অকস্মাৎ বাস বন্ধ নাকাল যাত্রীরা
বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগে দণ্ড ও জরিমানা করেছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই ছুতোয় অকস্মাৎ বাস বন্ধ করে দেন মালিক-শ্রমিকরা। কয়েক ঘণ্টার এ অবরোধে গতকাল নাকাল হতে হয়েছে রাজধানীর বাসিন্দাদের। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের এমন স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমের প্রতিবাদে সকাল এগারটা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকপক্ষ ও চালকরা। শুরু হয় অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট। এ অবস্থা চলে সন্ধ্যা অবধি। প্রায় সারাদিন এ অবস্থা চলার পর সন্ধ্যায় বাস চলাচল পুনরায় শুরু হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন রাজধানীবাসী। পরিবহন সংকটে প্রায় অচল হয়ে পড়ে নগরবাসীর জীবনযাত্রা। তবে, পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন অন্যায়ভাবে বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি)’র ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিবহন শ্রমিকদের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানার প্রতিবাদে তারা কয়েক ঘণ্টার জন্য বাস চলাচল বন্ধ রাখেন। এ জন্য মিরপুরসহ কিছু এলাকায় পরিবহন সংকটে পড়ে সাধারণ মানুষ। গতকাল সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সরজমিন রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মিরপুর রুটের কোন গণপরিবহন চলেনি। এমনকি বিআরটিসির নিজস্ব পরিবহন ছাড়া অন্যান্য রুটের গাড়িও চলেনি ঠিকমতো। গতকাল ছিল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। আর চিরাচরিতভাবে প্রথম কর্মদিবসে রাজধানীতে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের চাপ থাকে বেশি। সকালে কর্মস্থলে যাওয়া মানুষেরা বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে এসেই হতভম্ব হয়ে যান। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নির্ধারিত বাস পাননি তারা। তবে, ঠিক কি কারণে গণপরিবহনের এমন আকাল বিকাল পর্যন্ত অনেকেই তাও জানতে পারেননি। এ নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছেন অনেকে। তবে, বিকালের দিকে ঘরফেরত মানুষেরা জানতে পারেন বাস চলাচল বন্ধের আসল কারণ। কিন্তু বাস মালিক ও চালকসহ সংশ্লিষ্টদের এমন আচরণে যারপরনাই হতবাক ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারা। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
সরকার ১লা অক্টোবর থেকে নতুন বাস ভাড়া নির্ধারণ করে বাস মালিক ও শ্রমিকদের। তবে, অভিযোগ ছিল রাজধানীর ৪০ শতাংশ গণপরিবহন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে। এ বিষয়ে খোদ যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছিলেন কিছু গণপরিবহন নির্ধারিত বাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। গতকাল সকালের দিকে মিরপুর তালতলা এলাকায় যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেয়ার অপরাধে হিমাচল পরিবহনের একজন সুপারভাইজারকে ১ মাসের কারাদণ্ড দেন বিআরটিএ’র একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া আরও কিছু রুটেও বাসচালকদের জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বিভিন্ন রুটের বাস মালিক, চালক ও সুপারভাইজাররা। আর এর প্রতিবাদেই বাস চলাচল বন্ধ রাখে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ।
এদিকে বাসচালক ও মালিকদের এমন সিদ্ধান্তে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বিভিন্ন কাজে ঢাকায় প্রবেশ করা হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী, সদরঘাট, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশনে নেমেই তারা বিপাকে পড়েন। নির্ধারিত গন্তব্যের বাস না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, কেউ খোলা পিকআপ ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে রওয়ানা হন। তবে বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছতে তাদের গুনতে হয়েছে বাড়তি অর্থ। গতকাল