দাতাদের অর্থ পায়নি নেপাল
ভয়াবহ
ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পরেও বিদেশী দাতাদের প্রতিশ্রুত কোনো অর্থ সহায়তা
পায়নি বিধ্বস্ত নেপাল। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এশিয়া অন্যতম এই দরিদ্র
রাষ্ট্রের পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কার্যকর ভূমিকা এখনও দেখা যায়নি।
দেশটির অর্থমন্ত্রী রাম শর্মা মাহাত বলেছেন, তারা হেলিকপ্টার আর ত্রাণ
পেয়েছেন, কিন্তু টাকা নয়। এখন জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয় সরঞ্জাম আর অর্থপেডিক
চিকিৎসক দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাঠমান্ডু এখন ধ্বংসস্তূপের নগরী। ভূমিকম্পের আঘাতে বিপর্যস্ত শহরটির যেদিকে তাকানো যায় শুধু ধসেপড়া ভবন। আগের অবস্থায় শহরটিকে ফিরিয়ে নিতে দরকার অন্ততপক্ষে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে অবকাঠামোগত পূর্বরূপে ফিরিয়ে আনার জন্য আনুমানিক এই পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী রাম শর্মা মাহাত। মাহাত বলেন, এটি প্রাথমিক ধারণা। কী পরিমাণ অর্থ লাগাবে তা ক্ষতির পরিমাণ ও পুনর্নির্মাণ ব্যয় বিবেচনা না করে বলা সম্ভব নয়। তবে মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, নেপালের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১০০ থেকে ১০০০ কোটি মার্কিন ডলার। জিডিপির হিসেবে গড়ে ৩৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য ও গবেষণা সংস্থা আইএইচএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পে হিমালয়কন্যা নেপালের মোট অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা জিডিপির ২০ শতাংশ। জাতিসংঘ নেপালের জন্য ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছে। অন্যদিকে ইউনিসেফ চেয়েছে ৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কৃষকদের জন্য ৮০ লাখ ডলার অনুদান চেয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে তাঁবু, কম্বল, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ এরই মধ্যে ৮০ টনের বেশি জরুরি পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে, নেপালে প্রতিদিনই আসছে বিদেশী সহযোগিতা। তবে অভিযোগ উঠছে, দুর্গত অঞ্চলে সরকার সময়মতো ত্রাণ পৌঁছাতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী অফিসের কর্মকর্তা পূর্ণ শংকর বলেন, কিছু দুর্গত অঞ্চলে গ্রামবাসীরা এতই ক্ষিপ্ত ও ক্ষুধার্ত যে তারা ওষুধ ও খাবার বহনকারী গাড়িতে পাথর ছুড়ে মেরেছে।"
ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছে, কাঠমান্ডুর পশ্চিমের গ্রাম সুন্দরখোলায় খাদ্য সংকট এতই যে, মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে। সুপেয় পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার ৭.৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে নেপালের ৮০ লাখ ােনুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ২০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে, যা ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পের মৃতের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে। ১৯৩৪ সালের ওই ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিলেন সাড়ে ৮ হাজার মানুষ। নতুন করে সব কিছু আবার তৈরি করার ব্যয় হবে বিপুল। প্রতিটি নিহতের পরিবারকে ১৪০০ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার টাকা সহায়তা দিচ্ছে নেপাল সরকার। এর আগে নেপালের একজন মন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট ছিল না।
ধ্বংসস্তূপে জীবিত উদ্ধারে আর আশা নেই : সরকার
নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে দেশটিতে ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৬৭০০ জনে পৌঁছেছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মী প্রসাদ ধাকাল শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। তারা উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন না তারা। গত শনিবার দুপুরে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে রাজধানী কাঠমান্ডু ও এর আশপাশের এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশংকা সরকারের।
আবার ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্প : এদিকে শনিবার নেপালে আবারও ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি অনুভূত হয়েছে। দেশটির খুদি নামক স্থান থেকে ২৫ কিমি. পূর্বে ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি. গভীরে এ ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস। তবে প্রাথমিকভাবে এ ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ
এক নজরে ক্ষয়ক্ষতি
৬৭০০ প্রাণহানি
১৪,০২৩ আহত
৮০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত
২৮ লাখ গৃহহীন
৩৫ লাখ খাদ্য সংকটে
১৭ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত
৩ লক্ষাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
