এক মুসলিম ‘সান্তা ক্লস’, ফটোগ্রাফারের চোখে অশ্রু by মাহমুদ ফেরদৌস
সান্তা
ক্লস কি আসল না নকল? প্রতি বছর বড়দিনের সময় শিশুদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন
লম্বা দাঁড়ির আর লাল পোশাক পরা সান্তা ক্লস। বড়দিনের সময় পশ্চিমের প্রত্যেক
শিশু ভাবতে চায় সান্তা ক্লস আসল কেউ হলে কতই না ভালো হতো! প্রতি বছর
বড়দিনে মজার সব উপহার নিয়ে আসতো। কিন্তু আফসোস! সান্তা ক্লস বা ফাদার
ক্রিসমাস স্রেফ উপকথার চরিত্র! বাস্তবে তার অস্তিত্ব নেই। কিন্তু দক্ষিণ
লন্ডনের ছোট্ট এক শিশুর বিশ্বাস, সান্তা ক্লসের অস্তিত্ব আলবৎ আছে! বিশ্বাস
থাকবেই বা না কেন? নিজের চোখে যে সান্তা ক্লসকে দেখেছে সে!
এই ‘সান্তা’র আসল নাম হলো হোসেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। এমনই সময় তাকে দেখতে পায় আলফি।
তার বয়স তখন ছিল মাত্র ৩ বছর। হোসেনকে দেখেই ছোট্ট আলফি বলে উঠে ‘সান্তা’! কথাটি শুনে পেছন ফেরেন শ্মশ্রুম-িত হোসেন। খুশি হয়ে তাকে কিছু টাকা দেন। আর তাতেই আলফির বিশ্বাস জন্মে এই হোসেনই বুঝি আসল সান্তা!
ধর্মে হোসেন একজন মুসলিম। একটু দূরেই অবস্থিত একটি হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ধর্মপ্রাণ হোসেনের আছে সান্তা ক্লসের মতোই শুভ্র লম্বা দাঁড়ি। ওই দিনের পর তিনি প্রতি বছর বড়দিনের সময় আলফির বাড়িতে গিয়ে হাজির হন! সান্তা সেজে তাকে ও তার বড় বোন হ্যালের জন্য অনেক উপহার দিয়ে আসেন। আলফির পরিবারের সঙ্গেও এখন খাতির আছে হোসেনের। তাই দু’জনের জন্মদিনের সময়ও তাদের সঙ্গে দেখা করে আসেন তিনি। আর সঙ্গে থাকে উপহার!
আলফির মা ট্রেসি অ্যাশফোর্ড রোজ বলেন, ‘সান্তা’ না এলে তার দুই ছেলেমেয়ের বড়দিন এত মজার হতো না। তার আজও মনে পড়ে ৪ বছর আগের দিনটির কথা যখন আলফি প্রথম হোসেনকে দেখতে পায়। তিনি বলেন, হোসেনকে দেখেই আলফি আমাকে চিৎকার দিয়ে বলে, ওই দেখো ফাদার ক্রিসমাস যাচ্ছে!
আলফিদের বাসার তিন বাড়ি পরই হোসেন থাকেন। তিনি ফিরে এসে আলফির মাকে বলেন, আলফি তাকে ফাদার ক্রিসমাস ভাবার পর তিনি তাকে উপহার না দিয়ে থাকতে পারছেন না। ট্রেসি অ্যাশফোর্ড আরও বলেন, এটি ছিল ৪ বছর আগের ঘটনা। আর এখনও হোসেন প্রতি বছর আলফি ও হ্যালের জন্মদিনে আসে। তাদেরকে উপহার দিয়ে যায়। সে কখনই তারিখ ভোলে না। তিনি আরও বলেন, আমরা এখন তাকে দাদু ক্রিসমাস বলে ডাকি। সে এসে আলফির সঙ্গে করমর্দন করে যায়, তার গাল টিপে দেয়। তাকে ছাড়া আমাদের বড়দিন এমন মজার হতো না।
এই রোববারের বড়দিনে হোসেন যখন আলফির জন্য উপহার নিয়ে আসেন, তখন পাশেই ছিলেন আমান্ডা টেইলর। তিনি একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার ও আলফিদের সাবেক প্রতিবেশী। তিনিই ফেসবুকে এই মিষ্টি গল্পটি শেয়ার করেন। এ খবর দিয়েছে বাজফিড নিউজ।
আমান্ডা টেইলর বলেন, ফটো তোলার সময় আমার চোখ দিয়ে পানি কখনও আসেনি। কিন্তু হোসেন আর আলফির ছবি তোলার সময় আমার চোখে আনন্দাশ্রু টের পেয়েছি। আমার তখনই মনে হয়েছে, এই সুন্দর গল্পটি সবাইকে বলা উচিত।