সকাল এগারটার দিকে ফার্মগেট এলাকার উভয়পাশে দেখা যায় মিরপুরগামী ও মিরপুর থেকে ফার্মগেট, গুলিস্তান, মতিঝিল অভিমুখী গণপরিবহন একেবারে নেই বললেই চলে। যাত্রীদের আকর্ষণ করতে গণপরিবহনের লাইনম্যানদের সেই চিরাচরিত হাঁকডাকও ছিল না। তবে, ফার্মগেটের উভয়পাশে শত শত যাত্রী ছিলেন গন্তব্যে যাবার অপেক্ষায়। কিন্তু তখনও তারা বুঝে উঠতে পারেননি হঠাৎ করেই কেন গণপরিবহনের সংখ্যা কমে গেল। দুর্ভোগে পড়া মানুষেরা এ নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন একে অন্যকে। দুপুর ১টার দিকে ফার্মগেট, কাওরানবাজার, সার্ক ফোয়ারা মোড় পার হয়ে বাংলামোটর এলাকা যেতে পাশের সড়কগুলোতে দেখা গেছে মানুষের সারি। কাঙ্ক্ষিত বাস না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন অনেকে। তবে, অসুস্থ, মহিলা ও শিশুদের দুর্দশার অন্ত ছিল না এসময়। দুপুর ২টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে দেখা যায় মিরপুর, ফার্মগেট অভিমুখী বাসের অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য মানুষ। কিন্তু বিআরটিসির বাস ছাড়া কাঙ্ক্ষিত কোন বাসই আসেনি এই এলাকায়। আবদুল্লাহপুর টু গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোও শাহবাগ, মৎস্যভবন পর্যন্ত এসে আবারও যাত্রী নিয়ে ফিরে যায়। বিকাল ৫টায় ফার্মগেট এলাকায় দেখা যায় ঘরমুখো শত শত মানুষ রয়েছেন অপেক্ষায়। বিশেষ করে গাবতলী, মিরপুর-১ ও ২ এর যাত্রী সংখ্যাই ছিল বেশি। কিন্তু এসব রুটের গণপরিবহনই আসতে দেখা যায়নি এসময়। ফার্মগেট এলাকার বিআরটিসি বাস কাউন্টারের অপারেটর ইলিয়াস হোসেন বলেন, সরকারি বাস ছাড়া আর কোন রুটের বাস খুব একটা দেখিনি। একারণে বিআরটিসির বাসে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। একেকটি গাড়ি এসে থামতেই অসংখ্য মানুষ তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।
ফার্মগেট থেকে গাবতলীর উদ্দেশে যাওয়ার জন্য মেয়েকে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন গৃহিণী রিজিয়া পারভীন। কিন্তু অপেক্ষার পরও কাঙ্ক্ষিত বাস আসেনি। তেজগাঁও কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান জানান, মিরপুর-১ নম্বরে যাবার জন্য ১ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করেও তিনি কোন বাসের দেখা পাননি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, বেশি ভাড়া নেয়ার অপরাধে হিমাচল পরিবহনের একজন সুপারভাইজার ও কয়েকজন বাস শ্রমিককে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছিল বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর প্রতিবাদে মিরপুর সহ বিভিন্ন রুটের বাস মালিক ও শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ রাখে। তবে এটি কোন পরিবহন ধর্মঘট ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, সন্ধ্যায় বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করি। পরে ৫টার দিকে বাস চলাচল পুনরায় শুরু হয়। খন্দকার এনায়েতউল্লাহ আরও বলেন, ইতিমধ্যে বেশি ভাড়া নেয়ার অপরাধে বেশ কয়েকজন বাস শ্রমিককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু অপরাধ করলে জরিমানা করতে পারে। সংশ্লিষ্ট পরিবহনের লাইসেন্স বাতিলসহ মামলা করতে পারে। কিন্তু এভাবে কারাদণ্ড দেয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকার ১লা অক্টোবর থেকে নতুন বাস ভাড়া নির্ধারণ করে বাস মালিক ও শ্রমিকদের। তবে, অভিযোগ ছিল রাজধানীর ৪০ শতাংশ গণপরিবহন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে। এ বিষয়ে খোদ যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছিলেন কিছু গণপরিবহন নির্ধারিত বাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। গতকাল সকালের দিকে মিরপুর তালতলা এলাকায় যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেয়ার অপরাধে হিমাচল পরিবহনের একজন সুপারভাইজারকে ১ মাসের কারাদণ্ড দেন বিআরটিএ’র একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া আরও কিছু রুটেও বাসচালকদের জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বিভিন্ন রুটের বাস মালিক, চালক ও সুপারভাইজাররা। আর এর প্রতিবাদেই বাস চলাচল বন্ধ রাখে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ।
