টিলা কেটে সাবাড় by উজ্জ্বল মেহেদী
টিলার মাটি এনে ভরাট করা হয়েছে বাড়ির সামনের নিচু জায়গা |
টিলাশ্রেণির
ভূমিতে সীমানাপ্রাচীর-ঘেরা একটি বাড়ি। বাড়ির প্রধান ফটক দিয়ে প্রতিদিন
নামছে ট্রাকে ভর্তি মাটি। ফেলা হচ্ছে বাড়ির সামনের নিচু ভূমিতে। এত মাটি
কোথা থেকে আসে? এলাকাবাসীর এমন ঔৎসুক্যে ভেতরে ঢুকে তো চক্ষু চড়কগাছ!
বিরাট একটি টিলা কেটে প্রায় সাবাড়। সবুজ হারিয়ে সেখানে হলদে আলো ছড়াচ্ছে
সদ্য কাটা মাটি।
বাড়িটি সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইলিয়াছুর রহমানের। ২০১৩ সালের ১৫ জুন তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হয়েই বাড়ির টিলাটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেন। টিলাধসের কিছু মাটি অপসারণ করে টিলা সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর টিলা এলাকা থেকে বাসস্থান সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে টিলা কাটার ‘অনুমতি’ হিসেবে প্রচার করে টিলাটি কাটা চলছে। বিষয়টি ‘জোচ্চুরি’ বলে অভিহিত করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
নগরের পাঠানটুলার কুচারপাড়া এলাকায় এ বাড়িটি অবস্থিত। গত মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে একসঙ্গে মাটিভর্তি কয়েকটি ট্রাক বের হওয়ার পর ভেতরে ঢুকে টিলা কাটার বিষয়টি সবার নজরে আসে। প্রায় দুই একর জায়গা নিয়ে বাড়িটির পেছনে চার ভাগের এক ভাগ জায়গাজুড়ে ছিল একটি সুউচ্চ টিলা। খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে সেটি কেটে সাবাড় করা হয়েছে। এখানে-সেখানে রয়েছে যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার চিহ্ন। কাটা মাটি নিয়ে ফেলা হচ্ছে বাড়ির সামনে প্রাচীরঘেরা নিচু জায়গায়। টিলা কাটায় চূড়ার বিভিন্ন জাতের গাছও উপড়ে পড়ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো টিলাই কাটার বিধান নেই। কাটলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। জাতীয় স্বার্থে একান্তই কোনো টিলা কাটতে হলে অধিদপ্তরের অনুমোদন নিতে হয়।
বিষয়টি জানা আছে বলে জানালেন কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমানের বড় ভাই পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার তিনি ওই বাড়িতে বসে জানান, তাঁরা অনুমতি নিয়েই টিলা কাটছেন। অনুমতি কারা দিয়েছে—জানতে চাইলে মুঠোফোনে ধরিয়ে দেওয়া হয় ইলিয়াছুর রহমানকে। তিনি দাবি করেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তিনি লিখিত অনুমতি নিয়েছেন এবং এ-সংক্রান্ত কাগজপত্রও দেখাতে পারবেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইলিয়াছুর রহমানের বাড়ির একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ-সংবলিত একটি লিখিত নির্দেশনা কার্যালয়ের নথিতে সংরক্ষিত আছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ধসে যাওয়া মাটি আবেদনকারী ইতিমধ্যে সরিয়েছেন। বসবাসকারীদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের অন্যত্র স্থানান্তর করাসহ টিলার ধস ঠেকাতে রেটিনিং ওয়াল নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’
কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, এ নির্দেশনাকে টিলা কাটার অনুমতি হিসেবে প্রচার করে ইলিয়াছুর রহমান টিলা কাটা অব্যাহত রেখেছেন। সরকারদলীয় নেতার প্রকাশ্যে এই টিলা কাটা দেখে আশপাশেও টিলা কাটা শুরু হয়েছে।
নিজের অবস্থানে অনড় থেকে ইলিয়াছুর রহমান বলেন, ‘টিলাটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থা দেখে পরিবেশ অধিদপ্তর লিখিতভাবে টিলার মাটি সরাতে বলেছে। আমরাও তাই করছি। এখানে জোচ্চুরি হলো কীভাবে?’