টেইলর বলেন, আলফি যখন খুব ছোট ছিল, তখন থেকেই তাকে চিনি। যেদিন সে ‘ফাদার ক্রিসমাস’ অর্থাৎ হোসেনকে দেখলো, সে দৌড়ে আমার কাছে চলে এল। এরপর বললো, আসো দেখো যাও! আসল সান্তা ক্লস আমাদের বাড়িতে এসেছে! কিন্তু আমি যখন বাইরে তাকালাম দেখার জন্য, আমি কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়লাম। কারণ, হোসেনকে ঠিক ফাদার ক্রিসমাসের মতো লাগেনি আমার কাছে।
আমান্ডা টেইলর বলেন, হোসেনের লম্বা সাদা দাঁড়ি দেখেই আলফি তাকে সান্তা ক্লস ভেবে নিয়েছে। কিন্তু তার গায়ের রং আমাদের দেখা সান্তার মতো নয়। তাছাড়া সে অফিসের পোশাক পরে ছিল। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে মিষ্টি ঘটনা। কারণ, ছোট্ট আলফি গায়ের রং দেখেনি। পোশাকের রং দেখেনি। সে একজন মানুষের হৃদয়ের রংটা দেখতে পেয়েছিল। হোসেন স¤পর্কে তিনি বলেন, তিনি খুবই বন্ধুসুলভ ও উদারমনা একজন মানুষ। আলফি তার সাদা দাঁড়ির ভেতর সত্যিকারের সান্তা ক্লসকে খুঁজে পেয়েছে।
টেইলর আরও জানান, এক বছর পর আলফিদের বাড়ির বাইরে অনেকগুলো বেলুন দেখা গেল! তখন আলফি বুঝতে পারলো আজ তার জন্মদিন! আর বোঝা গেল, শুধু বড়দিনই নয়। আলফির জন্মদিনেও হোসেন এসে তাকে উপহার দিয়ে যান। এটি যেন এখন রোজকার নিয়ম।
আলফির জন্য বিষয়টি খুবই উচ্ছ্বাসের আর আনন্দের। প্রতি বছর একজন মানুষ তার জন্মদিন ভোলে না, বড়দিন ভোলে না। বরং এসে দরজায় কড়া নেড়ে তার জন্য উপহার নিয়ে আসে। এর চেয়ে মিষ্টি কিই বা হতে পারে? আলফির বড় বোন হ্যালে আবার বড় হয়ে গেছে। সান্তা ক্লসে বিশ্বাস নেই তার। কিন্তু সেও বেশ আনন্দিত। কারণ, উপহার যে সে-ও পায়।
টেইলর পুরো গল্পটি একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। আর মানুষের মন এতটাই ছুঁয়ে গেছে যে তারাই ‘সান্তা ক্লস’কে উপহার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আর আলফি সহ সবাই মিলে শুক্রবার গেছেন হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। টেইলর বলেন, ‘আমি এই কথা টানতে চাই না, কিন্তু তিনি খ্রিস্টানও নন। এটি তার ধর্মবিশ্বাসও নয়। তিনি এই সবকিছু করছেন শুধু এক ছোট বাচ্চার খুশির জন্য। তিনি আসলে অনেক উঁচু মনের মানুষ।’
এই ‘সান্তা’র আসল নাম হলো হোসেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। এমনই সময় তাকে দেখতে পায় আলফি।
তার বয়স তখন ছিল মাত্র ৩ বছর। হোসেনকে দেখেই ছোট্ট আলফি বলে উঠে ‘সান্তা’! কথাটি শুনে পেছন ফেরেন শ্মশ্রুম-িত হোসেন। খুশি হয়ে তাকে কিছু টাকা দেন। আর তাতেই আলফির বিশ্বাস জন্মে এই হোসেনই বুঝি আসল সান্তা!
ধর্মে হোসেন একজন মুসলিম। একটু দূরেই অবস্থিত একটি হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ধর্মপ্রাণ হোসেনের আছে সান্তা ক্লসের মতোই শুভ্র লম্বা দাঁড়ি। ওই দিনের পর তিনি প্রতি বছর বড়দিনের সময় আলফির বাড়িতে গিয়ে হাজির হন! সান্তা সেজে তাকে ও তার বড় বোন হ্যালের জন্য অনেক উপহার দিয়ে আসেন। আলফির পরিবারের সঙ্গেও এখন খাতির আছে হোসেনের। তাই দু’জনের জন্মদিনের সময়ও তাদের সঙ্গে দেখা করে আসেন তিনি। আর সঙ্গে থাকে উপহার!
আলফির মা ট্রেসি অ্যাশফোর্ড রোজ বলেন, ‘সান্তা’ না এলে তার দুই ছেলেমেয়ের বড়দিন এত মজার হতো না। তার আজও মনে পড়ে ৪ বছর আগের দিনটির কথা যখন আলফি প্রথম হোসেনকে দেখতে পায়। তিনি বলেন, হোসেনকে দেখেই আলফি আমাকে চিৎকার দিয়ে বলে, ওই দেখো ফাদার ক্রিসমাস যাচ্ছে!
