আলী আকবরের দ্বিতীয় জীবন
সৌদি
আরবে দ্বিতীয় জীবন পেলেন এক বাংলাদেশী। এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড হয়েছিল। ওই দুর্ঘটনায় নিহত হন একজন। নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ
দিতে পারেন নি তিনি। তাই তিনি ধরে নিয়েছিলেন জীবনের বাকিটা সময় সেখানকার
জেলেই কাটাতে হবে। কিন্তু তার পাশে এসে দাঁড়ালো ইতিহাদ আল রাজহি নামের একটি
দাতব্য সংস্থা। তারাই ওই ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে তাকে মুক্ত করলেন। তিনি
ফিরে পেলেন নতুন জীবন। তবে মুক্তি পাওয়ার আগে তিনি জানতে পারেন নি যে, তার
জন্য এত আয়োজন করা হয়েছে। জেল থেকে তাকে যখন প্রহরীরা বাইরে বের করে আনে
অতিথিদের সঙ্গে তখন তারাই বলেন, তাকে মুক্ত করতে এসেছেন তারা। এ কথা শুনে
মুখে হাসি ফুটে ওঠে ওই বাংলাদেশীর। আনন্দে তার চোখ ভিজে ওঠে। ওই বাংলাদেশীর
নাম মোহাম্মদ আলী আকবর। তবে তার বাড়ি বাংলাদেশের কোথায় তা জানা যায় নি।
গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে একটি ভিডিও।
তাতে দেখানো হয়েছে আলী আকবরের মুক্তির দৃশ্য। তিনি মুক্তির খবর শুনে
শোকরানা আদায় করতে নফল নামাজ আদায় করেন। আরব নিউজ লিখেছে, দাওয়াদমি’র পুলিশ
কর্মকর্তারা বলেছেন- মোহাম্মদ আলী আকবর একজন আদর্শবান বন্দি ছিলেন। তিনি
যে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিলেন তাতে যে ব্যক্তি মারা যান, তিনি তার পরিবারকে
ক্ষতিপূরণ দিতে পারবেন না। এ জন্য ভেবেছিলেন জীবনের বাকি দিনগুলো তার
ঠিকানা ওই জেলখানাই। কিন্তু দাতব্য সংস্থা ইতিহাদ আল রাজহি যখন তাকে মুক্তি
দেয়ার জন্য এগিয়ে এলো তখন তিনি এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাকে পুরোপুরি
সারপ্রাইজ দেয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ইতিহাদ আল রাজহি’র লোকজন
ক্ষতিপূরণের তিন লাখ রিয়াল দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে তাকে মুক্ত করার ইচ্ছা পোষণ
করেন। এ যেন আলী আকবরের কাছে ছিল বিস্ময়ের। তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না
দুনিয়াতে এখনও এমন দরদী মানুষ আছেন। তারা এখনও দুর্বলের পাশে এসে দাঁড়ান।
আলী আকবর তাদের সঙ্গে বুকে বুক মেলান। জেলখানার কর্মকর্তারা তার সঙ্গে বুক
মেলান। একজন কর্মকর্তাতো আলী আকবরের কপালে চুমু খেয়ে বসেন। বিস্ময়ে হতবাক
আলী আকবর খুশিতে আদায় করেন নফল নামাজ।
No comments