বিজেপি নেতাদের গরুর মাংস নিয়ে মন্তব্যে ক্ষুব্ধ মোদি
ভারতের দাদ্রিতে গরুর মাংস খাওয়ার গুজব ছড়িয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মুসলিমকে হত্যার পর শাসকদল বিজেপির বিভিন্ন নেতার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ‘ক্ষুব্ধ’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দলের প্রধান অমিত শাহ ওই নেতাদের তলব করে সতর্কও করে দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, অমিত শাহ আগামীতে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে সেসব নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির বার্তাও তাদের কাছে পৌঁছে দেন। যাদেরকে অমিত শাহ তলব করেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেশ শর্মা, এমপি সঙ্গীত সোম ও বিতর্কিত দলীয় নেতা সাক্ষী মহারাজ ও সঞ্জয় বালিয়াঁ। এ নেতাদের বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক বক্তব্য সমপ্রতি বিতর্ক উস্কে দেয়। এসবের প্রতিবাদে ভারতের ৪২ জন গণ্যমান্য লেখক মর্যাদাবান রাষ্ট্রীয় পুরস্কার সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। তারা এর জন্য দেশে বিরাজমান অসহিষ্ণুতাকে দায়ী করেন। তবে ওই নেতারা দাবি করেছেন, এগুলো নিয়মিত যোগাযোগের অংশ। বিশেষ কোন কারণে তাদের ডাকেননি অমিত শাহ। সাক্ষী মহারাজ বলেন, আমি আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি। আমাকে কোন বক্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়নি। তবে বৈঠকের এজেন্ডা কি ছিল, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রত্যেক ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া থাকে। আমি এমন কাজ করেছি, যার প্রতিক্রিয়া এসেছে! গরু ও গরুর মাংস নিয়ে মানুষ হত্যার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছে বিরোধী দলগুলো। প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি সৌহার্দ্যের আহ্বান জানানোর একদিন পরই মুম্বইয়ে এক সমাবেশে এ নিয়ে কথা বলেছেন মোদি। দাদ্রির ঘটনা উল্লেখ না করেই মোদি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যই পুনরায় তুলে ধরেন। তিনি মন্তব্য করেন, হিন্দু ও মুসলিমদের একত্রে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, একে অপরের বিরুদ্ধে নয়। ওই সমাবেশে মোদি বলেন, রাজনীতি বা তুচ্ছ স্বার্থের জন্য, মানুষ দায়িত্বহীন মন্তব্য করে। এগুলোকে সিরিয়াসলি নেবেন না। এমনকি নরেন্দ্র মোদি নিজেও যদি এমন কথা বলে, তবুও না। তবে সমাবেশের পরের দিনই নির্দিষ্ট করে দাদ্রি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি ওই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যায়িত করেন। গতকাল বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ জোটসঙ্গী শিরোমণি আকালি দল দাবি করে, যেসব নেতা দাদ্রি হত্যাকাণ্ড নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতৃবৃন্দকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৮ই সেপ্টেম্বর ৫২ বছর বয়সী আখলাক নামে এক মুসলিমকে গরু জবাই ও মাংস ভক্ষণের গুজব রটিয়ে একদল গ্রামবাসী পিটিয়ে হত্যা করে। তার ছোট ছেলেকে গুরতরভাবে আহতও করে। পরে ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, আখলাকের ঘরে থাকা মাংস গরুর ছিল না, ছিল ছাগলের।
অথচ ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেশ শর্মা গণপিটুনির ওই ঘটনাকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। দলের আইনপ্রণেতা সঙ্গীত সোম দাদ্রি সফর করেন। সেখানে গিয়ে তিনি ‘গরু হত্যাকারীদের’ উত্তর প্রদেশের আখিলেশ যাদব সরকার রক্ষা করছে। হরিয়ানার বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারতে থাকতে হলে, মুসলমানদের অবশ্যই গরুর মাংস খাওয়া ছাড়তে হবে। তিনি দাদ্রির হত্যাকারী জনতার কর্মকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দেয়ারও চেষ্টা করেন। যদিও একদিন পরই তীব্র সমালোচনার মুখে সুর নরম করেন তিনি। আরেক বিতর্কিত বিজেপি নেতা সাক্ষী মহারাজ গরু জবাইয়ের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি জানান।
অথচ ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেশ শর্মা গণপিটুনির ওই ঘটনাকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। দলের আইনপ্রণেতা সঙ্গীত সোম দাদ্রি সফর করেন। সেখানে গিয়ে তিনি ‘গরু হত্যাকারীদের’ উত্তর প্রদেশের আখিলেশ যাদব সরকার রক্ষা করছে। হরিয়ানার বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারতে থাকতে হলে, মুসলমানদের অবশ্যই গরুর মাংস খাওয়া ছাড়তে হবে। তিনি দাদ্রির হত্যাকারী জনতার কর্মকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দেয়ারও চেষ্টা করেন। যদিও একদিন পরই তীব্র সমালোচনার মুখে সুর নরম করেন তিনি। আরেক বিতর্কিত বিজেপি নেতা সাক্ষী মহারাজ গরু জবাইয়ের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি জানান।
No comments