আলফিদের বাসার তিন বাড়ি পরই হোসেন থাকেন। তিনি ফিরে এসে আলফির মাকে বলেন, আলফি তাকে ফাদার ক্রিসমাস ভাবার পর তিনি তাকে উপহার না দিয়ে থাকতে পারছেন না। ট্রেসি অ্যাশফোর্ড আরও বলেন, এটি ছিল ৪ বছর আগের ঘটনা। আর এখনও হোসেন প্রতি বছর আলফি ও হ্যালের জন্মদিনে আসে। তাদেরকে উপহার দিয়ে যায়। সে কখনই তারিখ ভোলে না। তিনি আরও বলেন, আমরা এখন তাকে দাদু ক্রিসমাস বলে ডাকি। সে এসে আলফির সঙ্গে করমর্দন করে যায়, তার গাল টিপে দেয়। তাকে ছাড়া আমাদের বড়দিন এমন মজার হতো না।
এই রোববারের বড়দিনে হোসেন যখন আলফির জন্য উপহার নিয়ে আসেন, তখন পাশেই ছিলেন আমান্ডা টেইলর। তিনি একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার ও আলফিদের সাবেক প্রতিবেশী। তিনিই ফেসবুকে এই মিষ্টি গল্পটি শেয়ার করেন। এ খবর দিয়েছে বাজফিড নিউজ।
আমান্ডা টেইলর বলেন, ফটো তোলার সময় আমার চোখ দিয়ে পানি কখনও আসেনি। কিন্তু হোসেন আর আলফির ছবি তোলার সময় আমার চোখে আনন্দাশ্রু টের পেয়েছি। আমার তখনই মনে হয়েছে, এই সুন্দর গল্পটি সবাইকে বলা উচিত।
টেইলর বলেন, আলফি যখন খুব ছোট ছিল, তখন থেকেই তাকে চিনি। যেদিন সে ‘ফাদার ক্রিসমাস’ অর্থাৎ হোসেনকে দেখলো, সে দৌড়ে আমার কাছে চলে এল। এরপর বললো, আসো দেখো যাও! আসল সান্তা ক্লস আমাদের বাড়িতে এসেছে! কিন্তু আমি যখন বাইরে তাকালাম দেখার জন্য, আমি কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়লাম। কারণ, হোসেনকে ঠিক ফাদার ক্রিসমাসের মতো লাগেনি আমার কাছে।
আমান্ডা টেইলর বলেন, হোসেনের লম্বা সাদা দাঁড়ি দেখেই আলফি তাকে সান্তা ক্লস ভেবে নিয়েছে। কিন্তু তার গায়ের রং আমাদের দেখা সান্তার মতো নয়। তাছাড়া সে অফিসের পোশাক পরে ছিল। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে মিষ্টি ঘটনা। কারণ, ছোট্ট আলফি গায়ের রং দেখেনি। পোশাকের রং দেখেনি। সে একজন মানুষের হৃদয়ের রংটা দেখতে পেয়েছিল। হোসেন স¤পর্কে তিনি বলেন, তিনি খুবই বন্ধুসুলভ ও উদারমনা একজন মানুষ। আলফি তার সাদা দাঁড়ির ভেতর সত্যিকারের সান্তা ক্লসকে খুঁজে পেয়েছে।
টেইলর আরও জানান, এক বছর পর আলফিদের বাড়ির বাইরে অনেকগুলো বেলুন দেখা গেল! তখন আলফি বুঝতে পারলো আজ তার জন্মদিন! আর বোঝা গেল, শুধু বড়দিনই নয়। আলফির জন্মদিনেও হোসেন এসে তাকে উপহার দিয়ে যান। এটি যেন এখন রোজকার নিয়ম।
আলফির জন্য বিষয়টি খুবই উচ্ছ্বাসের আর আনন্দের। প্রতি বছর একজন মানুষ তার জন্মদিন ভোলে না, বড়দিন ভোলে না। বরং এসে দরজায় কড়া নেড়ে তার জন্য উপহার নিয়ে আসে। এর চেয়ে মিষ্টি কিই বা হতে পারে? আলফির বড় বোন হ্যালে আবার বড় হয়ে গেছে। সান্তা ক্লসে বিশ্বাস নেই তার। কিন্তু সেও বেশ আনন্দিত। কারণ, উপহার যে সে-ও পায়।
টেইলর পুরো গল্পটি একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। আর মানুষের মন এতটাই ছুঁয়ে গেছে যে তারাই ‘সান্তা ক্লস’কে উপহার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আর আলফি সহ সবাই মিলে শুক্রবার গেছেন হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। টেইলর বলেন, ‘আমি এই কথা টানতে চাই না, কিন্তু তিনি খ্রিস্টানও নন। এটি তার ধর্মবিশ্বাসও নয়। তিনি এই সবকিছু করছেন শুধু এক ছোট বাচ্চার খুশির জন্য। তিনি আসলে অনেক উঁচু মনের মানুষ।’
No comments