ব্লগার রাজীব হত্যা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় দু'জনকে ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে দেয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় আজ প্রকাশিত হয়েছে। রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আজ ১৬৩ পৃষ্ঠায় দেয়া এ রায় প্রকাশ করা হয়। যা সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে। গত ২ এপ্রিল রাজীব হত্যা মামলায় দু'জনকে ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে হাইকোর্ট। এছাড়াও নিম্ন আদালতের দেয়া তিনজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, একজনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অপর একজনকে তিন বছর কারাদণ্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট। ৭১’এর যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে রাজধানীর পল্লবীতে তার বাসার সামনে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রাজীবের বাবা ডাঃ নাজিম উদ্দিনের করা মামলায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা (পলাতক) ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয়। রায়ে মাকসুর হাসান অনিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। একইসাথে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ রায়ের পর মামলার নথিপত্র ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে আসে। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে বিচারিক আদালতে ৩৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরার পথে পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মম ও বর্বরোচিতভাবে নিহত হন যুদ্ধাপরধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকর্মী রাজীব হায়দার। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ডিবির পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ ঢাকার সিএমএম আদালতে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখিত আট আসামি হলেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দিপু, মাকসুদুল হাসান অনিক, এহসানুর রেজা রুম্মান, মোঃ নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ, নাফির ইমতিয়াজ, সাদমান ইয়াছির মাহমুদ, মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী ও রেদোয়ানুল আজাদ রানা। আসামিদের মধ্যে রানা পলাতক এবং অপর আসামিরা গ্রেফতার আছেন। তারা আদালতে রাজীব হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন। ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সূত্র : বাসস
No comments