামবাসীকে। জ্বালিয়ে দেয় বাড়িঘর। তারপর বুকে পাথর বেঁধে তারা বাংলাদেশমুখী জনতার ঢলের সঙ্গে শরীক হয়। ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এমন প্রায় ১৮০০ শিশু রয়েছে। তাদের দেখাশোনা করার কেউ নেই। অর্থাৎ তারা নিঃসঙ্গ। তাদেরই দু’জন শামসুল ও জাফর। তাদের অনেককে দূর সম্পর্কের আত্মীয়রা ঠাঁই দিয়েছেন না হয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বসবাস করছে তারা। এসব শিশুই পাচার, নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার না হয় পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই। তাই শামসুলের বুকফাটা আর্তনাদ- সবারই তো পিতামাতা আছেন। আমাদের তো কিছুই নেই।
আগস্টের এক সকালবেলা। সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলে গ্রাম। তাদের হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। কাঁধ থেকে নিক্ষেপযোগ্য রকেট লঞ্চার। তারা বাতাসে কিছু একটা স্প্রে করে ছড়িয়ে দিলো। গ্রামবাসী বিশৃংখল হয়ে ছড়িয়ে পড়লেন। অনেকে নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিলেন জঙ্গলে। এমন অবস্থায় বাড়ির কাছে একটি ছোট্ট পাহাড়ে আশ্রয় নিলো জাফর। সেখান থেকে তার বাড়ি দেখা যায়। সে সেখান থেকে দেখতে পেল সেনারা তার মা মনিরা, তিন ভাইবোন সোমুদা (১৫), খুরশিদ (৭) ও শালিদা (৩ মাস) কে প্রহার করছে। তারা জোর করে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করছে। বাড়ির দরজায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছে। তারপর সেই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সেই আগুনেই জীবন্ত পুড়ে মরেছে তারা। ঘটনাটি তুলাতলি গ্রামের। সেখান থেকে তাদের পিতাও পালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাকে নদীর পাড়ে হত্যা করা হয়েছে। অক্টোবরে এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাতে বলা হয়, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল তুলাতলির অবস্থা। এ অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও স্টেট কাউন্সেল অং সান সুচি।
তুলাতলি থেকে শামসুল ও জাফরের পালিয়ে আসার পথে ছিল খর¯্রােতা একট নদী। সেনাবাহিনীর ধাওয়া খেয়ে সেখানে আলাদা হয়ে যায় জাফর। শামসুল তখন একটি নৌকায় পাড়ি দিচ্ছে। সে দেখতে পায় তার ভাই জাফর সাঁতরাচ্ছে ওই খরস্রোতা নদী। সঙ্গে সঙ্গে শামসুল তার ভাইকে রক্ষা করতে নেমে পড়ে। ভাইকে কাছে পেতে জাফরও তার সর্বশক্তি দিয়ে নদী সাঁতরাতে থাকে। এরপর তারা কোনোমতে পাড়ি ধরতে পেরেছে। তারা ঠাঁই খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু নিঃসঙ্গ। তাদের আপন বলতে কেউ নেই।
No comments