আকস্মিক ধর্মঘটে ভোগান্তি- অধিক ভাড়া আদায় : বাসশ্রমিকের জেল
রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকায় গতকাল পরিবহন শ্রমিকেরা অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন : নয়া দিগন্ত |
বাসশ্রমিকদের
আকস্মিক অবরোধে অচল হয়ে পড়েছিল রাজধানী। জিম্মি হয়ে পড়েন নগরীর লাখো
যাত্রী। অবরোধে সৃষ্ট যানজটে আটকে থাকে অসংখ্য যানবাহন। অতিরিক্ত ভাড়া
আদায়ের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বাসশ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গেলে
এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরে একটি বাসের কন্ডাক্টরকে বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট জেল-জরিমানা করলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই রুটে চলাচলকারী সব ধরনের গণপরিবহন পরিকল্পিতভাবে বন্ধ করে দেন বাসচালক ও পরিবহন শ্রমিকেরা। খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য রুটের বাসও বন্ধ করে দেয়া হয়। তারা শুধু চলাচল বন্ধ করেই ক্ষান্ত থাকেননি; রাস্তার ওপর এলোপাতাড়ি বাস রেখে অন্য যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করেন। ফুলবাড়িয়া, গুলিস্তান, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ নগরীর অভ্যন্তরীণ বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডগুলোয় গাড়ি এলোপাতাড়ি রাখা হয়।
এ অবরোধ শুরুর পর চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন মিরপুর-আজিমপুর-গুলিস্তান-মতিঝিল, গাবতলী-উত্তরা-আজিমপুর, গাবতলী-গুলশান-বাড্ডা, সদরঘাট-মিরপুর রুটসহ মিরপুর ১১ নম্বর হয়ে চলাচলরত বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার যাত্রী, স্কুল ও কলেজফেরত শিক্ষার্থীরা। শুধু গুলিস্তান-মিরপুর রুট নয়, এর প্রভাবে পুরো রাজধানীতেই সৃষ্টি হয় জনদুর্ভোগ। এ সময় অনেকেই উপায় না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন। দুপুরে মিরপুর ১১ নম্বর পূরবী সিনেমা হলের সামনে অবস্থান নেয়া শতাধিক বাসশ্রমিককে বিভিন্ন ধরনের স্লোগানও দিতে দেখা যায়।
বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক ও মালিক সমিতির নেতাদের সাথে পরিবহন শ্রমিক ও বিআরটিএর কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এর পরই আবারো বাস চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো: আবু নাসের।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদফতরের সামনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী বাসচালক ও কন্ডাক্টরদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এ সময় গাড়ির কাগজপত্র না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন মিরপুর থেকে নারায়ণগঞ্জগামী হিমাচল পরিবহনের কন্ডাক্টরকে এক মাসের জেল ও জরিমানা করেন। এ নিয়ে সেখানে উপস্থিত পুলিশের সাথে শ্রমিকদের কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ একজনকে ধরে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এর পরই তারা সড়কে বাস বন্ধ করে গাড়িতে বসে থাকেন। বাস কন্ডাক্টরের জেল-জরিমানার খবর মুহূর্তে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ওই রুটে চলাচলকারী সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন ওই পথে চলাচলকারী স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।
আগারগাঁও এলাকায় দেখা গেছে, উত্তরাগামী জাবালে নূর পরিবহনের সব বাস বন্ধ করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলে দাঁড় করানোর কারণ জানতে চাইলে জাবালে নূর পরিবহনের একজন বাসচালক জানান, পরিবহন সমিতির লোকজনের সাথে পুলিশ খারাপ আচরণ করেছে। মারধর করেছে। এ জন্যই আমরা সব বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। এর একটা বিহিত হওয়া উচিত। পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগÑ ট্রাফিক পুলিশ ‘নানা অজুহাতে’ নিয়মিতই তাদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন বাসশ্রমিক ইস্রাফিল। তিনি বলেন, আমরা পেটের দায়ে কাজ করি। প্রতিদিনই নির্দিষ্ট হারে টাকা মালিকের হাতে তুলে দিতে হয়, না পারলে আমাদের মজুরি থেকে কেটে রাখা হয়। এ অবস্থায় রাস্তায় গাড়ি নামালেই যদি জরিমানা গুনতে হয়, তাহলে তো এ কাজ করে আর ভাত জোটানো সম্ভব না। এর আগে বেলা ২টার দিকে বিুব্ধ শ্রমিকেরা একটি বিআরটিসি বাসসহ কয়েকটি গণপরিবহনের কাচ ভেঙে ফেলে। পূরবী সিনেমা হলের সামনে গাড়ির জন্য অপোরত কয়েকজন যাত্রী জানান, উত্তরা থেকে এসে অনেকেই সেখানে আটকে গেছেন। শ্রমিকেরা যাত্রীদের নামিয়ে বাস ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। প্রায় একই ভাষ্য পাওয়া গেছে গাবতলী থেকে একটি বাসে আসা যাত্রীদের কাছেও।
ব্যবসায়ী রাজিউন ইসলাম জানান, তিনি তার দোকানের মালপত্র নিয়ে গুলশান যাচ্ছিলেন। পূরবী আসার পর শ্রমিকেরা তাদের জোর করে নামিয়ে দিয়েছেন। বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়া অনেক যাত্রীকেই হেঁটে যেতে দেখা গেছে। এ রুটের বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় এর প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানীজুড়ে। এভাবে পরিবহন শ্রমিকদের কাছে বিকেল পর্যন্ত নগরীর মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ে। বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির হস্তক্ষেপে পরিবহন শ্রমিকেরা কাজে ফিরে যান।