এদিকে বাসচালক ও মালিকদের এমন সিদ্ধান্তে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বিভিন্ন কাজে ঢাকায় প্রবেশ করা হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী, সদরঘাট, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশনে নেমেই তারা বিপাকে পড়েন। নির্ধারিত গন্তব্যের বাস না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, কেউ খোলা পিকআপ ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে রওয়ানা হন। তবে বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছতে তাদের গুনতে হয়েছে বাড়তি অর্থ। গতকাল সকাল এগারটার দিকে ফার্মগেট এলাকার উভয়পাশে দেখা যায় মিরপুরগামী ও মিরপুর থেকে ফার্মগেট, গুলিস্তান, মতিঝিল অভিমুখী গণপরিবহন একেবারে নেই বললেই চলে। যাত্রীদের আকর্ষণ করতে গণপরিবহনের লাইনম্যানদের সেই চিরাচরিত হাঁকডাকও ছিল না। তবে, ফার্মগেটের উভয়পাশে শত শত যাত্রী ছিলেন গন্তব্যে যাবার অপেক্ষায়। কিন্তু তখনও তারা বুঝে উঠতে পারেননি হঠাৎ করেই কেন গণপরিবহনের সংখ্যা কমে গেল। দুর্ভোগে পড়া মানুষেরা এ নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন একে অন্যকে। দুপুর ১টার দিকে ফার্মগেট, কাওরানবাজার, সার্ক ফোয়ারা মোড় পার হয়ে বাংলামোটর এলাকা যেতে পাশের সড়কগুলোতে দেখা গেছে মানুষের সারি। কাঙ্ক্ষিত বাস না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন অনেকে। তবে, অসুস্থ, মহিলা ও শিশুদের দুর্দশার অন্ত ছিল না এসময়। দুপুর ২টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে দেখা যায় মিরপুর, ফার্মগেট অভিমুখী বাসের অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য মানুষ। কিন্তু বিআরটিসির বাস ছাড়া কাঙ্ক্ষিত কোন বাসই আসেনি এই এলাকায়। আবদুল্লাহপুর টু গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোও শাহবাগ, মৎস্যভবন পর্যন্ত এসে আবারও যাত্রী নিয়ে ফিরে যায়। বিকাল ৫টায় ফার্মগেট এলাকায় দেখা যায় ঘরমুখো শত শত মানুষ রয়েছেন অপেক্ষায়। বিশেষ করে গাবতলী, মিরপুর-১ ও ২ এর যাত্রী সংখ্যাই ছিল বেশি। কিন্তু এসব রুটের গণপরিবহনই আসতে দেখা যায়নি এসময়। ফার্মগেট এলাকার বিআরটিসি বাস কাউন্টারের অপারেটর ইলিয়াস হোসেন বলেন, সরকারি বাস ছাড়া আর কোন রুটের বাস খুব একটা দেখিনি। একারণে বিআরটিসির বাসে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। একেকটি গাড়ি এসে থামতেই অসংখ্য মানুষ তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।
ফার্মগেট থেকে গাবতলীর উদ্দেশে যাওয়ার জন্য মেয়েকে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন গৃহিণী রিজিয়া পারভীন। কিন্তু অপেক্ষার পরও কাঙ্ক্ষিত বাস আসেনি। তেজগাঁও কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান জানান, মিরপুর-১ নম্বরে যাবার জন্য ১ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করেও তিনি কোন বাসের দেখা পাননি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, বেশি ভাড়া নেয়ার অপরাধে হিমাচল পরিবহনের একজন সুপারভাইজার ও কয়েকজন বাস শ্রমিককে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছিল বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর প্রতিবাদে মিরপুর সহ বিভিন্ন রুটের বাস মালিক ও শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ রাখে। তবে এটি কোন পরিবহন ধর্মঘট ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, সন্ধ্যায় বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করি। পরে ৫টার দিকে বাস চলাচল পুনরায় শুরু হয়। খন্দকার এনায়েতউল্লাহ আরও বলেন, ইতিমধ্যে বেশি ভাড়া নেয়ার অপরাধে বেশ কয়েকজন বাস শ্রমিককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু অপরাধ করলে জরিমানা করতে পারে। সংশ্লিষ্ট পরিবহনের লাইসেন্স বাতিলসহ মামলা করতে পারে। কিন্তু এভাবে কারাদণ্ড দেয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
No comments