শুনলেও দোষ, না শুনলেও দোষ: বিহারি ক্যাম্প
রাজধানীর
মিরপুর এবং মোহাম্মদপুরের বিহারি ক্যাম্পগুলো থেকেই পরিচালিত হচ্ছে ভয়ঙ্কর
অপরাধ কর্মকাণ্ড। সাম্প্রতিক সময়ে চলা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এসব ক্যাম্প
থেকেই জোগান দেওয়া হচ্ছে পেট্রলবোমা এবং বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন উপকরণ। নজরদারি
অপেক্ষাকৃত কম থাকায় বিহারি ক্যাম্পগুলো অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ
আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত সংকীর্ণ স্থানে
তারা বাস করে, আর চরম দারিদ্র্য তো আছেই, এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে তাদের
ব্যবহার করছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত এবং সন্ত্রাসীরা। তবে সব কিছু জানার পরও এ
দুটি ক্যাম্পের ব্যাপারে নীরব আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। সম্প্রতি একটি
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের পর নড়েচড়ে বসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইতিমধ্যেই ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এ সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনা
পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট উপ-কমিশনারদের দফতরে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র এসব বিহারি ক্যাম্পের অনেক বাসিন্দাকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে ব্যবহার করছে। ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, আদর্শগত দ্বন্দ্ব এবং পাশাপাশি ভাষাগত ভিন্নতার কারণে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র খুব সহজেই এ বিহারি জনগোষ্ঠীর মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত নেতিবাচক মানসিকতাকে উসকে দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
অনেক বিহারিকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের বিষয়েও তাদের ভূমিকা ছিল। আবার সরকারদলীয় স্থানীয় এমপির সমর্থকরা ব্যাপক গণসংযোগের মাধ্যমে এদের দলে ভেড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টায় লিপ্ত। রাজনৈতিক মেরুকরণের অংশ হিসেবে নিজেদের অবস্থানগত সুবিধার জন্য এই বিহারিরা বিভিন্ন অনৈতিক ও আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে দ্বিধাবোধ করে না। এর বাইরে সরকারি খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাঙালি এবং বিহারিদের মধ্যে বিরোধ চলমান।জানা গেছে, সারা দেশে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ৭৬টি ক্যাম্পের মধ্যে রাজধানীতে ১১টি। এর মধ্যে সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ মোহাম্মদপুরের জেনেভা এবং মিরপুরের ক্যাম্পগুলো।
প্রতিটি ক্যাম্পেই আস্তানা গেড়েছে অপরাধীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বিহারিদের ব্যবহার করে ফায়দা নিচ্ছেন। রয়েছে সন্ত্রাসীদের সার্বক্ষণিক আনাগোনা। আর এমন পরিবেশে থেকেই বড় হয়ে ওঠা বিহারি তরুণ-যুবকরাও জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে। প্রতিটি বিহারি ক্যাম্পেই মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক কেনাবেচা হচ্ছে। পুলিশ সবই জানে। তারা এ জন্য প্রতি মাসে পাচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা। তাদের হয়ে চাঁদা তোলার জন্য সোর্সও নিয়োগ দেওয়া আছে ক্যাম্পগুলোতে। পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিরপুর ক্যাম্পের কয়েকজন বাসিন্দা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা কোথায় যামু? আমাগো তো সব লোকই ব্যবহার করে। শুনলেও দোষ, না শুনলেও দোষ। মিরপুরের কালশীতে আমাগো শিশুসহ ১০ জনকে পুইড়া মারছে। এর তো কোনো বিচার হইলো না।
পুলিশ কি আমাকে কম হয়রানি করে? কিছু হইলেই রুপিয়া চায়। না দিলে ধইরা লইয়া যায়।’মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নিসারুল আরিফ বলেন, মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে বিহারি ক্যাম্পগুলোর অনেকে অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েছে এ বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তবে এর মধ্যে বেশির ভাগেরই হয় মা বিহারি বাবা বাঙালি। আবার কারও কারও বাবা বিহারি মা বাঙালি। এরা মাদকসহ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে। আবার তাদের কাছে মাঝে মাঝেই আশ্রয় নেয় দেশের বিভিন্ন এলাকার পলাতক সন্ত্রাসীরা। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমরা ক্যাম্পগুলোতে অনেকগুলো ব্লক রেইড দিয়েছি। তিনি জানান, এটা ঠিক যে ক্যাম্পের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে।জানা গেছে, ঢাকার ১১টি বিহারি ক্যাম্পের মধ্যে মোহাম্মদপুরে রয়েছে ছয়টি। এগুলো হলো- জেনেভা ক্যাম্প, টাউন হল ক্যাম্প, সিআরও ক্যাম্প, মার্কেট ক্যাম্প, কমিউনিটি সেন্টার এবং স্টাফ কোয়ার্টার ক্যাম্প।