সুরিটোলায় ভিক্টর পরিবহনের বাসচালক হাসান মিয়া বাসেই ঘুমাচ্ছিলেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নেতারা আটক হবেন, আমরা যথাযথ ভাড়া পাবো নাÑ এটি হতে পারে না। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায়ই থাকব।
সদরঘাট থেকে গুলিস্তান আসা যাত্রী ফয়সাল আহমেদ বলেন, এভাবে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা ঠিক না। রাস্তায় এভাবে গাড়ি পড়ে থাকলে ঢাকা তো অচল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ছোট ভাইকে নিয়ে শাহবাগে হাসপাতালে যাবো। আমার মতো আরো অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হননি। তাই যারা এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছেন, তাদের ভাবা উচিত মানুষের কী পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে।
মিরপুর রুটের একাধিক বাসযাত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, বাসচালক ও কন্ডাক্টররা যাতে ভাড়া ইচ্ছামতো নিতে পারেন এ জন্যই তারা আজকে পরিকল্পিতভাবে রাস্তা বন্ধ করে সড়ক অবরোধ করে সরকারসহ সবাইকে জানান দিয়েছেন। কিন্তু সরকারেরর উচিত হবে, এদের কোনোভাবেই ছাড় না দেয়া। যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা নতুবা পরিস্থিতি দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
পরিবহন শ্রমিকদের অবরোধ প্রসঙ্গে মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, গাড়ির যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট কন্ডাক্টরকে সাজা দিয়েছেন। এ আদেশের প্রতিবাদে চালকেরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
গত রাতে সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আগারগাঁওয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে এমনটি হয়েছিল। কী হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, হিমাচল পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করেছিলেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে সাজা দিয়েছেন। বিকেলে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে আমি বৈঠক করেছি। এর পরই তারা অবরোধ তুলে কাজে ফিরে গেছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা পুরো সড়কে কোন কোন পরিবহন শ্রমিক যাত্রীদের কাছ থেকে বাস ভাড়া অতিরিক্ত আদায় করছেন, সেগুলো মনিটরিং করছি।
তবে খন্দকার এয়ায়েত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রতিবার বাস ভাড়া বাড়ানোর পর কিছুটা নিয়ম-অনিয়ম হয়। একসময় সব ঠিক হয়ে যায়।
গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরে একটি বাসের কন্ডাক্টরকে বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট জেল-জরিমানা করলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই রুটে চলাচলকারী সব ধরনের গণপরিবহন পরিকল্পিতভাবে বন্ধ করে দেন বাসচালক ও পরিবহন শ্রমিকেরা। খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য রুটের বাসও বন্ধ করে দেয়া হয়। তারা শুধু চলাচল বন্ধ করেই ক্ষান্ত থাকেননি; রাস্তার ওপর এলোপাতাড়ি বাস রেখে অন্য যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করেন। ফুলবাড়িয়া, গুলিস্তান, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ নগরীর অভ্যন্তরীণ বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডগুলোয় গাড়ি এলোপাতাড়ি রাখা হয়।
এ অবরোধ শুরুর পর চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন মিরপুর-আজিমপুর-গুলিস্তান-মতিঝিল, গাবতলী-উত্তরা-আজিমপুর, গাবতলী-গুলশান-বাড্ডা, সদরঘাট-মিরপুর রুটসহ মিরপুর ১১ নম্বর হয়ে চলাচলরত বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার যাত্রী, স্কুল ও কলেজফেরত শিক্ষার্থীরা। শুধু গুলিস্তান-মিরপুর রুট নয়, এর প্রভাবে পুরো রাজধানীতেই সৃষ্টি হয় জনদুর্ভোগ। এ সময় অনেকেই উপায় না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন। দুপুরে মিরপুর ১১ নম্বর পূরবী সিনেমা হলের সামনে অবস্থান নেয়া শতাধিক বাসশ্রমিককে বিভিন্ন ধরনের স্লোগানও দিতে দেখা যায়।
বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক ও মালিক সমিতির নেতাদের সাথে পরিবহন শ্রমিক ও বিআরটিএর কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এর পরই আবারো বাস চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো: আবু নাসের।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদফতরের সামনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী বাসচালক ও কন্ডাক্টরদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এ সময় গাড়ির কাগজপত্র না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন মিরপুর থেকে নারায়ণগঞ্জগামী হিমাচল পরিবহনের কন্ডাক্টরকে এক মাসের জেল ও জরিমানা করেন। এ নিয়ে সেখানে উপস্থিত পুলিশের সাথে শ্রমিকদের কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ একজনকে ধরে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এর পরই তারা সড়কে বাস বন্ধ করে গাড়িতে বসে থাকেন। বাস কন্ডাক্টরের জেল-জরিমানার খবর মুহূর্তে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ওই রুটে চলাচলকারী সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন ওই পথে চলাচলকারী স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।