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে টিলা কাটার অনুমতি বলে প্রচার করা হচ্ছে। টিলা কাটার অনুমতি স্থানীয়ভাবে (বিভাগীয় কার্যালয়) দেওয়া হয় না। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো উন্নয়নকাজে যথারীতি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি দেওয়া হয়।
টিলা কাটা ও টিলা সংরক্ষণ করার নির্দেশনাকে কাটার অনুমতি হিসেবে প্রচার করায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন মোস্তাফিজুর রহমান।
বাড়িটি সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইলিয়াছুর রহমানের। ২০১৩ সালের ১৫ জুন তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হয়েই বাড়ির টিলাটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেন। টিলাধসের কিছু মাটি অপসারণ করে টিলা সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর টিলা এলাকা থেকে বাসস্থান সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে টিলা কাটার ‘অনুমতি’ হিসেবে প্রচার করে টিলাটি কাটা চলছে। বিষয়টি ‘জোচ্চুরি’ বলে অভিহিত করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
নগরের পাঠানটুলার কুচারপাড়া এলাকায় এ বাড়িটি অবস্থিত। গত মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে একসঙ্গে মাটিভর্তি কয়েকটি ট্রাক বের হওয়ার পর ভেতরে ঢুকে টিলা কাটার বিষয়টি সবার নজরে আসে। প্রায় দুই একর জায়গা নিয়ে বাড়িটির পেছনে চার ভাগের এক ভাগ জায়গাজুড়ে ছিল একটি সুউচ্চ টিলা। খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে সেটি কেটে সাবাড় করা হয়েছে। এখানে-সেখানে রয়েছে যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার চিহ্ন। কাটা মাটি নিয়ে ফেলা হচ্ছে বাড়ির সামনে প্রাচীরঘেরা নিচু জায়গায়। টিলা কাটায় চূড়ার বিভিন্ন জাতের গাছও উপড়ে পড়ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো টিলাই কাটার বিধান নেই। কাটলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। জাতীয় স্বার্থে একান্তই কোনো টিলা কাটতে হলে অধিদপ্তরের অনুমোদন নিতে হয়।
বিষয়টি জানা আছে বলে জানালেন কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমানের বড় ভাই পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার তিনি ওই বাড়িতে বসে জানান, তাঁরা অনুমতি নিয়েই টিলা কাটছেন। অনুমতি কারা দিয়েছে—জানতে চাইলে মুঠোফোনে ধরিয়ে দেওয়া হয় ইলিয়াছুর রহমানকে। তিনি দাবি করেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তিনি লিখিত অনুমতি নিয়েছেন এবং এ-সংক্রান্ত কাগজপত্রও দেখাতে পারবেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইলিয়াছুর রহমানের বাড়ির একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ-সংবলিত একটি লিখিত নির্দেশনা কার্যালয়ের নথিতে সংরক্ষিত আছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ধসে যাওয়া মাটি আবেদনকারী ইতিমধ্যে সরিয়েছেন। বসবাসকারীদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের অন্যত্র স্থানান্তর করাসহ টিলার ধস ঠেকাতে রেটিনিং ওয়াল নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’
কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, এ নির্দেশনাকে টিলা কাটার অনুমতি হিসেবে প্রচার করে ইলিয়াছুর রহমান টিলা কাটা অব্যাহত রেখেছেন। সরকারদলীয় নেতার প্রকাশ্যে এই টিলা কাটা দেখে আশপাশেও টিলা কাটা শুরু হয়েছে।
নিজের অবস্থানে অনড় থেকে ইলিয়াছুর রহমান বলেন, ‘টিলাটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থা দেখে পরিবেশ অধিদপ্তর লিখিতভাবে টিলার মাটি সরাতে বলেছে। আমরাও তাই করছি। এখানে জোচ্চুরি হলো কীভাবে?’
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে টিলা কাটার অনুমতি বলে প্রচার করা হচ্ছে। টিলা কাটার অনুমতি স্থানীয়ভাবে (বিভাগীয় কার্যালয়) দেওয়া হয় না। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো উন্নয়নকাজে যথারীতি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি দেওয়া হয়।
টিলা কাটা ও টিলা সংরক্ষণ করার নির্দেশনাকে কাটার অনুমতি হিসেবে প্রচার করায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন মোস্তাফিজুর রহমান।
No comments