আর মিরপুরের কালশীতে রয়েছে বাকি পাঁচটি- মিল্লাত ক্যাম্প, কুর্মিটোলা ক্যাম্প, বেনারসি ক্যাম্প, ১২ নম্বর পানির ট্যাংকি ক্যাম্প ও কালাপানির ক্যাম্প। ঢাকার বাইরে সৈয়দপুরে ক্যাম্পের সংখ্যা বেশি।আন্তর্জাতিক রেডক্রস সোসাইটি (আইসিআরসি) ১৯৭৩ সালে বিদায় নেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার ও বিডিআরএস এসব বিহারি ক্যাম্পের দায়িত্ব নেয়। ১৯৭৬ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা অ্যাডহক ভিত্তিতে রিলিফ কমিটি বা অবাঙালি ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে ক্যাম্পগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন। ২০০৮ সালে ক্যাম্পেও লোকজনকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। তারা ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার রাখেন।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র এসব বিহারি ক্যাম্পের অনেক বাসিন্দাকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে ব্যবহার করছে। ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, আদর্শগত দ্বন্দ্ব এবং পাশাপাশি ভাষাগত ভিন্নতার কারণে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র খুব সহজেই এ বিহারি জনগোষ্ঠীর মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত নেতিবাচক মানসিকতাকে উসকে দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
অনেক বিহারিকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের বিষয়েও তাদের ভূমিকা ছিল। আবার সরকারদলীয় স্থানীয় এমপির সমর্থকরা ব্যাপক গণসংযোগের মাধ্যমে এদের দলে ভেড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টায় লিপ্ত। রাজনৈতিক মেরুকরণের অংশ হিসেবে নিজেদের অবস্থানগত সুবিধার জন্য এই বিহারিরা বিভিন্ন অনৈতিক ও আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে দ্বিধাবোধ করে না। এর বাইরে সরকারি খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাঙালি এবং বিহারিদের মধ্যে বিরোধ চলমান।জানা গেছে, সারা দেশে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ৭৬টি ক্যাম্পের মধ্যে রাজধানীতে ১১টি। এর মধ্যে সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ মোহাম্মদপুরের জেনেভা এবং মিরপুরের ক্যাম্পগুলো।
প্রতিটি ক্যাম্পেই আস্তানা গেড়েছে অপরাধীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বিহারিদের ব্যবহার করে ফায়দা নিচ্ছেন। রয়েছে সন্ত্রাসীদের সার্বক্ষণিক আনাগোনা। আর এমন পরিবেশে থেকেই বড় হয়ে ওঠা বিহারি তরুণ-যুবকরাও জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে। প্রতিটি বিহারি ক্যাম্পেই মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক কেনাবেচা হচ্ছে। পুলিশ সবই জানে। তারা এ জন্য প্রতি মাসে পাচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা। তাদের হয়ে চাঁদা তোলার জন্য সোর্সও নিয়োগ দেওয়া আছে ক্যাম্পগুলোতে। পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিরপুর ক্যাম্পের কয়েকজন বাসিন্দা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা কোথায় যামু? আমাগো তো সব লোকই ব্যবহার করে। শুনলেও দোষ, না শুনলেও দোষ। মিরপুরের কালশীতে আমাগো শিশুসহ ১০ জনকে পুইড়া মারছে। এর তো কোনো বিচার হইলো না।
পুলিশ কি আমাকে কম হয়রানি করে? কিছু হইলেই রুপিয়া চায়। না দিলে ধইরা লইয়া যায়।’মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নিসারুল আরিফ বলেন, মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে বিহারি ক্যাম্পগুলোর অনেকে অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েছে এ বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তবে এর মধ্যে বেশির ভাগেরই হয় মা বিহারি বাবা বাঙালি। আবার কারও কারও বাবা বিহারি মা বাঙালি। এরা মাদকসহ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে। আবার তাদের কাছে মাঝে মাঝেই আশ্রয় নেয় দেশের বিভিন্ন এলাকার পলাতক সন্ত্রাসীরা। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমরা ক্যাম্পগুলোতে অনেকগুলো ব্লক রেইড দিয়েছি। তিনি জানান, এটা ঠিক যে ক্যাম্পের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে।জানা গেছে, ঢাকার ১১টি বিহারি ক্যাম্পের মধ্যে মোহাম্মদপুরে রয়েছে ছয়টি। এগুলো হলো- জেনেভা ক্যাম্প, টাউন হল ক্যাম্প, সিআরও ক্যাম্প, মার্কেট ক্যাম্প, কমিউনিটি সেন্টার এবং স্টাফ কোয়ার্টার ক্যাম্প।
আর মিরপুরের কালশীতে রয়েছে বাকি পাঁচটি- মিল্লাত ক্যাম্প, কুর্মিটোলা ক্যাম্প, বেনারসি ক্যাম্প, ১২ নম্বর পানির ট্যাংকি ক্যাম্প ও কালাপানির ক্যাম্প। ঢাকার বাইরে সৈয়দপুরে ক্যাম্পের সংখ্যা বেশি।আন্তর্জাতিক রেডক্রস সোসাইটি (আইসিআরসি) ১৯৭৩ সালে বিদায় নেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার ও বিডিআরএস এসব বিহারি ক্যাম্পের দায়িত্ব নেয়। ১৯৭৬ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা অ্যাডহক ভিত্তিতে রিলিফ কমিটি বা অবাঙালি ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে ক্যাম্পগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন। ২০০৮ সালে ক্যাম্পেও লোকজনকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। তারা ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার রাখেন।
No comments