আগারগাঁও এলাকায় দেখা গেছে, উত্তরাগামী জাবালে নূর পরিবহনের সব বাস বন্ধ করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলে দাঁড় করানোর কারণ জানতে চাইলে জাবালে নূর পরিবহনের একজন বাসচালক জানান, পরিবহন সমিতির লোকজনের সাথে পুলিশ খারাপ আচরণ করেছে। মারধর করেছে। এ জন্যই আমরা সব বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। এর একটা বিহিত হওয়া উচিত। পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগÑ ট্রাফিক পুলিশ ‘নানা অজুহাতে’ নিয়মিতই তাদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন বাসশ্রমিক ইস্রাফিল। তিনি বলেন, আমরা পেটের দায়ে কাজ করি। প্রতিদিনই নির্দিষ্ট হারে টাকা মালিকের হাতে তুলে দিতে হয়, না পারলে আমাদের মজুরি থেকে কেটে রাখা হয়। এ অবস্থায় রাস্তায় গাড়ি নামালেই যদি জরিমানা গুনতে হয়, তাহলে তো এ কাজ করে আর ভাত জোটানো সম্ভব না। এর আগে বেলা ২টার দিকে বিুব্ধ শ্রমিকেরা একটি বিআরটিসি বাসসহ কয়েকটি গণপরিবহনের কাচ ভেঙে ফেলে। পূরবী সিনেমা হলের সামনে গাড়ির জন্য অপোরত কয়েকজন যাত্রী জানান, উত্তরা থেকে এসে অনেকেই সেখানে আটকে গেছেন। শ্রমিকেরা যাত্রীদের নামিয়ে বাস ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। প্রায় একই ভাষ্য পাওয়া গেছে গাবতলী থেকে একটি বাসে আসা যাত্রীদের কাছেও।
ব্যবসায়ী রাজিউন ইসলাম জানান, তিনি তার দোকানের মালপত্র নিয়ে গুলশান যাচ্ছিলেন। পূরবী আসার পর শ্রমিকেরা তাদের জোর করে নামিয়ে দিয়েছেন। বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়া অনেক যাত্রীকেই হেঁটে যেতে দেখা গেছে। এ রুটের বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় এর প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানীজুড়ে। এভাবে পরিবহন শ্রমিকদের কাছে বিকেল পর্যন্ত নগরীর মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ে। বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির হস্তক্ষেপে পরিবহন শ্রমিকেরা কাজে ফিরে যান।
সুরিটোলায় ভিক্টর পরিবহনের বাসচালক হাসান মিয়া বাসেই ঘুমাচ্ছিলেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নেতারা আটক হবেন, আমরা যথাযথ ভাড়া পাবো নাÑ এটি হতে পারে না। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায়ই থাকব।
সদরঘাট থেকে গুলিস্তান আসা যাত্রী ফয়সাল আহমেদ বলেন, এভাবে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা ঠিক না। রাস্তায় এভাবে গাড়ি পড়ে থাকলে ঢাকা তো অচল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ছোট ভাইকে নিয়ে শাহবাগে হাসপাতালে যাবো। আমার মতো আরো অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হননি। তাই যারা এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছেন, তাদের ভাবা উচিত মানুষের কী পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে।
মিরপুর রুটের একাধিক বাসযাত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, বাসচালক ও কন্ডাক্টররা যাতে ভাড়া ইচ্ছামতো নিতে পারেন এ জন্যই তারা আজকে পরিকল্পিতভাবে রাস্তা বন্ধ করে সড়ক অবরোধ করে সরকারসহ সবাইকে জানান দিয়েছেন। কিন্তু সরকারেরর উচিত হবে, এদের কোনোভাবেই ছাড় না দেয়া। যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা নতুবা পরিস্থিতি দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
পরিবহন শ্রমিকদের অবরোধ প্রসঙ্গে মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, গাড়ির যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট কন্ডাক্টরকে সাজা দিয়েছেন। এ আদেশের প্রতিবাদে চালকেরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
গত রাতে সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আগারগাঁওয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে এমনটি হয়েছিল। কী হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, হিমাচল পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করেছিলেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে সাজা দিয়েছেন। বিকেলে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে আমি বৈঠক করেছি। এর পরই তারা অবরোধ তুলে কাজে ফিরে গেছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা পুরো সড়কে কোন কোন পরিবহন শ্রমিক যাত্রীদের কাছ থেকে বাস ভাড়া অতিরিক্ত আদায় করছেন, সেগুলো মনিটরিং করছি।
তবে খন্দকার এয়ায়েত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রতিবার বাস ভাড়া বাড়ানোর পর কিছুটা নিয়ম-অনিয়ম হয়। একসময় সব ঠিক হয়ে যায়।
No comments