স্ত্রী খুনের ছুরি হাতে মসজিদে আশ্রয়, তারাবি বঞ্চিত মুসল্লিরা
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর সেই ছুরি হাতে মসিজদে আশ্রয় নেন স্বামী শফিকুল ইসলাম (৪২)। এর ফলে মাগরিব ও এশাসহ রমজানের প্রথম তারাবির নামাজ পড়তে পারেননি ওই এলাকার মুসল্লিরা। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রানীনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মসজিদটি ঘিরে রেখে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর শফিকুলকে আটক করে। শফিকুল রানীনগর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে। তিনি পেশায় সুপারি ব্যবসায়ী। ছয় বছর আগে উপজেলার বেড়গঙ্গরামপুরের দিনমজুর মৃত জিকির প্রামাণিকের মেয়ে হাজেরাকে বিয়ে করেন তিনি। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে সন্ধ্যায় শফিকুল ইসলাম নিজ বাড়িতে স্ত্রী হাজেরা বেগমকে (৩০) মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূ প্রাণ বাঁচাতে রাস্তার দিকে দৌড় দেন। তখন তাকে ধাওয়া করে গ্রামের মসজিদের কাছে তাকে ধরে ফেলেন এবং কুপিয়ে হত্যা করেন শফিকুল। এ সময় হাজেরাকে রক্ষায় রোকেয়া বেগম নামের এক প্রতিবেশী ছুটে আসলে তাকেও ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়। এক পর্যায়ে গ্রামের অন্যরা এগিয়ে এলে তাদেরকে ছুরিকাঘাতের ভয় দেখিয়ে মসজিদের মধ্যে গিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে দেন শফিকুল। গুরুদাসপুর থানার ওসি দীলিপ কুমার দাস জানান, স্থানীয়রা খবর দিলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ গিয়ে মসজিদটি ঘিরে রাখে। প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘাতক শফিকুলকে আটক করা সম্ভব হয়। এ সময় পুলিশ শফিকুলকে দুর্বল করতে মসজিদের ভেতরে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। মসজিদে অবস্থানকালে শফিকুল নিজের গোপনাঙ্গে ছুরি দিয়ে আঘাত করায় গুরুতর আহত হয়েছেন। পরে তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে হাজেরার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি। স্থানীয় নাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লাবু জানান, আগেও একবার শফিকুল মসজিদের ভেতরে ঢুকে চারজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই তিনি স্ত্রী হাজেরাকে কুপিয়ে হত্যা করলেন বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।
No comments