১৬ হাজার স্কুল ধ্বংস
দাতাদের প্রতিশ্রুতি
যুক্তরাষ্ট্র : ১.২৫ কোটি ডলার
যুক্তরাজ্য : ১.৫০ কোটি ডলার
ইইউ: ৩২ লাখ ডলার
নরওয়ে : ৩৯ লাখ ডলার
কানাডা : ৪১ লাখ ডলার
চীন : ৩৪ লাখ ডলার
অস্ট্রেলিয়া : ৪৫ লাখ ডলার
দ. কোরিয়া : ১০ লাখ ডলার
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাঠমান্ডু এখন ধ্বংসস্তূপের নগরী। ভূমিকম্পের আঘাতে বিপর্যস্ত শহরটির যেদিকে তাকানো যায় শুধু ধসেপড়া ভবন। আগের অবস্থায় শহরটিকে ফিরিয়ে নিতে দরকার অন্ততপক্ষে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে অবকাঠামোগত পূর্বরূপে ফিরিয়ে আনার জন্য আনুমানিক এই পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী রাম শর্মা মাহাত। মাহাত বলেন, এটি প্রাথমিক ধারণা। কী পরিমাণ অর্থ লাগাবে তা ক্ষতির পরিমাণ ও পুনর্নির্মাণ ব্যয় বিবেচনা না করে বলা সম্ভব নয়। তবে মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, নেপালের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১০০ থেকে ১০০০ কোটি মার্কিন ডলার। জিডিপির হিসেবে গড়ে ৩৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য ও গবেষণা সংস্থা আইএইচএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পে হিমালয়কন্যা নেপালের মোট অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা জিডিপির ২০ শতাংশ। জাতিসংঘ নেপালের জন্য ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছে। অন্যদিকে ইউনিসেফ চেয়েছে ৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কৃষকদের জন্য ৮০ লাখ ডলার অনুদান চেয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে তাঁবু, কম্বল, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ এরই মধ্যে ৮০ টনের বেশি জরুরি পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে, নেপালে প্রতিদিনই আসছে বিদেশী সহযোগিতা। তবে অভিযোগ উঠছে, দুর্গত অঞ্চলে সরকার সময়মতো ত্রাণ পৌঁছাতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী অফিসের কর্মকর্তা পূর্ণ শংকর বলেন, কিছু দুর্গত অঞ্চলে গ্রামবাসীরা এতই ক্ষিপ্ত ও ক্ষুধার্ত যে তারা ওষুধ ও খাবার বহনকারী গাড়িতে পাথর ছুড়ে মেরেছে।"
ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছে, কাঠমান্ডুর পশ্চিমের গ্রাম সুন্দরখোলায় খাদ্য সংকট এতই যে, মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে। সুপেয় পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার ৭.৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে নেপালের ৮০ লাখ ােনুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ২০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে, যা ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পের মৃতের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে। ১৯৩৪ সালের ওই ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিলেন সাড়ে ৮ হাজার মানুষ। নতুন করে সব কিছু আবার তৈরি করার ব্যয় হবে বিপুল। প্রতিটি নিহতের পরিবারকে ১৪০০ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার টাকা সহায়তা দিচ্ছে নেপাল সরকার। এর আগে নেপালের একজন মন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট ছিল না।
ধ্বংসস্তূপে জীবিত উদ্ধারে আর আশা নেই : সরকার
নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে দেশটিতে ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৬৭০০ জনে পৌঁছেছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মী প্রসাদ ধাকাল শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। তারা উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন না তারা। গত শনিবার দুপুরে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে রাজধানী কাঠমান্ডু ও এর আশপাশের এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশংকা সরকারের।
আবার ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্প : এদিকে শনিবার নেপালে আবারও ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি অনুভূত হয়েছে। দেশটির খুদি নামক স্থান থেকে ২৫ কিমি. পূর্বে ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি. গভীরে এ ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস। তবে প্রাথমিকভাবে এ ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ
এক নজরে ক্ষয়ক্ষতি
৬৭০০ প্রাণহানি
১৪,০২৩ আহত
৮০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত
২৮ লাখ গৃহহীন
৩৫ লাখ খাদ্য সংকটে
১৭ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত
৩ লক্ষাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
১৬ হাজার স্কুল ধ্বংস
দাতাদের প্রতিশ্রুতি
যুক্তরাষ্ট্র : ১.২৫ কোটি ডলার
যুক্তরাজ্য : ১.৫০ কোটি ডলার
ইইউ: ৩২ লাখ ডলার
নরওয়ে : ৩৯ লাখ ডলার
কানাডা : ৪১ লাখ ডলার
চীন : ৩৪ লাখ ডলার
অস্ট্রেলিয়া : ৪৫ লাখ ডলার
দ. কোরিয়া : ১০ লাখ ডলার
No comments